প্রথম বিদেশ যাত্রা
১৯১৯ সালে মেঘনাদ
সাহা 'Harvard Classification of Steller Spectra' শিরোনামে গবেষণাপত্র জমা দেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ
স্টুডেন্টশিপ' এর জন্য বিবেচিত হওয়ার লক্ষ্যে।
প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ (১৮৩১ - ১৯০৬) ছিলেন একজন ভারতীয় ব্যবসায়ী। বোম্বেতে তাঁর বিরাট ব্যবসা ছিল। স্টক মার্কেট ও সুতার ব্যবসা করে তিনি অফুরন্ত টাকা উপার্জন করেছিলেন। প্রচুর উপার্জন করার পাশাপাশি জনহিতার্থে দুই হাত খুলে দান করেছেন তিনি। বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য তিনি 'প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ স্টুডেন্টশিপ' চালু করেন। সেই স্টুডেন্টশিপের আওতায় ভারতীয় মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিদেশে গিয়ে লেখাপড়া করে আসতে পারে। উনবিংশ শতাব্দীতে ভারতীয় মেয়েদের শিক্ষার প্রসারে তিনি অনেকগুলো গার্লস হাইস্কুল স্থাপন করেছিলেন। ১৯০৬ সালে তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর বাংলো বাড়িটিকেও অনাথ মেয়েদের জন্য স্কুল ও আশ্রমে পরিণত করা হয়।
মেঘনাদ সাহা
'প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ স্টুডেন্টশিপ' পেলেন। সাথে আরো একটি স্কলারশিপ ‘গুরুপ্রসন্ন
ঘোষ’ বৃত্তি লাভ করেন মেঘনাদ সাহা। এই দুটি বৃত্তির টাকায় প্রায় দু’বছর ইউরোপে
ভ্রমণ ও গবেষণার সুযোগ পেলেন তিনি।
১৯১৯ সালের
সেপ্টেম্বরে 'লয়্যালটি' নামক স্টিমারে ইওরোপের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন মেঘনাদ
সাহা। তখনো বাণিজ্যিকভাবে আকাশযাত্রার প্রচলন হয়নি। বোম্বে বন্দর থেকে জাহাজে করে
ইওরোপে যেতে দুই-তিন মাস লেগে যেতো। মেঘনাদের প্রথম বিদেশযাত্রায় স্টিমারে আচার্য
প্রফুল্লচন্দ্র রায়সহ পরিচিত অনেকেই ছিলেন।
জাহাজে বসেই একটা গবেষণাপত্র শেষ করে
প্রকাশের জন্য পাঠিয়েছেন। মনে মনে ঠিক করলেন ইওরোপে কোন্ কোন্ ইউনিভার্সিটির
কোন্ কোন্ প্রফেসরের সাথে দেখা করবেন। তিনি কোন বিদেশী ডিগ্রির জন্য যাচ্ছেন না।
যাচ্ছেন বিখ্যাত প্রফেসরদের সাথে কিছুদিন কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করার জন্য।
তাপীয় আয়নন বা থার্মাল আয়নাইজেশান সম্পর্কে তিনি ইতোমধ্যেই উল্লেখযোগ্য কিছু
গবেষণাপত্র প্রকাশ করে ফেলেছেন। যা থেকে দাঁড়িয়ে যায় তাঁর নিজের নামে একটি সমীকরণ
- 'সাহা সমীকরণ'।
ডিসেম্বরে লন্ডনে পৌঁছলেন মেঘনাদ।
No comments:
Post a Comment