আল্বুকারকি: দ্বিতীয় রাত
কতক্ষণ ঘুমিয়েছি জানি না- হঠাৎ ঘুম
ভেঙে গেলো। মনে
হচ্ছে ফায়ার অ্যালার্ম বাজছে রুমের ভেতর। বিছানা
থেকে লাফিয়ে উঠেই বুঝতে
পারলাম টেলিফোন বাজছে। চারটা সেট একসাথে
বাজলে ফায়ার অ্যালার্মের মতো লাগতেই
পারে। কোন রকমে
রিসিভার তুললাম।
"হ্যালো"
"হাই প্রাডিব, কামিং ডাউন?"
"ইয়াহ, আই উইল
বি দেয়ার ইন ফাইভ
মিনিটস।"
স্টিভেন। লস আলামোসে
অফিস করে সান্টা
ফে থেকে ঘন্টা
খানেক ড্রাইভ করে চলে
এসেছে এই সন্ধ্যাবেলা। আর আমি পড়ে
পড়ে ঘুমাচ্ছি!
নিচে নেমে
দেখি লবিতে দাঁড়িয়ে একজন অপরূপা
মেয়ের সাথে হেসে
হেসে কথা বলছে
স্টিভেন। খুব বেশি
লম্বা নয় মেয়েটি,
শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে
না রাখলে খুব দ্রুত
মোটা হয়ে যাবার
সম্ভাবনা আছে। কাছে
যেতেই স্টিভেন পরিচয় করিয়ে দিলো আমেরিকান
কায়দায়।
"ডেবি ব্রডবার। সিনিয়র এডিটর, ফিজিক্যাল রিভিউ।"
"হাই ডেবি, নাইস টু মিট ইউ।"
ডেবি মেয়েটি
বাঙালি হলে তার
নাম হতো দেবী। দেবী আমার হাত
ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে যে বাক্যটি
বললো তারজন্য প্রস্তুত ছিলাম না।
"হাই প্রাডিব, ইউ হ্যাভ
অ্যান অস্ট্রেলিয়ান অ্যাকসেন্ট!"
বিদ্রুপ নাকি প্রশংসা ঠিক বুঝতে না
পারলেও শুনে ভালো লাগলো। আমার বাংলা-টোনের ইংরেজিতেও যদি ডেবি অস্ট্রেলিয়ান টোন শুনতে
পায়- মন্দ কী!
ডেবি খুব হাসিখুশি
চটপটে মেয়ে। মাত্র
কয়েক মিনিটের আলাপেই এমন ভাবে
কথা বলছে যেন
আমাকে কত আগে
থেকেই চেনে। নাকি
সব আমেরিকান মেয়েই এরকম? অবশ্য সে জানালো ফিজিক্যাল রিভিউতে আমার পেপারের
কারণে কয়েক বছর
ধরেই সে আমার
নামের সাথে পরিচিত। ফিজিক্যাল রিভিউতে সারা পৃথিবীর
পদার্থবিদরা পেপার পাঠান। সম্পাদকরা কি তাদের
সবার নামই মনে
রাখে? ডেবি এর একটা
ব্যাখ্যা দিলো, "তোমার নামের শেষের অংশের সাথে আমার
নামের প্রথম অংশের মিল আছে
তো- তাই।"
হোটেলের লবি এখন
গিজগিজ করছে। শত শত পদার্থবিজ্ঞানী। বুকে ব্যাজ
ঝুলছে সবার। স্টিভেন
আর ডেবিও ব্যাজ নিয়ে এসেছে
রেজিস্ট্রেশন ডেস্ক থেকে। আমার
ব্যাজটা নিয়ে আসতে
হয় এবার।
রেজিস্ট্রেশন ডেস্ক কনভেনশান সেন্টারে। হায়াত হোটেল থেকে বেরিয়ে
সামনের রাস্তাটা পেরোলেই বিশাল এলাকা জুড়ে এই কনভেনশান সেন্টার। সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। কনভেনশান সেন্টারের ইস্ট উইং-এ রেজিস্ট্রেশান ডেস্ক। এখন তেমন
ভীড় নেই।
আমার নাম
বলতেই আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটির মিটিং বুলেটিন আর ব্যাজ
এগিয়ে দিলো আফ্রিকান-আমেরিকান তরুণী। সম্মেলন উপলক্ষে সেও উড়ে
এসেছে বোঝাই যাচ্ছে। কারণ আমেরিকার
দক্ষিণ অংশে কালো
আমেরিকানদের সংখ্যা খুবই কম। ক্রীতদাস প্রথা বিলোপের বিরোধী ছিলো দক্ষিণীরা। গৃহযুদ্ধে তারা হেরে
গেলেও কালোদের প্রতি তাদের ঘৃণাটা হয়তো রয়ে
গেছে ভেতরে ভেতরে। আর কালোরাও
স্বাভাবিক ভাবে আর স্বাছন্দ্য বোধ করে
না এদিকে।
ছ'টা বাজতে
না বাজতেই ডিনার টাইম এখানে। ডিনার করতে ঢুকলাম
সিভিক প্লাজার আন্ডারগ্রাউন্ড লবিতে। এখানে বেশ ভালো
এক মেক্সিকান রেস্টুরেন্ট আছে। স্টিভেন,
ডেবি
আর আমি- তিনজনের একটা ছোট
টেবিল। টেবিলগুলো এত ছোট
যে ইচ্ছে না থাকলেও
তিনটি মাথা প্রায়
এক জায়গায় চলে আসে। তাতে খেতে কিছুটা
অসুবিধা হলেও কথা
বলতে বেশ সুবিধা
হয়। ডিনার টেবিলে খাওয়ার চেয়ে কথোপকথনটাই
জরুরী মনে হচ্ছে।
ননঅ্যালকোহলিক বলে আবারো
একটা খোঁচা হজম করতে
হলো। আমি যে মদ খাই না তা নিয়ে কালকে রাতেই স্টিভেন কথা বলেছে
কেনের সাথে। কেন্ নাকি বলেছেন আমি যেগুলো
খাচ্ছি না- মেলবোর্নে বসে তিনি
তা খেয়ে নেবেন। কেন্ যে মদ বিশারদ স্টিভেন তা ব্যাখ্যা
করে বলছে ডেবির
কাছে। ডেবি বাচ্চা মেয়ের মতো খিলখিল
করে হাসছে। মনে হচ্ছে
কেনের কথা শুনে
মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছে
সে।
রেস্টুরেন্টের মেনু পড়তে
আমার একটুও ভালো লাগে
না। অর্ডার দেয়ার ব্যাপারে অন্যের উপর নির্ভর
করতে হয় আমাকে। স্টিভেন বলে দিয়েছে
আজকে শেষবারের মতো সাহায্য
করছে আমাকে। কাল থেকে আমার
খাবার আমাকেই বেছে নিতে
হবে। তথাস্তু। কালকের ব্যাপার কালকে দেখা যাবে।
আমার জন্য
এলো থালাভর্তি মেক্সিকান হট-পাই। মেক্সিকানরা
ঝাল মরিচ খেতে
খুব পছন্দ করে। যে কোন মেক্সিকান রেস্টুরেন্টের সাইন বোর্ডে
লাল লাল মরিচ
আঁকা থাকবেই। বরবটি, মাংস, আলু আর পিঁয়াজ মিশিয়ে বেশ চমৎকার
এই মেক্সিকান হট-পাই। ঝালে
নাক ভিজে যাচ্ছে,
কিন্তু খেতে বেশ।
ডেবি তার
আমেরিকান বুদ্ধিতে যা নিয়েছে
তা খেতে পারছে
না এখন। তার
প্লেটে নানা রকম শাকপাতা দেখা যাচ্ছে। আর স্টিভেন মনে হচ্ছে
নিজের জন্য যা অর্ডার দিয়েছে তা নিয়ে
খুব গর্বিত। এখানকার খাদ্য সম্পর্কে এমন ভাবে
কথা বলছে যেন
সে এই রেস্টুরেন্টের একজন ফুড-অ্যাডভাইজার।
ডেবি কথা বলতে
পছন্দ করে। যে কোন বিষয়েই সে আগ্রহ
প্রকাশ করছে। সে কখনো অস্ট্রেলিয়ান ডলার দেখেনি। আমার কাছ থেকে
নিয়ে দেখলো গভীর মনযোগ
দিয়ে। আমেরিকানদের তো এক ডলার থেকে শুরু
করে একশ' ডলার পর্যন্ত
সব নোটই একই
মাপের একই রঙের। সহজে বোঝা যায়
না কোনটা কত ডলারের
নোট। সে তুলনায়
অস্ট্রেলিয়ান প্লাস্টিকের নোটগুলো সত্যিই দৃষ্টিনন্দন।
একথা সেকথার
পরে বাংলাদেশের কথাও চলে
এলো। ডেবি জানালো বাংলাদেশ থেকে তেমন
কোন পেপার তারা পায় না ফিজিক্যাল রিভিউতে। বাংলাদেশে পদার্থবিদ্যার গবেষণা সম্পর্কে কী বলবো
আমি এখানে! আমি তো আর বলতে পারি
না যে আমাদের
কোন নিয়মিত সায়েন্টিফিক জার্নাল নেই- যেখানে আন্তর্জাতিক মানের না হোক
– অন্তঃত আঞ্চলিক মানের বিজ্ঞান প্রবন্ধ হলেও প্রকাশ
করা যায়। জানি
বিজ্ঞানে গলাবাজির স্থান নেই। কিন্তু
মান তো বাঁচাতে
হবে। বললাম ফিজিক্যাল রিভিউতে পাঠায় না হয়তো,
অন্য জার্নালে পাঠায়।
একটু পরে
স্টিভেনকে বিদায় জানাতে হলো। তাকে
ফিরতে হবে তার
সান্টা ফের বাসায়। ডেবি উঠেছে হায়াত রিজেন্সিতেই। আঠারো তলায় তার
রুম।
স্টিভেন চলে যাবার পর ডেবির সামনে
আমার কেমন যেন নার্ভাস লাগতে শুরু করলো। টেবিলে বাম হাতের কনুই রেখে মাথাটা কাত
করে হাত দিয়ে ঠেকিয়ে রেখেছে। তার চোখের দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছে সে সরু চোখে তাকিয়ে
আছে আমার দিকে। মেক্সিকান ঝালের কারণেই হোক, টাকিলার প্রভাবেই হোক তার গোল মুখ
টকটকে লাল হয়ে আছে। পাতলা লাল কার্ডিগানটা খুলে রেখেছিল আগেই। টি-শার্টের গলাটা
এতটা খোলা না হলেই মনে হয় ভালো হতো। আমার চোখ বার বার তার মুখ থেকে পিছলে চলে
যাচ্ছে সেদিকে। মেয়েরা নাকি তাদের পেছন দিকেও দেখতে পায়, আর এখন তো সরাসরি তাকিয়ে
আছে আমার চোখের দিকে। এ কী যন্ত্রণায় পড়লাম রে ভাই! এরকম অবস্থায় তাদের দিকে একটুও
না তাকালে নাকি মেয়েরা খুব অপমানিত মনে করে নিজেকে। আবার সরাসরি সেদিকে তাকালেই
ভাবে অভদ্র। ভদ্রতার পরীক্ষা দিতে দিতে তো কাহিল হয়ে গেলাম। একটা কালো চশমা পরে
থাকতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু ডিনার টেবিলে অন্ধরাও তো মনে হয় কালো চশমা পরে থাকে
না।
"হোয়াট্স ইওর প্ল্যান
নাউ?"
ডেবির প্রশ্নে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। হোটেলের গ্রান্ড প্যাভিলিয়নে 'কোপেনহেগেন' নাটক পড়া
হবে। বললাম সেটা দেখতে যাবো।
"কখন শুরু হবে ওটা?"
"পৌনে আটটায়।"
ডেবি মাথা সোজা করে বাম হাত চোখের
সামনে এনে ঘড়ি দেখলো। মেটালিক ডায়ালের বেশ বড় একটা ঘড়ি পরেছে সে। এখন মনে হয় বড়
ঘড়ি পরার চল এসেছে।
"আরো বিশ মিনিট সময় আছে।"
"গ্রান্ড প্যাভিলিয়ন খুঁজে বের
করতে হবে তো।"
"লেট্স গো দেন।"
ডেবিকে খুব ক্লান্ত মনে হচ্ছে। মনে
হচ্ছে টলছে একটু একটু। আমার দেখার ভুলও হতে পারে।
"আর ইউ ওকে?"
"ইয়াহ্। জাস্ট টায়ার্ড অ্যা
বিট।"
টায়ার্ড। কারণ সে আজকেই এসেছে নিউইয়র্ক থেকে। নিউইয়র্ক
থেকে এখানে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘন্টার
প্লেন জার্নি।
রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে লবিতে আসতে
আসতে ডেবি বললো, "আই থিংক আই শুড গো এবং গেট সাম রেস্ট। ইউ এনজয় দ্য প্লে। সি
ইউ টুমরো। গুড নাইট।"
আমার ডান হাতে
কয়েকটা জোরালো ঝাঁকুনি দিয়ে ডেবি চলে গেলো
হোটেলের লিফটের দিকে। আমি
এগোলাম হোটেল রিসেপশানে- গ্রান্ড প্যাভিলিয়ন কোথায় জানতে।
দোতলায় বিশাল হলঘর- গ্রান্ড প্যাভিলিয়ন। আঠারো শতকের ইউরোপীয় স্থাপত্য আর একুশ
শতকের প্রযুক্তির অপূর্ব সমন্বয়। ছোট ছোট
টেবিল ঘিরে বসে
আছে লোকজন। একপাশে আলোকিত মঞ্চে তিনটি চেয়ার রাখা আছে
ত্রিভুজাকৃতিতে। ওখানে বসেই সংলাপ পড়ছে কোপেনহেগেন
নাটকের তিনটি চরিত্র।
নাটকটি লেখা হয়েছে
বিজ্ঞানের একটি ঐতিহাসিক
সত্য ঘটনা নিয়ে। ১৯৪১ সালে দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধের শুরুতে জার্মানরা ডেনমার্ক দখল করে
নেয়। জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী ওয়ার্নার হাইজেনবার্গ (Werner Heisenberg, জন্ম: ৫ ডিসেম্বর ১৯০১, মৃত্যু: ১ ফেব্রুয়ারী
১৯৭৬, পদার্থিবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার: ১৯৩২) তখন কোপেনহেগেনে
নিলস বোরের (Niels Bohr, জন্ম:
৭ অক্টোবর ১৮৮৫, মৃত্যু: ১৮ নভেম্বর
১৯৬২, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার: ১৯২২) বাড়িতে গিয়ে গোপনে
দেখা করেন বোরের
সাথে। তাঁদের মধ্যে যে আলোচনা
হয় তাকে কেন্দ্র করেই এই নাটক।
তিনটি মাত্র চরিত্র। হাইজেনবার্গ, নিলস বোর
আর বোরের স্ত্রী মার্গারেট (Margerethe Norlund Bohr)। তাঁদের আলোচনায় দেখা যায়
যুদ্ধকে কেন্দ্র করে আণবিক
বোমা তৈরির পরিকল্পনা সহ অনেক কিছু। হাইজেনবার্গ ও বোরের পারস্পরিক বন্ধুত্বেও চিঁড় ধরে
এই মিটিং এর পর।
বৃটিশ নাট্যকার মাইকেল ফ্রেইনের (Michael Frayn, জন্ম: লন্ডন, ৮ সেপ্টেম্বর ১৯৩৩) অনবদ্য নাটক ‘কোপেনহেগেন’। সত্য
ঘটনা যে কল্পনার
চেয়েও নাটকীয় তা আবারো
প্রমাণ করলো এই কোপেনহেগেন। ব্রিটেনে গত তিন বছর
ধরে চলছে এ নাটক। এ বছর
মেলবোর্ন থিয়েটার কোম্পানিও নাটকটির নিয়মিত মঞ্চায়ন শুরু করেছে।
রাত দশটা বাজলো। ঘুম আসছে না। আসার কথাও নয়। টেলিভিশন চালু করলাম। টেলিভিশন দেখলে নাকি এক্সট্রা
চার্জ দিতে হয়। আমেরিকার কিছু কিছু হোটেলে নাকি টেলিভিশনের
সাথে মিটার লাগানো থাকে। মিটারে
পয়সা দিলে টেলিভিশন
অন করা যাবে-
নয়তো নয়।
এখানে অবশ্য সেরকম কোন মিটার
নেই। টিভি অন করতেই হোটেল হায়াতের মনোগ্রাম আর টিভি
দেখার নিয়ম কানুন
ভেসে এলো টিভির
পর্দায়। অনেকগুলো চ্যানেল। কয়েকটা চ্যানেল হোটেল রিসেপশানের সাথে যুক্ত। খাদ্যের অর্ডার থেকে শুরু
করে সবকিছুর রিমোট কন্ট্রোল এই টিভির
পর্দায়। মুভি চ্যানেল
আছে অনেকগুলো। সেগুলো চালাতে গেলে এক্সট্রা
পয়সা দিতে হবে। শুধুমাত্র স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলো
দেখার জন্য কোন
চার্জ দিতে হবে
না। আমেরিকান টেলিভিশনের শত শত লোকাল চ্যানেল। এই ছোট্ট
নিউ মেক্সিকোতে অনেকগুলো চ্যানেল। কোন চ্যানেলই
ধৈর্য ধরে দেখার
মতো নয়। আমেরিকানরা
নাকি কোন চ্যানেলেই
গড়ে চৌদ্দ সেকেন্ডের বেশি মন বসাতে পারে না। আমারতো চৌদ্দ সেকেন্ডও ভালো লাগছে
না।
মেলবোর্নে আমার কয়েকজন
বন্ধুকে দেখেছি রাতের বেলা বাসা
থেকে বেরোলে টিভি চালু
করে দিয়ে বেরোয়। তাতে নাকি বাসার
নিরাপত্তা বাড়ে। এই আমেরিকাতে হয়তো টিভির
ওরকম ব্যবহার আরো বেশি। বেশির ভাগ মানুষ
এখানে নিঃসঙ্গ। বাসায় তাদের সারাক্ষণের সঙ্গী কুকুর কিংবা বিড়াল আর টেলিভিশন। আমেরিকায় প্রতি এক দশমিক
দুই জনের জন্য
একটা করে টেলিভিশন
সেট আছে। আর রেডিও আছে মাথাপিছু
দুটো করে। নিঃসঙ্গ
বলেই এরা ঘরে
থাকতে চায় না। নিঃসঙ্গ বলেই উল্টোপাল্টা কাজ
করে অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায়। বিরক্তি ছাপিয়ে করুণাই হয় এই অহঙ্কারী নিঃসঙ্গ মানুষগুলোর জন্য।
টিভি অফ করে ঘরের বাতি
নেভাতেই ঘরের কাচের
দেয়ালজুড়ে রাতের আল্বুকার্কি। স্ট্রিটলাইটগুলো কুয়াশায় ঘোলাটে। বেশ কিছু
ট্যাক্সির আনাগোনা রাস্তাজুড়ে। শুক্রবারের রাত। দিনের
বেলার চেয়েও ব্যস্ততা বেশি এখন। যার যার মত প্রত্যেকেই ছুটছে জীবিকার জন্য বা একটু জীবনের জন্য। বেঁচে
থাকার জন্য মানুষের
কতকিছুই করতে হয়। জীবনের দাম শোধ
করতে হয় সারাজীবন
ধরে।
No comments:
Post a Comment