স্বপ্নলোকের চাবি – ১৭
‘ছড়ার কুল’ নামটাতে প্রচ্ছন্ন কাব্যিক একটা ভাব আছে, হয়তো
কিছুটা ছড়ার ছন্দও। সৈয়দ মুজতবা আলী ছড়ার কুলে এলে ওমর খৈয়ামের কবিতার অনুবাদ এভাবেও
করতে পারতেন – এইখানে এই ছড়ার কুলে, তোমার আমার কৌতূহলে, যে ক’টি দিন কাটিয়ে যাবো প্রিয়ে
…। এই জায়গার নাম ছড়ার কুল কে রেখেছিল তা জানা
সম্ভব নয়। পুবের পাহাড় থেকে বৃষ্টির ধারা নেমে এসে যে ছড়ার সৃষ্টি হয়েছে সে হয়তো শত
বছরের পুরনো। কিন্তু এই ছড়ার কুলে দোকানপাট গড়ে উঠেছে সামান্যই। দিনের বেলা এখানে জনসমাগম
হয় খুবই কম। সন্ধ্যা নামার আগে থেকেই আস্তে আস্তে ব্যস্ততা বাড়ে কিছুটা। রাস্তার দু’ধারে
জমে উঠে অস্থায়ী বাজার – তাও মাত্র কয়েক ঘন্টার জন্য। ছড়ার কুল থেকে মাত্র এক কিলোমিটার
দক্ষিণে এলেই ফতেয়াবাদ। এখানে তুলনামূলকভাবে ব্যস্ততা অনেক। শহর এলাকার তিন নম্বর বাস
আসে এপর্যন্ত। সে হিসেবে ধরতে গেলে ফতেয়াবাদ শহর এলাকা।
ছড়ার কুলের দেড় কিলোমিটার
ব্যাসার্ধের মধ্যেই পাঁচ-ছয়টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তিনটি উচ্চ-বিদ্যালয়, একটি কলেজ।
এই অঞ্চলে শিক্ষার প্রতি অনুরাগ দ্রুত বাড়ছে। এখানে প্রায় বাড়িতেই ছেলেমেয়েদের পড়ানোর
জন্য লজিং-মাস্টার আছে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসে
ছেলে-মেয়েরা। অনেক ছেলেই পড়ানোর বিনিময়ে থাকা-খাওয়ার সুযোগ পায় বিভিন্ন বাড়িতে। আমানত
খান বিল্ডিং-এ যারা থাকে – তাদের অনেকেই টিউশনি করে। গতকাল থেকে আমিও তাদের দলে যোগ
দিয়েছি। অবশ্য গতকাল ছিল পরিচিতি পর্ব – গিয়েছিলাম মাহমুদভাইয়ের সাথে রিক্শায়। আজ
চলেছি হেঁটে। পথে না হাঁটলে পথ চেনা হয় না ঠিকমতো।
গতকাল মাহমুদভাইয়ের
সাথে রিকশায় যাবার সময় পথ চিনে রাখার চেষ্টা করেছিলাম। আজ সেভাবেই পথ হাঁটছি। ছড়ার
কুলের শেষ দোকান পেরিয়ে যাবার পর রাস্তার দুপাশে ঢোলকলমীর ঝাড়। পায়ে হাঁটা সরু পথের
স্পষ্ট ছাপ। আরো কিছুদূর যাবার পর রাস্তার ডানপাশে একটি তালগাছ এক পায়ে একলা দাঁড়িয়ে
আছে। শহর এলাকার বাসগুলি মেইন রোডে ঘুরার জায়গা না পেলে অনেকসময় এপর্যন্ত এসে তালগাছের
গোড়ার খালি জায়গায় ঢুকে ঘুরে যায়। আমি শহর থেকে তিন নম্বর বাসে এলে অনেকসময় এপর্যন্ত
চলে আসি।
এই তালগাছের ডানদিকে
তাকিয়ে চোখ জুড়িয়ে গেল। খুবই নিচু কিছু টিলা আছে এখানে – সবুজ ঘাস আর গুচ্ছ গুচ্ছ সাদা
কাশফুলে ভর্তি। তার পাশেই রেললাইন। রেললাইনের পশ্চিমপাশে গাছপালার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে
পড়ন্ত বেলার কমলারঙের সূর্য। আর কিছুদূর সামনে গেলেই ফতেয়াবাদ সিটি কর্পোরেশন গার্লস
স্কুল। গেট বন্ধ, রাস্তা থেকে রাস্তার পাশের
বিল্ডিংটা ছাড়া স্কুলের আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না এখন। স্কুল শুরু হবার আগে,
আর ছুটির সময় নীল-সাদা ড্রেসের ছাত্রীদের ভীড় লেগে যায় রাস্তায়। নতুন এই স্কুলের ক্লাস
নাইনের ফার্স্টগার্ল।
গতকাল মাহমুদভাইয়ের
সাথে রিকশা করে একেবারে খান সাহেবদের বাড়ির
উঠোনে গিয়ে নেমেছিলাম। বিশাল পাকা বাড়ি। চারপাশ ঘেরা প্রশস্ত উঠোন। বাংলা সিনেমায় গ্রামের
ধনী তালুকদার বাড়ি যেরকম দেখানো হয় – অনেকটা সেরকম বাড়ি। শ্বশুরবাড়িতে জামাই কখনো পুরনো
হয় না। মাহমুদভাইতো এখনো অফিসিয়ালি জামাই হননি – সে হিসেবে তাঁর যতই নিত্য আসাযাওয়া
থাকুক – তিনি তো আরো নতুন। তাঁকে আবাহনে উচ্ছ্বাসের কোন কমতি নেই। ব্যাপারটার মধ্যে
যে আধুনিকতাটা আছে – সেটা খুব ভালো লাগলো আমার।
ভাবীর সাথে পরিচয়পর্ব
হলো খুব সংক্ষিপ্ত। মাহমুদভাই বললেন, “এ হলো মুন্নি। তোমার যেহেতু ছাত্রী, সেহেতু তোমাকে
ভাবী ডাকতে হবে না। তুমি নাম ধরেই ডাকতে পারবে।“
ভালোবাসার মানুষ হলো
চুম্বকের মতো। চুম্বক যেমন চৌম্বকীয় আবেশ ছড়ায়, তেমনি ভালোবাসার জটিল রসায়নও খুশির
আবেশ ছড়ায়। মাহমুদভাইয়ের পাশে দাঁড়িয়ে সেই রসায়নে মুন্নির উজ্জ্বল মুখ খুশিতে ঝলমল
করছে।
বসার ঘরের বড় জানালার
পাশে বেশ বড় পড়ার টেবিল। মুন্নি টেবিলের বইপত্র একপাশে সরিয়ে ফেললো। বোঝা যাচ্ছে –
আজ পড়াশোনা হবে না। পরিচয়পর্ব সংক্ষেপে শেষ হলো, কিন্তু আপ্যায়নপর্ব হলো অত্যন্ত দীর্ঘায়িত।
বিশাল টেবিল ভর্তি হয়ে গেল হরেকরকম খাদ্যদ্রব্যে। এত বেশি খাওয়া কারো পক্ষেই সম্ভব
নয় - জানার পরেও মানুষ কেন খাবারের স্তুপ সাজিয়ে দেয় আমি জানি না। অথচ হতদরিদ্র মানুষ
যখন খাবার চায় – তখন প্রয়োজনীয় খাবারও দেয়া হয় না। এরকম চিন্তাভাবনা ইদানীং প্রায়ই
হচ্ছে। তার কারণ পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর থেকে কার্ল মার্ক্স পড়া শুরু করেছি। বিশ বছর
বয়সের এই চিন্তার আয়ু কত বছর পর্যন্ত তা এখনো জানি না।
“স্লামালাইকুম স্যার” – বলে ট্রে হাতে যে কিশোরীটি রুমে ঢুকলো
তাকে দেখেই মনে হলো আগে কোথাও দেখেছি। মাহমুদভাই বললেন, “এসো নতুন। ও হচ্ছে নতুন, তোমার
অন্য ছাত্রী। ক্লাস নাইনে পড়ে।“
জড়তাহীন হাসিমুখে নতুন এগিয়ে এসে আমার কাছে টেবিলে চায়ের
কাপ রাখতে রাখতে বললো, “স্যার, আপনার চা।“
আমার স্মৃতি হাতড়ে বেড়াচ্ছে নতুনকে আমি আগে কোথায় দেখেছি।
স্মৃতি ঝামেলা পাকায়। অনেক আগের ব্যাপার ঠিকমতো মনে রাখে, কিন্তু সাম্প্রতিক ব্যাপার
মনে রাখতে চায় না। আমি এই অঞ্চলে এসেছি মাত্র চার মাস হলো – নতুনকে তো এর মধ্যেই দেখেছি
কোথাও।
“স্যার, চায়ে দুধ-চিনি ঠিক আছে কি না দেখেন।“ – নতুন আবারো
মনে করিয়ে দিলো চায়ের কথা। আমি চা পানে অভ্যস্ত নই। খুব একটা পছন্দও করি না এই ঝামেলাযুক্ত
পানীয়টিকে। কেউ চা সাধলে আমি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করতে অভ্যস্ত ছিলাম। কিন্তু একদিন
টিপু আমাকে চা-এর সামাজিক গুরুত্ব বুঝিয়ে দিয়েছিল। টিপু অর্থাৎ টিপু সুলতান সিকদার
– চট্টগ্রাম কলেজে এক সাথে ফিজিক্স পড়েছি অনেকদিন। ছাত্র ইউনিয়নের নিষ্ঠাবান কর্মী।
মার্ক্স-লেনিন মগজে ধারণ করে, আবার একই সাথে দুনিয়ার বড় বড় পুঁজিবাদী ব্র্যান্ডের জিনিসপত্র নিত্য ব্যবহার
করে। একদিন আমরা আমাদের ধনী বন্ধু মোরশেদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। সে প্রচুর খাওয়া-দাওয়া
করালো। এরপর এলো চা-পর্ব। আমি যথারীতি বলে দিলাম – আমি চা খাই না। টিপু সাথে সাথে আমাকে
লেনিনের “পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থায় আমাদের করণীয়”র অনুকরণে চা-য়ের সামাজিক গুরুত্ব এবং
চায়ের প্রতি আমাদের করণীয় – বোঝাতে লাগলো।
“চা হলো আমাদের দেশে আপ্যায়নের শেষ ধাপ। চা ছাড়া আপ্যায়ন
সুসম্পন্ন হয় না। কেউ যদি তোকে আপ্যায়ন করে, তুই যদি কোন নাশতা না খেয়েও শুধু এক কাপ
চা খাস, তাহলেও আপ্যায়নকারী খুশি হয়ে যাবে। কিন্তু তুই যদি বলিস – চা খাস না, তখন তারা
তোর জন্য চায়ের বিকল্প কিছু খুঁজতে শুরু করবে। দুধ সাধবে, কফি জোগাড় করতে চাইবে। তুই
বলবি – কিছুর দরকার নেই। তারা ভাববে তুই ভদ্রতা করছিস। আমাদের দেশে ভদ্রতার প্রতিযোগিতা
চলে জানিস তো। অবশ্য যেখানে দরকার নেই – সেখানে চলে এই প্রতিযোগিতা। তুই যতই ভদ্রতা
করে বলবি দুধ-কফি কিছুরই দরকার নেই, তারা ততই চেষ্টা করবে তোর পছন্দের পানীয় জোগাড়
করতে। সামর্থ্য থাকলে তোকে চায়ের বদলে ব্রান্ডি অফার করবে। তার মানে তুই চা না খেয়ে গৃহস্থের ঝামেলা বাড়াচ্ছিস।
কিন্তু এক কাপ চা যদি চুপচাপ খেয়ে নিস, সমস্ত ঝামেলা মিটে গেল। চা-ই তো খাচ্ছিস, মরে
তো যাবি না চা খেলে। নিজে বানিয়ে বা দোকানে গিয়ে অর্ডার দিয়ে চা খেতে তোকে বলছি না।
কিন্তু কেউ যদি অফার করে, তাহলে খেয়ে নিস।“ – টিপুর কথায় আমি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।
মার্ক্সবাদ-লেনিনবাদ মানুষের পেটে ভাত জোগাতে পারুক কিংবা না পারুক, মুখে কথা ঠিকই
জোগায়। তাই চায়ের কাপ তুলে নিয়ে চুমুক দিলাম।
“জানলাটা ঠিকমতো বন্ধ হয়নি, মশা ঢুকে যাচ্ছে।“ – মাহমুদভাই
বললেন। মুন্নি বললো, “জানলার হুকটা কোথায় যেন আটকে গেছে, ঠিকমতো লাগছে না।“
“দাঁড়াও দেখছি, একটা স্ক্রু-ড্রাইভার নিয়ে আসি” – বলে নতুন
দ্রুত ভেতরের ঘরে চলে যাবার সাথে সাথেই মনে পড়লো তাকে আগে কোথায় দেখেছিলাম। দেখেছিলাম
তাদের স্কুলের সামনে রাস্তায়। স্কুল ছুটির পর তারা দল বেঁধে রাস্তায় হাঁটছিলো। আমি
এদিকে আসছিলাম। তারা আমার সামনে ছিল। হঠাৎ একজনের পায়ের স্যান্ডেল ছিঁড়ে গেল। সে ছেঁড়া
স্যান্ডেল হাতে নিয়ে হাঁটবে, নাকি ফেলে দেবে বুঝতে পারছিলো না। দেখলাম এই মেয়েটি তার
চুল থেকে একটি ক্লিপ খুলে নিয়ে স্যান্ডেল মেরামতের জন্য বসে গেলো রাস্তায়। তার বন্ধুরা
সবাই তাকে “ম্যাকগাইভার, ম্যাকগাইভার” বলছিলো। বিটিভিতে এই ইংরেজি সিরিয়ালটি প্রচন্ড
জনপ্রিয় এখন। ম্যাকগাইভারের কারিগরী বুদ্ধি ছোটদেরকে উৎসাহিত করছে দেখে বেশ ভালো লেগেছিল।
এখন সেই ক্ষুদে ম্যাকগাইভার চোখের সামনে স্ক্রু-ড্রাইভার হাতে জানালার হুক ঠিক করে
ফেললো। আমি কি তাকে বলবো – যে আমি তাকে সেদিন রাস্তায় দেখেছিলাম? না, বলার দরকার নেই।
টিউশনিতে এসে পড়াশোনার বাইরে অন্য কোন বিষয়ে কথা বলা ঠিক হবে না।
কাল পড়ানো হয়নি। আজ থেকে পড়ানো শুরু হবে। রাস্তা পার হয়ে
ফতেয়াবাদ স্কুলের পাশ দিয়ে ডানে স্কুল আর বামে খেলার মাঠ রেখে সামনে এগোচ্ছি। এটাই
পথ আমি নিশ্চিন্ত। এর পরেই ডানদিকে যেতে হবে। সেদিকে গেলাম। তারপর ডানদিকের প্রথম বাড়িটিই
খান সাহেবের বাড়ি। কিন্তু উঠোনে ঢুকে মনে হলো রাতারাতি বাড়িটা বদলে গেছে। বাড়ি থেকে
একজন মাঝবয়সী ভদ্রলোক উঠোনে এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “অ-নে কারে চাইলানদে?” আমি কাকে
চাচ্ছি? খান সাহেবের নাম বলবো – নাকি মুন্নি-নতুনের নাম বলবো? একজন অপরিচিত ছেলে এসে
বাড়ির মেয়েদের খোঁজ করলে একটা অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। জিজ্ঞেস করলাম,
“এটা কি খান সাহেবের বাড়ি?”
“কোন্ খান সাহেব?”
“আমানত খান সাহেব?”
“অ-নে ভুল গইজ্জন বা-জী। হিঁতারো বারি আর পুম্মিখ্যা।“
আমি আসলেই ভুল করেছি। খান সাহেবদের বাড়ি আরো ‘পুম্মিখ্যা’
অর্থাৎ পূর্বদিকে। ফিরে আসার সময় বুঝলাম আমি ভুল গলিতে বাঁক নিয়েছি। আবার এই গলি থেকে
বেরিয়ে এসে আরো পূর্বদিকে অনেকদূর যাবার পর ডানে মোড় নিলাম। এদিকে প্রত্যেক রাস্তার দুপাশে সারিবদ্ধ সুপারি-গাছ। ফলে
সবগুলি রাস্তাই একই রকম মনে হয়।
অবশেষে ঠিক বাড়িতে পৌঁছলাম। মুন্নি-নতুন দু’জনই পড়ার টেবিলে
রেডি হয়ে বসেছিল। পড়া শুরু হলো। মুন্নি ফতেয়াবাদ কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে। তার ফিজিক্স
দিয়ে শুরু করলাম, স্কেলার ভেক্টর ইত্যাদি। উচ্চমাধ্যমিকে আমি দুটো বিষয় পড়ে কিছুটা
আনন্দ পেয়েছিলাম – পদার্থবিজ্ঞান আর বাংলা। মুন্নিকে অবশ্য বাংলা পড়াতে হবে না, ফিজিক্স,
কেমিস্ট্রি আর ম্যাথস দেখালেই হবে।
“নূতন, তুমি …” – আমাকে কথা শেষ করতে না দিয়েই নতুন বললো,
“নূতন নয় স্যার, নতুন।“
“নূতন আর নতুন তো একই অর্থ।“
“এখানে অর্থের কথা হচ্ছে না স্যার, নামের কথা হচ্ছে। আমার
নাম নতুন। এই নামে সিনেমার একজন নায়িকা আছে। আপনি সিনেমা দেখেন না বলেই জানেন না।“
আমি সিনেমা দেখি না! এটাতো প্রামাণিক স্যারকে ফিজিক্স বোঝেন
না বলার মতো হলো। এখন কি আমার উচিত আমার সিনেমা দেখা সম্পর্কে আলোকপাত করা। প্রথমদিনই
সিনেমার গল্প শুরু করলে মাহমুদভাই আমাকে আস্ত রাখবেন? আমি কিছু না বলে নতুনের দিকে
তাকিয়ে রইলাম। তার চোখ বড় বড়।
“তুমি ক্লাস নাইনের ফার্স্ট গার্ল। সায়েন্স নাওনি কেন? আর্টস
কেন নিয়েছো?”
“ক্লাস নাইনের ফার্স্ট গার্ল আর্টস পড়তে পারবে না – এমন কোন
নিয়ম আছে স্যার?”
রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, “তেরো-চৌদ্দ বৎসরের ছেলের মতো পৃথিবীতে
এমন বালাই আর নাই। শোভাও নাই, কোনো কাজেও লাগে না। স্নেহও উদ্রেক করে না, তাহার সঙ্গসুখও
বিশেষ প্রার্থনীয় নহে। তাহার মুখে আধো-আধো কথাও ন্যাকামি, পাকা কথাও জ্যাঠামি এবং কথামাত্রই
প্রগল্ভতা।“ কিন্তু তেরো-চৌদ্দ বছরের মেয়ের ক্ষেত্রে এসবের কিছুই খাটে না। আমি আমার
বিশ বছরের চোখ দিয়ে এই তেরো-চৌদ্দ বছরের নতুন বালিকার দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম সে
অত্যন্ত মেধাবী এবং ম্যাকগাইভারের মতো বুদ্ধির অধিকারী।
No comments:
Post a Comment