জাদুঘর ও অন্যান্য
লিফটের সামনেই দেখা হয়ে
গেলো আনিটা আর ইভানার সাথে। দুজনেরই কাঁধে ব্যাগ হাতে স্যুটকেস।
“চলে যাচ্ছো তোমরা?” জ্ঞিজ্ঞেস করলাম।
“হ্যাঁ, প্রিটোরিয়া যাচ্ছি। আনিটার ইর্মাজেন্সি পাসপোর্ট নিতে হবে অ্যাম্বেসি থেকে।” গম্ভীরভাবে বললো
ইভানা।
গতকাল সারাদিন বিভিন্ন দফায় কথাবার্তা বলেছে
তারা কেইপ টাউন পুলিশের সাথে, প্রিটোরিয়ায় চেক রিপাবলিকের অ্যাম্বেসির সাথে, ট্রাভেল এজেন্সির
সাথে। তাদের আগের টিকেট পরিবর্তন করে সবকিছু ঠিকঠাক করতে করতে গতকাল সারাদিন চলে
গেছে।
“পুলিশ কী বললো?”
“তারা চেষ্টা করছে। কিন্তু তেমন কোন আশা নেই। প্রতিদিনই নাকি এরকম ঘটনা ঘটছে
এখানে।”
তাদের জন্য কষ্ট হচ্ছে কিছুটা। ক্ষতি যা
হবার হয়ে গেছে। টাকা পয়সা মোবাইল আর পাসপোর্ট গেছে আনিটার। এখন প্রিটোরিয়া গিয়ে
অ্যাম্বেসি থেকে জরুরি পাসপোর্ট নিয়ে দেশে ফিরবে। তাদের ফ্লাইট দশটায়। এখন বাজে
সাতটা। চেক আউট করে ট্যাক্সি নিয়ে এয়ারপোর্ট চলে যাবে। দুজনের সাথে কোলাকুলি করে
বিদায় নিয়ে আমি রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম ব্রেকফাস্ট করতে।
আজ অনেক লম্বা প্ল্যান। এখন সোয়া সাতটা
বাজে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বেরিয়ে পড়তে হবে। দ্রুত খেয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে
দেখি ইভানারা চলে গেছে। আমি ব্যাকপ্যাক কাঁধে রাস্তায় নামলাম। প্রথম গন্তব্য
ওয়াটারফ্রন্ট। রুবেন আইল্যান্ড যাবার টিকেট কাটতে হবে।
হোটেল থেকে ওয়াটারফ্রন্টে যাবার আরেকটা
পথ খুঁজে পেয়েছি। স্টেডিয়ামের দিকে কিছুটা হাঁটার পর ডানে মোড় নিয়ে ওয়াটারফ্রন্টের
পেছন দিকের রাস্তা দিয়ে ঢোকা যায়। পথ সংক্ষিপ্ত মনে হলেও সময় খুব একটা কম লাগে না।
প্রায় বিশ মিনিট হাঁটতে হলো।
সমারসেট হসপিটালের সামনে রাস্তা পার হয়ে
দ্রুত চলে এলাম ক্লক টাওয়ারের সামনে নেলসন ম্যান্ডেলা গেটওয়ে বিল্ডিং-এ। বুকিং
অফিসে এখনো তেমন ভিড় নেই। আগামীকাল সকাল ন’টার ফেরির একটা টিকেট কিনলাম। তিনশ র্যান্ড।
ন’টার যাত্রার
জন্য সাড়ে আটটার মধ্যে ফেরিতে উঠে বসতে হবে।
ওয়াটারফ্রন্টে আপাতত আর কোন কাজ নেই।
এবার যেতে হবে শুক্রবার সকালে কেইপ পয়েন্ট যাবার ট্যুর বুক করতে। বুকিং অফিস সিটি
সেন্টারের লং স্ট্রিটে।
ওয়াটারফ্রন্টের শপিং সেন্টারগুলো এখনো
খোলেনি। মানুষের ভিড় এখনো নেই বললেই চলে। সুন্দর ঝকঝকে রোদ্দুর চারদিকে। আফ্রিকান
ট্রেডিং পোর্টের সামনে কাঠের তৈরি বিশাল হাতি আর জিরাফ চকচক করছে রোদ্দুরে। ফ্লোরের
বিশালাকৃতি দাবার বোর্ডে লাল-সাদা ঘুটিগুলো অপেক্ষা করছে কোন দাবাড়ুর। কিউ-ফোর-এর
প্রতিবিম্ব পড়েছে পানিতে। সারি সারি চেয়ার এখনো ফাঁকা। রোদ আরেকটু বাড়লে ঘড়ির
কাঁটা আরেকটু সামনে এগোলে রেস্টুরেন্টটা গমগম করবে সী-ফুডপ্রেমীদের কোলাহলে।
হুইল অব কেইপ টাউনের সামনে ছোট্ট
ট্রেনটি ঝেড়েমুছে রেডি করছে কর্মীরা। আরেকটু এগিয়ে চলে এলাম নোবেল চত্বরে। দক্ষিণ
আফ্রিকার চারজন নোবেল শান্তি পুরষ্কার বিজয়ীর মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে এই ‘নোবেল স্কয়ারে’।
আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের প্রাক্তন
প্রেসিডেন্ট অ্যালবার্ট লুথিলি নোবেল শান্তি পুরষ্কার পেয়েছিলেন ১৯৬১ সালে।
আর্চ বিশপ ডেসমন্ড টুটু পেয়েছেন ১৯৮৪ সালে। তারপর ১৯৯৩ সালে তৎকালীন দক্ষিণ
আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট এফ ডব্লিউ ডি ক্লার্ক ও গণতান্ত্রিক দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম
প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলা। এই চারজন শান্তির দূতের ব্রোঞ্জের মূর্তি পাশাপাশি
দাঁড়িয়ে আছে এই নোবেল স্কয়ারে।
শান্তিতে এই চারজন ছাড়াও অন্যান্য
বিষয়েও অনেকগুলো নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষ। ১৯৮২ সালে রসায়নে
নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন অ্যারন ক্লুং, সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন দু’জন, ১৯৯১ সালে নাদিন
গর্ডিমার, এবং ২০০৩ সালে জন কোয়েৎজি। জন কোয়েৎজির জন্ম এই কেইপ টাউনে। চিকিৎসা
বিজ্ঞানে তিনজন দক্ষিণ আফ্রিকান বিজ্ঞানী নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন। ১৯৫১ সালে ম্যাক্স
থেইলার, ১৯৭৯ সালে অ্যালেন করম্যাক, এবং ২০০২ সালে সিডনি ব্রেনার। নোবেল স্কয়ারে
অবশ্য শুধুমাত্র শান্তির নোবেলজয়ীদেরই উপস্থিতি।
নোবেল স্কয়ার
ড্রাইডক ইয়ার্ড পার হয়ে
হাঁটতে হাঁটতে চলে এলাম সিটিতে। সেন্ট জর্জ মল পার হয়ে লং স্ট্রিট। ট্যুর
কোম্পানির অফিসগুলো সবে খুলতে শুরু করেছে। পরশুদিন চিনে গিয়েছিলাম। আজ সোজা
গ্রাউন্ড ফ্লোরে নেমে এলাম কাঠের সিঁড়ি বেয়ে। একই ফ্লোরে বিভিন্ন কোম্পানির অফিস
পাশাপাশি। হিলটন রস কোম্পানির ‘কেইপ পয়েন্ট’ ট্যুর
পছন্দ হলো। ছয়শ নব্বই র্যান্ড। সকাল আটটায় আমাকে হোটেলের লবি থেকে তুলে নিয়ে যাবে।
দুপুর দুটোয় আবার পৌঁছে দেবে হোটেলে। টাকা দিয়ে রসিদ নিয়ে বেরিয়ে এলাম।
লং স্ট্রিটের বারগুলো দিনের বেলায়
অন্যরকম সাদামাটা দেখাচ্ছে। সামনেই একটা বারের নাম টাইগারস মিল্ক। পয়সা দিলে বাঘের
দুধ পাওয়া যায় বলে কথা আছে। এই বারের নামই বাঘের দুধ।
লং স্ট্রিটের ওপর ক্লার্কস বুকশপ
ঐতিহ্যবাহী বইয়ের দোকান। ঢুকলাম ভিতরে। এখানকার দোকানে মনে হয় মাঝে মাঝে ডাকাতি
হয়। ঢোকার কাচের দরজা সবসময় বন্ধ থাকে। বাইরে থেকে কেউ ঢুকতে চাইলে ভেতরের
কাউন্টারে যে থাকে সে সুইচ টিপে দরজার তালা খুলে দেয়। ঢোকার পর পরই দরজা আবার লক্ড
হয়ে যায়। বের হবার সময়ও কাউন্টার থেকে সুইচ টিপতে হয়। নিচের তলায় সব নতুন বই,
উপরের তলায় পুরনো বই। প্রচুর কালেকশান আছে। কিন্তু দাম অস্ট্রেলিয়ার তুলনায় অনেক
বেশি। বইয়ের দোকানই একমাত্র দোকান যা আমাকে টানে। কিছু না কিনলেও উল্টে পাল্টে
দেখতেও ভালো লাগে।
কোম্পানিজ গার্ডেনের উপকন্ঠে বিশাল
এলাকা নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার জাদুঘর। দক্ষিণ আফ্রিকার সবগুলো জাদুঘর পরিচালিত হয় “IZIKO MUSEUMS”-এর তত্ত্বাবধানে সরকারি
নিয়ন্ত্রণে। ইজিকো শব্দটির উৎপত্তি আফ্রিকান ইশিখোশ ভাষা থেকে। যার অর্থ সংস্কৃতিক
কার্যক্রমের কেন্দ্র।
৩০ র্যান্ড দিয়ে টিকেট কেটে ঢুকলাম সাউথ
আফ্রিকান মিউজিয়ামে। প্রবেশমূল্য তুলনামূলকভাবে খুবই কম। জ্ঞিজ্ঞেস করে
জেনে নিলাম মিউজিয়ামের ভেতরে ছবি তোলা যাবে কিনা। ফ্ল্যাশছাড়া ছবি তোলা যাবে।
১৮২৫ সালে স্থাপিত হয়েছে এই মিউজিয়াম। বর্তমান
ভবনে মিউজিয়ামটি স্থানান্তরিত হয় ১৮৯৭ সালে। এই ভবনটি দেখে বোঝা যায় না যে এর বয়স একশ বিশ
বছর।
প্রায় দশ থেকে পনেরো লক্ষ সামগ্রী আছে এই
জাদুঘরে। প্রায় ৭০ কোটি বছর আগের একটি জীবাশ্ম আছে এখানে। সংরক্ষিত আছে এক লাখ বিশ
হাজার বছর আগে ব্যবহৃত পাথরের যন্ত্র। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রস্তর শিল্পের একটা
সমৃদ্ধ সংরক্ষণ আছে। প্রাচীন গুহাচিত্র বিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রমাণ হয়ে দাঁড়ায়।
চার্লস ডারউইন একটা বড় অংশ নিয়ে আছেন
এখানে। তিনি কেইপ টাউনে এসেছিলেন ১৮৩৬ সালে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে পুরনো
স্তন্যপায়ী প্রাণীর যে জীবাশ্ম এখানে আছে তার বয়স কমপক্ষে এক লক্ষ বছর। লম্বা
শিংযুক্ত মোষের এই প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে প্রায় বারো হাজার বছর আগে।
সামুদ্রিক প্রাণীর সংরক্ষণাগারে
সংরক্ষিত আছে বিশাল সামুদ্রিক তিমির কংকাল ও অনেকগুলো মডেল তিমি। সেখানে শোনা যায়
অরিজিনাল তিমি মাছের শব্দ - সাউন্ড অব হোয়েলস।
আফ্রিকা মহাদেশ জীবজন্তুর জন্য বিখ্যাত।
বাঘছাড়া অন্যান্য অনেক মাংসাশী প্রাণীর চারণক্ষেত্র আফ্রিকা। তাদের কঙ্কাল শরীর
সব। আফ্রিকান ডায়নোসর দখল করে রেখেছে মিউজিয়ামের একটা অংশ। দুটো বিশালাকৃতি
ডায়নোসরের পূর্ণাঙ্গ কঙ্কাল দাঁড়িয়ে আছে তিন তলার সমান উঁচুতে মাথা তুলে।
মিউজিয়ামের সাথে লাগানো
প্ল্যানেটোরিয়ামের প্রদশর্নী শুরু হবে দুটোয়। ততক্ষণ থাকা যাবে না। তাই রওনা দিলাম
বাগানের ওপারে সাউথ আফ্রিকান ন্যাশনাল গ্যালারি দেখতে। সাদা রঙের ভবনটি মনে হয়
একেবারে টেবল মাউন্টেনের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। এখানেও প্রবেশ মূল্য ৩০ র্যান্ড।
ব্যাগ বা ক্যামেরা নিয়ে ঢুকতে দেয়া হয় না। লকারে সেগুলো রেখে ভেতরে ঢুকলাম।
সাউথ আফ্রিকান ন্যাশনাল গ্যালারি |
১৮৭১ সালে মাত্র ৪৫টি
পেইন্টিং নিয়ে এই গ্যালারির যাত্রা শুরু হয়েছিল। ১৯৩০ সালে বর্তমান ভবনটির
নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে এখানে আফ্রিকা ছাড়াও ব্রিটেন, ফ্রান্স,
নেদারল্যান্ড ও ফিনল্যান্ডের প্রায় ছয় হাজার ছবি সংগ্রহে আছে। আফ্রিকান আর্ট,
মর্ডান পেইন্টিংস অ্যান্ড স্কাল্পচার, ঐতিহাসিক ছবি ও মূর্তি আর সাম্প্রতিক ছবির
প্রদর্শনী দেখতে দেখতে কেটে গেলো ঘন্টাখানেক। যখন বেরিয়ে এলাম সূর্য প্রায় মাথার
ওপর।
“এক্সকিউজ মি”-
তাকিয়ে দেখি এক আফ্রিকান তরুণী। হাতে
কিছু কাগজপত্র। পরনে শর্টস আর টিশার্ট।
থামলাম। সে এগিয়ে এসে বললো, “মাই নেম ইজ মারিয়া। আই অ্যাম আ
স্টুডেন্ট।”
“ওকে মারিয়া। বিষয় কী?”
“আমি যুদ্ধ থামাতে চাই।”
“খুবই ভালো কথা। কোন্ যুদ্ধ থামাতে চাও?”
“সব যুদ্ধ। পৃথিবীতে যত যুদ্ধ চলছে সব।”
ইংরেজি বলতে কিছুটা কষ্ট হলেও শব্দ
হাতড়ে হাতড়ে ঠিকই চালিয়ে নিচ্ছে মারিয়া।
“সব যুদ্ধ বন্ধ করতে পারলে তো খুব ভালো হয়। কিন্তু কীভাবে করতে চাও?”
“স্বাক্ষর সংগ্রহ করে।”
হাতের কাগজ এগিয়ে দিলো। কম্পিউটারে
প্রিন্ট করা স্বাক্ষর সংগ্রহের ফরম। লেখা আছে ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ দক্ষিণ কোরিয়ার
সওলে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও যুদ্ধ বন্ধের ডাক দেয়া হয়েছে। স্বাক্ষর সংগ্রহ করে
প্রত্যেক রাষ্ট্রের প্রধানের কাছে তা পাঠানো হবে। তখন তারা বাধ্য হবে যুদ্ধ বন্ধ
করতে।
খুবই মহৎ উদ্যোগ। কিন্তু পৃথিবীব্যাপী
যুদ্ধ এখন একটা বিশাল বাণিজ্য। এটা বন্ধ হবে না। তবুও শুভ কামনা করতে তো কোন
অসুবিধে নেই।
দেখলাম তার ফরমে এখনো একটা স্বাক্ষরও
নিতে পারেনি সে। আমি নাম ঠিকানা লিখে স্বাক্ষর করলাম।
“আপনি অস্ট্রেলিয়ান? আমি তো আপনাকে ইন্ডিয়ান ভেবেছিলাম।”
“অস্ট্রেলিয়ায় থাকি। আমি আসলে বাংলাদেশি।”
“বাংলাদেশ। শুনেছি। সেখানেও তো যুদ্ধ চলছে।”
বাংলাদেশে যুদ্ধ চলছে? অবাক হলাম আমি।
“কিসের যুদ্ধ চলছে বাংলাদেশে?”
“চলছে না?”
“আমি তো জানি সেখানে কোন যুদ্ধ চলছে না।”
“তাহলে মনে হয় ইন্ডিয়াতে যুদ্ধ চলছে। আমি কোথায় যেন শুনেছি।”
ভালো করে তাকালাম মারিয়ার দিকে। উচ্চতা
৫ ফুটও হবে না। লিকলিকে শরীরে মাংস নেই বললেও চলে। বয়স ১৭ থেকে ২৭ যে কোনটাই হতে
পারে। ফ্যাকাশে কোঁকড়ানো চুল মাথার ওপর পাখির বাসার মতো ফুলে আছে। আফ্রিকার দরিদ্র
শ্রেণিভুক্ত বলে মনে হচ্ছে তাকে।
“মারিয়া, কোন ইউনিভার্সিটিতে পড়ো তুমি?”
“ইউনিভার্সিটি?”
“তুমি বলেছো তুমি স্টুডেন্ট। কোথাকার স্টুডেন্ট?”
“আমি এদেশে পড়ি না।”
“কোন দেশে পড়ো?”
“জিম্বাবুয়ে”
“তোমার বাড়ি জিম্বাবুয়েতে?”
“হ্যাঁ”
“এখানে কী করছো তাহলে?”
আমার প্রশ্নের উত্তর দেবার ব্যাপারে
মারিয়ার কোন আগ্রহ নেই আর। সে কাগজপত্র নিয়ে অন্যদিকে হাঁটা শুরু করলো।
আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকাই
সবচেয়ে উন্নত। আফ্রিকার অন্যান্য দেশ থেকে প্রচুর মানুষ দক্ষিণ আফ্রিকায় আছে
অবৈধভাবে। মারিয়াও কি তাদেরই একজন?
ন্যাশনাল গ্যালারির কাছেই গর্ভনমেন্ট
অ্যাভিনিউ। বিরাট বিরাট গাছ রাস্তার দুপাশে। এগুলো নাকি আমেরিকা থেকে আনিয়েছিলেন
সিসিল রোডস। গর্ভনমেন্ট অ্যাভেনিউর পাশেই ছয় একর জায়গা জুড়ে কোম্পানির বাগান। ডাচ
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রধান জা ভন রিবেক এই বাগান তৈরি করিয়েছিলেন ১৬৫২ সালে। তখন
ছিল এটা সব্জি বাগান। কোম্পানির জাহাজ কেইপটাউনে ভিড়লে এখান থেকে সবজি যেতো
জাহাজে। এখনো এই বাগানে কিছু কিছু সবজির চাষ হয়।
কুইন ভিক্টোরিয়া স্ট্রিটে কোম্পানি
গার্ডেনের অপর পাড়ে সাউথ আফ্রিকান ন্যাশনাল লাইব্রেরি। ঢুকলাম সেখানে। দেখলাম
কর্মকর্তারা খুব ব্যস্ত সেখানে। স্টক মেলাচ্ছে। বইয়ের রাজ্যে ঘুরে বেড়ানো গেলো না।
বাগানের পরেই দক্ষিণ
আফ্রিকার পার্লামেন্ট হাউজ। লাল দেয়াল আর সাদা পিলারের পার্লামেন্ট হাউজটা ১৯০০
সাল থেকে এখনো একই রকম আছে।
No comments:
Post a Comment