Monday, 31 August 2020

ম্যান্ডেলার দেশে - পর্ব ৬

 


ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড আলফ্রেড ওয়াটারফ্রন্ট 

লাঞ্চবক্স নিয়ে জানালার পাশে একটা উঁচু টেবিলে বসলাম বাইরে ওয়াটারফ্রন্টের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে হুইল অব দি কেইপ টাউন - বিশাল চাকায় লাগানো ছোট ছোট কামরায় মানুষ উঠে দুলতে দুলতে দেখছে চারপাশ। মনে পড়লো সেই কোন্‌ ছোটবেলায় সূর্যব্রতর মেলায় ঘুরন্ত দোলনায় চড়তাম। এখন চোখের সামনে হাতের নাগালে পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত চাকাগুলোর একটি। কিন্তু সেই ছোটবেলায় যে থ্রিলটা ছিল এখন কোথায় যেন তা নেই।

          চারদিকে নানা রঙের নানা রকমের মানুষ। ডানদিকে একজোড়া চায়নিজ তরুণ-তরুণী নিজেদের ভাষায় ভাব বিনিময় করছে। বামদিকে কয়েকটা টেবিল জড়ো করে বসেছে দশ বারোজনের একটা ভারতীয় গ্রুপ। তাদের হিন্দি কথোপকথন মোটামুটি বুঝতে পারছি। এই ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড আলফ্রেড ওয়াটারফ্রন্ট কেইপ টাউনের ট্যুরিস্টদের খুব প্রিয় জায়গা। বছরে প্রায় পঁচিশ লাখ মানুষ আসে এখানে। টেবিল পর্বতেও অত মানুষ যায় না।

          দ্রুত খাওয়া শেষ করে হারবার ক্রুজে উঠার জন্য রওনা দিলাম। অ্যাকোয়ারিয়ামের পাশ দিয়ে প্রায় দুশ মিটার যাবার পর পানিতে বাঁধা সারি সারি স্পিডবোট। তার পাশে সুন্দর জেটিতে বাঁধা টকটকে লাল রঙের দুটো ফেরি। সাইটসিয়িং বাসে টিকেটের সাথে হারবার ক্রুজের টিকেট ফ্রি পাওয়া গেছে। একটা ফেরি এইমাত্র ছেড়ে গেছে। পরেরটি ছাড়বে আরো আধঘন্টা পরে।

          ফেরির মাঝামাঝি একটা সিটে আরাম করে বসলাম। এখানেও ধারাবিবরণী শোনার ব্যবস্থা আছে বিভিন্ন ভাষায়। ইঞ্জিন চালু হবার পর শোনা যাবে। ফেরিতে আমার পিছু পিছু তিন চার বছরের একটা বাচ্চাকে নিয়ে একজন তরুণী-মা উঠে বসেছেন। আর কোন যাত্রী বা ক্রু নেই এখন। পানিতে ভাসমান ফেরিতে বসে ওয়াটারফ্রন্টের চারপাশ অন্যরকম দেখাচ্ছে। আকাশে মেঘের ফাঁকে সামান্য একটু আলোর রেখা। সেই আলোয় টলটলে পরিষ্কার পানিতে ছায়া পড়েছে চারপাশের বিল্ডিংগুলোর। পেছন দিকে তাকালে টেবিল পর্বতের অনেকখানি দেখা যায়। ওয়াটারফ্রন্টের রঙিন বুকলেট খুলে পড়তে শুরু করলাম।

 

ওয়াটারফ্রন্ট



         ওয়াটার ফ্রন্টের ইতিহাস চারশো বছরেরও বেশি পুরনো। ডাচ নাবিক ভ্যান স্পিলবার্গেন ১৬০১ সালে কেইপ টাউনের পশ্চিম তীর থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার উজানে প্রাকৃতিক হারবার আবিষ্কার করে এই নাম দেন সালদানাহ বে। ১৫০৩ সালে পর্তুগিজ নাবিক অ্যান্টোনিও ডি সালদানাহ টেবিল মাউন্টেন আবিষ্কার করেছিলেন। স্পিলবার্গেন সালদানাহর নাম অনুসারে এই উপসাগরের নাম রেখেছিলেন।

          সালদানাহ উপসাগরের হারবারে মিঠা পানির সুবিধা ছিল না। তাই খুঁজতে খুঁজতে ১৪০ কিলোমিটার উজানে এসে স্পিলবার্গেন পেয়ে গেলেন মিঠা পানির সমৃদ্ধ আরেকটি হারবার। নাম রাখলেন টেবল বে। সেই হারবারই চারশ বছর ধরে আস্তে আস্তে পরিবর্তিত হতে হতে বর্তমান রূপ নিয়েছে।

          পর্তুগিজরা পশ্চিম থেকে পূর্বে যাবার পথে কেইপ টাউনকে তাদের মধ্যবর্তী স্টেশন হিসেবে ব্যবহার করছিলো শুরু থেকে। কিন্তু স্থানীয় আফ্রিকানদের ওপর তাদের অত্যাচারের মাত্রা এমন বেড়ে যায় যে আফ্রিকানরা বিদ্রোহ করে। ফলে ইউরোপিয়ান দখলদার ও স্থানীয় আফ্রিকানদের মধ্যে মারামারি লেগে যায়। মারা যায় কয়েকশ আফ্রিকান। ইউরোপিয়ানদের মধ্যে মারা যায় ৭৫ জন। ফলে পর্তুগিজরা কেইপ টাউন থেকে সরে মোজাম্বিকে চলে যায়।

          পরবর্তী ৫০ বছরে আরো বিভিন্ন ইউরোপিয়ান কোম্পানি কেইপ টাউনের হারবার ব্যবহার করেছে- কিন্তু স্থায়ী কোন স্থাপনা তৈরি করেনি এখানে। ১৬৫২ সালে ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এখানে স্থায়ী কিছু ঘরবাড়ি তৈরি করে। প্রথম ঘরটি বানায় মাটি আর কাঠ দিয়ে। পাথর ব্যবহার করে প্রথম দুর্গ বানায়- ক্যাসল অব গুড হোপওটা এখনো আছে।

          ১৬৫৬ সালে এখানে তৈরি হয় প্রথম জেটি। বড় বড় কাঠের গুড়ি আর পাথর দিয়ে তৈরি জেটিতে ছোটখাট জাহাজ ভিড়তো ১৬৭৯ সাল পর্যন্ত। বড় জাহাজগুলো দূরে মাঝসাগরে নোঙর করতো। কালো আফ্রিকান কুলিরা কিছু টাকার জন্য প্রাণের মায়া ত্যাগ করে মাঝসাগরে জাহাজ থেকে মাল খালাস করে ছোট নৌকায় তুলতো।

          তারপর আড়াইশ বছর ধরে কেইপ টাউনের আকার ক্রমশ বড় হয়েছে। সাগরের তীর থেকে পাহাড়ের কোল পর্যন্ত ঘরবাড়ি তৈরি হয়েছে।

          শুরু থেকে খারাপ আবহাওয়া একটা বিরাট বাধা হিসেবে কাজ করেছে কেইপ টাউনে জাহাজ নিয়ে আসার ক্ষেত্রে। প্রচন্ড ঝড়ে অনেক জাহাজ ডুবেছে এখানে। মারা গেছে অনেক মানুষ। নিরাপদে জাহাজ তীরে ভেড়ানোর জন্য প্রথম কার্যকরী ব্যবস্থার উদ্যোগ নেয়া হয় ১৭৩৭ সালে।

          প্রচন্ড ঝড়ে অনেক জাহাজ চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবার পর গভর্নর সোয়েলেংরেবেল প্রস্তাব করলেন সমুদ্রে পাথর ফেলে তীরের কাছে কিছু অংশ আলাদা করে ফেলতে। তাতে ঝড়ের সময় জাহাজগুলো সেখানে ঢুকে আশ্রয় নিতে পারবে। নিয়ম করা হলো কেইপ টাউনে যারাই কোনকিছু বিক্রি করতে আসবে বযাবার সময় সমুদ্রে সমান পরিমাণ পাথর ফেলে যাবে। কিন্তু কারোরই কোন উৎসাহ থাকে না এ ব্যাপারে। কিছুদিনের মধ্যেই সেই প্রকল্প মাঠে মারা যায়।

          সামুদ্রিক ঝড়ের বিরুদ্ধে কিছু করা না গেলেও ডাচ ও তাদের ফরাসি বন্ধুরা মিলে দুটো মিলিটারি চৌকি স্থাপন করলো বন্দরের নিরাপত্তা রক্ষার্থে।

          ডাচদের ইউরোপিয়ান শত্রু ছিল ব্রিটিশরা। ১৭৯৫ সালে কেইপ টাউন দখল করে নেয় ব্রিটিশরা। ১৮০৩ সাল পর্যন্ত তাদের দখলে ছিল কেইপ টাউন।

          ১৭৯৫ সালে ডাচরা ব্যাটাভিয়ান রিপাবলিক গঠন করেছে। ১৮০৩ সালে তারা ব্রিটিশদের কাছ থেকে কেইপ টাউন পুনরুদ্ধার করতে সমর্থ হয়। কিন্তু তিন বছর পরেই ব্রিটিশরা আবার দখল করে নেয় কেইপ টাউন। তারপর থেকে ব্রিটিশরাই শাসন করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

          কেইপ টাউনের বাণিজ্যিক প্রসার ঘটার সাথে সাথে কেইপ টাউন বন্দরে জাহাজের সংখ্যা বাড়তে লাগলো। সামুদ্রিক ঝড়ের বিরুদ্ধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা না থাকায় জাহাজডুবির সংখ্যাও বেড়ে চললো। টাকার অভাবে কোন নিরাপত্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছিলো না। অনবরত জাহাজডুবির কারণে ইনসুরেন্স কোম্পানিগুলো কেইপ টাউনের বন্দরে ভিড়লে জাহাজের ক্ষতিপূরণ দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দিলো। ব্রিটিশ সরকার এবার বাধ্য হয়ে কাজে হাত দিলো। কার্যকর হারবার তৈরির উদ্যোগ নেয়া হলো।

          ১৮৬০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর কুইন ভিক্টোরিয়ার দ্বিতীয় পুত্র ১৬ বছর বয়সী প্রিন্স আলফ্রেড এই বিশাল কর্মযজ্ঞের উদ্বোধন করেন। ট্রাক ট্রাক পাথর ফেলা হয় সমুদ্রে। শুরু হয় সমুদ্রশাসন - মহাসাগরের স্রোত নিয়ন্ত্রণ।

          পরবর্তী ২৫ বছর ধরে কাজ চলে। শত শত শ্রমিকের বেতন দেবার মতো টাকা নেই সরকারের। খরচ বাঁচাতে ব্রিটিশ কয়েদীদের নিয়ে আসা হলো কাজে। তৈরি হলো তাদের জেলখানা। সারাদিন কাজ করে তারা। ১৮৮৫ সালে ২৩৬০ জন কয়েদী কাজ করছিলো ওয়াটারফ্রন্টে। কয়েদীদের জন্য তৈরি হয় ব্রেকওয়াটার প্রিজন। (বর্তমানে ওটা ব্রেকওয়াটার লজ)।

          ব্রেকওয়াটার প্রিজন ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর জেলখানা। বলা হয়ে থাকে সব জাতের কয়েদীই নাকি ছিল সেই জেলখানায়। শুরুতে জাতপাতের সমস্যা ছিল না। বরং কর্তৃপক্ষ দুজন কালো কয়েদীর মাঝখানে একজন সাদা কয়েদীকে ঘুমাতে বাধ্য করতো। তাতে শুয়ে শুয়ে কথা বলার সুযোগ থাকতো না।

          কালো কয়েদীদের বেশিরভাগের অপরাধ ছিল হীরাচুরি। হীরার খনির শ্রমিক তারা। অমসৃণ হীরার কোন কুচি তাদের পকেটে পাওয়া গেলে প্রচন্ড মারের সাথে পাঁচ থেকে বারো বছর জেল। তারা আসতো ব্রেকওয়াটার প্রিজনে। আর খাটতে হতো হারবার কনস্ট্রাকশনে।

          ১৮৯১ সালে কালো কয়েদীদের আলাদা করে ফেলা হয় সাদাদের কাছ থেকে। সাদাদের জন্য আরেকটি জেলখানা বানানো হয়। ইন্ডাস্ট্রিয়াল ব্রেকওয়াটার প্রিজন। এখন সেটাতে কেইপ টাউন ইউনিভার্সিটির গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব বিজনেস এর ক্লাস চলে।

          ১৯০৫ সাল নাগাদ সাউথ পিয়ার ও ভিক্টোরিয়া বেসিনের কাজ শেষ হয়। কিন্তু ততদিনে আফ্রিকায় সোনার খনি হীরার খনির রমরমা শুরু হয়ে গেছে। সারা দুনিয়ার ব্যবসায়ীদের নজর কেইপ টাউনের দিকে। অসংখ্য জাহাজ ভিড়তে শুরু করেছে কেইপ টাউন বন্দরে। বন্দরের পরিধি বাড়ানোর দরকার হয়ে পড়লো।

          ১৯৩৫ সালে ডক তৈরির কাজ শুরু হলো। পাথর আর মাটি দিয়ে বিরাট এলাকা ভরাট করে ফেলা হলো। বর্তমানে কেইপ টাউনের মোট ক্ষেত্রফলের অর্ধেক ১৯৩৫ সালের আগে সমুদ্রের অংশ ছিল। হারবারের পাশ দিয়ে যাওয়া বিচ স্ট্রিটও তখন পানির নিচে ছিল। তখনো কেইপ টাউন ছিল দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবেশের একমাত্র পথ।

          বন্দর, জেটি, ড্রাইডক, শিপইয়ার্ড ইত্যাদি কার্যক্রম ভালোই চলছিল। জায়গাটিকে ট্যুরিস্টিদের জন্য আকর্ষণীয় ব্যবসা ও বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ১৯৮৮ সালে এখানে ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড আলফ্রেড ওয়াটারফ্রন্ট গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়।

          ১২৩ হেক্টর জমিতে ছয় ধাপে কাজ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়। সেই সময় দক্ষিণ আফ্রিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের ওপর সরকারের অত্যাচারের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশের অর্থনৈতিক অবরোধ চলছিলো। তাই কোন আন্তর্জাতিক কোম্পানি এগিয়ে এলো না। স্থানীয় কোম্পানিগুলো স্থানীয় সরকারে আস্থাশীল নয়। তারপরও নানা প্রতিকূলতার মধ্যে প্রথম ধাপে পুরনো বিল্ডিংগুলোর সংস্কার কাজ সম্পন্ন হলো। সেগুলো আবাসিক ও বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য ভাড়া দেয়া হলো।

          দ্বিতীয় দফায় ভিক্টোরিয়া ওয়ার্ফ তৈরি হলো। প্রচুর দোকানপাট সিনেমাহল ইত্যাদি তৈরি হলো। দেখা গেলো ট্যুরিস্ট ও স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়ে গেলোএর মধ্যে রাজনৈতিক অবস্থার উন্নতি হলো। গণতন্ত্র ফিরে এলো। নেলসন ম্যান্ডেলা প্রেসিডেন্ট হলেন। ওয়াটারফ্রন্টের কাজও চলতে লাগলো বেশ দ্রুতকয়েক বছরের মধ্যেই ওয়াটারফ্রন্ট কেইপ টাউনের প্রধান আকর্ষণে পরিণত হলো।

          ১৯৯৬ সালে ওয়াটার ফ্রন্টের মালিকানা ছিল ট্রান্সলেট পেনশান ফান্ডের। ২০০৬ সালে ৭০০ কোটি র‍্যান্ডের বিনিময়ে ওয়াটার ফ্রন্ট কিনে নেয় দুবাই কনসার্টিয়াম। তখন দক্ষিণ আফ্রিকায় গুজব রটে যায় যে ওয়াটারফ্রন্টের সাথে টেবল মাউন্টেনের একটা অংশও বিক্রি হয়ে গেছে। কিছুদিন পর প্রায় এক হাজার কোটি র‍্যান্ডের বিনিময়ে ওয়াটারফ্রন্টের মালিকানা চলে আসে সাউথ আফ্রিকান কনসার্টিয়ামে কাছে। এই কনসার্টিয়াম পাবলিক পেনশানের টাকায় গঠিত। ওয়াটারফ্রন্টের নির্মাণ কাজ এখনো চলছে। ২০১০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় ওয়াটারফ্রন্টে রেকর্ড পরিমাণ পর্যটক এসেছিল। এখনো প্রতিবছর প্রায় পঁচিশ লাখ মানুষ ওয়াটারফ্রন্টে আসে। পর্যটকদের ভোটে V & A Waterfront কেইপ টাউনের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থান

          আস্তে আস্তে ফেরির যাত্রী সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে আর বাইরের আলো কমছে কুয়াশা জমে উঠেছে আগের ফেরিটি ট্রিপ শেষ করে ফিরে আসতে না আসতেই আমাদের ফেরি চলতে শুরু করলো।

          আশেপাশে অনেকগুলো ছোটবড় স্পিডবোট, লঞ্চ, স্টিমার। কয়েকটা প্রমোদতরীতে উচ্চস্বরে বাজনার সাথে নাচছে অনেকে। সরু খাল দিয়ে যাবার সময় খালের উপরের লোহার ব্রিজটি উপরের দিকে উঠে জায়গা করে দিলো।

          আস্তে আস্তে মোহনার দিকে এগোচ্ছে ফেরি। কুয়াশার কারণে বেশিদূর দেখা যাচ্ছে না। খুব কাছ দিয়েই যাচ্ছে অনেকগুলো স্পিডবোট। যেরকম গতিতে চলছে যে কোন মুহূর্তেই দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। মানুষ অপ্রয়োজনীয় গতির দাপট দেখাতে কেন যে পছন্দ করে। আবার যেখানে গতি দরকার - সেখানে গতির দেখা পাওয়া যায় না। ওয়াটারফ্রন্ট মেরিনা, আলফ্রেড বেসিন ও ভিক্টোরিয়া বেসিনের চারপাশে ঘুরে আধঘন্টার মধ্যে ফিরে এলাম জেটিতে।

 

 

ওয়াটারফ্রন্ট সাইট সিয়িং ফেরি


 ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সাড়ে পাঁচটার মতো বাজে। এবার ফেরা যাক। সারাদিনে অনেক ঘুরাঘুরি হয়েছে।

          হাঁটতে হাঁটতে চলে এলাম হোটেলে। লিফট থেকে বের হতেই দেখা হয়ে গেল ফ্লোর ম্যানেজার ক্লারার সাথে।

     গুড ইভনিং স্যার।

     গুড ইভনিং। হাউ আর ইউ?

     গুড। থ্যাংক ইউ স্যার। আপনার রুম গুছিয়ে দেয়া হয়েছে। কিছু লাগলে আমাকে জানাবেন।"

          এদের হাসিখুশি আতিথেয়তায় আমি মুগ্ধ।


পর্ব ৭

No comments:

Post a Comment

Latest Post

R. K. Narayan's 'The Grandmother's Tale'

There are many Indian authors in English literature. Several of their books sell hundreds of thousands of copies within weeks of publication...

Popular Posts