১৯৫১
অনেকদিন শয্যাশায়ী থাকার পর জুনের পঁচিশ তারিখে আইনস্টাইনের বোন মায়া মারা গেছেন।
বোনকে হারিয়ে আরো একা হয়ে গেলেন আইনস্টাইন। বাড়িতে এখন তিনজন মাত্র মানুষ- হেলেন ডুকাস,
মার্গট ও আইনস্টাইন।
আইনস্টাইন এখনো কাজ করছেন ইউনিফায়েড ফিলড থিওরির ওপর। অভিকর্ষজ বল ও তড়িৎচুম্বকীয়
বলকে একই ফ্রেমে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছেন আইনস্টাইন। আইনস্টাইনের বিশ্বাস- প্রকৃতিতে
দুটো আলাদা আলাদা বল থাকতে পারেনা, সব প্রাকৃতিক বলই কোন না কোন ভাবে একই ফ্রেমে আবদ্ধ।
তখনো স্ট্রং ও উইক নিউক্লিয়ার ফোর্সের আলাদা অস্তিত্ব আবিষ্কৃত হয়নি। এখন অবশ্য বিজ্ঞানীরা
থিওরি অব এভরিথিং(Theory Of Everything)- এর সন্ধানে গবেষণা করছেন।
প্রকাশনা
পেপারঃ২৭৪ “Foreward”.In Spinaoza:Dictionary. সম্পাদনাঃ ড্যাগোবার্ট রুনিস(Dagobert
D.Runes), প্রকাশকঃফিলোসফিক্যাল লাইব্রেরি, নিউইয়র্ক (১৯৫১)। ড্যাগোবার্ট রুনিস সম্পাদিত
স্পিনোজার অভিধানের ভূমিকা লিখে দেন আইনস্টাইন। বারুস স্পিনোজা (Baruch Spinoza)ছিলেন
সপ্তদশ শতাব্দীর ইহুদি ধর্মতত্ত্ববিদ ও দার্শনিক। আইনস্টাইনের ব্যক্তিগত ধর্মচিন্তায়
হল্যান্ডের এই দার্শনিকের অনেক প্রভাব সুস্পষ্ট। স্পিনোজা উগ্র-ইহুদিবাদের কড়া সমালোচনা
করেছেন। তিনি মনে করেন টোরাহ(Torah) শাস্ত্রের নিয়ম-কানুন এ যুগে অচল। রক্ষণশীল ইহুদিরা
স্পিনোজাকে পছন্দ করেন না। স্পিনোজার দার্শনিক রচনাবলীর সংকলন স্পিনোজা-অভিধান। আইনস্টাইন
এর ভূমিকায় বইটির প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করে বইটির প্রশংসা করেন।
পেপারঃ২৭৫ “The Advent of the Quantum Theory.” Science, সংখ্যা ১১৩ (১৯৫১),
পৃষ্ঠাঃ৮২-৮৪। এ প্রবন্ধে আইনস্টাইন কোয়ান্টাম তত্ত্বের উৎপত্তি বিশ্লেষণ করেন।
পেপারঃ২৭৬ “Introduction”.In Johannes Kepler:Life and Letters. সম্পাদনাঃক্যারোলা
ব্যুমগার্ড, প্রকাশকঃফিলোসফিক্যাল লাইব্রেরি, নিউইয়র্ক (১৯৫১)। জোহানেস কেপলারের চিঠিপত্রের
সংকলন ও সম্পাদনা করেন ক্যারোলা ব্যুমগার্ড(Carola Baumgardt)। আইনস্টাইন এ সংকলনে
ভূমিকায় কেপলারের যুগান্তকারী গবেষণা ও আবিষ্কারের কথা স্মরণ করেন। পৃথিবী ও অন্যান্য
গ্রহের গতিপথ আবিষ্কার করেছেন কেপলার। গ্যালিলিও থেকে শুরু করে আরো অনেকের কাছে লেখা
কেপলারের চিঠি থেকে জানা যায় প্রচন্ড কষ্ট সহ্য করে গবেষণা করতে হয়েছে কেপলারকে।
১৯৫২
ইসরায়েলের প্রথম প্রেসিডেন্ট চেইম ওয়েইজম্যান মারা গেছেন। ইসরায়েলি নেতারা আইনস্টাইনকে
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট পদ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করলেন। সিনিয়র নেতাদের এ সিদ্ধান্তে
প্রধানমন্ত্রী ডেভিড-বেন-গুরিয়ন সহ ইসরায়েল সরকারের অনেকেই গভীর উৎকন্ঠায় পড়ে গেলেন।
প্রধানমন্ত্রী বেন-গুরিয়ন ইৎজাক ন্যাভনকে প্রশ্ন করলেন, “আইনস্টাইন যদি রাজী হয়ে
যান তখন কী হবে? তাঁকে তো প্রেসিডেন্ট বানাতেই হবে। কারণ তখন তো আর অনুরোধ ফিরিয়ে নেয়া
যাবে না। আইনস্টাইন প্রেসিডেন্ট হলে আমাদের যে কীরকম সমস্যা হবে বুঝতে পারছেন?”
আইনস্টাইন ইসরায়েলের নেতাদের সবিনয়ে জানিয়ে দিলেন, “আমি খুব সম্মানিত বোধ করছি এরকম একটি প্রস্তাব পেয়ে। তবে আমি প্রেসিডেন্ট পদের উপযুক্ত নই”। ইসরায়েলের নেতারা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইহুদিদের ওপর অত্যাচারের ক্ষতিপূরণ দিতে রাজী হয়েছে জার্মানি। জার্মানি আইনস্টাইনকে আবারো সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দিতে চাচ্ছে। আইনস্টাইন এবারো দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করলেন সে প্রস্তাব।
১৯১৯ সালের মত এবছর ফেব্রুয়ারিতে আবার সূর্যের পূর্ণগ্রহণ দেখা গেছে ইউরোপ থেকে।
জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা এবছর আবার প্রমাণ পেয়েছেন আলোর ওপরও অভিকর্ষণের প্রভাব আছে। আইনস্টাইনের
আপেক্ষিকতা তত্ত্ব আবারো সঠিক প্রমাণিত হলো। নভেম্বরের ১৮ তারিখে আমেরিকা প্রশান্ত
মহাসাগরের মার্শাল আইল্যান্ডে প্রথম হাইড্রোজেন বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।
প্রকাশনা
এ বছর প্রকাশিত আইনস্টাইনের তিনটি উল্লেখযোগ্য রচনাঃ
পেপারঃ২৭৭ “Foreword” হোমার স্মিথের Man and His Gods বইয়ের ভূমিকা। প্রকাশকঃলিটল
ব্রাউন, বোস্টন (১৯৫২)। খ্যাতিমান জীববিজ্ঞানী হোমার স্মিথের ধর্ম ও দর্শনের ইতিহাসভিত্তিক
বই ‘ম্যান
এন্ড হিজ গডস’-
এর ভূমিকা লিখে দেন আইনস্টাইন। আইনস্টাইন স্মিথের বস্তুনিষ্ঠতার প্রশংসা করেন।
পেপারঃ২৭৮ “Those Who Read Only Newspapers See Things Like a
Nearsighted Person without Glasses.”Der Jungkaufmann (Zurich),বর্ষ ২৭, সংখ্যা ৪(১৯৫২), পৃষ্ঠাঃ৭৩।
সুইজারল্যান্ডের ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এই প্রবন্ধে আইনস্টাইন তরুণতরুণীদের প্রতি ক্লাসিক
বই পড়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যারা সংবাদপত্র ছাড়া আর কিছুই পড়েনা, তাদের চিন্তাভাবনা
চশমা ছাড়া স্বল্পদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষের দৃষ্টির মতই সীমাবদ্ধ। শিল্পসাহিত্য বা দর্শনের
খুব সামান্য অংশই কালোত্তীর্ণ হয়, আর ওই কালোত্তীর্ণ রচনাই মানব-সভ্যতার সবচেয়ে মূল্যবান
সম্পদ, বিশ্বমানবতার দলিল।
পেপারঃ২৭৯ “Symptoms of Cultural Decay”. Bulletin of Atomic
Scientists, বর্ষ ৮, সংখ্যা ৭ (অক্টোবর ১৯৫২)। বুলেটিন অব এটমিক সায়েন্টিস্টস-এ প্রকাশিত
এ প্রবন্ধে আইনস্টাইন রাজনীতিবিদদের সমালোচনা করেছেন। তিনি মনে করেন, রাজনৈতিকদের বৈজ্ঞানিক
গবেষণা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা উচিত নয় এবং অন্যদেশের সাথে বৈজ্ঞানিক গবেষণা-বিনিময়েও
বাধা দেয়া উচিত নয়। আইনস্টাইন বলেন, বর্তমান রাজনীতিবিদদের বিশ্বাস করা যায় না। তাঁরা
এমন কর্তৃত্বপরায়ণ যে শান্ত স্বাভাবিক পরিস্থিতিতেও তাঁরা সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত
জীবন ও কাজ নিয়ন্ত্রণ করতে চান, মানুষকে সংগঠিত করতে চান যেন আমাদের যুদ্ধের প্রস্তুতি
চলছে।
১৯৫৩
আইনস্টাইনের শরীর খুব খারাপ হয়ে গেছে। প্রিন্সটনের রাস্তায় হাঁটা, আইসক্রিম
পার্লারে গিয়ে আইসক্রিম খাওয়া, প্রতিবেশীর সাথে রাস্তায় দাঁড়িয়ে গল্প করা- সবকিছুই
বন্ধ হয়ে গেছে তাঁর। পৃথিবী থেকে মিলিটারি সিস্টেম উঠে গেলেই খুশি হন আইনস্টাইন। মিলিটারি
সার্ভিসের বিরুদ্ধে তিনি সবসময় কথা বলেছেন। গঠিত হয়েছে ‘ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশান
অব অপোনেন্টস অব মিলিটারি সার্ভিস (International Organization of Opponents of
Military Service)’. এই সংগঠনের পক্ষ থেকে আইনস্টাইনকে অনুরোধ করা হলো সংগঠনের
‘জার্মান শাখা’র সভাপতির পদ গ্রহণ করার
জন্য। আইনস্টাইন জার্মানির জন্য কিছুই করবেন না বলে প্রতিজ্ঞা করেছেন। তিনি এ প্রস্তাব
প্রত্যাখ্যান করলেন।
প্রকাশনা
এবছর প্রকাশিত আইনস্টাইনের ছয়টি উল্লেখযোগ্য রচনাঃ
পেপারঃ২৮০ “To the Jewish Peace Fellowship.” Tidings, বর্ষ ৮, সংখ্যা
১ (১৯৫৩), পৃষ্ঠাঃ৩। ইহুদিদের একটি শান্তিবাদী সংগঠনে আইনস্টাইনের এ ভাষণটি পাঠ করা
হয়।
পেপারঃ২৮১ “A Comment on a Criticism of a Recent Unified Field Theory.” Physical Review, সংখ্যা
৮৯ (১৯৫৩), সংখ্যা ৩২১। ইউনিফায়েড ফিলড থিওরির ওপর এটাই আইনস্টাইনের শেষ গবেষণাপত্র।
সমন্বিত তত্ত্বের গাণিতিক বিশ্লেষণের ব্যাপারে তিনি সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারলেও ঠিক
কীভাবে তত্ত্বটি কাজ করে সে ব্যাপারে তিনি এখনো নিশ্চিন্ত নন। থিওরির ফিজিক্স সম্পর্কেও
নির্দিষ্ট কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি এখনো।
পেপারঃ২৮২ “Elementary Reflections on the Interpretation of the
Foundations of Quantum Mechanics.” In Scientific Papers Presented to Max Born. প্রকাশকঃ অলিভার
এন্ড বয়েড,এডিনবরা (১৯৫৩)। এ প্রবন্ধে আইনস্টাইন কোয়ান্টাম থিওরি থেকে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের
উত্তরণের পথে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের কিছু টার্ম ব্যাখ্যা করেন। কোয়ান্টাম মেকানিক্সের
সাফল্যের প্রায় বিশ বছর পরেও আইনস্টাইন কোয়ান্টাম মেকানিক্সকে সম্পূর্ণ মেনে নিতে পারছেন
না।
পেপারঃ২৮৩ “Preface”.In Galileo Galilei,Dialouge Concerning the Two Chief
World Systems: Ptolemaic and Copernican.অনুবাদঃ স্টিলম্যান ড্র্যাক। প্রকাশকঃ ইউনিভার্সিটি
অব ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস, বার্কলি ও লস এঞ্জেলেস (১৯৫৩)। টলেমি ও কোপারনিকাস তত্ত্বের
তুলনামূলক আলোচনা ভিত্তিক গ্যালিলিওর এই বইটি পুনঃপ্রকাশের সময় আইনস্টাইনের এই ভূমিকাটি
প্রকাশিত হয়।
পেপারঃ২৮৪ “Letter in Reply to Willium Frauenglass.” Bulletin of the
Atomic Scientists, সংখ্যা ৯ (১৯৫৩), পৃষ্ঠাঃ২৩০। ব্রুকলিনের স্কুলশিক্ষক উইলিয়াম ফ্রয়েনগ্লাসকে
কমিউনিস্ট সন্দেহে সিনেটর ম্যাককারথির অফিস থেকে চিঠি পাঠানো হয়। আমেরিকান সিনেটর ইন্টারনাল
সিকিউরিটি সাবকমিটির সামনে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে তাঁকে। তিনি আইনস্টাইনের কাছে পরামর্শ
চাইলেন। আইনস্টাইন মে মাসের ১৬ তারিখে উইলিয়াম ফ্রয়েনগ্লাসকে এই চিঠিটি লেখেন। আইনস্টাইন
ফ্রয়েনগ্লাসকে পরামর্শ দেন সিনেট কমিটির কাছে না যাবার জন্য। আইনস্টাইন বলেন, প্রত্যেক
বুদ্ধিজীবীরই উচিত এধরণের ব্যবস্থার প্রতিবাদ করা। কারণ এই ব্যবস্থা সংবিধানের পঞ্চম
সংশোধনী অনুসারে মানুষের ব্যক্তি-স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ শুধুই নয়, এই ব্যবস্থা সংবিধান
লঙ্ঘন করে নিরপরাধ নাগরিকের ওপর রাষ্ট্রের অত্যাচার।
পেপারঃ২৮৫ “Message to the 24th Annual Conference of
the War Resister’s League.” ১০ আগস্ট ১৯৫৩, নিউইয়র্ক। ওয়ার রেজিস্ট্রারস লিগের ২৪ তম
বার্ষিক অধিবেশনে আইনস্টাইনের এই বাণী পঠিত হয়। আইনস্টাইন যুদ্ধবিরোধী এই সংগঠনের কার্যকলাপের
প্রশংসা করেন এবং তাদের সাফল্য কামনা করেন।
১৯৫৪
রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন আইনস্টাইন। অসুস্থ শরীরেও কাজ করে যাচ্ছেন তিনি যতটুকু
পারছেন। সহযোগী গবেষক ব্রুরিয়া কফম্যানের সাথে কাজ করে আইনস্টাইন জীবনের শেষ বৈজ্ঞানিক
গবেষণাপত্রটি শেষ করেন এবছর। পেপারটি প্রকাশিত হয়েছে পরবর্তী বছর (পেপার-২৯৪)।
আমেরিকান সিনেটর ম্যাককারথির নেতৃত্বে কমিউনিস্ট শিকার জোরেশোরেই চলছে। বিভিন্ন
ইউনিভার্সিটি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে গবেষণারত অধ্যাপক ও বিজ্ঞানীরা সবাই তটস্থ হয়ে আছেন,
কখন ডাক আসে ‘হাউজ
আন-আমেরিকান অ্যাক্টিভিটিজ কমিটি থেকে। কমিটি এখন লস আলামোস ন্যাশনাল ল্যাবোরেটরির
ডাইরেক্টর, আমেরিকার প্রথম পারমাণবিক বোমার জনক রবার্ট ওপেনহেইমারকে জেরা করছে। কমিটির
ধারণা, কমিউনিস্টদের প্রতি সমর্থন আছে ওপেনহেইমারের। ওপেনহেইমারের সিকিউরিটি ক্লিয়ারেনস
বাতিল করে দেয়া হলো, সব ধরণের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হলো তাঁকে। যে মানুষটি পারমাণবিক
বোমার বৈজ্ঞানিক প্রকল্পে নেতৃত্ব দিয়ে আমেরিকাকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী (বা ভয়ঙ্কর)
দেশে পরিণত করেছেন সেই ওপেনহেইমারকে ছুঁড়ে ফেলে দিলো আমেরিকা।
আইনস্টাইন প্রথম থেকে শেষপর্যন্ত ওপেনহেইমারকে সমর্থন করেছেন। তিনি প্রকাশ্যে
কঠোর ভাষায় কমিটির সমালোচনা করেছেন। আইনস্টাইন দেশের সব বিজ্ঞানীদের আহ্বান জানিয়ে
চলেছেন যেন কমিটির সামনে কেউ না যায়। আমেরিকান বামপন্থী ও উদারপন্থীরা আইনস্টাইনের
সাহসের প্রশংসা করলেন। তাঁদের কাছে আইনস্টাইন এখন ‘হিরো’। অন্যদিকে রক্ষণশীল ডানপন্থী
ও উগ্রপন্থী আমেরিকানদের চোখে আইনস্টাইন একজন দেশদ্রোহী। তাঁরা এখন আইনস্টাইনের নাগরিকত্ব
কেড়ে নিয়ে তাঁকে আমেরিকা থেকে বের করে দেবার দাবী তুলছেন। দেশদ্রোহী আইনস্টাইনের বিচার
চেয়ে মিছিল মিটিং হচ্ছে। আইনস্টাইন জ্ঞানবিজ্ঞান ও নাগরিক অধিকারের এরকম অপমান জার্মানিতে
দেখেছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে। এখন আমেরিকায় আবার একই রকম অপমান দেখে ভীষণ হতাশ
হয়ে পড়লেন।
সিনেটর ম্যাককারথি এবার নজর দিলেন আমেরিকান মিলিটারি ডিপার্টমেন্টের দিকে। তিনি
প্রমাণ করতে চান যে মিলিটারিতেও কমিউনিস্ট-দূষণ ঘটেছে। এতদিন শিল্পী, বিজ্ঞানী আর বুদ্ধিজীবীদের
অপমান উপভোগ করেছেন মিলিটারিরা। এবার তাঁদের দিকে বন্দুক তাক করতেই তাঁরা ক্ষেপে গেলেন।
আর্মিদের এটর্নি সিনেটে ম্যাককারথিকে সরাসরি প্রশ্ন করলেন, “আপনার কি লজ্জা-শরম নেই?” কয়েকদিনের মধ্যেই ম্যাককারথির
দিন শেষ হয়ে গেলো। তাঁর সব ক্ষমতা কেড়ে নেয়া হলো। সিনেটে ম্যাককারথির কাজের সমালোচনা
করে বলা হলো যে, তিনি আমেরিকান সিনেটের অপমান করেছেন। ম্যাককারথির রাজনৈতিক ক্যারিয়ার
শেষ হয়ে গেলেও বিশ্বরাজনীতিতে ‘ম্যাককারথিজম’ নামক নতুন শব্দ চালু হয়ে গেলো। কোনরকম প্রমাণছাড়া শুধুমাত্র
সন্দেহবশত বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাউকে হেনস্থা করার নাম দেয়া হলো ‘ম্যাককারথিজম’।
আমেরিকা এবছর আরেকটি হাইড্রোজেন বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরের
মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে। বিস্ফোরণের ফলে তিনটি দ্বীপ বাষ্প হয়ে উড়ে গেছে। ওপেনহেইমার এখন
শান্তিবাদী। আইনস্টাইনের সাথে গলা মিলিয়ে তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানালেন হাইড্রোজেন বোমা
প্রকল্পের। আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়ার পারমাণবিক বিস্ফোরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় উঠলো।
প্রকাশনা
এবছর প্রকাশিত আইনস্টাইনের ছয়টি উল্লেখযোগ্য রচনাঃ
পেপারঃ২৮৬ Ideas and Opinions.অনুবাদঃসোনিয়া বার্গম্যান(Sonja Bargmann)। প্রকাশকঃ
ক্রাউন, নিউইয়র্ক (১৯৫৪)। বিভিন্ন বিষয়ে আইনস্টাইনের প্রবন্ধের সবচেয়ে জনপ্রিয় সংকলন
এই বই। জার্মান ভাষায় লিখিত প্রবন্ধগুলো ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন আইনস্টাইনের সহকারী
ভ্যালেন্টাইন বার্গম্যানের স্ত্রী সোনিয়া বার্গম্যান। বইটির বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধগুলোর
একটি ভূমিকা লিখেছেন ভ্যালেন্টাইন বার্গম্যান।
পেপারঃ২৮৭ “Algebric Properties of the Field in the Relativistic
Theory of the Asymmetric Field.” Annals of Mathematics, সংখ্যা ৫৯ (১৯৫৪), পৃষ্ঠাঃ২৩০-২৪৪।
সহলেখকঃ ব্রুরিয়া কফম্যান। এটি আইনস্টাইনের জীবনের শেষ গবেষণাপত্র। সহযোগী গবেষক ব্রুরিয়া
কফম্যানের সাথে লিখিত এই গবেষণাপত্রে রিলেটিভিস্টিক ফিল্ড থিওরির বীজগাণিতিক ধর্ম বিশ্লেষণ
করেছেন।
পেপারঃ২৮৮ “Foreword”.ম্যাক্স জ্যামারের Concepts of Space বইয়ের মুখবন্ধ। প্রকাশকঃ
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, কেমব্রিজ (১৯৫৪)।
পেপারঃ২৮৯ “The Meaning of Relativity”.পঞ্চম সংস্করণ, প্রকাশকঃ
প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস, প্রিন্সটন, নিউজার্সি (১৯৫৪)। আইনস্টাইনের রিলেটিভিটি
থিওরি থেকে শুরু করে সমন্বিত তত্ত্ব পর্যন্ত আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা সংক্রান্ত গবেষণার
সংকলন এই বই। আইনস্টাইন পঞ্চম সংস্করণে বেশ কিছু নতুন বিষয় যোগ করেন এবং আগের সংকলনের
অনেক কিছু পরিবর্তন করেন। চতুর্থ সংস্করণের অ্যাপেন্ডিক্স-২ এর ‘জেনারালাইজেশান অব গ্র্যাভিটেশান
থিওরি’র
পুরোটাই বদলে ফেলে পঞ্চম সংস্করণে ‘রিলেটিভিস্টিক থিওরি অব দি নন-সিমেট্রিক ফিলড’ শিরোনামে সংযোজন করেন।
এটাই ছিলো আইনস্টাইনের অভিকর্ষজ ক্ষেত্র ও তড়িৎচুম্বকীয় ক্ষেত্রের সমন্বয় সাধনের সর্বশেষ
চেষ্টা।
পেপারঃ২৯০ “If Einstein Were Young Again,He Says He’d Become a Plumber.” নিউইয়র্ক টাইমস, ১০ নভেম্বর
১৯৫৪। অক্টোবরের ১৩ তারিখে ‘দি রিপোর্টার’-এর সম্পাদকের কাছে লেখা একটি চিঠির ওপর ভিত্তি করে নিউইয়র্ক
টাইমস নভেম্বরের ১০ তারিখে এই প্রবন্ধটি প্রকাশ করে। আবার যদি জন্ম হয়- আইনস্টাইন কী
হতে চান সেজন্মে? আইনস্টাইন লিখেছেন, পরবর্তী জন্মে তিনি আর বৈজ্ঞানিক হতে চান না।
তিনি হতে চান মিস্ত্রী বা ফেরিওয়ালা। তিনি দেখতে চান মিস্ত্রী বা ফেরিওয়ালার কাজে বর্তমানে
যে স্বাধীনতা আছে, তখনো সে স্বাধীনতা থাকে কিনা। যদি থাকে, তখন হয়তো পূর্ণ-স্বাধীনতায়
পদার্থবিজ্ঞানচর্চা করা যাবে। কারণ আইনস্টাইন বিশ্বাস করেন, চাকরি করে গবেষণা করতে
হলে সে গবেষণা স্বাধীন নয়।
পেপারঃ২৯১ “Tribute to Joseph Scharl.” নিউইয়র্ক টাইমস, ৯ ডিসেম্বর
১৯৫৪। শিল্পী জোসেফ শার্ল আইনস্টাইনের ছবি এঁকেছিলেন। এ প্রবন্ধে আইনস্টাইন শিল্পী
শার্লের প্রশংসা করেন।
১৯৫৫
মার্চের ১৪ তারিখে আইনস্টাইন ছিয়াত্তরতম জন্মদিন পালন করলেন। তাঁর বন্ধুরা চেয়েছিলেন
বেশ জাঁকজমক করে জন্মদিনের অনুষ্ঠান করতে। কিন্তু আইনস্টাইন রাজী হননি। কয়েকজন ঘনিষ্ঠবন্ধুদের
সাথে ঘরোয়াভাবে সাদামাটা একটি অনুষ্ঠান হলো। এক সপ্তাহ পরে তিনি খবর পেলেন, তাঁর প্রিয়
বন্ধু মাইকেল বেসো মারা গেছেন।
আইনস্টাইনের সুখে দুঃখে সবসময় পাশে থাকতেন মাইকেল বেসো। স্পেশাল রিলেটিভিটির সময় থেকে শুরু করে মিলেইভার সাথে বিচ্ছেদের সময়ও মাইকেল বেসোই ছিলেন আইনস্টাইনের সবচেয়ে ঘনিষ্ট বন্ধু। ভীষণ মুষড়ে পড়লেন আইনস্টাইন।
আইনস্টাইনের সুখে দুঃখে সবসময় পাশে থাকতেন মাইকেল বেসো। স্পেশাল রিলেটিভিটির সময় থেকে শুরু করে মিলেইভার সাথে বিচ্ছেদের সময়ও মাইকেল বেসোই ছিলেন আইনস্টাইনের সবচেয়ে ঘনিষ্ট বন্ধু। ভীষণ মুষড়ে পড়লেন আইনস্টাইন।
সোভিয়েত ইউনিয়ন পারমাণবিক বোমা তৈরি করে ফেলেছে। আমেরিকা ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকবার
হাইড্রোজেন বোমা বিস্ফোরণ করে শক্তির আস্ফালন করেছে। আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে
পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় ব্রিটিশ দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেল
আইনস্টাইনের কাছে অনুরোধ করেছেন পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করার জন্য বিশ্বনেতাদের
কাছে আবেদন করার জন্য। বার্ট্রান্ড রাসেল আবেদনের খসড়া তৈরি করেছেন। এগারোই এপ্রিল
আইনস্টাইন আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করে পাঠিয়ে দিলেন বার্ট্রান্ড রাসেলের কাছে।
ইসরায়েল রাষ্ট্রের সপ্তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইসরায়েল
সরকার আইনস্টাইনকে প্রধান অতিথি করে নিয়ে যেতে চাচ্ছে ইসরায়েলে। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার
কারণে আইনস্টাইনের পক্ষে ইসরায়েল ভ্রমণ করা সম্ভব নয়। ঠিক হলো আইনস্টাইনের বক্তৃতা
রেকর্ড করে নিয়ে যাওয়া হবে ইসরায়েলের রেডিওতে প্রচার করার জন্য। আইনস্টাইন বক্তৃতার
খসড়া তৈরি করতে শুরু করলেন।
এপ্রিলের ১৩ তারিখে পেটে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করলেন আইনস্টাইন। এরকম ব্যথা তাঁর
আগেও হয়েছে। বেশ কয়েকবছর আগে তাঁর পেটের একটি ধমনীর দেয়ালে টিউমার (aneurysm)হয়েছে
এবং তা দিনে দিনে বড় হচ্ছে। যে কোনদিন সেটি ফেটে যেতে পারে। ব্যথা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
এরকম তীব্র ব্যথা আগে কোনদিন লাগেনি। হেলেন ডুকাস ডাক্তারকে ফোন করলেন। আইনস্টাইনের
ব্যক্তিগত ডাক্তার পরামর্শ দিলেন হাসপাতালে ভর্তি হতে। কিন্তু আইনস্টাইন কিছুতেই হাসপাতালে
যেতে রাজী নন। কিন্তু ব্যথা ক্রমশ বাড়ছে দেখে ১৫ তারিখে একপ্রকার জোর করেই হাসপাতালে
নিয়ে যাওয়া হলো। ডাক্তাররা বললেন, অপারেশান করাতে হবে। আইনস্টাইন কিছুতেই রাজী নন।
তিনি বলেন, মৃত্যু যত সংক্ষেপে হয় ততোই ভালো, অপারেশান ইত্যাদি করে আড়ম্বর সহকারে মরার
কোন অর্থ হয়না। ক্যালিফোর্নিয়া থেকে বড়ছেলে হ্যান্স এলেন, নিউইয়র্ক থেকে ওয়ালটার বাকি,
অটো নাথান সহ আরো অনেক ডাক্তার বন্ধু এলেন। সবাই চেষ্টা করলেন আইনস্টাইনকে অপারেশানে
রাজী করাতে। কিন্তু আইনস্টাইন কিছুতেই অপারেশান করাবেন না। ব্যথা কিছুটা কমে গেলো কয়েকদিনের
মধ্যে।
এপ্রিলের ১৭ তারিখ রাতে কিছুটা সুস্থ বোধ করার পর ইসরায়েলের বক্তৃতার খসড়া নিয়ে
কিছুক্ষণ কাজ করে ঘুমিয়ে পড়লেন আইনস্টাইন। কিন্তু কয়েকঘন্টা পরেই ১৮ তারিখ ভোর একটার
দিকে প্রচন্ড ব্যথায় ঘুম ভেঙে গেলো তাঁর। পেটের ফোঁড়া ফেটে গেছে। কর্তব্যরত নার্স অ্যালবার্টা
রোজেল (Alberta Rozsel)ছুটে এলেন। আইনস্টাইন তখন বিড়বিড় করে জার্মান ভাষায় কিছু বললেন।
নার্স তার কিছুই বুঝতে পারলেন না। কয়েকমিনিটের মধ্যেই মারা গেলেন আইনস্টাইন।
খবর পেয়ে ডাক্তার নার্স বন্ধুরা সবাই ছুটে এলেন হাসপাতালে। হাসপাতালের প্যাথোলজিস্ট
ডাক্তার টমাস হার্ভি(Thomas Harvey) । আইনস্টাইনের মরদেহের অটোপসি(autopsy) করার সময়
কারো কোন অনুমতি ছাড়াই ব্রেনটি খুলে রেখে দিলেন। আরেকজন প্যাথোলজিস্ট ডাক্তার হেনরি
অ্যাব্রামস(Henry Abrams) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে আইনস্টাইনের চোখ দুটো
তুলে নিলেন। অনেকদিন আগেই আইনস্টাইন বলেছিলেন, মৃত্যুর পরে যেন তাঁর শরীর পুড়িয়ে ফেলা
হয়। কোন ধরণের শোকসভা, শোকমিছিল, শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করতে নিষেধ করেছিলেন তিনি। এমনকি
তাঁর সমাধির চিহ্নও না রাখার জন্য বলেছেন আইনস্টাইন। ১৮ এপ্রিল,১৯৫৫, সোমবার বিকেলে
কোনধরণের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ছাড়াই আইনস্টাইনের মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলা হলো। কিছু পোড়াছাই
ভাসিয়ে দেয়া হলো ডেলাওয়ার(Delaware) নদীতে। পৃথিবীর সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লো আইনস্টাইনের
মৃত্যুসংবাদ।
প্রকাশনা
এপ্রিলে আইনস্টাইনের মৃত্যুর পরেও সারাবছর ধরে আইনস্টাইনের বেশ কিছু রচনা প্রকাশিত
হয়েছে এবছর। এবছর প্রকাশিত নয়টি উল্লেখযোগ্য রচনাঃ
পেপারঃ২৯২ “Foreword” লুই ডি ব্রগলির Physics and Microphysics বই এর মুখবন্ধ।
প্রকাশকঃপ্যান্থিয়ন, নিউইয়র্ক (১৯৫৫)।
পেপারঃ২৯৩ “Preface”.জুলস মকের(Jules Moch)Human Folly:To Disarm or Perish বইয়ের
ভূমিকা। প্রকাশকঃ গোল্যানস(Gollancz), লন্ডন(১৯৫৫)।
পেপারঃ২৯৪ “A New Form of the General Relativistic Field
Equations.”
Annals of Mathematics, সংখ্যা ৬২(১৯৫৫), পৃষ্ঠাঃ১২৮-১৩৮। সহলেখকঃ ব্রুরিয়া কফম্যান।
আইনস্টাইনের জেনারেল রিলেটিভিস্টিক ফিল্ড ইকোয়েশানের একটি নতুন রূপ দেয়ার চেষ্টা করা
হয়েছে এ গবেষণাপত্রে। এ পেপারটি আইনস্টাইনের সহযোগী ব্রুরিয়া কফম্যানের প্রত্যক্ষ রচনা।
আইনস্টাইনের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে এ পেপারটি রচিত হয়েছে।
পেপারঃ২৯৫ “The Einstein-Russell Manifesto”. ৯ জুলাই ১৯৫৫। লন্ডন থেকে
প্রচারিত। বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধের লক্ষ্যে আইনস্টাইন বার্ট্রান্ড
রাসেলের সাথে এই যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন। বিবৃতিতে আরো স্বাক্ষর করেছিলেন ম্যাক্স
বোর্ন, লিওপোল্ড ইনফেলড, ফ্রেডেরিক জুলিয়েট-কুরি, লাইনাস পাউলিং প্রমুখ নোবেল বিজয়ী
বিজ্ঞানীরা।
পেপারঃ২৯৬ “Remembrances”. Schweizerische Hochschulzeitung, সংখ্যা ২৮ (বিশেষ সংখ্যা,
১৯৫৫), পৃষ্ঠাঃ১৪৩-১৫৩। এই প্রবন্ধে আইনস্টাইন তাঁর ফেলে আসা দিনগুলোর কিছু স্মৃতিচারণ
করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, ছাত্রাবস্থাতেই তিনি তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানের বিখ্যাত
গবেষকদের ব্যক্তিগত জীবন ও কর্ম সম্পর্কে পড়তে শুরু করেছিলেন।
পেপারঃ২৯৭ “Albert Schweitzer at Eighty.” Christian Century, বর্ষ
৭২, সংখ্যা ২ (১৯৫৫), পৃষ্ঠাঃ৪২। আলবার্ট সোয়েটজারের আশি বছর পূর্তি উপলক্ষে
আইনস্টাইনের শুভেচ্ছাবাণী। ডাক্তার, দার্শনিক ও মানবতাবাদী আলবার্ট সোয়েটজার ১৯৫২ সালের নোবেল শান্তি
পুরষ্কার পেয়েছেন।
পেপারঃ২৯৮ “Introduction”.হেনরি ওয়াসেলের (Henry I.Wachtel) Security for All and
Free Enterprise বইয়ের ভূমিকা। প্রকাশকঃ ফিলোসফিক্যাল লাইব্রেরি, নিউইয়র্ক (১৯৫৫)।
পেপারঃ২৯৯ “Foreword” উইলিয়াম এসলিঙ্গারের (William Esslinger)Politics and Science বইয়ের মুখবন্ধ।
প্রকাশকঃ ফিলোসফিক্যাল লাইব্রেরি, নিউইয়র্ক (১৯৫৫)।
পেপারঃ৩০০ “What Is the Task of an International Journal?” Common Cause, বর্ষ ১,
সংখ্যা ১(১৯৫৫, ফ্লোরেনস,ইটালি), পৃষ্ঠাঃ৩। ইটালির ফ্লোরেন্স থেকে প্রকাশিত কমন কজ
জার্নালের প্রথম সংখ্যার জন্য আইনস্টাইন এ প্রবন্ধটি লিখেছিলেন। ইন্টারন্যাশনাল জার্নালের
নীতি, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে এ প্রবন্ধে।