Sunday, 8 April 2018

আমার লেখা বইগুলো





আমার লেখা বইগুলো

২০১৮

২১। মেঘনাদ সাহা: বিপ্লবী পদার্থবিজ্ঞানী


মডার্ন অ্যাস্ট্রোফিজিক্স বা আধুনিক জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানের ভিত্তি গড়ে উঠেছে যে কজন মানুষের মৌলিক তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে অধ্যাপক মেঘনাদ সাহা তাঁদের অন্যতম। ১৯২০ সালে মেঘনাদ সাহার তাপীয় আয়ননের সমীকরণ (আয়নাইজেশান ইকুয়েশান) প্রকাশিত হবার পর থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানে যত গবেষণা হয়েছে তাদের প্রায় সবগুলোই সাহার সমীকরণ দ্বারা প্রভাবিত। নরওয়ের বিখ্যাত জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানী সেভিন রোজল্যান্ড অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে প্রকাশিত তাঁর বিখ্যাত থিওরেটিক্যাল অ্যাস্ট্রোফিজিক্সবইতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন এ কথা।

আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের পারমাণবিক তত্ত্ব থেকে শুরু করে বিগ-ব্যাং তত্ত্বের পরীক্ষণ পর্যন্ত সহজ হয়ে উঠেছে যে যন্ত্রের উদ্ভাবনের ফলে - সেই সাইক্লোট্রনের উদ্ভাবক নোবেল বিজয়ী আর্নেস্ট লরেন্সসহ অসংখ্য বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা অর্জন করেছেন মেঘনাদ সাহা তাঁর কাজের মধ্য দিয়ে। নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী আর্নল্ড সামারফেল্ড, নীল্‌স বোর, ম্যাক্স বর্ন, আলবার্ট আইনস্টাইন, আর্থার এডিংটন, এনরিকো ফার্মি, আর্থার কম্পটন প্রমুখ দিকপাল মুগ্ধতার সাথে স্বীকার করেছেন মেঘনাদ সাহার অনন্য প্রতিভার কথা।

ভারতবর্ষের বিজ্ঞানচর্চার সাথে বিশ্বের পরিচয় ঘটিয়ে দেয়া এবং ভারতের বিজ্ঞান-গবেষণাকে বিশ্বমানে উন্নীত করার ব্যাপারে মেঘনাদ সাহার অবদান অনস্বীকার্য। গবেষণার স্বীকৃতি হিসেবে রয়্যাল সোসাইটির ফেলোশিপ পাবার পাশাপাশি মেঘনাদ সাহা নোবেল পুরষ্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছেন চার বার। ভারতীয় উপমহাদেশে বিশ্বমাপের বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে মেঘনাদ সাহার অক্লান্ত পরিশ্রমে। দেশে নিউক্লিয়ার পদার্থবিজ্ঞান পড়ানো শুরু হয়েছে মেঘনাদ সাহার হাতে। নিরলস চেষ্টা ও পরিশ্রমে গড়ে তুলেছেন ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্স। ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স, ইন্ডিয়ান ফিজিক্যাল সোসাইটি, ইন্ডিয়ান সায়েন্স নিউজ অ্যাসোসিয়েশান - সবগুলো সংগঠনই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মেঘনাদ সাহার নেতৃত্বে।

বাংলাদেশ ও ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের প্রায় সবাই মেঘনাদ সাহার টেক্সট বুক অব হিটবইটা পড়েছেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে মেঘনাদ সাহা মূলত পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন না। তিনি বিএসসি ও এমএসসি পাশ করেছেন মিশ্র গণিতে। সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় পদার্থবিজ্ঞান শুধু শিখেছেন তাই নয় - ক্রমশঃ পৌঁছে গেছেন এই বিষয়ের শিখরে।

উপমহাদেশে প্রথম সাইক্লোট্রন স্থাপিত হয়েছিল মেঘনাদ সাহার প্রচেষ্টায়। অধ্যাপক ও বিজ্ঞানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবার পরও থেমে থাকেননি তিনি। সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করার লক্ষ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বিজ্ঞানকে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কাজ করে গেছেন তিনি। দরিদ্র অশিক্ষিত মা-বাবার সন্তান হয়েও মেধা, পরিশ্রম ও নিষ্ঠার জোরে একজন মানুষ যে কত বড় হয়ে উঠতে পারেন মেঘনাদ সাহা তার জ্বলন্ত প্রমাণ।

সামাজিক জীবনে বিজ্ঞানের অবদানকে কাজে লাগানো এবং বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ গড়ে তোলার জন্য বিপ্লব শুরু করেছিলেন মেঘনাদ সাহা। সেই বিপ্লব তিনি আজীবন চালিয়ে গেছেন, করেছেন প্রগতিশীল নতুন সমাজ গড়ার সংগ্রাম। ধর্মীয় ও সামাজিক কুসংস্কার দূর করার ব্যাপারে তিনি ছিলেন অগ্রণী সৈনিক।

বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার জীবন ও কর্ম সম্পর্কে একটি সামগ্রিক চিত্র পাওয়ার উদ্দেশ্যে এই বই লিখেছি। আমাদের তরুণ প্রজন্ম মেঘনাদ সাহার মতো বিজ্ঞানীর জীবন থেকে অনুপ্রেরণা পাবে এই প্রত্যাশায় -

প্রদীপ দেব
pradipdeb2006@gmail.com
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
ডিসেম্বর ২০১৭

মেঘনাদ সাহা: বিপ্লবী পদার্থবিজ্ঞানী
প্রকাশক মো: হারুন অর রশীদ
মীরা প্রকাশন রুমী মার্কেট, ৬৮-৬৯ প্যারীদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০, বাংলাদেশ
ফোন: ৯৫৮০৬৭০, মোবাইল: ০১৭১০ ৮৫৩১৫৮, ০১৬৮৩ ৮০৭৪৪৪

প্রকাশকাল বইমেলা ২০১৮
গ্রন্থস্বত্ব ফণীন্দ্রলাল দেব পাঠাগার, নাপোড়া, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
লেখক ও প্রকাশকের লিখিত অনুমতি ছাড়া এই বইয়ের কোন অংশেরই কোন ফটোকপি, স্ক্যান, রেকর্ড কিংবা অন্য কোন তথ্য সংরক্ষণ পদ্ধতিতে অনুলিপি করা কিংবা ই-বুক আকারে প্রকাশ করা আইনত নিষিদ্ধ।
প্রচ্ছদ নাসিম আহমেদ
মুদ্রণে ঢাকা প্রিন্টার্স ৩৬ শ্রীশ দাস লেন, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০, বাংলাদেশ
মূল্য: ৩০০ টাকা।


২০। বুধ: যে গ্রহে একদিন সমান দুই বছর



সৌরজগতের আটটি গ্রহের মধ্যে আয়তনে সবচেয়ে ছোট গ্রহ বুধ। বুধ আমাদের চাঁদের চেয়ে সামান্য একটু বড়। বুধের আয়তন চাঁদের আয়তনের চেয়ে সামান্য একটু বেশি। বুধের ব্যাস চাঁদের ব্যাসের চেয়ে মাত্র শতকরা চল্লিশ ভাগ বেশি। বুধ সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ। বুধ থেকে সূর্যের দূরত্ব ৫৮ মিলিয়ন কিলোমিটার বা পাঁচ কোটি ৮০ লক্ষ কিলোমিটার। শুধুমাত্র সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের সময় দিগন্তের কাছাকাছি সূর্যের আশেপাশে বুধকে দেখা যায়। কিন্তু সেই সময় আমাদের দৃষ্টিপথ বাধাগ্রস্ত হলে বুধকে আর দেখা যায় না। হয়তো এই কারণেই বুধ সম্পর্কে আমরা সাধারণ মানুষ খুব বেশি কিছু জানি না। অথচ গ্রহগুলোর মধ্যে বুধ অনেক ব্যাপারেই শীর্ষস্থান দখল করে আছে।

সবচেয়ে দ্রুতগামী গ্রহ হলো বুধ। সূর্যের চারপাশে একবার ঘুরে আসতে পৃথিবীর যেখানে ৩৬৫ দিন লেগে যায় সেখানে বুধের লাগে মাত্র ৮৮ দিন। অর্থাৎ বুধের এক বছর হলো পৃথিবীর ৮৮ দিনের সমান। কক্ষপথে বুধের গড় গতি ঘন্টায় এক লক্ষ সত্তর হাজার কিলোমিটার যা পৃথিবীর গতির চেয়ে ১.৫৯ গুণ বেশি।

বুধের কক্ষপথ অর্থাৎ যে পথে সূর্যের চারপাশে ঘুরে সেই পথ বৃত্তাকার নয়, অনেকটা ডিম্বাকার। এই ডিম্বাকার পথে সবচেয়ে দ্রুত গতিতে ছুটলেও বুধ কিন্তু নিজের অক্ষের উপর ঘুরে খুব ধীর গতিতে। নিজের অক্ষের উপর একবার ঘুরতে পৃথিবীর যেখানে লাগে মাত্র চব্বিশ ঘন্টা, সেখানে বুধের লাগে প্রায় ৫৯ দিন। পৃথিবীর কোন নির্দিষ্ট স্থানে একটি সূর্যোদয় থেকে পরবর্তী সূর্যোদয় পর্যন্ত মোট যে সময় লাগে সেই সময়কে আমরা এক দিন বলে থাকি। পৃথিবীর ক্ষেত্রে তা গড়ে ২৪ ঘন্টা। কিন্তু বুধের ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটা পৃথিবীর নিয়মে হিসেব করলে অনেক দীর্ঘ হয়ে পড়ে। বুধের কোন একটা জায়গা থেকে সূর্যোদয় দেখার পর আবার সেই জায়গায় সূর্যোদয় দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হয় প্রায় ১৭৬ দিন। অর্থাৎ বলা চলে বুধের এক দিন সমান পৃথিবীর ১৭৬ দিন যা বুধের দুই বছরের সমান।

বুধের গড় ঘনত্ব অন্যান্য গ্রহগুলোর ঘনত্বের চেয়ে বেশি। বুধের তাপমাত্রার পার্থক্যও সবচেয়ে বেশি। বুধের যে পিঠে সূর্যের আলো পড়ে সে পিঠের তাপমাত্রা +৪৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠে যায়। আবার সে সময় অন্যপিঠে যেদিকে সূর্যের আলো পড়ে না সেদিকে তাপমাত্রা নেমে যায় -১৮৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

বুধ গ্রহে এ পর্যন্ত মাত্র দুটো বৈজ্ঞানিক মিশন পরিচালিত হয়েছে। এই দুটো মিশনের প্রথম মিশন ম্যারিনার-১০ (Mariner-10) নভোযান বুধের পাশ দিয়ে উড়ে যায় তিন বার ১৯৭৪-৭৫ সালে। তারপর দ্বিতীয় মিশন মেসেঞ্জার (MESSENGER) ২০০৪ সালে পৃথিবী থেকে যাত্রা শুরু করে ২০১১ সালে বুধের কক্ষপথে পৌঁছায়। বুধের তৃতীয় বৈজ্ঞানিক মিশন বেপি-কলম্বো'(BepiColombo) প্রস্তুতি কাজ চলছে পুরোদমে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০১৮ সালে বেপি-কলম্বোর নভোযান বুধের উদ্দেশ্যে পৃথিবী থেকে যাত্রা শুরু করবে।

বুধের বৈজ্ঞানিক মিশন থেকে এ যাবৎ প্রাপ্ত তথ্যগুলোকে সহজবোধ্য আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে এই বইতে। কিশোর বিজ্ঞান সিরিজের চতুর্থ বই বুধ। এই সিরিজের আগের তিনটি বই - সূর্য, পৃথিবী, এবং চাঁদ পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। আশা করি 'বুধ'ও পাঠকের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে।
প্রদীপ দেব
pradipdeb2006@gmail.com
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া 
অক্টোবর ২০১৭

বুধ: যে গ্রহে এক দিন সমান দুই বছর
প্রদীপ দেব

প্রকাশক
মো: হারুন অর রশীদ
মীরা প্রকাশন
রুমী মার্কেট, ৬৮-৬৯ প্যারীদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০, বাংলাদেশ
ফোন: ৯৫৮০৬৭০, মোবাইল: ০১৭১০ ৮৫৩১৫৮, ০১৬৮৩ ৮০৭৪৪৪

প্রকাশকাল
বইমেলা ২০১৮

গ্রন্থস্বত্ব
ফণীন্দ্রলাল দেব পাঠাগার, নাপোড়া, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ

লেখক ও প্রকাশকের লিখিত অনুমতি ছাড়া এই বইয়ের কোন অংশেরই কোন ফটোকপি, স্ক্যান, রেকর্ড কিংবা অন্য কোন তথ্য সংরক্ষণ পদ্ধতিতে অনুলিপি করা কিংবা ই-বুক আকারে প্রকাশ করা আইনত নিষিদ্ধ

প্রচ্ছদ
নাসিম আহমেদ

মুদ্রণে
ঢাকা প্রিন্টার্স
৩৬ শ্রীশ দাস লেন, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০, বাংলাদেশ

মূল্য: ৩০০ টাকা

২০১৭

১৯। চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন: এশিয়ার প্রথম নোবেলবিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী



পদার্থবিজ্ঞানে এশিয়ার প্রথম নোবেল পুরষ্কারবিজয়ী স্যার চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন ছিলেন একজন পরিপূর্ণ বিজ্ঞানী। প্রকৃতির রঙ, রূপ, শব্দ ও আলো নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করেছেন তিনি। প্রকৃতির যে অপরূপ সৌন্দর্য আমরা সবসময় দেখি তার পেছনে যে বৈজ্ঞানিক রহস্য লুকিয়ে আছে তা নিরলসভাবে একের পর এক উদ্‌ঘাটন করেছেন স্যার রামন।

তাঁর কাজকর্ম এবং জীবন-যাপন পদ্ধতি খেয়াল করলে দেখা যায় - জীবনের প্রতিটি সেকেন্ড যেন তিনি ব্যয় করেছেন বিজ্ঞানের পেছনে, বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধিৎসায়। এগারো বছর বয়সে ম্যাট্রিকুলেশান পাশ করেছেন, তেরো বছর বয়সে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ভর্তি হয়ে যান মাদ্রাজের প্রেসিডেন্সি কলেজের বিএ ক্লাসে। পনের বছর বয়সে বিএ, এবং ১৭ বছর বয়সে এম-এ পাস করে ফেলেন। ১৮ বছর বয়সে কর্মজীবন এবং সংসারজীবন শুরু করেন। মনে হয় যেন প্রচন্ড তাড়া নিয়ে এসেছিলেন এই পৃথিবীতে।

একেবারে শৈশবের কয়েকটি বছর বাদ দিলে বিরাশি বছরের দীর্ঘ জীবনের পুরোটাই তিনি বিজ্ঞান-চর্চায় মেতেছিলেন। ব্রিটিশ-ভারতীয় সরকারের অর্থবিভাগে উচ্চতর পদে পূর্ণকালীন চাকরি করতে করতেই তিনি গবেষণা করেছেন কলকাতার 'ইন্ডিয়ান 'অ্যাসোসিয়েশয়ান ফর দি কাল্টিভেশান অব সায়েন্স' বা আই-এ-সি-এস এ। এই অ্যাসোসিয়েশানের একেবারে সাদামাটা গবেষণাগারে বসে তিনি আবিষ্কার করেছেন যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক রহস্য। মাত্র দুইশ' রুপির যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে তিনি আবিষ্কার করেছেন 'রামন ইফেক্ট'। পরীক্ষণ পদার্থবিজ্ঞানীর আর কোন আবিষ্কার এত কম দামের যন্ত্রপাতি দিয়ে করা সম্ভব হয়নি। তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এরকম ঘটনা ঘটা সম্ভব ছিল আগে। আইনস্টাইন তাঁর পৃথিবী বদলে দেয়া তত্ত্বগুলো আবিষ্কার করেছিলেন চিঠিপত্রের ফেলে দেয়া খামের ওপর পেন্সিল দিয়ে লিখে লিখে। কিন্তু বর্তমান কম্পিউটারের যুগে তত্ত্বীয় গবেষণাতেও হাজার হাজার টাকার গবেষণা-সরঞ্জাম লাগে। ১৯২৮ সালের আবিষ্কারের জন্য ১৯৩০ সালেই স্যার রামন পেয়েছেন নোবেল পুরষ্কার। সমগ্র এশিয়ায় সেটাই ছিল প্রথম পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল পুরষ্কার।

স্যার সি ভি রামনের জীবন ও বিজ্ঞান নিয়ে অনেক বই রচিত হয়েছে। কিন্তু তাদের বেশিরভাগই ইংরেজি ভাষায়। সেই বইগুলোও বাংলাদেশে পাওয়া যায় না। স্যার রামনের জীবন ও বিজ্ঞানের একটা সামগ্রিক পরিচয় বাংলা ভাষার পাঠকদের হাতে তুলে দেয়ার লক্ষ্যে এই বই রচিত হয়েছে।

রামন-ইফেক্ট বা রামন-প্রভাব সম্পর্কে আমরা কমবেশি জানি। তাঁর নোবেল পুরষ্কারের কাহিনিও কিছুটা জানি। কিন্তু তাঁর ব্যক্তিজীবন ও ব্যক্তিগত সংগ্রামের অনেক ঘটনা আমরা অনেকেই জানি না। অতি সম্প্রতি রামনের নাতনি ডক্টর উমা পরমেশ্বরণ রামনের ব্যক্তিগত জীবনের ওপর আলোকপাত করে একটি বই লিখেছেন [Uma Parameswaran, C. V. Raman, Penguin Books, India, 2011]সেই সুবাদে ব্যক্তি রামনের অনেক অজানা কাহিনি আমাদের জানার সুযোগ হয়েছে। আমি চেষ্টা করেছি উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো নিরপেক্ষভাবে উপস্থাপন করার।

মহান মানুষের জীবনী রচনায় লেখকের নিরপেক্ষতা খুবই দরকার। কারণ অনেক সময় আমরা মহান মানুষের ভুলগুলোকেও মহান কাজ বলে মনে করে বসি। রামন তাঁর দুই পুত্রের একজনের সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছেদ করেছিলেন তাঁর ইচ্ছের বিরুদ্ধে কাজ করেছিলেন বলে।

আবার এই নোবেলবিজয়ী বিজ্ঞানীকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছিল ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশান ফর দি কাল্টিভেশান অব সায়েন্স থেকে। অথচ এই অ্যাসোসিয়েশানকে একেবারে শূন্য অবস্থা থেকে পূর্ণ অবস্থাতে নিয়ে এসেছিলেন তিনি, এনে দিয়েছিলেন নোবেল পুরষ্কার। যাঁরা এই ঘটনার পেছনে ছিলেন তাঁরা সবাই বাংলার কৃতিসন্তান।

বাংলায় রামনকে অনেকেই 'রমন' উচ্চারণ করেন। তাঁর নামের সঠিক উচ্চারণ রামন। অধ্যাপক শান্তিময় চট্টোপাধ্যায় জি এইচ কেশবানি''Raman and His Effects' বইয়ের বাংলা অনুবাদ করার সময় এ ব্যাপারে নিঃসন্দেহ হয়েছেন।

রামনের জীবনের শেষের ৩৭ বছর কেটেছে ব্যাঙ্গালোরে। ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী ব্যাঙ্গালোরের নাম এখন 'ব্যাঙ্গালুরু'। কিন্তু রামনের জীবদ্দশায় এই শহরের নাম ব্যাঙ্গালোর ছিল। তাই ইতিহাসের স্বার্থে এই বইতে ব্যাঙ্গালুরুর পরিবর্তে 'ব্যাঙ্গালোর' ব্যবহার করা হয়েছে।

রামন জীবনের একেবারে শেষ পর্যন্ত গবেষণায় সক্রিয় ছিলেন। তিনি চারটি গবেষণাগ্রন্থ এবং সাড়ে চারশোর বেশি গবেষণাপত্র রচনা করেছেন। তাঁর সব গবেষণাপত্র এখন ইন্সটিটিউটের অনলাইন আর্কাইভে পাওয়া যায়। আমি রামন রিসার্চ ইন্সটিটিউটের প্রতি কৃতজ্ঞ রামনের গবেষণাপত্র ও কিছু ছবি ব্যবহার করার সুযোগ দেবার জন্য।

বিজ্ঞানী রামন সারাজীবন চেয়েছেন মানুষের ভেতর বিজ্ঞানচেতনার উন্মেষ ঘটাতে। তিনি বিশ্বাস করতেন বিজ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা মনের ভেতর জাগ্রত না হলে বাইরে থেকে চাপাচাপি করে মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করা সম্ভব নয়। আর মনের ভেতর বিজ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা জন্মানোর জন্য আমাদের দরকার মানসম্মত বিজ্ঞানের বই।

রামন বলতেন "Ask the right questions, and nature will open the doors to her secrets." ঠিকমতো প্রশ্ন করতে জানলেই প্রকৃতির রহস্যের দরজা খুলে যাবে। কিন্তু আমাদের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় এমন এক আবদ্ধ পরিবেশ তৈরি হয়েছে যেখানে প্রশ্ন করাকে উৎসাহিত করা হয় না, পরীক্ষার ভয় দেখিয়ে প্রশ্ন আর উত্তর দুটোই জোর করে গিলিয়ে দেয়া হয়। ফলে আমাদের বিজ্ঞানভীতি যে হারে বাড়ছে, সে হারে জন্মাচ্ছে না বিজ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা। রামনের জীবন থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সঠিক প্রশ্ন করতে শিখবে এবং নির্দ্বিধায় বিনাবাধায় সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার পরিবেশ পাবে এই প্রত্যাশা করছি।
প্রদীপ দেব 
জানুয়ারি ২০১৭
 
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
pradipdeb2006@gmail.com

প্রকাশক
মো: হারুন অর রশীদ
মীরা প্রকাশন
রুমী মার্কেট, ৬৮-৬৯ প্যারীদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০, বাংলাদেশ
ফোন: ৯৫৮০৬৭০, মোবাইল: ০১৭১০ ৮৫৩১৫৮, ০১৬৮৩ ৮০৭৪৪৪
প্রকাশকাল
বইমেলা ২০১৭
গ্রন্থস্বত্ব
ফণীন্দ্রলাল দেব পাঠাগার, নাপোড়া, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
লেখক ও প্রকাশকের লিখিত অনুমতি ছাড়া এই বইয়ের কোন অংশেরই কোন ফটোকপি, স্ক্যান, রেকর্ড কিংবা অন্য কোন তথ্য সংরক্ষণ পদ্ধতিতে অনুলিপি করা কিংবা ই-বুক আকারে প্রকাশ করা আইনত নিষিদ্ধ।
প্রচ্ছদ
নাসিম আহমেদ
মুদ্রণে
ঢাকা প্রিন্টার্স
৩৬ শ্রীশ দাস লেন, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০, বাংলাদেশ
মূল্য: ৩৭৫ টাকা।


১৮। চাঁদের নাম লুনা



সৌরজগতের গ্রহগুলোর মোট চাঁদের সংখ্যা বর্তমানে ১৮১। ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। আমাদের গ্রহ পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের যে প্রতিবেশী সে আমাদের একমাত্র চাঁদ। মাত্র চার লক্ষ কিলোমিটার দূরে সে থাকে। অন্য সব চাঁদের আলাদা আলাদা নাম আছে, অথচ আমাদের চাঁদের কোন আলাদা নাম নেই। পৃথিবীর মানুষ চাঁদকে দেবতা মনে করে বিভিন্ন নাম দিয়েছে - লুনা, সেলিনি ইত্যাদি, কিন্তু সেগুলোর কোনটাই বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত নাম নয়।

চাঁদ পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ। আমাদের গ্রহের সবচেয়ে কাছের যে গ্রহ - সেটা শুক্র। পৃথিবী থেকে শুক্রের দূরত্ব প্রায় চার কোটি কিলোমিটার। পৃথিবীর বাইরে এপর্যন্ত একমাত্র চাঁদেই মানুষ পা রাখতে সক্ষম হয়েছে। এই চাঁদ নিয়ে আমাদের কৌতূহলের শেষ নেই। তাই চাঁদ নিয়ে গল্পেরও শেষ নেই। চাঁদ থেকে আমরা পেয়েছি মাসের হিসেব। Month কথাটি এসেছে moon থেকে। চাঁদ নিজের চারপাশে একবার ঘুরে আসতে যে সময় নেয়, সেই সময়টা আমাদের পৃথিবীর প্রায় এক মাসের সমান। চাঁদের প্রভাবে আমাদের পৃথিবীর জোয়ার-ভাটা হয়। চাঁদ, পৃথিবী ও সূর্যের পরস্পরের আকর্ষণ, গতি ও গতিপথের সম্মিলনে আমরা দেখি অমাবস্যা, পূর্ণিমা, চন্দ্রগ্রহণ, সূর্যগ্রহণ।

পৃথিবীতে প্রাণের আবির্ভাবের অনেক আগে থেকেই চাঁদ রাতের বেলা পৃথিবীতে আলো দিয়ে আসছে। যদিও আমরা এখন জানি যে চাঁদের নিজস্ব কোন আলো নেই, সূর্যের আলোই চাঁদের গায়ে প্রতিফলিত হয়ে আসে পৃথিবীতে, তবুও আমরা চাঁদের আলোর প্রতি বিশেষ অনুরক্ত। চাঁদের আলো আমাদের অনেক কল্পনার উৎস। অনেক কবিতা, গল্প, গান, ছবি তৈরি হয়েছে চাঁদ নিয়ে।

প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ চাঁদ সম্পর্কে কৌতূহলী হয়ে খালি চোখে চাঁদ পর্যবেক্ষণ করতে করতে অনেক কিছু জেনে ফেলেছে চাঁদ সম্পর্কে। পৃথিবী থেকে চাঁদ ও সূর্য সবসময় এমন দূরত্বে অবস্থান করে যে আমাদের কাছে চাঁদ ও সূর্যকে সমান আকৃতির উজ্জ্বল থালার মতো মনে হয়। প্রাচীনকালের পন্ডিতরা মনে করেছিলেন যে পৃথিবীকে কেন্দ্র করেই আকাশের সবকিছু ঘুরে বেড়ায়। সূর্য, চাঁদ এবং অন্যান্য যা কিছু আকাশে দেখা যায় - সবকিছুকেই মানুষ গ্রহ বলে মনে করতো সেই সময়। দিনের বেলা সূর্য এবং রাতের বেলা চাঁদ আলো দেয় - তাই চাঁদ ও সূর্যকে দেবতাজ্ঞানে পূজা করেছে প্রাচীন মানুষ। কিন্তু মানুষ আধুনিক হওয়ার পরেও এই সূর্যপূজা বা চন্দ্রপূজা বন্ধ হয়ে যায়নি। চাঁদকে ঘিরে রয়েছে মানুষের অনেক রকমের সংস্কার। বিভিন্ন সংস্কৃতিতে বিভিন্ন রকম সংস্কার চালু আছে চাঁদের ব্যাপারে।

ক্রমে ক্রমে মানুষের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দক্ষতা বেড়েছে। মানুষ জেনেছে যে আমরা সৌরকেন্দ্রিক গ্রহে বাস করি। সূর্যকে ঘিরেই ঘুরছে আমাদের পৃথিবী। কিন্তু প্রাচীন পন্ডিতরা একটা বিষয়ে সঠিক আন্দাজ করেছিলেন। সেটা হলো চাঁদ পৃথিবীর চারপাশে ঘুরে।

বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে মানুষ চাঁদে যাবার চেষ্টা করতে শুরু করেছে। ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই প্রথমবারের মতো চাঁদের বুকে পা রেখেছে পৃথিবীর মানুষ। তারপর আরো পাঁচবার চাঁদের বুকে হেঁটেছে, গাড়ি চালিয়েছে মানুষ। আজ আমরা চাঁদ সম্পর্কে অনেক কিছু জানি। নিকট ভবিষ্যতে চাঁদে হয়তো গড়ে উঠবে মানুষের বসতি।

চাঁদ সম্পর্কে সাম্প্রতিকতম বিজ্ঞানের সহজ বর্ণনা এই "চাঁদের নাম লুনা"। কিশোর বিজ্ঞান সিরিজের এটা তৃতীয় বই। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে লেখা হলেও সূর্য ও পৃথিবীর মতো চাঁদের বিজ্ঞানও সবার ভালো লাগবে আশা করি।

প্রদীপ দেব
ডিসেম্বর ২০১৬
 
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
pradipdeb2006@gmail.com

প্রকাশক
মো: হারুন অর রশীদ
মীরা প্রকাশন
রুমী মার্কেট, ৬৮-৬৯ প্যারীদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০, বাংলাদেশ
ফোন: ৯৫৮০৬৭০, মোবাইল: ০১৭১০ ৮৫৩১৫৮, ০১৬৮৩ ৮০৭৪৪৪

প্রকাশকাল
বইমেলা ২০১৭

গ্রন্থস্বত্ব
ফণীন্দ্রলাল দেব পাঠাগার, নাপোড়া, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
লেখক ও প্রকাশকের লিখিত অনুমতি ছাড়া এই বইয়ের কোন অংশেরই কোন ফটোকপি, স্ক্যান, রেকর্ড কিংবা অন্য কোন তথ্য সংরক্ষণ পদ্ধতিতে অনুলিপি করা কিংবা ই-বুক আকারে প্রকাশ করা আইনত নিষিদ্ধ।

প্রচ্ছদ
নাসিম আহমেদ
মুদ্রণে
ঢাকা প্রিন্টার্স
৩৬ শ্রীশ দাস লেন, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০, বাংলাদেশ
মূল্য: ৩৫০ টাকা

১৭। ম্যান্ডেলার দেশে



পৃথিবীতে মানুষের প্রথম পথচলা শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় চল্লিশ লক্ষ বছর আগে আফ্রিকায়। আফ্রিকা মহাদেশের সর্বদক্ষিণের দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা। ইওরোপিয়ানরা এই দেশে যাবার পথ খুঁজে পেয়েছিল ১৪৮৮ সালে। সেই থেকে শুরু করে ধরতে গেলে তারাই শাসন এবং শোষণ করেছে এই দেশ ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত। তারপর দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের দীর্ঘসংগ্রামের জয় হয়েছে নেলসন ম্যান্ডেলার নেতৃত্বে। প্রকৃত স্বাধীন গণতন্ত্রের স্বাদ পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষ।

আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে দক্ষিণের শহর কেইপ টাউন - প্রকৃতির এক অপরূপ সৃষ্টি। একদিকে ভারত মহাসাগর আর অন্যদিকে আটলান্টিক মহাসাগরবেষ্টিত কেইপ টাউনের প্রকৃতি, মানুষ, আর ইতিহাসের সাবলিল রেখাচিত্র ও আলোকচিত্রের সমন্বয় এই ভ্রমণকাহিনি - ম্যান্ডেলার দেশে।

আমার খুব ভালোলাগা কাজগুলোর একটি হলো ঘুরে বেড়ানো। স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ানোর যে আনন্দ আছে তার সবটুকু আমি উপভোগ করার চেষ্টা করি যখন সব কাজ ছেড়ে বেরিয়ে পড়ি। ঘরের বাইরে ঘুরতে ঘুরতে নানা দেশের নানা রঙের নানা রকমের মানুষের সাথে পরিচয় হয় বিভিন্ন সময়। দেখা হয় অনেক না দেখা দেশ, শহর, সভ্যতা। তখন ভালো লাগা বা ভালো না লাগার যে অনুভূতি হয় সেটা আমার প্রিয়জনদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্যই আমার ঘুরে বেড়ানোর গল্প বা ভ্রমণকাহিনি লেখা। এর সাহিত্যমূল্য আছে কি নেই তা নিয়ে আমি খুব একটা ভাবি না। বেড়াতে যাবার সময় আদরের শ্রদ্ধার ভালোবাসার মানুষগুলোকে সাথে করে নিয়ে যেতে পারি না কোন সময়েই। কিন্তু যেখানেই যাই মনে মনে তারা থাকে আমার সাথে।

আফ্রিকা মহাদেশে এবারই প্রথম যাওয়া। কেইপ টাউন শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করেছে। ভালো লেগেছে সেখানকার অনেককিছুই। সেই ভালোলাগার কিছুটাও যদি এ লেখায় প্রকাশিত হয় তাতেই আমি খুশি।

বইতে ব্যবহৃত বেশিরভাগ ছবিই আমার তোলা। যেগুলো আমার তোলা নয় সেগুলোর উৎস ছবির ক্যাপশানে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রদীপ দেব
pradipdeb2006@gmail.com
ডিসেম্বর ২০১৬ 
মেলবোর্ন

ম্যান্ডেলার দেশে
প্রদীপ দেব

প্রকাশক
মো: হারুন অর রশীদ
মীরা প্রকাশন
রুমী মার্কেট, ৬৮-৬৯ প্যারীদাস রোড, বাংলাবাজার ঢাকা ১১০০
ফোন: ৯৫৮০৬৭০, মোবাইল: ০১৭১০ ৮৫৩১৫৮, ০১৬৮৩ ৮০৭৪৪৪
Email:meeraprokashon@yahoo.com.  

প্রকাশকাল
বইমেলা ২০১৭

গ্রন্থস্বত্ব
ফণীন্দ্র লাল দেব পাঠাগার, নাপোড়া, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম ৪৩৯০

লেখক ও প্রকাশকের লিখিত অনুমতি ছাড়া এই বইয়ের কোন অংশেরই কোন ফটোকপি, স্ক্যান, রেকর্ড কিংবা অন্য কোন তথ্য সংরক্ষণ পদ্ধতিতে অনুলিপি করা কিংবা ই-বুক আকারে প্রকাশ করা আইনত নিষিদ্ধ।

প্রচ্ছদ
নাসিম আহমেদ

মুদ্রণে
ঢাকা প্রিন্টার্স, ৩৬ শ্রীশ দাস লেন, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০

মূল্য: ৪০০ টাকা।


১৬। উপমহাদেশের এগারজন পদার্থবিজ্ঞানী (নতুন সংস্করণ)



উপমহাদেশের এগারজন পদার্থবিজ্ঞানী - দ্বিতীয় সংস্করণ
প্রকাশকাল: বইমেলা ২০১৭
প্রকাশক: মো: হারুন অর রশীদ
মীরা প্রকাশন
রুমী মার্কেট, ৬৮-৬৯ প্যারীদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০, বাংলাদেশ
গ্রন্থস্বত্ব: ফণীন্দ্রলাল দেব পাঠাগার, নাপোড়া, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
প্রচ্ছদ: নাসিম আহমেদ

ভূমিকা:
প্রাকৃতিক বিজ্ঞান তথা পদার্থবিজ্ঞানের চর্চা ও গবেষণার সূত্রপাত হয়েছে মানব সভ্যতার একদম শুরু থেকেই এবং তা হয়েছে প্রকৃতি পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে। সে হিসেবে পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাস প্রায় পাঁচ হাজার বছরেরও বেশি পুরনো। কিন্তু বিজ্ঞান গবেষণার সাথে এই উপমহাদেশের সংযোগ ঘটেছে মাত্র দুশ বছর আগে। ইংরেজ শাসকেরা ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ লুঠ করার উদ্দেশ্যে বিলেত থেকে প্রযুক্তি ও প্রযুক্তিবিদ নিয়ে এসে অনুসন্ধান চালাতে শুরু করেছিল আঠারো শতকের শেষের দিকে। কিন্তু সত্যিকারের কোন বিজ্ঞান-শিক্ষার সূত্রপাত হয়নি। নিজেদের স্বার্থেই ইংরেজরা প্রতিষ্ঠা করেছিল রয়েল বোটানিক্যাল গার্ডেনস, মানমন্দির, সার্ভে স্কুল, ট্রিগনোমেট্রিক্যাল সার্ভে, এশিয়াটিক সোসাইটি। জর্জ এভারেস্ট এসে জরিপ কাজে নেতৃত্ব দিলেন ঠিকই - কিন্তু মূল কাজটা যিনি করেছিলেন - হিন্দু কলেজের উজ্জ্বল ছাত্র রাধানাথ শিকদার - তাঁকে কোন ধরনের কৃতিত্বের ভাগ না দিয়ে নিজের নামেই চালিয়ে দিলেন সবকিছু। এরকম বঞ্চনার ইতিহাস অনেক লম্বা। তারপরেও ছিঁটেফোঁটা সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সংগ্রাম ও সাধনায় বিজ্ঞানের জগতে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছেন উপমহাদেশের বিজ্ঞানীরা।

ঊনিশ শতকের শেষের দিক থেকে বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত উপমহাদেশের পদার্থবিজ্ঞানে অনেকগুলো নতুন মাইলফলক স্থাপিত হয়েছে। যাঁদের মেধা, পরিশ্রম ও অক্লান্ত সাধনায় আবিষ্কৃত হয়েছে পদার্থবিজ্ঞানের অনেক নতুন তত্ত্ব, প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিশ্বমানের গবেষণা প্রতিষ্ঠান, উন্নতি হয়েছে প্রযুক্তির, অর্জিত হয়েছে নোবেল পুরষ্কার- তাঁদের মধ্য থেকে এগারজন পদার্থবিজ্ঞানীর জীবন-সংগ্রাম ও বিজ্ঞান-সাধনার কথা সহজভাবে বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি এই বইতে।

উপমহাদেশের প্রথম পদার্থবিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু বেতার-তরঙ্গ নিয়ে মৌলিক গবেষণা শুরু করেন মার্কনিরও অনেক আগে এবং ১৮৯৫ সালে বিশ্বে সর্বপ্রথম কৃত্রিম মাইক্রোওয়েভ উৎপাদনে সাফল্য লাভ করেন। পদার্থবিজ্ঞানে অনেক যুগান্তকারী আবিষ্কারের পাশাপাশি উদ্ভিদের সংবেদনশীলতা নিয়ে গবেষণার সূত্রপাত করেছিলেন জগদীশচন্দ্র বসু।

মহাজাগতিক রশ্মি, পারমাণবিক ও নিউক্লিয়ার পদার্থবিদ্যার গবেষণায় অসীম অবদান রেখেছেন অধ্যাপক দেবেন্দ্রমোহন বসু। তিনিই প্রথম ফটোগ্রাফিক ইমালশন পদ্ধতিতে মেসনএর ভর নির্ণয় করেছিলেন। তাঁর পদ্ধতি অনুরসণ করে মেসনের ভর নির্ণয়ের জন্য ১৯৫০ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী সিসিল পাওয়েল।

রামন ইফেক্টপদার্থবিজ্ঞানের জগতে এক আশ্চর্য মাইলফলক হয়ে আছে ১৯২৮ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি থেকে - যেদিন এই আবিষ্কারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। রামন-প্রভাব আবিষ্কারের জন্য সি ভি রামন পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন ১৯৩০ সালে। শুধু ভারতীয় উপমহাদেশ নয়, সমগ্র এশিয়ার মধ্যে তিনিই হলেন বিজ্ঞানে প্রথম নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী।

ভারতীয় উপমহাদেশে বেতার যোগাযোগ সম্পর্কিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাদান শুরু হয়েছে যাঁর হাত দিয়ে - তিনিও আরেকজন বাঙালী পদার্থবিজ্ঞানী - ডক্টর শিশির কুমার মিত্র। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেতার-পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সূচনা করেন তিনি। তিনিই উপমহাদেশের প্রথম বেতার সম্প্রচার চালু করেন - কলকাতা থেকে তাঁর রেডিও টু-সি-জেডকেন্দ্রের মাধ্যমে। বায়ুমন্ডলের আয়নোস্ফিয়ারের বিভিন্ন স্তরের অস্তিত্বের পরীক্ষামূলক প্রমাণ প্রথম তাঁর হাত দিয়েই ঘটেছিল।

ভারতীয় উপমহাদেশে শুধু নয় - সমগ্র বিজ্ঞানের জগতে আধুনিক জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানের ভিত্তি গড়ে উঠেছে যে কজন মানুষের মৌলিক তত্ত্বের ওপর - অধ্যাপক মেঘনাদ সাহা তাঁদের অন্যতম। ১৯২০ সালে মেঘনাদ সাহার তাপীয় আয়নায়নের সমীকরণ (আয়নাইজেশান ইকুয়েশান) প্রকাশিত হবার পর থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানে যত গবেষণা হয়েছে তাদের প্রায় সবগুলোই সাহার সমীকরণ দ্বারা প্রভাবিত। মেঘনাদ সাহা নোবেল পুরষ্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছেন চার বার। উপমহাদেশে নিউক্লিয়ার পদার্থবিজ্ঞান পড়ানো শুরু হয়েছে মেঘনাদ সাহার হাত দিয়ে। মেঘনাদ সাহা নিরলস চেষ্টা ও পরিশ্রমে গড়ে তুলেছেন ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্স।

সত্যেন্দ্রনাথ বসু বোস-আইনস্টাইন সংখ্যায়নও বোসন কণার জন্য বিখ্যাত। তাঁর বসু-আইনস্টাইন ঘনীভবনসংক্রান্ত গবেষণার জন্য ২০০১ সালে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন কলরাডো ইউনিভার্সিটির এরিক কর্নেল ও কার্ল ওয়াইম্যান এবং এম-আই-টির ভলফ্‌গ্যাং কেটেরি। বসু তাঁর বিখ্যাত গবেষণাগুলো করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করার সময়।

রামন-ইফেক্ট আবিষ্কারের সাথে রামনের পাশাপাশি অন্য যে মানুষের মেধা ও পরিশ্রম প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল তিনি স্যার কে এস কৃষ্ণান। তিনি পদার্থবিজ্ঞানের এমন অনেক শাখায় মৌলিক অবদান রেখেছেন যে তাঁর পরিচয় হয়ে ওঠে একজন পরিপূর্ণ পদার্থবিজ্ঞানীহিসেবে। ১৯২৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে যোগ দিয়ে ক্রিস্টাল ম্যাগনেটিজম বিষয়ে গবেষণায় নতুন দিগন্তের সূচনা করেন কৃষ্ণান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমিত সুযোগের মধ্যে বসে পরবর্তী পাঁচ বছরে এ বিষয়ে ব্যাপক গবেষণা করেন কৃষ্ণান। বিভিন্ন বিষয়ে কৃষ্ণানের গবেষণাগুলো ছিল সময়ের চেয়ে এগিয়ে। পদার্থবিজ্ঞানের যে শাখাকে আজ আমরা কনডেন্সড ম্যাটার ফিজিক্সহিসেবে জানি তার পরিপূর্ণ বিকাশের অনেক আগেই কৃষ্ণান এ বিষয়ের অনেক গবেষণা করে রেখেছেন।

ব্রিটিশ শাসনের অবসানের সাথে সাথে স্বাধীন ভারতকে বৈজ্ঞানিক দক্ষতায় গড়ে তোলার জন্য দিনরাত প্রাণপাত পরিশ্রম করেছেন যে বিজ্ঞানী তাঁর নাম হোমি ভাবা। নিউক্লিয়ার পদার্থবিজ্ঞানে ইলেকট্রন-পজিট্রনস্ক্যাটারিং-এর পরিমাণ হিসেব করার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন যা ভাবা স্ক্যাটারিং তত্ত্বনামে পরিচিত। ভারতের পারমাণবিক শক্তির বিকাশ ঘটে হোমি ভাবার হাত ধরে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারবর্তমানে বিশ্বের একটি প্রথম শ্রেণির পারমাণবিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান।

১৯৯৮ সালের ২১ ডিসেম্বর নাসার সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করা হয় এক্স-রে অবজারভেটরির নাম রাখা হয়েছে সুব্রাহ্মনিয়ান চন্দ্রশেখরের নামানুসারে চন্দ্র। আইনস্টাইনের পর চন্দ্রশেখরই একমাত্র ব্যক্তি যিনি মহাবিশ্ব নিয়ে এত দীর্ঘসময় ধরে এবং এত গভীরভাবে ভেবেছেন। শুধু তাই নয় মহাবিশ্বকে বুঝেছিলেন আইনস্টাইনের চেয়েও সঠিকভাবে, কারণ আইনস্টাইন ব্যাল কহোলের অস্তিত্ব স্বীকার করেননি। আর চন্দ্রশেখর ব্ল্যাকহোলের অস্তিত্ব প্রমাণ করেছেন। নভোপদার্থবিজ্ঞানের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র সুব্রাহ্মনিয়ান চন্দ্রশেখর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন ১৯৮৩ সালে। নক্ষত্রের ভরের সীমা সংক্রান্ত যে গবেষণার জন্য চন্দ্রশেখর নোবেল পুরষ্কার পান সেই গবেষণার সূত্রপাত হয়েছিল ভারতে - চন্দ্রশেখরের বয়স তখন মাত্র উনিশ বছর।

ভারতে মহাকাশ গবেষণা ও রকেট প্রযুক্তির ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে পদার্থবিজ্ঞানী বিক্রম সারাভাই'র অক্লান্ত প্রচেষ্টায় এবং সুদূরপ্রসারী নেতৃত্ব ও পরিকল্পনায়। আজকের ভারত টেলিযোগাযোগে যে এত উন্নতি করেছে, টেলিভিশন সম্প্রচারে পরিমাণগত দিক থেকে বিশ্বের প্রথম দিকে স্থান করে নিয়েছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পূর্ব-সতর্কীকরণ সহ চব্বিশ ঘন্টা প্রকৃতির ওপর নজর রাখছে - ষাটের দশকের শুরুতেও এসব কিছুই ছিল না। শিল্পোন্নত দেশগুলোতে সেদিন যেসব সুবিধে ছিল তা ভারতের মত স্বল্প-আয়ের দেশে প্রয়োগ করার চিন্তাও ছিল অসম্ভব। কিন্তু মাত্র এক দশকের মধ্যেই যিনি এই অসম্ভবকে সম্ভব করে ফেলেছেন তিনি বিজ্ঞানী বিক্রম সারাভাই।

বিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কারপ্রাপ্ত প্রথম মুসলমান বিজ্ঞানী প্রফেসর আবদুস সালাম। পদার্থবিজ্ঞানের জগতে তাঁর সত্যিকারের বিচরণ শুরু হয়েছিল ১৯৪৭ সাল থেকে যখন তিনি লাহোর থেকে কেমব্রিজে পড়তে যান। দুর্বল নিউক্লিয়ার বল ও তড়িৎচৌম্বক বলের সমন্বয় সাধন করার জন্য ১৯৭৯ সালে নোবেল পুরষ্কার পান তিনি। তৃতীয় বিশ্বের বিজ্ঞানীদের সহযোগিতা দেয়ার জন্য তিনি গড়ে তুলেছেন আন্তর্জাতিক তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র। বাংলাদেশের পদার্থবিজ্ঞানের গবেষণায় গতিসঞ্চার করার জন্য অনেক সহযোগিতা করেছেন আবদুস সালাম।

এই বইতে যাঁদের কথা বলা হয়েছে তাঁদের সবারই জন্ম, পড়াশোনা, গবেষণা ভারতীয় উপমহাদেশে- বাংলাদেশ, ভারত কিংবা পাকিস্তানে। পদার্থবিজ্ঞানের গবেষণায় আমরা এঁদেরই উত্তরাধিকার বহন করছি। তাঁদের জীবন ও কাজের কথা অনেক বিজ্ঞান শিক্ষার্থীর কাছেই হয়তো অজানা। নতুন প্রজন্মের পাঠক যদি এঁদের জীবন ও বিজ্ঞান সাধনা থেকে কিছুটা হলেও অনুপ্রেরণা পায় তবে মনে করবো এই বইয়ের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।

বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল শুদ্ধস্বর থেকে ২০১৪ সালে। বন্ধু অজিত পোদ্দারের উৎসাহে এবং মীরা প্রকাশনীর মো: হারুন অর রশীদ সাহেবের উদ্যোগে এবার বইটির পরিবর্ধিত নতুন সংস্করণ প্রকাশিত হলো। অধ্যাপক শ্রাবণী পাল বইটির পান্ডুলিপি নিরীক্ষণ করে দিয়েছেন। এঁদের সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।

প্রদীপ দেব
জুন ২০১৬
 
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া


২০১৬

১৫। জগদীশচন্দ্র বসু: বিশ্বের প্রথম জীবপদার্থবিজ্ঞানী


জগদীশচন্দ্র বসু
বিশ্বের প্রথম জীবপদার্থবিজ্ঞানী

"অন্ধ ভূমিগর্ভ হতে শুনেছিলে সূর্যের আহ্বান
প্রাণের প্রথম জাগরণে, তুমি বৃক্ষ, আদিপ্রাণ-
ঊর্ধ্বশীর্ষে উচ্চারিলে আলোকের প্রথম বন্দনা
ছন্দোহীন পাষাণের বক্ষ-'পরে; আনিলে বেদনা
নিঃসাড় নিষ্ঠুর মরুস্থলে।।"

বন্ধু জগদীশচন্দ্র বসুর প্রভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন তাঁর বিখ্যাত কবিতা 'বৃক্ষবন্দনা'। কবিতার শুরুতে বৃক্ষ সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ যা বলেছেন তার অনেকখানি প্রযোজ্য বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসুর ক্ষেত্রেও। ইওরোপে বিজ্ঞানচর্চা শুরু হবার কয়েক শতাব্দী পরেও আমাদের এই উপমহাদেশের বিজ্ঞান-ভূমি ছিল অন্ধকারে। জগদীশচন্দ্র বসুই ছিলেন প্রথম বিজ্ঞানী যিনি এই উপমহাদেশে আধুনিক বিজ্ঞান-গবেষণার জাগরণ ঘটিয়েছিলেন। তিনিই বিশ্ববিজ্ঞানের আসরে প্রমাণ করে দিয়েছিলেন যে সুবিধাবঞ্চিত তৎকালীন পরাধীন ভারতের বাঙালিও নিজের অধ্যবসায় ও মেধার জোরে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে।

জগদীশচন্দ্র বসু ছিলেন উপমহাদেশের প্রথম পদার্থবিজ্ঞানী। শুধু তাই নয়- বিশ্বের বিজ্ঞানজগতে তাঁর যে অবদান তার সবটুকু আমরা সেই সময়ে বুঝতেও পারিনি। সেমিকন্ডাক্টর পদার্থবিজ্ঞানের স্বতন্ত্র যাত্রা শুরু হবার অনেক আগেই - তিনি সেমিকন্ডাক্টর দিয়ে দেশীয় পদ্ধতিতে যন্ত্রপাতি তৈরি করে গবেষণা করেছেন। সলিড স্টেট ফিজিক্সের জন্মের অনেক বছর আগেই জগদীশচন্দ্র সলিড স্টেট ফিজিক্সের প্রয়োগ ঘটিয়েছেন।

মাইক্রোওয়েভ গবেষণার একজন পথিকৃৎ জগদীশচন্দ্র। তাঁর তৈরি যন্ত্র ব্যবহার করে বেতার যোগাযোগে সাফল্য দেখিয়েছেন ইতালির গুল্গিয়েল্‌মো মার্কনি এবং সেজন্য তিনি নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন। আমরা এখন হা-হুতাশ এবং ক্ষোভ দেখাই যে জগদীশচন্দ্র বসুকে বঞ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু জগদীশচন্দ্র বসু নিজে কোনদিন এই ব্যাপারে একটা শব্দও উচ্চারণ করেননি। কারণ পুরষ্কারের দিকে তাঁর কোন নজরই ছিল না কখনো। তাছাড়া সেই সময়ে (আজ থেকে শতাধিক বছর আগে) নোবেল পুরষ্কার নিয়ে এত বেশি বাড়াবাড়ি রকমের হৈ চৈ করা হতো না। নোবেল পুরষ্কার তখন ছিল যে কোন পুরষ্কারের মতই একটা ইওরোপীয় পুরষ্কার মাত্র। বৈজ্ঞানিক ইতিহাসের সাম্প্রতিক গবেষণায় বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে যে প্রথম দিকের বেতার যোগাযোগব্যবস্থায় জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান অনস্বীকার্য। মার্কনির নাতি ড. ফ্রান্সেস্কো মার্কনি - যিনি নিজেও একজন বেতার-জ্যোতির্বিজ্ঞানী - কলকাতায় বসু বিজ্ঞান মন্দিরে এসে বলেছেন যে নোবেল পুরষ্কার জগদীশচন্দ্র বসুরই প্রাপ্য ছিল।

পদার্থবিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞানের সমন্বয়ে বায়োফিজিক্স বা জীবপদার্থবিজ্ঞান এখন একটি দ্রুত সম্প্রসারণশীল গবেষণাক্ষেত্র। কিন্তু একশ' বছর আগে যখন জগদীশচন্দ্র বসু এই সম্মিলিত ক্ষেত্রে গবেষণা করেছেন তখন এই বিষয়ের আলাদা কোন অস্তিত্বই ছিল না। তিনি ছিলেন বিশ্বের প্রথম জীবপদার্থবিজ্ঞানী।

১৮৯৫ সালে জার্মানির উইলহেল্‌ম রন্টগেন যখন এক্স-রে আবিষ্কার করেন - জগদীশচন্দ্র বসু তখন ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ - মাইক্রোওয়েভ নিয়ে গবেষণা করছেন। এক্স-রেও উচ্চ-কম্পাঙ্কের ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ। কলকাতায় নিজের গবেষণাগারে সেই সময় তিনি এক্স-রে উৎপাদন করেছিলেন। এই উপমহাদেশে চিকিৎসা ব্যবস্থায় এক্স-রে'র প্রথম প্রয়োগ করেছিলেন জগদীশচন্দ্র বসু।

পদার্থবিজ্ঞানে অনেক যুগান্তকারী আবিষ্কারের পাশাপাশি উদ্ভিদের সংবেদনশীলতা নিয়ে গবেষণার সূত্রপাত করেন জগদীশচন্দ্র। উদ্ভিদও যে উদ্দীপনায় সাড়া দেয় - এ তথ্য জগদীশচন্দ্র বসুর আগে কেউ উপলব্ধি করেননি, প্রমাণ করতে পারেননি। জীব ও জড়ের মধ্যে সাড়ার যে ঐক্য অর্থাৎ বাইরের উত্তেজনায় জীব ও জড় যে প্রায় একই রকমের সাড়া দেয় জগদীশচন্দ্রের আগে তা কেউ চিন্তাও করেননি। এখন আমরা যে রোবটিক সায়েন্স নিয়ে এত মাতামাতি করি - তার শুরু কিন্তু হয়েছিল জগদীশচন্দ্রের হাতে।

শুধু বিজ্ঞান নয়, বাংলা ভাষায় প্রথম কল্পকাহিনির লেখকও ছিলেন জগদীশচন্দ্র বসু। তাঁর লেখা সায়েন্স ফিকশান 'নিরুদ্দেশের কাহিনি' প্রথম 'কুন্তলীন পুরষ্কার' লাভ করেছিল। শিশুকিশোরদের জন্য বেশ কিছু বিজ্ঞান-প্রবন্ধ লিখেছিলেন জগদীশচন্দ্র যার সাহিত্য-মূল্যও অনেক। জগদীশচন্দ্র বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সভাপতিও ছিলেন কয়েক বছর। বাংলায় বিজ্ঞান-সাহিত্যে জগদীশচন্দ্রের অবদান ঐতিহাসিক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন জগদীশচন্দ্রের খুবই কাছের বন্ধু। জগদীশচন্দ্র বসুকে দেশের মানুষের কাছে সম্মানের আসনে তুলে ধরার জন্য সবচেয়ে বেশি চেষ্টা যিনি করেছিলেন তিনি রবীন্দ্রনাথ। বিদেশে জগদীশচন্দ্রের বৈজ্ঞানিক সম্মানকে রবীন্দ্রনাথ দেখেছেন বিদেশীদের বিরুদ্ধে পরাধীন ভারতবর্ষের জয় হিসেবে।

ভারতীয় বিজ্ঞানের জয়গাথা বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য জগদীশচন্দ্র বসু তাঁর সারাজীবনের সব সঞ্চয় দিয়ে গড়ে তুলেছেন 'বসু বিজ্ঞান মন্দির'। এই বিজ্ঞান মন্দির এখন 'বোস রিসার্চ ইনস্টিটিউট' নামে একটি প্রথম সারির গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

বাঙালি স্বভাবতই আবেগপ্রবণ। তাই আমরা যাদের সম্মানের আসনে বসাই - অনেকটা অন্ধভাবেই তা করি। নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের থাকে না। তাই গত এক শতাব্দী ধরে জগদীশচন্দ্র বসু সম্পর্কে যত লেখা প্রকাশিত হয়েছে সেখানে শুধু জগদীশচন্দ্র বসুর গুণগানই করা হয়েছে। 'বিজ্ঞানী' জগদীশ বসুর চেয়েও প্রধান হয়ে উঠেছেন 'আচার্য' জগদীশ বসু। ভালোবাসার আবেগে দেবতা বানাতে গিয়ে আমরা খেয়াল করি না যে জগদীশবসু তাঁর বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধগুলোর কোনটাতেই তাঁর সহকর্মীদের কারো নাম প্রকাশ করেননি বা সামান্যতম কৃতজ্ঞতাস্বীকারও করেননি। তাঁর জীবদ্দশায় সি ভি রামন কলকাতায় বসেই গবেষণা করে 'রামন ইফেক্ট' আবিষ্কার করেছেন এবং সেজন্য নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন। অথচ জগদীশচন্দ্র ভারতীয় বিজ্ঞানের প্রসারে তাঁর নিজের চেষ্টা ও আগ্রহের ব্যাপারে সোচ্চার হলেও কখনো সি ভি রামন সম্পর্কে প্রশংসা তো দূরের কথা, সামান্য উল্লেখ পর্যন্ত করেননি কোথাও। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও জগদীশচন্দ্রের ব্যাপারে এতটা উচ্ছ্বসিত, কিন্তু রামনের ব্যাপারে একেবারেই নিরব। সিস্টার নিবেদিতার সাথে খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল জগদীশচন্দ্র বসুর। নিবেদিতা জগদীশচন্দ্র বসুর অনেক গবেষণাপত্র লিখে দিয়েছেন, কয়েকটা বইও সম্পাদনা করেছেন। কিন্তু জগদীশচন্দ্র সেটাও কখনো সরাসরি প্রকাশ্যে স্বীকার করেননি।

জগদীশচন্দ্র বসুর জীবন ও তাঁর বিজ্ঞান-গবেষণা সম্পর্কে একটা সামগ্রিক ধারণা দেয়ার লক্ষ্যেই এই বইটা লিখেছি। মীরা প্রকাশন 'বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানী' সিরিজ বের করছে বাংলাদেশে বিজ্ঞানচর্চা বেগবান করার মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে। তাঁদের উদ্দেশ্য সফল হবে বলেই আমার বিশ্বাস।
প্রদীপ দেব
জানুয়ারি ২০১৬
 
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
প্রকাশক
মো: হারুন অর রশীদ
মীরা প্রকাশন
রুমী মার্কেট, ৬৮-৬৯ প্যারীদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০, বাংলাদেশ
ফোন: ৯৫৮০৬৭০, মোবাইল: ০১৭১০ ৮৫৩১৫৮, ০১৬৮৩ ৮০৭৪৪৪
প্রকাশকাল
বইমেলা ২০১৬
গ্রন্থস্বত্ব
ফণীন্দ্রলাল দেব পাঠাগার, নাপোড়া, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
প্রচ্ছদ
নাসিম আহমেদ
ISBN: 978-984-775-224-2


১৪। পৃথিবী: সূর্যের তৃতীয় গ্রহ



পৃথিবী: সূর্যের তৃতীয় গ্রহ

মহাবিশ্বের অগণিত গ্যালাক্সির কোটি কোটি নক্ষত্রের মধ্যে অতি সাধারণ একটি নক্ষত্র - সূর্য। আর এই সাধারণ সূর্যের এক অসাধারণ গ্রহ - আমাদের পৃথিবী। প্রায় সাড়ে চারশো কোটি বছর আগে এই পৃথিবীর জন্ম হয়েছে একটি গ্যালাক্সির নক্ষত্র তৈরির কারখানায় নক্ষত্রের ধুলিকণা (stardust) থেকে। সূর্যের চারপাশে প্রচন্ডবেগে ঘুরতে ঘুরতেই তৈরি হয়েছে পৃথিবীসহ আরো সব গ্রহ। পৃথিবী এখনো ঘন্টায় এক লাখ আট হাজার কিলোমিটার বেগে ছুটছে সূর্যের চারপাশে একটি উপবৃত্তাকার পথ ধরে। প্রচন্ড গতির একটি রকেটের গতিবেগ ঘন্টায় ত্রিশ হাজার কিলোমিটারের মতো। সেই হিসেবে রকেটের গতির তিনগুণ গতিসম্পন্ন একটা গ্রহ-যানের উপর আমাদের সবকিছু - আমাদের পৃথিবী।

শুরুতে এই গ্রহ ছিল প্রচন্ড উত্তপ্ত এক বিশাল অগ্নিপিন্ড। সারাক্ষণ যেখানে আঘাত হানছিলো বিশাল আকৃতির গ্রহাণু (asteroid) আর জ্বলন্ত সব ধুমকেতুর (comet) দল। এদেরই আঘাতে পৃথিবীর একটি অংশ ছিটকে পড়ে মহাজাগতিক নিয়মে তৈরি হয়েছে পৃথিবীর একমাত্র চাঁদ।

তারপর কেটে গেছে শত কোটি বছর। পৃথিবীতে প্রাণের উদ্ভব হয়েছে। অতিকায় ডায়নোসররা দাপিয়ে বেড়িয়েছে পৃথিবীর এদিকে-ওদিকে। এক সময় এই অতিকায় প্রাণিরা অদৃশ্য হয়ে গেছে। তারপর আরো কোটি বছর ধরে ক্রমাগত বিবর্তনের ফলে মানুষের আবির্ভাব এই পৃথিবীতে। প্রাকৃতিক শক্তির সাথে সংগ্রাম করতে করতে মানুষ উন্মোচন করছে প্রকৃতির অজানা রহস্য। পৃথিবীর মানুষ মহাবিশ্বে সভ্যতার চিহ্ন রাখতে শুরু করেছে। ক্রমশ পৃথিবী হয়ে উঠেছে অন্য সব গ্রহ থেকে আলাদা।

কিন্তু এখনো মাঝে মাঝেই এই পৃথিবীর ভূমি লন্ডভন্ড হয়ে যায় ভূমিকম্পে, প্রচন্ড প্লাবনে ধুয়ে-মুছে যায় গ্রাম-নগর। এখনো এই পৃথিবীতে ফুঁসে উঠে আগ্নেয়গিরি। কেন এমন হয়? মানুষ ক্রমশ জানছে সব। ভূমিকম্পের তরঙ্গকে কাজে লাগিয়ে মানুষ আজ জেনে গেছে পৃথিবীর কেন্দ্রে কী আছে, পৃথিবীর গঠন কী রকম। পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণার বিশ্লেষণ করে মানুষ জেনে গেছে কীভাবে সূর্য এত শক্তি পায়, এতো আলো এত তাপ কোত্থেকে আসে সূর্য এবং আরো সব তারার ভেতর। আমাদের পৃথিবীর একটিমাত্র উপগ্রহ - চাঁদ। মানুষ পৃথিবীর বাইরে গিয়ে সেই চাঁদে পা রেখেছে অনেকবার। একটিমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ হলেও মানুষ মহাকাশে স্থাপন করেছে অসংখ্য কৃত্রিম উপগ্রহ - যেগুলোকে কাজে লাগিয়ে মানুষ আজ মকাকাশ নিয়ন্ত্রণ করছে, এবং পাশাপাশি সহজ করে তুলেছে তার দৈনন্দিন জীবন। আজ পৃথিবীর এক জায়গায় বসে অন্য জায়গায় যোগাযোগ যে কী পরিমাণ সহজ হয়েছে তা বিশ বছর আগেও ছিল শুধু কল্পনা। এই সবকিছু হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্রমাগত সম্প্রসারণের ফলে। কিন্তু আমাদের জানার বাকি আছে এখনো অনেক।

যে গ্রহে আমরা বাস করি সেই পৃথিবী সম্পর্কে এ-পর্যন্ত জানা তথ্যগুলোকে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য সহজভাবে উপস্থাপন করাই এই বই লেখার উদ্দেশ্য। এর আগে প্রকাশিত কিশোর বিজ্ঞান সিরিজের প্রথম বই "অর্ক ও সূর্যমামা" পাঠক-প্রিয়তা পেয়েছে। সিরিজের এই দ্বিতীয় বই "পৃথিবী: সূর্যের তৃতীয় গ্রহ"ও পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে বলে আমার বিশ্বাস। একটা বিজ্ঞান-মনস্ক আধুনিক প্রজন্ম গড়ে তুলতে পারলে জাতি হিসেবে আমাদের উন্নতি ত্বরান্বিত হবে। সেটা করার জন্য আমাদের দরকার জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা। সেই ক্রমাগত বিজ্ঞানচর্চায় এই বই কিছুটা হলেও সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারবে এই প্রত্যাশায় -

নভেম্বর ২০১৫ 
প্রদীপ দেব
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশক
মো: হারুন অর রশীদ
মীরা প্রকাশন
রুমী মার্কেট, ৬৮-৬৯ প্যারীদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০, বাংলাদেশ
ফোন: ৯৫৮০৬৭০, মোবাইল: ০১৭১০ ৮৫৩১৫৮, ০১৬৮৩ ৮০৭৪৪৪
প্রকাশকাল
বইমেলা ২০১৬
গ্রন্থস্বত্ব
ফণীন্দ্রলাল দেব পাঠাগার, নাপোড়া, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
প্রচ্ছদ
নাসিম আহমেদ

১৩। প্রথম দেখা আমেরিকা




প্রথমবার আমেরিকায় যাবার সুযোগ হয়েছিল ২০০২ সালের এপ্রিলে আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটির কনফারেন্সে। সেই সময়ের অনুভূতি ও অভিজ্ঞতার প্রতিফলন প্রকাশিত হয়েছিল 'আল্‌বুকারকি থেকে হলিউড' নামে। বইটি এখন আউট অব প্রিন্ট। মীরা প্রকাশন নতুন আঙ্গিকে বইটি আবার প্রকাশ করার উদ্যোগ নিয়েছে। নতুন আঙ্গিকে বইটির নাম বদলে গেছে এবং বিন্যাসেও ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। মীরা প্রকাশনের হারুন ভাইকে ধন্যবাদ তাঁর উদ্যোগের জন্য।

অস্ট্রেলিয়ান রিসার্চ কাউন্সিল ও মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটি'র স্কুল অব গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ মেলবোর্ন থেকে আল্‌বুকারকি পর্যন্ত আমার ভ্রমণ-খরচ বহন করেছে। লস আলামোস ন্যাশনাল ল্যাবের ডক্টর স্টিভেন কারাটিগ্লিদিস ও মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটির থিওরেটিক্যাল ফিজিক্সের প্রফেসর কেন্‌ অ্যামোস এই ভ্রমণে আমাকে বিশেষ সহযোগিতা করেছেন। তাঁদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। ফ্রান্সের ডেফিন, সিলিন ও হ্যানেন হলিউড সিটিতে দু'দিন আমার সাথে ঘুরেছিল। সেজন্য তাদের ধন্যবাদ। পূজা আমার পান্ডুলিপি নতুন করে কম্পিউটারে কম্পোজ করে দিয়েছে। তাকেও ধন্যবাদ।

প্রদীপ দেব
অক্টোবর ২০১৫                                                                
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া                                  
pradipdeb2006@gmail.com


প্রথম দেখা আমেরিকা
প্রদীপ দেব

প্রকাশক
মো: হারুন অর রশীদ
মীরা প্রকাশন
রুমী মার্কেট, ৬৮-৬৯ প্যারীদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০, বাংলাদেশ
ফোন: ৯৫৮০৬৭০, মোবাইল: ০১৭১০ ৮৫৩১৫৮, ০১৬৮৩ ৮০৭৪৪৪

প্রকাশকাল
বইমেলা ২০১৬

গ্রন্থস্বত্ব
ফণীন্দ্রলাল দেব পাঠাগার, নাপোড়া, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ

লেখক ও প্রকাশকের লিখিত অনুমতি ছাড়া এই বইয়ের কোন অংশেরই কোন ফটোকপি, স্ক্যান, রেকর্ড কিংবা অন্য কোন তথ্য সংরক্ষণ পদ্ধতিতে অনুলিপি করা কিংবা ই-বুক আকারে প্রকাশ করা আইনত নিষিদ্ধ।

প্রচ্ছদ
নাসিম আহমেদ

মুদ্রণে
ঢাকা প্রিন্টার্স
৩৬ শ্রীশ দাস লেন, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০, বাংলাদেশ

মূল্য: ৩০০ টাকা।

২০১৫

১২। অর্ক ও সূর্যমামা: সূর্যের বিজ্ঞান



অর্ক ও সূর্যমামা: সূর্যের বিজ্ঞান
প্রদীপ দেব


পৃথিবীর আকাশে খালি চোখে সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে উজ্জ্বল যে নক্ষত্রটি দেখা যায় সেটি হলো আমাদের সূর্য। বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণ থেকে মহাবিশ্বের উদ্ভব ঘটার পর পৃথিবীতে যে প্রাণের উদ্ভব হয়েছে তাতে সূর্যের ভূমিকা প্রধান। মানুষের ধারাবাহিক বিবর্তনে সূর্য এতটাই জড়িয়ে আছে যে আজকে এই একবিংশ শতাব্দীতেও অনেক জাতি সূর্যকে দেবতা জ্ঞানে পূজা করে। সূর্যের মন্দির আছে পৃথিবীর দেশে দেশে। মানুষ যখন আগুন জ্বালাতে জানতো না, সূর্যই ছিল আলো ও তাপের একমাত্র উৎস। আমাদের দিন-রাত্রি, মাস-বছর সবই সূর্যকেন্দ্রিক। ধরতে গেলে সূর্যই পৃথিবীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ শক্তির যোগানদাতা। সূর্যের সাথে মহাকর্ষ বলের আকর্ষণেই পৃথিবী নিজের কক্ষপথে টিকে আছে, নইলে কবেই কক্ষচ্যুত হয়ে মহাশূন্যে হারিয়ে যেতো। সূর্য থেকে আলো ও তাপ নিয়ে উদ্ভিদ খাদ্য প্রস্তুত করে। সূর্যের কারণেই আমাদের পৃথিবীতে একটি চমৎকার প্রাণোপযোগী আবহাওয়ামণ্ডল বিরাজ করছে।

এই বইতে সূর্য সম্পর্কে খুব প্রয়োজনীয় তথ্যগুলোকে সরলভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। মূলত স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে লেখা হলেও এই বই বাংলাভাষায় বিজ্ঞান পড়তে যাঁরা পছন্দ করেন, তাঁদের সবারই ভালো লাগবে বলে আমার বিশ্বাস।

ডিসেম্বর ২০১৪ 
আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম

প্রকাশক
মো: হারুন অর রশীদ
মীরা প্রকাশন
রুমী মার্কেট, ৬৮-৬৯ প্যারীদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০, বাংলাদেশ
ফোন: ৯৫৮০৬৭০, মোবাইল: ০১৭১০ ৮৫৩১৫৮, ০১৬৮৩ ৮০৭৪৪৪
প্রকাশকাল
বইমেলা ২০১৫
গ্রন্থস্বত্ব
ফণীন্দ্রলাল দেব পাঠাগার, নাপোড়া, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
প্রচ্ছদ
নাসিম আহমেদ

১১। আবদুস সালাম: নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী


আবদুস সালাম: নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী

প্রফেসর আবদুস সালাম, ব্রিটিশ পাকিস্তানের একটা প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম নিয়েও নিজের মেধা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে হয়ে উঠেছিলেন তৃতীয় বিশ্বের বিজ্ঞান উন্নয়নের কান্ডারি। বিজ্ঞানে পিছিয়ে পড়া দেশের বিজ্ঞানীদের আন্তর্জাতিক মানের গবেষণার সুযোগ করে দেয়ার জন্য গড়ে তুলেছেন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর থিওরেটিক্যাল ফিজিক্স (আই-সি-টি-পি), থার্ড-ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস। পদার্থবিজ্ঞানের মৌলিক ধারণার অনেকখানি বদলে দিয়েছেন আবদুস সালাম চারটি মৌলিক বলের দুটো বলকে একীভূত করে দিয়ে। ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফোর্স ও উইক নিউক্লিয়ার ফোর্সকে একত্রিত করে আবিষ্কার করেছেন 'ইলেকট্রো-উইক ফোর্স'। তার স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ সম্মান - নোবেল পুরষ্কার।

বর্তমান বিশ্বে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে সাফল্যের সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি হলো নোবেল পুরষ্কার। এই পুরষ্কার পাবার পর দ্রুত বিখ্যাত হয়ে যান মানুষ- বিশেষ করে সেই মানুষ যদি হন পাকিস্তানের মত অনুন্নত দেশ থেকে উঠে আসা কেউ। প্রফেসর আবদুস সালাম নোবেল পুরষ্কার পাবার অনেক আগেই খ্যাতিমান হয়েছেন নিজের কাজের মধ্য দিয়ে। কিন্তু এই খ্যাতি লাভের পেছনে যে কী পরিমাণ সংগ্রাম জড়িত তা মানুষটির ছোটবেলা থেকে বড় হয়ে ওঠা, সুযোগের জন্য সংগ্রাম এবং নিরলস গবেষণা-সাধনার দিকে দৃষ্টি দিলেই বোঝা যায়।

পৃথিবীর অনুন্নত অংশ যে ভীতিপ্রদ সংকটের সম্মুখীন তা নিয়ে বিভিন্ন দেশে যেসব অগণিত মানুষ চিন্তাভাবনা করেন তাঁর মধ্যে অল্প কয়েকজন আছেন যাঁরা শুধু কথা বলেন না, কাজও করেন। প্রফেসর আবদুস সালাম শেষের দলে। কাজ করতে করতে ছুটে গেছেন পৃথিবীর এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্তে।

বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানী সিরিজের এই বইতে প্রফেসর আবদুস সালামের জীবন, দর্শন ও বিজ্ঞানের প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে যেন পাঠক ধারণা করতে পারেন কী কঠোর পরিশ্রম তাঁকে করতে হয়েছে বিজ্ঞানের সাফল্যের চূড়ায় উঠতে।

বাংলাদেশে বিজ্ঞানের বই প্রকাশ ও প্রচারে মীরা প্রকাশন স্বকীয়তার স্বাক্ষর রাখতে শুরু করেছে। প্রকাশক মো: হারুনর রশীদের আগ্রহ ও কঠোর পরিশ্রমের কারণেই তা হচ্ছে। তাঁর কাছে আমি কৃতজ্ঞ বইটি প্রকাশ করার জন্য। আর বন্ধু অজিত তো আছেই। লেখা শেষ করা পর্যন্ত আমার কাজ। তারপর সেটাকে প্রকাশকের দপ্তরে পেশ করা থেকে শুরু করে বই আকারে বের করে আনা পর্যন্ত সব কাজ অজিতই সামলায়। বইতে ব্যবহৃত ছবিগুলো নেয়া হয়েছে আবদুস সালাম ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ফিজিক্স সেন্টারের ওয়েবসাইট থেকে। আই-সি-টি-পি'র প্রতি আমি এই কারণেও কৃতজ্ঞ।

বইটি পড়ে বাংলাভাষী পাঠক বিজ্ঞানের উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা ভাববেন, বিজ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা অনুভব করবেন এই আশায় -
ডিসেম্বর ২০১৪ 
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
প্রকাশক
মো: হারুন অর রশীদ
মীরা প্রকাশন
রুমী মার্কেট, ৬৮-৬৯ প্যারীদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০, বাংলাদেশ
ফোন: ৯৫৮০৬৭০, মোবাইল: ০১৭১০ ৮৫৩১৫৮, ০১৬৮৩ ৮০৭৪৪৪
প্রকাশকাল
বইমেলা ২০১৫
গ্রন্থস্বত্ব
ফণীন্দ্রলাল দেব পাঠাগার, নাপোড়া, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
প্রচ্ছদ
নাসিম আহমেদ

১০। অস্ট্রেলিয়ার পথে পথে (নতুন সংস্করণ)



অস্ট্রেলিয়ার পথে পথে
প্রদীপ দেব

প্রকাশক:
মো: হারুন অর রশীদ
মীরা প্রকাশন
রুমী মার্কেট, ৬৮-৬৯ প্যারীদাস রোড, বাংলাবাজার ঢাকা ১১০০
ফোন: ৯৫৮০৬৭০, মোবাইল: ০১৭১০ ৮৫৩১৫৮, ০১৬৮৩ ৮০৭৪৪৪
Email:meeraprokashon@yahoo.com.
প্রকাশকাল:
মীরা সংস্করণ: বইমেলা ২০১৫
প্রচ্ছদ:
নাসিম আহমেদ

মীরা সংস্করণের ভূমিকা:
'অস্ট্রেলিয়ার পথে পথে' প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ২০০৫ সালে। মীরা প্রকাশনের হারুন ভাইয়ের আগ্রহ ও বন্ধু অজিত পোদ্দারের অনুপ্রেরণায় বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে। প্রথম সংস্করণে কিছু ছাপার ভুল ছিল - যা এই সংস্করণে ঠিক করে দেয়া হলো। বইটি নতুন করে কম্পিউটারে কম্পোজ করতে সহায়তা করেছে শ্রাবণী ও পূজা। ভ্রমণ করতে এবং ভ্রমণ কাহিনি পড়তে যারা পছন্দ করেন - আশা করি 'অস্ট্রেলিয়ার পথে পথে' ভালো লাগবে তাঁদের। বইটি যাঁরা আগে পড়েছেন তাঁরাও হয়তো আরেকবার পড়তে আগ্রহী হবেন।
প্রদীপ দেব
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
 
pradipdeb2006@gmail.com
ডিসেম্বর ২০১৪

২০১৪

৯। Physics of Nucleon-Nucleus Scattering



Physics of Nucleon-Nucleus Scattering
[For Postgraduate Students]
By Dr Pradip Deb


Preface
Cross sections from nucleon-nucleus scattering and reactions are central quantities of import in many and diverse fields of study. That has been so for almost a century, and remains so today. For example, nucleon reaction cross sections at many energies are important input for studies of radioactive waste management by transmutation of long lived radioactive waste into shorter lived products, which together with energy production, uses accelerator driven systems. Such reaction data are basic in other studies as well, e.g., in nuclear astrophysics, in nucleon radiation therapy and protection of patients, in special material science for radiation safety of astronauts and air crew as well as radiation damage and interference effects in electronics, and also in basic nuclear physics with the advent of beams of exotic radioactive nuclear ions for experimentation.

Those many applied and as well as basic research fields all require a theoretical backdrop from which reliable predictions of the nucleon-nucleus scattering can be made. Only with such can credible calculations be made of radiation dosimetry, of reaction rates important in exotic processes in cosmic and explosive stellar events that are crucial in nucleogenesis in the universe, and of selective prescriptions of nucleon structure within nuclei, particularly of neutron distributions.

Within the last decade or so such very credible theoretical predictions have been feasible. The central facet of that success is the formulation of microscopic optical model potentials built upon realistic two nucleon (projectile-target nucleon) interactions. Success has been found with those potentials determined either in momentum or coordinate space. In this book, I have concentrated upon the development and application of a coordinate space specification of those nucleon-nucleus optical potentials.

A microscopic model specification of the nucleon-nucleus (NA) optical potential has been obtained in coordinate space by folding complex energy and density dependent effective nucleon-nucleon (NN) interactions with one-body density matrix elements (OBDME) and single particle bound states of the target nucleus generated (often) by large space shell model calculations. As the approach accounts for the exchange terms in the scattering process, the resulting complex optical potential is nonlocal. This model has been applied successfully to calculate elastic (and, within the distorted wave approximation or DWA, inelastic) scattering of protons from many stable and unstable nuclei ranging from 3He to 238U at different energies between 25 MeV and 300 MeV. Differential cross-section as well as analyzing power data have been reproduced by this model. The approach has also been used with some success to explain proton scattering from 12C with energies to 800 MeV and, for the 3,4He isotopes, at energies of 700 and 800 MeV. As the effective interaction and the structure details are all preset and no a posteriori adjustment or simplifying approximation is made to the folded optical potentials, the observables obtained then are predictions.

The potentials obtained have strong nonlocality and it is very important that such nonlocality be treated exactly for quality results. It is also crucial to use effective NN interactions which are based upon `realistic' free NN interactions but which allow for modification due to nuclear medium effects of Pauli blocking and an average mean field.

The differential cross sections and analyzing powers from the elastic scattering of 25 to 40 MeV protons from many nuclei have been studied. Analyses have been made using the fully microscopic model of proton-nucleus scattering seeking to establish a means appropriate for use in analyses of radioactive ion beam (RIB) scattering from hydrogen targets with ion energies 25A and 40A MeV, since the procedure, under inverse kinematics, explains observed data from the radioactive beam experiments in which exotic, halo nuclei, are scattered from hydrogen targets. By this means it has been shown that 6He has neutron halo character while 8He does not (although it does have a neutron skin). New results on 6He scattering using data from GANIL have been used to illustrate that.

With a no parameter DWA, good predictions of inelastic scattering data can be made also. Results so found further show how RIB scattering data can be used to identify extended nucleon distributions in `exotic' nuclei. The case of 6He, with inelastic scattering to the 2+ (1.8 MeV) first excited state, have been used to demonstrate this. The sensitivity of the inelastic scattering data to the structure of 6He and the success of the coordinate space scattering theories based upon effective NN interactions in analyses of proton scattering from stable nuclei, open large perspectives for the study of the microscopic structure of exotic systems.

A measure of the neutron density of different nuclei has been sought from analyses of intermediate energy nucleon elastic scattering. The pertinent model for such analyses again is based on a coordinate space nonlocal optical potentials obtained from model nuclear ground state densities. Those potentials give predictions of integral observables and of angular distributions that, when compared with data, show sensitivity to the neutron density. New results for stable targets are discussed and reaction cross sections as functions of mass and of energy (at and above 20 MeV) are shown. They also compare very well with observation and are further evidence of the effects of the medium upon the interaction between a bound and a continuum nucleon.

A simple functional form has been found that gives good representations of the total reaction cross sections for the scattering of nucleons from nuclei. Such is of value in studies as diverse as radiation therapy and protection and of the spallation process in the search for treatment of radioactive waste.

Very special thanks are due to Professor Ken Amos for his continual support, encouragement and enthusiasm. I thank Professor Steven Karataglidis for his help in the use of the SHELL model code OXBASH, and for the supply of OBDME. I also thank Dr. Peter Dortmans for his help with XMGR program.

Pradip Deb
pradip.deb@rmit.edu.au
School of Medical Sciences
RMIT University, Australia
Published in Bangladesh by
MEERA PUBLICATIONS
34/3 Banglabazar, Dhaka 1000, Bangladesh
First Edition 2014
Copyright: Pradip Deb


৮। উপমহাদেশের এগারজন পদার্থবিজ্ঞানী







৭। কোয়ান্টাম ভালোবাসা



কোয়ান্টাম ভালোবাসা
আলফ্রেড নোবেল এবং তিন জন পদার্থবিজ্ঞানীর অনুরাগের কাহিনি

প্রকাশকাল: বইমেলা ২০১৪
প্রকাশক: মোঃ হারুনুর রশীদ
মীরা প্রকাশন
৬৮-৬৯ প্যারীদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০
গ্রন্থস্বত্ব: ফণীন্দ্র লাল দেব পাঠাগার 
নাপোড়া, বাঁশখালি, চট্টগ্রাম-৪৩৯০, বাংলাদেশ
প্রচ্ছদ: নাসিম আহমেদ

ভূমিকা: 

বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার কোয়ান্টাম মেকানিক্স। কোয়ান্টাম মেকানিক্সের গতিপ্রকৃতি জটিল এবং রহস্যময়। ভালোবাসার সাথে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের বেশ মিল আছে। দুটোর কোনটাকেই সম্পূর্ণভাবে বোঝা যায় না। কোয়ান্টাম ভালোবাসাআলফ্রেড নোবেল ও তিন জন নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানীর ব্যক্তিগত অনুরাগের কাহিনি।

আমরা জানি বিজ্ঞানের তত্ত্ব সর্বজনীন। কিন্তু প্রেম-ভালবাসা ব্যক্তিনির্ভর, একেক জন একেক ভাবে প্রতিক্রিয়া করে প্রেমের আহ্বানে। যে বিজ্ঞানীদের আমরা ভিন্‌গ্রহের মানুষ মনে করি - তারাও যে প্রেমে পড়েন, ভালোবাসার জন্য ত্যাগ স্বীকার করেন এবং কেউ কেউ ভালোবাসার অবমাননাও করেন - কোয়ান্টাম ভালোবাসায় সেই কাহিনিই বর্ণিত হয়েছে।

চারজন পৃথিবীবিখ্যাত বিজ্ঞানী - আলফ্রেড নোবেল, আলবার্ট আইনস্টাইন, পল ডিরাক এবং রিচার্ড ফাইনম্যান। এই চার জনের প্রথম জন শতাধিক বছর ধরে সর্বসেরা কিং মেকার। আলফ্রেড নোবেলের সৃষ্ট নোবেল পুরষ্কারযিনি পান খ্যাতিতে রাজাহয়ে যান তিনি রাতারাতি। বাকি তিন জন নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী বিশ্ববিখ্যাত তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী। আলবার্ট আইনস্টাইন আপেক্ষিক তত্ত্বের, পল ডিরাক কোয়ান্টাম মেকানিক্সের, আর রিচার্ড ফাইনম্যান ইলেকট্রোডায়নামিক্সের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন। এঁদের বিজ্ঞান গবেষণায় কিছুটা মিল থাকলেও ব্যক্তিগত জীবন-দর্শন ও জীবনযাপনে এঁরা প্রত্যেকেই ভিন্ন।

আলফ্রেড নোবেলকে খুবই মানবতাবাদী মনে করা হয় তাঁর নোবেল পুরষ্কার’-এর জন্য। কিন্তু মানুষটি ব্যক্তিগত জীবনে এতটাই একাকী এবং জীবন-বিতৃষ্ণ ছিলেন যে তাঁকে কেউ কখনো হাসতে দেখেননি। চিরকুমার এই মানুষটিও প্রেমে পড়েছিলেন। কেমন ছিল তাঁর প্রেমের ধরন?

আইনস্টাইন বলেছিলেন প্রেমে পড়ার জন্য মাধ্যাকর্ষণ দায়ী নয়। হয়তো তাই তিনি প্রেমে পড়েছেন একাধিকবার। ভালোবেসে যাঁকে বিয়ে করেছিলেন - অন্যপ্রেমের টানে তাঁকেই ত্যাগ করেছেন। কিন্তু বহু-প্রেমের কারণে সমাজে আইনস্টাইনের গ্রহণযোগ্যতা একটুও কমেনি। বিখ্যাত পুরুষের প্রতি পুরুষতান্ত্রিক সমাজের উদারতার সুযোগ আইনস্টাইন পুরোপুরিই নিয়েছিলেন।

কোয়ান্টাম মেকানিক্সের অন্যতম জনক পল ডিরাক এমনই গম্ভীর রিজার্ভ মানুষ ছিলেন যে ঘন্টায় হয়তো গড়ে একটা শব্দও উচ্চারণ করেননি জীবনে। অথচ সেই মানুষটিই প্রেমে পড়েছিলেন সম্পূর্ণ বিপরীত চরিত্রের একজন মানুষের সাথে - যাঁর সাথে বিজ্ঞানের কোন সম্পর্কই ছিল না। একনিষ্ঠভাবে সুখেই জীবন কাটিয়েছিলেন তিনি সেই মানুষটার সাথে। কী ছিল তাঁর রহস্য?

বিজ্ঞানীদের মধ্যে রিচার্ড ফাইনম্যানের মত প্রাণবন্ত মানুষ খুব কমই দেখা যায়। পদার্থবিজ্ঞানের সুপারহিরোফাইনম্যান। বিজ্ঞানী হিসেবে যেমন ফাইনম্যান অতুলনীয়, প্রেমিক ফাইনম্যানের সাথেও আর কারো তুলনা চলে না।

বিজ্ঞান বাদ দিলে বিজ্ঞানীদের জীবনে আলাদা করে অর্থবহ কিছুই থাকে না - তাই কোয়ান্টাম ভালোবাসায় বিজ্ঞানও আছে বিজ্ঞানীদের ভালোবাসার সাথে সাথে। এই বিজ্ঞানকে ইচ্ছে করেই সহজ করে বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি যেন ভালোবাসতে কষ্ট না হয়। অবশ্য কষ্টহীন ভালোবাসা বলে তো কিছু হয় না।

প্রদীপ দেব
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
 
ডিসেম্বর ২০১৩
 
pradipdeb2006@gmail.com

কৃতজ্ঞতাস্বীকার: কোয়ান্টাম ভালোবাসার কিছুটা অংশ প্রকাশিত হয়েছে মুক্তমনা ব্লগে। মুক্তমনার অগণিত পাঠক ও প্রকাশনা পরিষদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। বিশেষ উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা পেয়েছি ড. অভিজিৎ রায়, ফরিদ আহমেদ, গীতা দাস, কাজি মামুন, বন্যা আহমেদ, জিল্লুর রহমান, আকাশ মালিক, শাফায়েত, সজীব, বাসার, শাম্বদিত্য বিশ্বাস, কেশব অধিকারী, তামান্না ঝুমু, সাইফুল ইসলাম, রণদীপম বসু, তারিক, অনিরুদ্ধ, সালমান রহমান, তানভীরুল ইসলাম, সামসুদ্দিন, মাসুদ রানা, আদিল মাহমুদ, রঞ্জন বর্মন, আরিফুল ইসলাম পলাশ, বাবলা বিশ্বাস, দেবপ্রসাদ দেবু, কামরুল ইসলাম, শ্রাবণী পাল এবং আরো অনেকের কাছ থেকে।
ইতে ব্যবহৃত ছবিগুলো নেয়া হয়েছে নোবেল ফাউন্ডেশান, আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটির হিস্ট্রি আর্কাইভ, হিব্রু ইউনিভার্সিটি, ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি সহ আরো অনেক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে।
মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটি, লা-ট্রোব ইউনিভার্সিটি, এবং আর-এম-আই-টি ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরি থেকে অনেক দরকারি বই পড়ার এবং তথ্য সংগ্রহ করার সুযোগ পেয়েছি।
বইটার পান্ডুলিপি পড়ে অনেক ভুল বানান ও বাক্যাংশ ঠিক করে দিয়েছে আমার ভাগনি রাকা। সে কাছে না থাকলে আমার পক্ষে কিছুতেই সম্ভব হতো না একাজ শেষ করা। তারপরেও যদি কোন ভুল থাকে তার দায়িত্ব সম্পূর্ণ আমার।
মীরা প্রকাশনের হারুন ভাই এবং আমার বন্ধু অজিত পোদ্দারের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ বইটি প্রকাশের ব্যবস্থা করার জন্য।


৬। রেডিয়াম ভালোবাসা


রেডিয়াম ভালোবাসা
মাদাম কুরি ও আইরিন জুলিও-কুরির কাহিনি

প্রকাশকাল: বইমেলা ২০১৪
গ্রন্থস্বত্ব
: ফণীন্দ্রলাল দেব পাঠাগার, নাপোড়া, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম ৪৩৯০, বাংলাদেশ।
প্রকাশক: মোঃ হারুনুর রশীদ
মীরা প্রকাশন, ৬৮-৬৯ প্যারিদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০

ভূমিকা: মাদাম কুরির পরিবারই পৃথিবীর একমাত্র পরিবার - যে পরিবারের সদস্যরা ছয়টি নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন। মাদাম কুরিই একমাত্র মহিলা যিনি দুবার নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন। তাঁর কন্যা আইরিন কুরিই একমাত্র মানুষ যাঁর মা-বাবা, স্বামী এবং নিজে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন।

মাদাম মেরি কুরি, তাঁর স্বামী পিয়ের কুরি, তাঁদের কন্যা আইরিন এবং আইরিনের স্বামী ফ্রেডেরিক জুলিও-কুরির প্রতি আমাদের ঋণের শেষ নেই। আমরা মানে এই পৃথিবীর মানুষ। পৃথিবীতে সবচেয়ে জটিল এবং দুর্জয় রোগ ক্যান্সার। বছরে প্রায় এক কোটি মানুষ মারা যান ক্যান্সারে। বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে মানুষের গড়-আয়ু বাড়ছে - একই সাথে বাড়ছে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা। তেজষ্ক্রিয়তা আবিষ্কারের আগেও ক্যান্সার রোগ ছিল - কিন্তু ক্যান্সার চিকিৎসার কোন কার্যকরী পদ্ধতি মানুষের জানা ছিল না। মেরি ও পিয়ের কুরির রেডিয়াম ও পোলোনিয়াম আবিষ্কারের পর তাঁরাই ক্যান্সার চিকিৎসায় রেডিয়াম ব্যবহারের পথ খুলে দেন। তারপর এই তেজষ্ক্রিয় শক্তির হাত ধরে বিজ্ঞানীরা শুধু চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতি সাধন করেননি - মৌলিক বিজ্ঞানের উন্নতিও ঘটেছে অতি দ্রুত। আমরা জেনেছি পরমাণুর নিউক্লিয়াসের কথা, নিউক্লিয়াসের উপাদান প্রোটনের কথা, নিউট্রনের কথা এবং ক্রমে ক্রমে আরো সব অতি-পারমাণবিক কণার কথা।

আইরিন কুরি এবং তাঁর স্বামী ফ্রেডেরিক জুলিও-কুরি কৃত্রিম তেজষ্ক্রিয়তা আবিষ্কার করে পথ খুলে দিয়েছেন রেডিও-আইসোটোপ তৈরির। চিকিৎসাবিজ্ঞান, প্রাণরসায়ন, কৃষিবিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞানসহ বিজ্ঞানের প্রত্যেকটি শাখায় রেডিও-আইসোটোপ আজ বিরাট ভূমিকা রাখছে। যেকোন নতুন ওষুধ তৈরিতে এবং ওষুধের কার্যকারিতা পরীক্ষায় রেডিও-ট্রেসার হিসেবে কৃত্রিম রেডিও-আইসোটোপ ব্যবহৃত হচ্ছে।

প্যারিসের কুরি ইনস্টিটিউটআজ পৃথিবীর সেরা গবেষণা-প্রতিষ্ঠান সমূহের একটি। যে নিরলস সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মেরি কুরিরা বিজ্ঞান সাধনা করেছেন এবং সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছেন তা আমাদের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্যই শিক্ষণীয় এবং উৎসাহব্যঞ্জক।

রেডিয়াম ভালোবাসামেরি কুরির পুরো জীবনের কাহিনি নয়। বিজ্ঞান ছাড়াও তাঁর যে নিজস্ব একটা ব্যক্তিগত জীবন ছিল এবং সে জীবনে প্রেম-ভালোবাসার উল্লেখযোগ্য স্থান ছিল - তার সাথে পাঠকের পরিচয় করিয়ে দেয়াই এই বইয়ের মূল উদ্দেশ্য। মেরি কুরির ভালোবাসা তাঁর দেশের জন্য, তাঁর স্বামীর জন্য এবং পরে তাঁর মেয়েদের জন্য। সর্বোপরি তাঁর আবিষ্কৃত রেডিয়ামের জন্য। ভালোবাসার মূল্য তাঁকে দিতে হয়েছে বড় বেশি। নোবেল পুরষ্কার পাবার পরেও পুরুষশাসিত ফরাসি সমাজব্যবস্থায় একাডেমি অব সায়েন্সে জায়গা হয়নি মেরি কুরির। কুৎসা রটিয়ে ফ্রান্স থেকে জোর করে বের করে দিতে চেয়েছিল মেরিকে ফ্রান্সের তথাকথিত সভ্যমানুষ।

দুর্ঘটনায় স্বামীকে হারিয়ে দুটো শিশুকন্যাকে নিজের চেষ্টায় মানুষ করেছেন মেরি। বড় মেয়ে আইরিনকে সাথে নিয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে চিকিৎসা-সেবা দিয়েছেন যুদ্ধাহতদের। আইরিনকে বিজ্ঞানের জগতে পথ দেখিয়েছেন মেরি। পরবর্তীতে আইরিন নিজেও পরিণত হয়েছেন বিশ্বসেরা বিজ্ঞানীতে।
রেডিয়াম ভালোবাসামেরি কুরির কাহিনি, আইরিন কুরির কাহিনি, রেডিয়ামের কাহিনি এবং সর্বোপরি ভালোবাসার কাহিনি।

কৃতজ্ঞতাস্বীকার:
মেরি কুরির জীবন সম্পর্কে একটা সংক্ষিপ্ত প্রবন্ধ লিখেছিলাম অনেক বছর আগে। আমার দিদিভাই লেখাটি পড়ে মেরি ও পিয়ের কুরির সম্পর্কে আরো লেখার ব্যাপারে উৎসাহ না দিলে রেডিয়াম ভালোবাসার কথা হয়তো লেখাই হতো না।
এই কাহিনির কিছু অংশ মুক্তমনা ব্লগে প্রকাশিত হয়েছে। পাঠকেরা আমাকে উৎসাহ জুগিয়েছেন উদারভাবে। মুক্তমনা ব্লগের সকল পাঠক ও মডারেটরের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
বইতে ব্যবহৃত ছবিগুলো নেয়া হয়েছে আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব ফিজিক্স, নোবেল ফাউন্ডেশান, এবং কুরি ইনস্টিটিউটের ওয়েবসাইট থেকে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
অনেক পরিশ্রম ও যত্নে পান্ডুলিপি সংশোধন করে বইটাকে নির্ভুল করে তোলার চেষ্টা করেছে আমার ভাগনি রাকা। সে কাছে না থাকলে আমার পক্ষে কিছুতেই সম্ভব হতো না একাজ শেষ করা। তারপরেও যদি কোন ভুল থাকে তার দায়িত্ব সম্পূর্ণ আমার।
মীরা প্রকাশনের হারুন ভাই এবং আমার বন্ধু অজিত পোদ্দারের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ বইটি প্রকাশ করার ব্যবস্থা করার জন্য।

প্রদীপ দেব
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
 
ডিসেম্বর ২০১৩

২০১২

৫। Radiobiology in Prostate Cancer Treatment


Cancer is becoming one of the most devastating disease in the world. Reports from the International Agency for Research on Cancer predict that the global cancer rates will increase 50 percent by 2020. In western countries prostate cancer is the most common cancer in males. To reduce the suffering and death due to cancer is now one of the biggest challenges ever. About 60% of cancer patients receive radiotherapy as part of their disease management. Three dimensional conformal radiation therapy (3D-CRT) and intensity modulated radiation therapy (IMRT) are being used successfully for both the palliative and curative treatments of cancer. The main aim of curative radiotherapy is to deliver a dose of radiation that is high enough to destroy the tumour cells while at the same time minimizing the damage to normal healthy tissues. Radiobiological parameters are used to evaluate and predict the outcome of a treatment plan. In this book, 3D-CRT and IMRT treatment plans for a prostate cancer patient are compared by using radiobiological model.
Published in 2012
Publisher: LAP LAMBERT Academic Publishing
AV Akademikerverlag GmbH & Co. KG
Heinrich-Bocking-Str. 6-8, 66121 Saarbrucken, Deutschland/Germany
ISBN: 978-3-659-25875-6

Preface:
The main aim of curative radiotherapy is to deliver a dose of radiation that is high enough to destroy the tumour cells while at the same time minimising the damage to normal healthy tissues. Clinically, this has been achieved by assigning a prescription dose to the tumour volume and a set of dose constraints on critical structures. Once an optimal treatment plan has been achieved the dosimetry is assessed using the physical parameters of dose and volume.

There has recently been an interest in using radiobiological parameters to evaluate and predict the outcome of a treatment plan in terms of both a tumour control probability (TCP) and a normal tissue complication probability (NTCP). In this project, a radiobiological model has been used to compare a three dimensional conformal radiotherapy (3D-CRT) and an intensity modulated radiotherapy (IMRT) treatment plan for a prostate cancer patient. Two 3D-CRT treatment plans (one with 4 fields, another with 5 fields) and an IMRT treatment plan were developed for a case of prostate cancer. Pinnacle3 Planning (Pinnacle v7.6c, Philips Medical Systems, USA) systems were used to plan and evaluate the radiobiological probabilities.

Initially both 3D-CRT and IMRT plans were planned for 2 Gy per fraction to a total dose of 60 Gy to prostate. Then the prescription dose was gradually increased from 60 Gy to 70 Gy (60, 61, 62, 63, 64, 65, 66, 67, 68, and 70 Gy) to investigate the sensitivity of NTCP and TCP to dose escalation. Plans were developed for an increasing number of fractions (30, 31, 32, 33, 34, and 35 fractions) keeping dose per fraction constant (2 Gy/fraction), and also for increased dose/fraction (2, 2.033, 2.066, 2.1, 2.133, 2.166, 2.2, 2.233, 2.266, and 2.333 Gy/fraction) keeping the number of fractions the same (30 fractions). The biological responses were calculated using the Källman S-model. The complication free tumour control probability (P+) is generated from the combined NTCP and TCP response values.

There has been some debate in the literature about the value of the α/β ratio that should be used to model the response of a prostate tumour to radiation. The sensitivity of the model to the α/β ratio used for the prostate has been investigated. Several studies suggest that prostate tumour has a low α/β value (between 1.5 to 5 Gy). In this project, several choices of α/β (α/β = 1, 1.5, 2, 2.5, 3, 4, 5, and 10) were investigated for the prostate tumour.

When the dose is increased, both the TCP and NTCP increased gradually as expected. P+ was higher for the IMRT plans than for the 3D-CRT plans. It supports the hypothesis that accurately planned IMRT for prostate carcinoma reduces the complication rate among the organs at risks while increasing the tumour control probability compared to standardized 3D-CRT. TCPs were comparatively more sensitive to the α/β values for the plans where the fraction numbers were kept constant than for the plans where fraction sizes were unchanged.

To investigate the sensitivity of the model to inter-observer variability at the planning stage, several 3D-CRT treatment plans in the same planning system for the same patient were performed by different planners. The analysis shows that all of the plans result with very similar TCPs, but there are noticeable differences in NTCPs and P+.


২০১১

৪। ইয়ারার তীরে মেলবোর্ন


ইয়ারার তীরে মেলবোর্ন

বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে শুধুমাত্র স্বপ্ন আর কিছুটা সাহস সম্বল করে লেখাপড়া করতে এসেছিল অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরে। সম্পূর্ণ অপরিচিত পরিবেশ, বৈরি আবহাওয়া, দুর্বোধ্য ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে পদে পদে ঠেকে ঠেকে তাকে করে নিতে হয়েছে নিজের পথ, নিজের জায়গা।

'ইয়ারার তীরে মেলবোর্ন' একজন বাংলাদেশি ছাত্রের প্রথম প্রবাসের বাস্তব অভিজ্ঞতার রেখাচিত্র যেখানে ব্যক্তিগত অনুভূতি ও অভিজ্ঞতার পাশাপাশি উঠে এসেছে অস্ট্রেলিয়ার নৃতাত্ত্বিক, ভৌগোলিক ও সামাজিক ইতিহাস। অস্ট্রেলিয়ান পরিবারের সাথে বাস করে লেখক প্রত্যক্ষ করেছেন তাঁদের নাগরিক ও পারিবারিক সংস্কৃতি। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা ও গবেষণা করার সুবাদে লেখক কাছ থেকে দেখেছেন সে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞানচর্চার সংস্কৃতি।

ইয়ারার তীরে মেলবোর্ন-এ বর্ণিত ঘটনাগুলো লেখকের ব্যক্তিগত জীবন-যাপন থেকে উঠে এলেও তা প্রতিনিধিত্ব করে যে কোন বাংলাদেশি প্রবাসী শিক্ষার্থীর - বিদেশ বিভুঁইএ যাদের একাকী সংগ্রাম করতে হয়, শুরুতে মাথা গোঁজার জন্য, পরে মাথা তুলে দাঁড়ানোর জন্য।

প্রথম প্রকাশ: বইমেলা ২০১১
গ্রন্থস্বত্ব: প্রদীপ দেব
প্রকাশক: মোঃ হারুনুর রশীদ
মীরা প্রকাশন
৬৮-৬৯ প্যারীদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০
প্রচ্ছদ: মোবারক হোসেন লিটন

ভূমিকা: অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করতে এসেছিলাম ১৯৯৮ সালের জুলাই মাসে। তারপর আশা নিরাশা আনন্দ বেদনা আর ব্যস্ততায় দ্রুত কেটে যায় অনেকগুলো বছর। মেলবোর্ন শহরের পাশ দিয়ে যে ছোট্ট নদীটি বয়ে চলেছে তার নাম ইয়ারা। প্রবাস দিনে আমার কাছে এই ইয়ারাই হয়ে ওঠে কখনো কর্ণফুলী কখনো ইছামতি। 'ইয়ারার তীরে মেলবোর্ন' আমার প্রথম প্রবাসের প্রথম মাসের স্মৃতিকথা।

লেখাটি ইতোমধ্যে মুক্তমনা ব্লগে প্রকাশিত হয়েছে। 'ইয়ারার তীরে মেলবোর্ন' বই আকারে প্রকাশিত হবার বেশির ভাগ কৃতিত্ব বন্ধু অজিত পোদ্দারের। তার কাছে আমার ঋণ বেড়েই চলেছে।

প্রদীপ দেব
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
ডিসেম্বর ২০১০

২০০৬

৩। আলবুকারকি থেকে হলিউড



আমেরিকার নিউ মেক্সিকো রাজ্যের সুন্দর ছোট্ট ছবির মত শহর আলবুকারকি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই শহরকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছিল আমেরিকার সবচেয়ে গোপনীয় বৈজ্ঞানিক গবেষণা- পারমাণবিক বোমা প্রকল্প। আলবুকারকি থেকে ১১৮ মাইল দক্ষিণে মরুভূমির মাঝে আলমোগোর্ডো নামক স্থান থেকে শুরু হয় পারমাণবিক যুগের সূচনা। ১৯৪৫ সালের ১৬ জুলাই পৃথিবীর প্রথম পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয় এখানে - যা ট্রিনিটি সাইট নামে পরিচিত। এর দুসপ্তাহ পরে এখানের ল্যাবোরেটরিতে প্রস্তুতকৃত বোমা 'লিটল বয়' 'ফ্যাট ম্যান' নিক্ষেপ করে ধ্বংস করে ফেলা হয় জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহর। পারমাণবিক দানবের এই জন্মস্থান আমেরিকার জনগণের কাছেও প্রবেশ নিষেধের বেড়াজালে আবদ্ধ। সেনাবাহিনীর কাছ থেকে বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে বছরে মাত্র দুটো মাত্র দিন এখানে যেতে পারে আমেরিকার সাধারণ মানুষ। আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটির আমন্ত্রণে আলবুকারকির পদার্থবিজ্ঞান সম্মেলনে গিয়ে ট্রিনিটি সাইট দেখে এসেছেন প্রদীপ দেব। কাছ থেকে দেখেছেন আমেরিকান বৈজ্ঞানিক গবেষণার স্বরূপ।

লেখক আলবুকারকি থেকে পাড়ি দিয়েছেন লস অ্যাঞ্জেলেসের হলিউডে। বিশ্বচলচিত্র দর্শক ও বোদ্ধাদের কাছে বাস্তবের স্বপ্নপুরী হলিউড। আলবুকারকি থেকে হলিউড এর পাতায় উঠে এসেছে ইউনিভার্সাল স্টুডিও, গেটি সেন্টার, বেভারলি হিল্‌সসহ হলিউডের আরো অনেক জানা অজানা তথ্য। আলবুকারকি থেকে হলিউড তাই শুধুমাত্র ভ্রমণকাহিনি নয়, ইতিহাসও বটে- যার ব্যাপ্তি বৈজ্ঞানিক গবেষণা থেকে সিনেমা, আরিজোনার মরুভূমি থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসের আলো ঝলমলে শহর পর্যন্ত বিস্তৃত।

প্রকাশকাল: বইমেলা ২০০৬
গ্রন্থস্বত্ব: পূজা দেব ও শামা দেব
প্রকাশক: মোঃ হারুনুর রশিদ
মীরা প্রকাশন
৬৮-৬৯ প্যারীদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০
প্রচ্ছদ: মোবারক হোসেন লিটন

ভূমিকা: 
২০০২ সালের এপ্রিলে আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটির আমন্ত্রণে প্রথমবারের মত আমেরিকায় যাবার সুযোগ হয় আমার। সে সময় নিউ মেক্সিকোর আলবুকারকি ও ক্যালিফোর্নিয়ার হলিউড সিটিতে ঘুরে বেড়িয়েছি। আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটি ও অস্ট্রেলিয়ান রিসার্চ কাউন্সিল আমার ভ্রমণ-খরচ বহন করেছে। অস্ট্রেলিয়ার দি ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্নের প্রফেসর কেন্‌ অ্যামোস ও আমেরিকার লস আলামোস ন্যাশনাল ল্যাবোরেটরির ডক্টর স্টিভেন কারাটিগ্‌লিদিস এ ভ্রমণে আমাকে বিশেষ সহযোগিতা করেছেন। আপনজনদের অনুপ্রেরণা ও বন্ধু অজিত পোদ্দারের সহযোগিতা না পেলে বইটি প্রকাশ করা সম্ভব হতো না। এদের কাছে আমি ঋণী।
 

প্রদীপ দেব
ডিসেম্বর ২০০৫
সিডনি, নিউ সাউথ ওয়েল্‌স, অস্ট্রেলিয়া।

২। আইনস্টাইনের কাল


আইনস্টাইনের কাল
প্রকাশ কাল: বইমেলা ২০০৬
দ্বিতীয় প্রকাশ: বইমেলা ২০১২

গ্রন্থস্বত্ব: প্রত্যয় দে ও প্রমা দে
প্রকাশক: মোঃ হারুনুর রশিদ
মীরা প্রকাশন, ৬৮-৬৮ প্যারীদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০
প্রচ্ছদ: মোবারক হোসেন লিটন

ভূমিকা:

টাইম ম্যাগাজিনের মতে বিংশ শতাব্দীর সেরা মানুষ - অ্যালবার্ট আইনস্টাইন। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে একজন প্রায় অচেনা যুবক আইনস্টাইন প্যাটেন্ট অফিসের সামান্য টেকনিশিয়ান থেকে কীভাবে হয়ে উঠলেন শতাব্দীর সেরা মানুষ? ১৯০৫ সালে সুইজারল্যান্ডের প্যাটেন্ট অফিসে কাজ করার সময়েই আইনস্টাইন চারটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন পদার্থবিজ্ঞানের চারটি বিশেষ বিষয়ের ওপর। পরবর্তীতে ওগুলোই সৃষ্টি করেছে পদার্থবিজ্ঞানের নতুন ইতিহাস। সেদিনের প্রবন্ধগুলোয় বর্ণিত ধারণাগুলো রূপ নিয়েছে তত্ত্বে। নতুন নতুন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে আইনস্টাইন ১৯০৫ সালেই দেখে ফেলেছিলেন পরবর্তী একশ বছরের মহাবিশ্বকে। আইনস্টাইনের তত্ত্বের একশ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২০০৫ সালকে ঘোষণা করা হয়েছে আইনস্টাইন বর্ষ; আন্তর্জাতিক পদার্থবিজ্ঞান বর্ষ।

১৮৭৯ সালের ১৪ মার্চ থেকে ১৯৫৫ সালের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত ছিয়াত্তর বছর এক মাসে চার দিনের আক্ষরিক জীবনকাল আইনস্টাইনের। তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া প্রধান প্রধান ঘটনাগুলো কালানুক্রমিকভাবে বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি এই বইতে। মহাবিশ্ব সম্পর্কে মানুষের পূর্বধারণার অনেকটুকুই বদলে দিয়েছেন আইনস্টাইন। এই বদলে দেয়াটা একদিনে হয়নি। আইনস্টাইন তাঁর প্রথম গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন ১৯০১ সালের মার্চ মাসে। পরবর্তী ৫৫ বছরে তাঁর ছয়শো'র বেশি রচনা প্রকাশিত হয়েছে। পদার্থবিজ্ঞান ছাড়াও রাজনীতি, সমাজনীতি, দর্শন, ধর্ম - প্রায় সবকিছু নিয়েই তিনি বলেছেন, লিখেছেন, মতামত দিয়েছেন। তাছাড়াও অপ্রকাশিত রয়ে গেছে কয়েক হাজার চিঠি, বিবৃতি, ভাষণ, সাক্ষাৎকার, গ্রন্থসমালোচনা, প্যাটেন্ট রিপোর্ট ইত্যাদি। আইনস্টাইনের উইল অনুযায়ী জেরুজালেমের হিব্রু ইউনিভার্সিটি তাঁর সবগুলো ডকুমেন্টের স্বত্ব পেয়েছে। সেখানে সংগৃহীত ডকুমেন্টের সংখ্যা তেতাল্লিশ হাজারেরও বেশি। এই বইতে তাঁর জীবনকালে প্রকাশিত পেপারগুলো থেকে প্রতিনিধিত্বমূলক তিনশোটি পেপারের কালানুক্রমিক উল্লেখ করা হলো। 

আইনস্টাইন নিজের ব্যক্তিগত ঘটনাগুলো কখনোই প্রকাশ করতে চাননি। আইনস্টাইনের মৃত্যুর পর তাঁর সেক্রেটারি হেলেন ডুকাস প্রাণপণ চেষ্টায় গোপন করে রেখেছিলেন আইনস্টাইনের ব্যক্তিগত জীবনের অনেকগুলো দিক। মিলেইভার সাথে আইনস্টাইনের প্রেম ও সম্পর্কের টানাপোড়েন ইত্যাদি কোন কিছুই জানা যায়নি ১৯৮৭ সালের আগপর্যন্ত। ১৯৮৭ সালের পর প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি ও হিব্রু ইউনিভার্সিটি আইনস্টাইন আর্কাইভ গবেষকদের জন্য খুলে দেয়া হলে নতুন রূপে প্রকাশিত হন আইনস্টাইন।

ব্যক্তি আইনস্টাইন, কর্মী আইনস্টাইন ও বৈজ্ঞানিক আইনস্টাইনকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন, দর্শন, বিজ্ঞান গবেষণা ও গবেষণাপত্রের প্রধান প্রধান অংশগুলো উল্লেখ করার চেষ্টা করেছি। সায়েন্টিফিক টার্মগুলোকে যথাসম্ভব সহজ করে তোলার চেষ্টা করেছি- কিন্তু তারপরও কিছু কিছু বিষয় রয়ে গেছে যা কিছুটা দুর্বোধ্য মনে হতে পারে। তবে আশা করি সে কারণে বইটির গতি বাধাপ্রাপ্ত হবে না। আইনস্টাইনের পেপারগুলোর প্রায় দুই তৃতীয়াংশ জার্মান ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। সেই পেপারগুলোর শিরোনামের ইংরেজি অনুবাদ ব্যবহার করা হয়েছে। বইটি পড়ে বিজ্ঞানের অনেক বিষয়ে প্রশ্ন জাগতে পারে, অনেক ব্যাপারে কৌতূহল তৈরি হতে পারে। আর সেটা হলেই মনে করবো আমি সার্থক।

বইতে ব্যবহৃত ছবিগুলোর স্বত্ব আমেরিকান ইন্সটিটিউট অব ফিজিক্স, প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির অ্যালবার্ট আইনস্টাইন আর্কাইভ, হিব্রু ইউনিভার্সিটি ও টাইম ম্যাগাজিনের। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।

প্রদীপ দেব
সিডনি, নিউ সাউথ ওয়েল্‌স, অস্ট্রেলিয়া
ডিসেম্বর ২০০৫


২০০৫

১। অস্ট্রেলিয়ার পথে পথে


অস্ট্রেলিয়ার পথে পথে
প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি ২০০৫
গ্রন্থস্বত্ব: রেহনুমা নাসিম
প্রকাশক: শাহ আল মামুন
মনন প্রকাশ
৩৮/৪ বাংলাবাজার (তৃতীয় তলা)
ঢাকা -১১০০
প্রচ্ছদ: মোবারক হোসেন লিটন
ISBN: 984-8332-56-1
_________
ভূমিকা:
মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করার সময় অস্ট্রেলিয়ার কয়েকটি শহরে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ আমার হয়েছে। সে সময়ের অনুভূতিগুলো লিখে জানিয়েছিলাম আমার প্রিয়জনদের। মূলত তাদের প্রেরণার ফসল এই বই; আমার ভ্রমণকালের দিনলিপি। পান্ডুলিপি পড়ে অনেক মূল্যবান পরামর্শ দিয়েছেন আমার দিদি প্রভাতী দেব ও দিদিভাই রিফাৎ আরা। দিদিভাই আমার অজস্র ভুল বানান শুদ্ধ করে দিয়েছেন পরম যত্নে। প্রকাশককে রাজি করানো থেকে শুরু করে হাজারো কাজ সামলেছেন আমার বন্ধু অজিত পোদ্দার ও তমাল রায়। এদের ভালোবাসার এই ঋণ শোধ করার সাধ্য আমার নেই।


প্রদীপ দেব
কলম্বাস, ওহাইও, আমেরিকা

No comments:

Post a Comment

Latest Post

Doesn't Rachi's death make us guilty?

  Afsana Karim Rachi began her university life with a heart full of dreams after passing a rigorous entrance exam. She was a student of the ...

Popular Posts