“কমিটিতে মহিলা বেশি থাকলে বোর্ড মিটিং-এ অনেক বেশি সময় লাগে। মহিলারা একে অন্যের সাথে প্রতিযোগিতায় নামে। কমিটির কেউ একজন কিছু বলার জন্য হাত তুললে, অন্য মহিলারাও মনে করে তাদেরও কিছু বলা দরকার।“ – নারীদের সম্পর্কে এরকম কথা আমাদের হোমড়াচোমড়াদের অনেকেই বলে থাকেন। এরকম কথা বলার জন্য কাউকে কোন কমিটি থেকে পদত্যাগ করতে আমরা খুব একটা দেখিনি আমাদের দেশে। এই কথাগুলি যে নারীদের জন্য অপমানজনক এটাও অনেকে মনে করেন না। কিন্তু এরকম কথা বলে পার পাননি টোকিও অলিম্পিক কমিটির প্রেসিডেন্ট ইওশিরো মোরি। তিনি ক’দিন আগে কমিটির এক রুদ্ধদ্বার মিটিং-এ মহিলাদের উপর বিরক্ত হয়ে এই মন্তব্য করেছিলেন। একান্তই ব্যক্তিগত মন্তব্য। ভেবেছিলেন কেউ ক্ষুব্ধ হবেন না তাঁর কথায়। এমনিতেই জাপান নারীর ক্ষমতায়নে অনেক পিছিয়ে আছে। নারীর ক্ষমতায়ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান যেখানে বিশ্বের মধ্যে ৫০তম, জাপান সেখানে দাঁড়িয়ে আছে ১২১তম অবস্থানে। (ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ ২০২০ দেখুন)। জাপান এমনিতেই ভীষণ ভদ্র জাতি, তাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু জাপানি সমাজে এখনো মেয়েদের সম্মান পুরুষের তুলনায় অনেক কম। তাছাড়া ইয়োশিরো মোরি ক্ষমতাশালী পুরুষ। ২০০০ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তিনি জাপানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। খুব সহজেই পার পেয়ে যাবেন ভেবেছিলেন। তাই গতকালও বলেছিলেন যে এত ছোটখাট মন্তব্য করার জন্য পদত্যাগ করার প্রশ্নই ওঠে না। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটা প্রবল চাপ যে আছে তা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। ইয়োশিরো মোরিকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। আমরা তো নারীর ক্ষমতায়নে জাপানের চেয়ে ৭১ ধাপ এগিয়ে আছি। তবুও আমাদের দেশের মেয়েদের ঘরে-বাইরে এত অপমান কেন সহ্য করতে হয় এখনো?
12/2/2021
No comments:
Post a Comment