Sunday, 15 December 2019

চাঁদের নাম লুনা - ২৭



অ্যাপোলো-১৪

মিশন
অ্যাপোলো-১৪
কমান্ডার
অ্যালেন শেপার্ড (Alan Shepard)
কমান্ড মডিউল পাইলট
স্টুয়ার্ড রুজা (Stuart Roosa)
লুনার মডিউল পাইলট
এডগার মিশেল (Edgar Mitchell)
কমান্ড মডিউলের ডাক নাম
কিটি হক (Kitty Hawk)
লুনার মডিউলের ডাক নাম
অ্যানটেয়ার্স (Antares)
উড্ডয়নের তারিখ
৩১/০১/১৯৭১
চাঁদে নামার তারিখ
০৫/০২/১৯৭১
প্রত্যাবর্তনের তারিখ
০৯/০২/১৯৭১
মহাকাশে অতিবাহিত সময়
৯ দিন ০ ঘন্টা ১ মিনিট
চাঁদে অবস্থানের সময়
১ দিন ৯ ঘন্টা ৩০ মিনিট
মিশনের লক্ষ্য
নিরাপদে নভোচারীদের চাঁদে নামা এবং সেখানে কিছু সময় থেকে নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসা। চাঁদে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষানিরীক্ষার যন্ত্রপাতি বসানো।    
ফলাফল
সফল। পৃথিবীর মানুষ তৃতীয়বারের মতো চাঁদে পা রাখলো। অ্যালেন শেপার্ড ও এডগার মিশেল চাঁদের বুকে হাঁটলেন। চাঁদে একটা ছোট রিক্সা ব্যবহার করে চাঁদের পাথর টেনে তোলা হয়।
চাঁদে নামার স্থান
ফ্রা মাউরো

অ্যাপোলো-১৪ এর তিনজন নভোচারী

অ্যাপোলো-১১ মিশনে প্রথমবার চাঁদে মানুষ পাঠানোর সময় আমেরিকার জনগণের যে উৎসাহ দেখা গিয়েছিল তার পরের মিশনগুলোতে সেই উৎসাহে ভাটা পড়ে। সবগুলো উড্ডয়নই একই রকম। তাছাড়া অ্যাপোলো-১৩ মিশনের দুর্ঘটনার পর আমেরিকান সরকারও অ্যাপোলো মিশনের প্রতি ক্রমশ উৎসাহ হারিয়ে ফেলতে থাকে। তারপরেও আরো চারটি অ্যাপোলো মিশন চাঁদে যায়।
            অ্যাপোলো-১৪ নভোচারীদের নিয়ে আকাশে ওড়ে ৩১ জানুয়ারি। ফেব্রুয়ারির পাঁচ তারিখে লুনার মডিউল অ্যানটেয়ার্স চাঁদের বুকে ল্যান্ড করে। ছয় ঘন্টা লুনার মডিউলে অপেক্ষা করার পর চাঁদের মাটিতে নামেন অ্যালেন শেপার্ড ও এডগার মিশেল।
            পরের চার ঘন্টা সাতচল্লিশ মিনিটে তাঁরা চাঁদের পিঠে একটা লেজার প্রতিফলক স্থাপন করেন। অ্যাপোলো-১১ এরকম একটা প্রতিফলক স্থাপন করেছিল। এবারেরটা সেটার সহযোগী হলো। সূর্য থেকে কী কী মৌলিক কণা চাঁদের পিঠে এসে পড়ে সেগুলো পরীক্ষা করার জন্য একটা ডিটেক্টর স্থাপন করা হলো। চাঁদের পিঠে বিস্ফোরণ ঘটালে চাঁদের মাটিতে কেমন প্রতিক্রিয়া হবে পরীক্ষা করে দেখার জন্য তাঁরা চাঁদে বেশ কিছু ছোট ছোট বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চাঁদের প্রতিক্রিয়া রেকর্ড করেন।
            তারপর আঠারো ঘন্টা তাঁরা লুনার মডিউলের ভেতর বিশ্রাম নেন ও অন্যান্য কাজ করেন। বিশ্রামের পর লুনার মডিউল থেকে নেমে চার ঘন্টা চৌত্রিশ মিনিট কাজ করেন তাঁরা। পরের ধাপের কাজগুলোতে বেশ শারীরিক পরিশ্রম করতে হলো। একটা ছোট্ট রিক্সার মতো গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা চাঁদের পাথর টেনে নিয়ে আসার জন্য। বলা চলে চাঁদের রিক্সা। সেটা করে বেশ কিছু পাথর তাঁরা লুনার মডিউলে তুলে নেন। ভিডিও ক্যামেরাতে চাঁদের চারপাশের ভিডিও করা হয়। ম্যাগনেটোমিটার দিয়ে চাঁদের পিঠের চৌম্বকত্বের পরিমাপ করেন। সব কাজ শেষে লুনার মডিউলে উঠে যাবার আগে তাঁরা কিছু খেলাধূলাও করেন চাঁদে।
            অ্যালেন শেপার্ড একটা গল্‌ফ ক্লাব ও গল্‌ফ বল নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি গল্‌ফ খেললেন চাঁদের পিঠে। এডগার মিশেল একটা সৌরঝড় মাপার একটা রড ছুড়লেন জ্যাভলিন নিক্ষেপ করার মতো করে।
            তারপর পৃথিবীতে ফিরে আসার কাজটা একেবারে রুটিনমাফিক হলো। নয়ই ফেব্রুয়ারি পৃথিবীতে ফিরে আসে অ্যাপোলো-১৪।
            কমান্ড মডিউল পাইলট স্টুয়ার্ড রুজা চাঁদে যাবার সময় পাঁচ ধরনের পাইন ও ইউক্যালিপ্টাসের বীজ নিয়ে গিয়েছিলেন। চাঁদ থেকে ফিরে সেই চাঁদ-ফেরত বীজ থেকে চারা হয়। সেই গাছগুলো 'মুন-ট্রি' নামে পরিচিতি পায়। হোয়াইট হাউজের বাগানেও আছে একটি চাঁদের পাইন গাছ।




No comments:

Post a Comment

Latest Post

The Rituals of Corruption

  "Pradip, can you do something for me?" "Yes, Sir, I can." "How can you say you'll do it without even know...

Popular Posts