অস্ট্রেলিয়ার বিশিষ্ট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রঞ্জনা শ্রীবাস্তব পড়াশোনা করেছেন ভারত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ায়। মনাশ ইউনিভার্সিটি থেকে প্রথম শ্রেণির অনার্সসহ মেডিসিনে ডিগ্রি লাভ করেছেন। ২০০৪ সালে ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। সেখান থেকে ফিরে যোগ দেন মেলবোর্নের পাবলিক হসপিটাল সিস্টেমে। তিনি একজন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ।
রঞ্জনা শ্রীবাস্তবের বই Dying for a Chat The communication breakdown between doctors and patient চিকিৎসাব্যবস্থা সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য দিচ্ছে।
একজন মানুষ যখন বৃদ্ধ হন, তখন তাঁকে বাঁচিয়ে রাখার যে চেষ্টা চলে তা অনেক সময়ই একটা মিথ্যা আশ্বাসের পরিস্থিতি তৈরি করে শুরুতে। তারপর তা জন্ম দেয় হতাশার।
২০৫০ সালের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার মানুষের গড় আয়ু বেড়ে গিয়ে পুরুষের জন্য তা দাঁড়াবে ৯২ বছরে, আর মেয়েদের জন্য ৯৫ বছরে।
এভাবে অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যার একটা বিরাট অংশ হয়ে পড়বে বৃদ্ধ ও অসুস্থ। ডায়াবেটিসের প্রকোপ বেড়ে যাবে ২০০%। স্মৃতিভ্রংশ বা ডিমেনশিয়া রোগীর সংখ্যাও একই রকম বেড়ে যাবে। পাকস্থলীর রোগ বাড়বে আরো ৫০%। ক্যান্সার বাড়বে ৭৫%। বাওয়েল ক্যান্সারে মৃত্যুর হার বেড়ে যাবে দ্বিগুণ। দীর্ঘ জীবনে একই ব্যক্তি ভুগবে অনেক বেশি বেশি রোগে।
যেহেতু এদেশে পারিবারিক বন্ধন খুবই শিথিল এবং মানুষ ক্রমশ নিঃসঙ্গ - সেক্ষেত্রে বুড়োদের পাশে তেমন কেউ থাকবে না - ডাক্তার আর নার্সরা ছাড়া।
এখনই অনেক অভিযোগ উঠছে অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে। নার্সিং ওয়েটিং লিস্ট, খাবার, চিকিৎসা সবকিছু নিয়েই অভিযোগ করছে রোগীর পরিবার। বিশেষ করে যদি রোগী সুস্থ না হয়। অথচ অস্ট্রেলিয়ার চিকিৎসাব্যবস্থা পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত ব্যবস্থাগুলোর একটি।
এখানে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সবকিছু চমৎকারভাবে দেখাশোনা করার ব্যবস্থা আছে। শিশু ও প্রসূতিমৃত্যুর হার সবচেয়ে কম। বাচ্চাদের টিকা দেয়ার ব্যবস্থা আছে। ওষুধ সহজেই পাওয়া যায় যখন লাগে।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বুড়োদের যখন সমন্বিত চিকিৎসা দরকার হয় তখন সবকিছু এক জায়গায় পাওয়া যায় না।
বেস্ট প্র্যাকটিস মেনে চলার অর্থ কী?
অনেক ডাক্তার বিনাপ্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক দিতে বাধ্য হন রোগীর চাপে।
অনেক রোগী নিজের ইচ্ছেমতো ব্লাড প্রেসারের স্বাভাবিক মান নির্ধারণ করে ফেলেন। "আমার কোন অসুবিধা হচ্ছে না। সুতরাং ১২০/১৮০ আমার জন্য নরমাল।"
একটা কমন গ্রাউন্ড থাকা দরকার যেখানে ডাক্তার ও রোগী পারস্পরিক সমঝোতায় আসবেন। ডাক্তার রোগ ও চিকিৎসা সম্পর্কে ভালো জানবেন। কিন্তু রোগী নিজে জানবেন তার কেমন লাগছে এবং তিনি কতটুকু নিতে পারছেন।
অস্ট্রেলিয়া প্রতিবছর তিন হাজার ডাক্তার তৈরি করে।
এদের বেশিরভাগই শহরে থাকতে চায়। এবং তাদের মধ্যে প্রচন্ড প্রতিযোগিতা। ফলে সবাই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হতে চায়। কারণ তাতে টাকা বেশি। ফলে যেটা হয় - বিশেষজ্ঞ হয়ে ডাক্তারদের লাভ হয় অনেক, কিন্তু রোগীদের হয় সামান্যই। ফলে একজন রোগীর চিকিৎসার জন্য ১০-১২জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দরকার হয়।
দেখা যায় বড় হাসপাতালে ভর্তি হলে প্রত্যেকটি সমস্যার জন্য আলাদা আলাদা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরামর্শ দেন। হার্টের জন্য কার্ডিয়োলজিস্ট, ডায়াবেটিসের জন্য আন্ডোক্রাইয়োনলজিস্ট, কিডনির জন্য নেফ্রোলজিস্ট, নিউরোপ্যাথির জন্য নিউরোলজিস্ট, ডিমেনসিয়ার জন্য জেরিয়াট্রিসিয়ান্, মনোবিজ্ঞানী ইত্যাদি আরো কত কী। কিন্তু এদের কেউই কারো সাথে কথা বলেন না। সবাই যার যার মতো যার যার সময়ে পরামর্শ দেন।
ডাক্তার রঞ্জনা শ্রীবাস্তব মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞের বদলে বেশির ভাগ মানুষেরই দরকার সাধারণ চিকিৎসক বা জি-পি যাঁরা রোগীর কথা শুনবেন এবং রোগীর সার্বিক চিকিৎসার পরামর্শ দেবেন।
হাঃ হাঃ। রোগ আর তার নিরাময় নিয়ে ভাবনার শেষ নেই। তবু গানের কথাটা মেলানোতে খুব অবাক হয়েছি!!!
ReplyDeleteজীবনটা রোগময় এবং সঙ্গীতময় বলে আমি মনে করি। যত গান রচিত হয়েছে তার মধ্যে বেশিরভাগই রোগ বিষয়ক। যেমন ধরো - মন ভালো নেই টাইপের - যা মনের রোগ সম্পর্কিত। আবার - খুব ভালো লাগছে টাইপের। তাও কিন্তু রোগের উপশম বিষয়ক। অবাক হওয়াটাও তো শরীর এবং মনের একটা বিশেষ উপসর্গ।
Deleteসঙ্গীত এর ব্যবহারিক দিক অনেক এটা ঠিক। তবে তার পিছনে রোগের তাড়না কতটুকু আছে তা দেখবার বিষয়! গান রচনা থেকে গাওয়া অবধি এমনকি শোনার কাজটাও অনেক বেশি মাত্রায় সৃষ্টিশীলতা কে নির্দেশ করে! রোগের নাম করে তাকে কিছুটা বাড়িয়ে নেয়া যায় তবে গানের মাঝে জীবনবোধের ভাবটুকু নেবার জন্য শারিরীক এবং মানসিক সুস্থতার দরকার!
Deleteতা তো অবশ্যই। তবে মিউজিক থেরাপি অনেক কাজ দেয় বলে শুনেছি।
DeleteThis comment has been removed by the author.
ReplyDelete