১৯৩২
জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত আইনস্টাইন ক্যালটেকে কাটালেন ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে। এসময় তাঁর পরিচয়
হলো আব্রাহাম ফ্লেক্সনারের(Abraham Flexner) সাথে। আব্রাহাম ফ্লেক্সনার
আধুনিক চিন্তা ও গবেষণার জন্য নিবেদিতপ্রাণ মানুষ। দুবছর আগে তিনি
প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে প্রতিষ্ঠা করেছেন ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডি। লুই ব্যামবার্গার
(Louis
Bamberger)ও তাঁর বোন ক্যারোলিন ফুলডের (Caroline Fuld)পাঁচ মিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তায় গঠিত এই ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক
আব্রাহাম ফ্লেক্সনার আইনস্টাইনকে প্রস্তাব দিলেন ইনস্টিটিউটে যোগ দেয়ার জন্য। আইনস্টাইন বার্লিন
ছেড়ে একেবারে চলে আসার জন্য প্রস্তুত নন এখনো। ক্যাপুথে হৃদের
পাড়ের বাড়িটার জন্য টান তো আছেই, তদুপরি নতুন একজনের প্রতিও টান অনুভব
করছেন আইনস্টাইন। টনি মেন্ডেলের (Toni Mendel)সঙ্গ ভালো লাগছে, এখনই তা ছাড়তে ইচ্ছে করছে না তাঁর।
ধনী ইহুদি বিধবা টনি মেন্ডেল আইনস্টাইনের ক্যাপুথের বাড়িতে আসতে শুরু করেছেন
বেশ কিছুদিন থেকে। শুরুতে এলসার সঙ্গে ভাব জমিয়েছেন সুন্দরী মেন্ডেল।এলসা চকলেট পছন্দ
করেন। মেন্ডেল তাঁর লিমোজিন থেকে নেমেই এলসার হাতে তুলে দেন চকলেটের প্যাকেট, এবং
একটু পরেই আইনস্টাইনকে বিয়ে বেরিয়ে যান বেড়াতে। বার্লিনের অপেরা
হাউজে,কনসার্টে দেখা যায় টনি মেন্ডেলের সাথে আইনস্টাইনকে। এলসা একটা সীমা
পর্যন্ত আইনস্টাইনকে ছাড় দিতে রাজী। কিন্তু মাঝে মাঝে টনি মেন্ডেলের বাড়িতেই রাত কাটিয়ে আসেন
আইনস্টাইন। তা নিয়ে এলসার সাথে ইদানিং মনোমালিন্য হচ্ছে মাঝে মাঝেই। বার্লিনের বাইরে
থেকে আইনস্টাইনের ডাক এলে এলসা সেজন্যই এখন খুশি হন। কিন্তু আইনস্টাইন
এখনো টনি মেন্ডেলের জন্য টান অনুভব করছেন বলেই ফ্লেক্সনারের প্রস্তাবে তৎক্ষণাৎ রাজি
হচ্ছেন না।
আইনস্টাইনের সুবিধা করে দিলেন ফ্লেক্সনার। ঠিক হলো, আইনস্টাইন
বছরের ছ’মাস থাকবেন প্রিন্সটনে,ছ’মাস বার্লিনে। ১৯৩৩ সালের অক্টোবরে
যোগ দেবেন আইনস্টাইন।
আইনস্টাইন ক্যালটেক থেকে গেলেন জেনেভায় একটি শান্তি-সম্মেলনে
যোগ দিতে। সেখান থেকে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে গেলেন। এসময় পত্রযোগাযোগ
হলো সিগমন্ড ফ্রয়েড ও ম্যাক্সিম গোর্কির সাথে।
ইতোমধ্যে দ্বিতীয়বার ঠাকুরদা হলেন আইনস্টাইন। হ্যান্স আলবার্ট ও ফ্রেইড্রার দ্বিতীয় পুত্র ক্লসের (Klaus)জন্ম হলো। কিন্তু ছয়বছরের বেশি বাঁচেনি ক্লস।
এদিকে জার্মানির নির্বাচনে হিটলারকে সত্তর লক্ষ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট
নির্বাচিত হয়েছেন পল ভন হিন্ডারবুর্গ (Paul von Hinderburg)। কিন্তু পার্লামেন্টে
সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে হিটলারের নাৎসি বাহিনী। প্রেসিডেন্ট
হিন্ডারবুর্গ ফ্র্যাঞ্জ ভন প্যাপেনকে(Franz von Papen) চ্যান্সেলর নিয়োগ করে
হিটলারকে ভাইস-চ্যান্সেলর হবার আহ্বান জানালেন। কিন্তু হিটলার
এ প্রস্তাবে রাজী হলেন না। ফ্র্যাঞ্জ ভন প্যাপেন পদত্যাগ করলেন। নতুন চ্যান্সেলর
হলেন কুর্ট ভন স্নেইচার (Kurt von Schleicher)। জন্মসূত্রে অস্ট্রিয়ার নাগরিক হিটলার জার্মানির নাগরিকত্ব
গ্রহণ করলেন। জার্মানিতে হিটলারের উত্থান এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
বছরের শেষের দিকে আইনস্টাইনের আবার ক্যালটেকে যাবার কথা আছে। আইনস্টাইন বুঝতে
পারছেন তাঁকে জার্মানি ছাড়তে হতে পারে। হিটলারের নাৎসি পার্টির
বিরুদ্ধে তিনি সবসময় উচ্চকন্ঠ। হিটলার যে আইনস্টাইনকে ছাড়বেন না তা বোঝাই যাচ্ছে। হিটলারের নাৎসি
বাহিনী আইনস্টাইনের নামে কুৎসা রটাচ্ছে। আমেরিকাতেও প্রচারিত হয়ে
গেছে যে আইনস্টাইন ঘোর কমিউনিস্ট। ক্যালটেকে যাবার জন্য ভিসার দরখাস্ত করলে আইনস্টাইনকে আমেরিকান
দূতাবাসে সাক্ষাৎকারের নামে একঘন্টা ধরে জেরা করা হয় বিভিন্ন বিষয়ে। আইনস্টাইন জানতে
পারেন যে আমেরিকার ওম্যানস প্যাট্রিয়ট কর্পোরেশন আইনস্টাইনের নামে অভিযোগ করেছেন যে, আইনস্টাইন
আমেরিকার জন্য ক্ষতিকর ব্যক্তি, এবং তাঁকে যেন আমেরিকা যাওয়ার
ভিসা না দেয়া হয়। আইনস্টাইনকে ভিসা দেয়া হলো না। আইনস্টাইনের
মত বিশ্ববিখ্যাত ব্যক্তির পক্ষে এরচেয়ে অপমানজনক আর কী হতে পারে। দূতাবাস থেকে
রাগ করে চলে এলেন আইনস্টাইন। কিন্তু পরদিন সকালে আমেরিকান দূতাবাসের অফিসাররা আইনস্টাইনের
কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইলেন এবং আইনস্টাইনকে ভিসা দেয়া হলো। আইনস্টাইন যাত্রা
করলেন ক্যালটেকের উদ্দেশ্যে।
প্রকাশনা
এবছর প্রকাশিত আইনস্টাইনের নয়টি উল্লেখযোগ্য প্রকাশনাঃ
পেপারঃ১৭৫ “To American Negroes.” Crisis,সংখ্যা ৩৯ (১৯৩২),পৃষ্ঠাঃ৪৫। আইনস্টাইন আমেরিকা
ভ্রমণের সময় আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের যে সাম্প্রদায়িক মনোভাব
ও বৈষম্যমূলক আচরণ দেখেছেন তার সমালোচনা করেছেন এই প্রবন্ধে।
পেপারঃ১৭৬ “Is There a Jewish View of Life?”Opinion,বর্ষ ২,২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৩২,পৃষ্ঠাঃ৭।ইহুদিদের কি আলাদা কোন জীবন-দর্শন
আছে? আইনস্টাইন এ প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন- ইহুদিদের জীবন-দর্শন অন্যদের চেয়ে ভিন্ন কিছু নয়। তবে তিনি বিশ্বাস
করেন, ঐতিহ্যগতভাবে ইহুদিরা খুবই আশাবাদী এবং ধ্বনাত্মক দৃষ্টিকোণ থেকে জীবনকে
দেখে থাকেন।
পেপারঃ১৭৭ “Unified Theory of Gravitation and Electricity,” (দ্বিতীয়
অংশ) (সহলেখকঃওয়ালথার মেইয়ার)।Koniglich Preussische
Akademie der Wissenschaften (Berlin).Sitzungsberichte (১৯৩২),পৃষ্ঠাঃ১৩০-১৩৭।ওয়ালথার মেইয়ারের সাথে আইনস্টাইন
এ পেপারটি লেখেন। ইউনিফায়েড ফিল্ড থিওরির ওপর এ পেপারটির প্রথম অংশ প্রকাশিত হয় আগের বছর (পেপার-১৭২)। প্রুসিয়ান একাডেমি অব সায়েন্সের অধিবেশনে আইনস্টাইন এ পেপারটি
উপস্থাপন করেন। গবেষণার দীর্ঘ গাণিতিক সমস্যার সমাধান করেছেন আইনস্টাইনের সহযোগী ওয়ালথার মেইয়ার।
পেপারঃ১৭৮ “Semivectors and Spinsors.” (সহলেখকঃওয়ালথার
মেইয়ার)।Koniglich
Preussische Akademie der Wissenschaften (Berlin).Sitzungsberichte (১৯৩২), পৃষ্ঠাঃ৫২২-৫৫০।ওয়ালথার মেইয়ারের
সাথে লিখিত এই পেপারটি প্রুসিয়ান একাডেমি অব সায়েন্সের অধিবেশনে উপস্থাপন করা হয়। ইউনিফায়েড ফিল্ড
থিওরিতে ব্যবহৃত ম্যাট্রিক্স ক্যালকুলেশানের সেমিভেক্টর ও স্পিনরের গাণিতিক ব্যবহার
ব্যাখ্যা করা হয়েছে এই পেপারে। এই পেপারটি একটি খুবই জটিল গাণিতিক পেপার।
পেপারঃ১৭৯ “On the Relation between the Expansion and the Mean
Density of the Universe” (সহলেখকঃউইলিয়াম ডি সিটার)
(Willem de Sitter).Proceedings of the
National Academy of Sciences (USA),সংখ্যা ১৮(১৯৩২), পৃষ্ঠাঃ২১৩-২১৪। আইনস্টাইন ও
ডি সিটার একটি পরিবর্তিত কসমোলজিক্যাল মডেল উপস্থাপন করেন যেখান তাঁরা ফ্রাইডম্যানের
সমীকরণ ও এডউইন হাবলের মহাবিশ্ব প্রসারণের উপাত্তগুলোকে খুব গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করেন।
পেপারঃ১৮০ “Present State of Relativity Theory.”Die Quelle,সংখ্যা ৮২ (১৯৩২), পৃষ্ঠাঃ৪৪০-৪৪২। রিলেটিভিটি থিওরির একটি সহজ ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে
এই প্রবন্ধে।
পেপারঃ১৮১ “prologue and Epilogue:A Socratic Dialogue.”In Max Planck,Where is
Science Going? প্রকাশক নরটন(Norton),নিউইয়র্ক
(১৯৩২)।সাংবাদিক জেমস মারফি (James Murphy) আইনস্টাইনের
সাথে বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও ভবিষ্যত সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।সেই কথোপকথনের
ভিত্তিতে এবং ভঙ্গিতে এই প্রবন্ধটি রচিত হয়। ম্যাক্স প্ল্যাংকের “Where is Science Going?” বইতে
প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয়।
পেপারঃ১৮২ “Introduction and Address to Students of UCLA.”February 1932.In
Builders of the Universe, প্রকাশকঃU.S.Library
Association,লস এঞ্জেলেস (১৯৩২)। স্বল্প প্রচারিত
এই সংক্ষিপ্ত পেপারে আইনস্টাইন তাঁর নিজের বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধিৎসার উৎস সম্পর্কে আলোচনা
করেন। ফেব্রুয়ারিতে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া,লস এঞ্জেলেসের
ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে তাঁর এই বক্তৃতাটি মূল জার্মান ভাষার পাশাপাশি ইংরেজিতেও
প্রকাশিত হয়। স্পেশাল রিলেটিভিটি থেকে জেনারেল রিলেটিভিটি কীভাবে পেলেন- আইনস্টাইন
তাঁর বিস্তারিত বর্ণনা দেন ওখানে।
পেপারঃ১৮৩ “On Dr. Berliner’s Seventieth Birthday.” Naturwissenschaften,সংখ্যা ২০(১৯৩২),পৃষ্ঠাঃ৯১৩। জার্মানির নামী
পদার্থবিজ্ঞান জার্নাল Naturwissenschaften এর সম্পাদক বিশিষ্ট জার্মান
পদার্থবিদ ডক্টর বারলাইনারের সত্তরতম জন্মদিন উপলক্ষে আইনস্টাইন এ পেপারটি লেখেন।
ডক্টর বারলাইনার ১৯১৩ থেকে ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত এই জার্নালের সম্পাদক ছিলেন।
শুধুমাত্র ইহুদি হবার অপরাধে হিটলার ১৯৩৫ সালে বারলাইনারকে অপসারণ করেন। ১৯৪২ সালে
তাঁকে জার্মানি থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করা হলে তিনি আত্মহত্যা করেন।
১৯৩৩
বছরের শুরুতে আইনস্টাইন যখন ক্যালিফোর্নিয়ার প্যাসাডেনায় ক্যালটেকে ব্যস্ত,
জার্মানিতে তখন হিটলারের নাৎসি পার্টি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আরোহন করেছে। হিটলার এখন
জার্মানির চ্যান্সেলর। নাৎসিরা ক্ষমতা গ্রহণের সাথে সাথেই শুরু হয়ে গেছে ইহুদি
নিধন। আইনস্টাইনের জন্য দেশে ফেরা বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। জার্মানিতে আইনস্টাইনকে
অবাঞ্চিত ঘোষণা করে তাঁকে হত্যা করতে পারলে পুরষ্কার ঘোষণা করেছে উগ্র জাতীয়তাবাদী
গোষ্ঠী।
আইনস্টাইনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু হয়েছে জার্মানিতে। নোবেল পুরষ্কার
প্রাপ্ত পদার্থবিজ্ঞানী ফিলিপ লেনার্ড সহ আরো অনেক জার্মান বিজ্ঞানীই এখন
প্রকাশ্যে আইনস্টাইন বিরোধী বক্তব্য রাখছেন। তাঁরা প্রচারমাধ্যম দখল করে প্রচার
চালাচ্ছেন যে আইনস্টাইনের থিওরি অব রিলেটিভিটি আসলে কোন থিওরিই নয়। আইনস্টাইনের লেখা
বই ও প্রবন্ধ পেলেই পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। আইনস্টাইনের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে
হিটলারের পেটোয়া বাহিনী। আসবাবপত্র সহ যা কিছু পেয়েছে তছনছ করেছে। আইলস আর তাঁর
স্বামী তখন সে বাড়িতে ছিলেন। তাঁরা কোনরকমে আইনস্টাইনের গবেষণাপত্রগুলো রক্ষা
করেছেন। ক্যাপুথের বাড়ি সহ আইনস্টাইনের দুটো বাড়িই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বার্লিনের
ব্যাংকে ত্রিশ হাজার মার্ক ছিলো আইনস্টাইনের। সে টাকাও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
আইনস্টাইন বিদেশী ব্যাংকে কিছু রেখেছিলেন, এখন সেগুলোই সম্বল।
শুভাকাঙ্ক্ষীরা আইনস্টাইনকে দেশে ফিরতে মানা করছেন। আইনস্টাইন আমেরিকা থেকে
বেলজিয়ামে গিয়ে আশ্রয় নিলেন কিছুদিনের জন্য। বেলজিয়াম সরকার আইনস্টাইনের ব্যক্তিগত
নিরাপত্তার ব্যবস্থা করলেন। এপ্রিলে আইনস্টাইনের সেক্রেটারি হেলেন ডুকাস ও সহযোগী
গবেষক ওয়ালথার মেয়ার বার্লিন থেকে কোনরকমে পালিয়ে বেলজিয়ামে এসে যোগ দিলেন
আইনস্টাইনের সাথে। এলসার মেয়ে মার্গট ও তার স্বামী ডিমিত্রি প্যারিসে চলে গেছেন।
কিন্তু বড় মেয়ে আইলস ও তার স্বামী রুডলফ এখনো বার্লিনেই রয়ে গেছেন।
মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে গেছেন আইনস্টাইন। শান্তিবাদের প্রতি তাঁর গভীর
বিশ্বাসে ফাটল ধরেছে। তিনি বুঝতে পারছেন জার্মানি আরেকটি বিশ্বযুদ্ধের পথে
এগোচ্ছে। এখন আইনস্টাইনের মনে হচ্ছে বেলজিয়ামের মত দেশ যদি আক্রান্ত হয়, তাহলে
আত্মরক্ষার্থে যুদ্ধ তো করতেই হবে। মিলিটারি সার্ভিসের প্রতি যে ঘৃণা পোষণ করে
এসেছেন এতদিন,এখন তিনি প্রয়োজনে সে সার্ভিস দিতেও প্রস্তুত। মনে মনে এখনো কিছুটা
শান্তিবাদী হলেও আইনস্টাইনের মনে হচ্ছে পৃথিবীতে সামরিক একনায়করা বেঁচে থাকলে
শান্তিবাদী হওয়া অসম্ভব। এদিকে শান্তিবাদী সংগঠনের নেতারা আইনস্টাইনের মত
পরিবর্তনে ভীষণ হতাশ হয়েছেন এবং আইনস্টাইনকে সুবিধাবাদী ভন্ড বলে গালিগালাজ করছেন।
জার্মানিতে আইনস্টাইন যে সমস্ত পদে যুক্ত ছিলেন-সব খানেই ইস্তফা দিলেন।
জার্মানির কোন প্রতিষ্ঠানের সাথেই আর কোন সম্পর্ক রাখলেন না তিনি। জার্মান
নাগরিকত্বও ত্যাগ করলেন। প্রুসিয়ান একাডেমি এখন একজন নাৎসি মন্ত্রীর দখলে। তিনি
প্রথমে আইনস্টাইনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করতে চাননি। তাঁর উদ্দেশ্য ছিলো আইনস্টাইনকে
পদত্যাগের সুযোগ না দিয়ে বহিষ্কার করা। কিন্তু ম্যাক্স প্ল্যাংক সহ অন্যান্যদের
হস্তক্ষেপে তা করা যায়নি। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির চাকরিটি এখন আইনস্টাইনের জন্য
ফুলটাইম করা হয়েছে। অক্টোবর থেকে প্রিন্সটনে যোগ দেবার সিদ্ধান্ত নিলেন আইনস্টাইন।
মিলেইভা সুইজারল্যান্ড থেকে আইনস্টাইনের খবর পেলেন। তিনি আইনস্টাইন ও
এলসাকে সুইজারল্যান্ডে তাঁর বাড়িতে গিয়ে থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানালেন। আইনস্টাইন এ
দুঃসময়ে মিলেইভার সহমর্মীতায় মুগ্ধ হয়ে গেলেন। কিন্তু সুইজারল্যান্ড বার্লিন থেকে
খুব বেশি দূরে নয়। এসময় আইনস্টাইনের জন্য বার্লিন থেকে যত দূরে থাকা যায় ততই
নিরাপদ। জার্মানি থেকে আইনস্টাইনের এক বন্ধু নাৎসিদের প্রকাশিত একটি ম্যাগাজিন
নিয়ে এসেছেন। সেখানে নাৎসি বাহিনীর বিচারে জার্মানির শত্রুদের ছবি প্রকাশ করা
হয়েছে। প্রথম পৃষ্ঠাতেই ছাপানো হয়েছে আইনস্টাইনের ছবি। ছবির নিচে লেখা আছে, এখনো
ফাঁসিতে ঝোলানো হয়নি।
জুনে আইনস্টাইন বেলজিয়াম থেকে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে গেলেন ভাষণ দিতে।
ফেরার পথে তিনি উইনস্টন চার্চিলের সাথে দেখা করলেন। সেখান থেকে শেষবারের মত
সুইজারল্যান্ডে গেলেন ছেলে এডোয়ার্ডকে দেখতে। এডোয়ার্ড এখন স্কিৎজোফ্রেনিয়ার রোগী-
সুইজারল্যান্ডের একটি মানসিক হাসপাতালে আছে। আইনস্টাইন এডোয়ার্ডকে খুব ভালোবাসেন।
এডোয়ার্ডের সাথে মানসিক যোগাযোগ রাখার সব চেষ্টা করেছেন আইনস্টাইন। কিন্তু
এডোয়ার্ড মাঝে মাঝে চিঠি লিখলেও প্রায় সময়েই আইনস্টাইনের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে।
এডোয়ার্ড মনে করে আইনস্টাইন তাদের মা ও তাদের বর্জন করেছেন।
আইনস্টাইন গিয়ে ছেলেকে দেখে আৎকে উঠলেন। চেনাই যাচ্ছে না এডোয়ার্ডকে।
এডোয়ার্ড হাইস্কুল পাস করে ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির অপেক্ষায় ছিলো। মনোবিজ্ঞান তার
প্রিয় বিষয়। এসময় তারচেয়ে বয়সে অনেক বড় একজন মেডিকেলের ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক
হয় এডোয়ার্ডের। কিন্তু মেয়েটি এডোয়ার্ডের সাথে সম্পর্ক শেষ করে দেয়। তারপর থেকেই
এডোয়ার্ডের অস্বাভাবিকতা বেড়ে যায়। এডোয়ার্ডকে শেষবারের মত দেখে এলেন আইনস্টাইন।
এডোয়ার্ড এখানেই ছিলেন জীবনের শেষ দিন ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত। মিলেইভার সাথে
আইনস্টাইনের এটাই ছিলো শেষ দেখা।
সেপ্টেম্বরে আইনস্টাইন ইংল্যান্ডে গেলেন চার সপ্তাহের সফরে। সেখানে
অক্টোবরের তিন তারিখে লন্ডনের আলবার্ট হলে
তিনি বক্তৃতা দিলেন। এটাই ছিলো ইউরোপে তাঁর শেষ বক্তৃতা।
আইলসের স্বামী রুডলফ কেইজার বার্লিন থেকে ফ্রান্সে চলে যাবার সময় আইনস্টাইনের
চিঠিপত্র ও গবেষণা সংক্রান্ত কাগজপত্রগুলো অনেক চেষ্টায় ফ্রান্সে নিয়ে এসেছিলেন।
সাথে কিছু আসবাবপত্র এবং আইনস্টাইনের গ্রান্ড পিয়ানোটিও পাঠাতে পেরেছিলেন। ফ্রান্স
থেকে আমেরিকান দূতাবাসের মাধ্যমে সেগুলো আমেরিকায় আইনস্টাইনের কাছে পাঠিয়ে দেয়া
হয়।
অক্টোবরের ১৭ তারিখ আইনস্টাইন, এলসা, হেলেন ডুকাস ও ওয়ালথার মেইয়ার
আমেরিকার এসে পৌঁছান। এলসার দুই মেয়ে ও স্বামীরা রয়ে যায় প্যারিসে। নিউজার্সির
প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির কাছে পিকক ইন-এ কাটে তাঁদের প্রথম রাত। পরের দিন তাঁরা
ইউনিভার্সিটি লাইব্রেরির কাছে মার্সার(Mercer) স্ট্রিটের অস্থায়ী কোয়ার্টারে উঠে
আসেন। ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডি’র মূল ভবন এখনো তৈরি
হয়নি। গণিত বিভাগের কয়েকটি ঘর নিয়ে ইনস্টিটিউটের কাজ চলছে। আইনস্টাইনকে গণিত
বিভাগে একটি অস্থায়ী অফিস দেয়া হয়েছে। শুরু হলো আইনস্টাইনের আমেরিকার জীবন। এরপর
আর কখনো তিনি ইউরোপে যাননি।
জার্মানিতে নাৎসি বাহিনী ইহুদি নিধনের পাশাপাশি কমিউনিস্টদেরও শায়েস্তা
করতে শুরু করেছে। মিউনিখের কাছে তৈরি করা হয়েছে প্রথম কনসেন্ট্রেশান ক্যাম্প।
কমিউনিস্টদের ধরে এনে বেঁধে রাখা হচ্ছে এখানে। ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত প্রায়
আশি লাখ থেকে এক কোটি ইহুদি ও কমিউনিস্টকে বিভিন্ন কনসেন্ট্রেশান ক্যাম্পে আনা হয়
এবং তাদের অর্ধেকরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়। জার্মানি এখন আর শান্তি চায় না।
লিগ অব নেশানস থেকে বেরিয়ে এলো জার্মানি। জার্মানির সাথে নিরস্ত্রীকরণ আলোচনা বন্ধ
হয়ে গেলো। হিটলারকে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী করে দেয়া হয়েছে। হিটলার নাৎসি
পার্টি ছাড়া অন্য সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। নাৎসি পার্টি
সমর্থন করে না এরকম লেখকের লেখা সব বই পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। চরম জাত্যাভিমান
উস্কে দিয়ে নাৎসি বাহিনীকে দিনরাত উত্তেজিত করে লেলিয়ে দেয়া হচ্ছে ইহুদিদের বিরুদ্ধে। জাতীয়তাবাদীরা
বিশ্বাস করতে শুরু করেছে যে জার্মান জাতি একদিন সারা পৃথিবী শাসন করবে। তা করতে গেলে
ইহুদিদের নিশ্চিহ্ন করতে হবে। জার্মানিতে শিল্পকলা ও বিজ্ঞানচর্চা প্রায় নিষিদ্ধ করে দেয়া
হয়েছে। ১৯৩৯ সালের মধ্যে প্রায় ষাট হাজার শিল্পী ও কয়েকশ বিজ্ঞানী জার্মানি থেকে পালিয়ে
অন্যদেশে চলে যেতে বাধ্য হন। হিটলারের নাৎসি বাহিনী অস্ট্রিয়াতেও তাদের অত্যাচার শুরু
করেছে। জার্মানি চাচ্ছে অস্ট্রিয়া জার্মানির সাথে একটি যুগ্মদেশ গড়ে তুলুক। কিন্তু অস্ট্রিয়ার
চ্যান্সেলর এনগেলবার্ট ডলফুস(Engelbert Dollfuss) তা মেনে নেননি। একবছরের মধ্যেই
সেজন্য জীবন দিতে হয়েছে তাঁকে।
সোভিয়েত ইউনিয়নে ক্রমাগত দুর্ভিক্ষাবস্থা বিরাজ করছে। ইহুদিরা সেখান
থেকেও চলে যাচ্ছে প্যালেস্টাইনে। স্ট্যালিন কমিউনিস্ট পার্টিতে শুদ্ধিঅভিযান চালানোর নামে
বলশেভিক ও ট্রটস্কিপন্থীদের হত্যা করতে শুরু করেছেন।
প্রকাশনা
এবছর প্রকাশিত আইনস্টাইনের দশটি উল্লেখযোগ্য রচনাঃ
পেপারঃ১৮৪ “Why War?” অনুবাদকঃ স্টুয়ার্ট গিলবার্ট, প্রকাশকঃ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইন্টেলেকচুয়াল কো-অপারেশন, লিগ অব নেশানস, প্যারিস (১৯৩৩)। মানবমনের কোন
পর্যায়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয় মানুষ, কেন তারা যুদ্ধবাদী মনোভাব পোষণ করে এবং
এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় কী-এসমস্ত বিষয়ে আইনস্টাইন
ও সিগমন্ড ফ্রয়েডের মধ্যে অনেক পত্রালোচনা হয়েছে কয়েকবছর ধরে। এই পুস্তিকায়
সে চিঠিগুলো প্রকাশিত হয়েছে।
পেপারঃ১৮৫ “The Fight Against War.” সম্পাদনাঃ
আলফ্রেড লিয়েফ, প্রকাশকঃজন ডে,নিউইয়র্ক
(১৯৩৩)। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে শুরু করে ১৯১৪ সাল থেকে ১৯৩২
সাল পর্যন্ত আইনস্টাইন অনেক যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন করেছেন, লিখেছেন,
বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়েছেন। সেখান থেকে কিছু
রচনা ও বক্তৃতা সংকলিত হয়েছে ৬৪ পৃষ্ঠার এই পুস্তিকায়।
পেপারঃ১৮৬ “On German-American Agreement.” California Institute
of Technology Bulletin, বর্ষ ৪৩,সংখ্যা
১৩৮ (১৯৩৩), পৃষ্ঠাঃ৪-৮ (জার্মান ভাষায়), ৯-১২ (ইংরেজিতে)। জানুয়ারির ২৩
তারিখে রেডিওতে প্রচারিত হয় আইনস্টাইনের এই বিবৃতি। পরের দিন নিউইয়র্ক
টাইমসেও তা প্রকাশিত হয়।
পেপারঃ১৮৭ “Letter to the Prussian Academy of Sciences.” Science.সংখ্যা ৭৭ (১৯৩৩), পৃষ্ঠাঃ৪৪৪। মার্চের ২৮ তারিখে
বার্লিনের প্রুসিয়ান একাডেমি অব সায়েন্সে আইনস্টাইন তাঁর পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। এপ্রিলের পাঁচ
তারিখে এই খোলা চিঠিতে আইনস্টাইন একাডেমি থেকে তাঁর পদত্যাগের কারণ ব্যাখ্যা করেন। আইনস্টাইন বলেন, যে দেশে
ব্যক্তিস্বাধীনতা নেই, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই, আইন ও যুক্তির শাসন নেই সেদেশে তিনি থাকতে পারেন না। এর আগে প্রুসিয়ান
একাডেমি অব সায়েন্স আইনস্টাইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলো যে আইনস্টাইন আমেরিকা ও ফ্রান্সের
সাথে হাত মিলিয়ে জার্মানির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। আইনস্টাইন সেই
ভিত্তিহীন অভিযোগের জবাব দেন এ চিঠিতে।
পেপারঃ১৮৮ “Victim of Misunderstanding”. টাইমস
(লন্ডন), ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৩৩। আইনস্টাইনকে
কমিউনিস্ট বলে গালাগালি করেন কমিউনিস্ট বিরোধীরা। আবার কমিউনিস্টরা
মনে করেন আইনস্টাইন একজন কমিউনিস্ট-বিদ্বেষী বুর্জোয়া। লন্ডনের টাইমস
পত্রিকায় প্রকাশিত এই চিঠিতে আইনস্টাইন কমিউনিজম সম্পর্কে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। আইনস্টাইন সমাজতান্ত্রিক
গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন, ব্যক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন, রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিকের সমান সুবিধায় বিশ্বাস করেন।
পেপারঃ১৮৯ “Civilization and Science.” ৪ অক্টোবর
১৯৩৩ তারিখে লন্ডনের এলবার্ট হলে রিফিউজি অ্যাসিস্ট্যান্ট ফান্ড আয়োজিত একটি মিটিং
এ আইনস্টাইন এ বক্তৃতা দেন। এটাই ছিলো ইউরোপে তাঁর শেষ বক্তৃতা। আইনস্টাইন মানুষের
ব্যক্তিগত মত প্রকাশের স্বাধীনতার সাথে সামগ্রিক নিরাপত্তার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন। আইনস্টাইন বলেন, অনেক
সংগ্রাম ও ত্যাগের বিনিময়ে জাতি উন্নতি লাফ করতে পারে। কিন্তু ব্যক্তিস্বাধীনতা
না থাকলে সামগ্রিক উন্নতি কিছুতেই সম্ভব নয়। পরের বছর ফেব্রুয়ারির চার
তারিখে নিউইয়র্ক হেরালড ট্রিবিউন আইনস্টাইনের এই বক্তৃতাটি আবার প্রকাশ করে ‘পার্সোনাল লিবার্টি’ শিরোনামে।
পেপারঃ১৯০ “Dirac Equations for Semivectors” (সহলেখকঃ
ওয়ালথার মেইয়ার) Akademie van wetenschappen (Amsterdam ) Proceedings,সংখ্যা ৩৬ (১৯৩৩), পৃষ্ঠাঃ৪৯৭-৫০২। ওয়ালথার মেইয়ারের সাথে লিখিত এ গবেষণাপত্রে আইনস্টাইন ইলেকট্রনের
রিলেটিভিস্টিক মোশান সংক্রান্ত ডিরাকের সমীকরণ সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।
পেপারঃ১৯১ “Splitting of the Most Natural Field Equations for
Semivectors into Spinor Equations of the Dirac Type”. (সহলেখকঃ
ওয়ালথার মেইয়ার) Akademie van wetenschappen (Amsterdam ) Proceedings,সংখ্যা ৩৬ (১৯৩৩),পৃষ্ঠাঃ৬১৫-৬১৯। এই পেপারে আইনস্টাইন ও মেইয়ার ফিল্ড ইকোয়েশানে সেমি-ভেক্টর
ব্যবহার করেছেন। এটাও মূলত গাণিতিক গবেষণাপত্র।
পেপারঃ১৯২ “On the Method of Theoretical Physics.” Herbert Spencer
Lecture at Oxford University, ১০ জুন ১৯৩৩। প্রকাশকঃক্ল্যারেন্ডন, অক্সফোর্ড
(১৯৩৩)। দার্শনিক হার্বার্ট স্পেনসারের (Herbert Spencer) সম্মানে আয়োজিত লেকচার সিরিজে আইনস্টাইন কীভাবে কোন একটি তাত্ত্বিক
পদ্ধতির সৃষ্টি হয় তা ব্যাখ্যা করেন। বিজ্ঞানে যে কোন কিছুরই এক বা একাধিক কারণ
থাকে। কারণগুলোর একটি অপরটির সাথে যুক্তির মাধ্যমে সমন্বিত। আইনস্টাইন বলেন
তাত্ত্বিক ভিত্তির মাধ্যমে বাস্তবকে দেখে ফেলা যায় খুব সহজে। তাত্ত্বিক ভিত্তি
সঠিক হলে পর্যবেক্ষণের আগেই বলে দেয়া যায় কী ঘটতে যাচ্ছে।
পেপারঃ১৯৩ “Notes on
the Origin of the General Theory of Relativity.” George
A.Gibson Foundation Lecture at Glasgow University, ২০ জুন ১৯৩৩। গ্লাসগো ইউনিভার্সিটি
পাবলিকেশানস নম্বর ২০, জ্যাকসন, গ্লাসগো (১৯৩৩)। গ্লাসগো ইউনিভার্সিটির জর্জ গিবসন ফাউন্ডেশান লেকচারে আইনস্টাইনকে
অনুরোধ করা হয়েছিলো তাঁর নিজের গবেষণা ও আবিষ্কারের কথা বলতে। আইনস্টাইন তাঁর
বক্তৃতায় কীভাবে তিনি আপেক্ষিকতার তত্ত্ব আবিষ্কার করেছেন, কোন
কোন বিজ্ঞানীর প্রভাব আছে তাঁর কাজে, কী কী বাধার সম্মুখীন
হয়েছেন এবং কীভাবে তা কাটিয়ে উঠেছেন- এসবের বিস্তারিত বিবরণ
দেন।
No comments:
Post a Comment