Saturday, 2 April 2022

ইউ-এফ-ও এবং পদার্থবিজ্ঞানের নিয়ম

 




আন-আইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্ট বা ইউ-এফ-ও সম্পর্কে প্রচারণা শুরু হয়েছিল গত শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে। ১৯৪৭ সালের জুলাই মাসে আমেরিকার নিউ মেক্সিকো রাজ্যের মরুভূমিতে  রজওয়েল (Roswell) নামক জায়গায় কিছু ধাতব ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। সেখান থেকেই শুরু। প্রচার করা হতে থাকে যে মহাকাশের অজানা কোন গ্রহ থেকে আগন্তুকরা আমাদের পৃথিবীতে এসেছে এধরনের উড়ন্ত যানবাহন নিয়ে, সেগুলিরই কোনটা এখানে বিধ্বস্ত হয়েছে। এরপর আমেরিকার বিভিন্ন জায়গায় অনেক অতিউৎসাহী মানুষ প্রচার করতে থাকে যে বিশাল চাকতির মতো বস্তু তারা আকাশে উড়তে দেখেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই চাকতিগুলি হঠাৎ দেখা দিয়েই অদৃশ্য হয়ে গেছে। এগুলির নাম হয়ে যায় উড়ন্ত চাকতি বা ‘ফ্লাইং সসার’। অনেকে এগুলির ছবিও তুলেছে, রাডারেও ধরা পড়েছে কয়েকটা চাকতিসদৃশ বস্তু। বিজ্ঞানীরা এসব পরীক্ষা করে দেখেছেন। সবক্ষেত্রেই প্রমাণিত হয়েছে এগুলি হয় উড়ন্ত বেলুন, কিংবা অন্য কোন প্রাকৃতিক ঘটনার ফলে সৃষ্ট আকাশ-চিত্র যা দূর থেকে উড়ন্ত-চাকির মতো মনে হয়। কিন্তু অতিপ্রাকৃত বিষয়ে বিশ্বাসীরা বৈজ্ঞানিক যুক্তি মানতে নারাজ। তারা বিভিন্ন ধরনের মনগড়া খবর তৈরি করতে থাকে। কেউ কেউ ভুয়া ছবি এবং ভিডিও প্রচার করতে থাকে – যা অনেকেই বিশ্বাস করে। গত সত্তর বছর ধরে ইউ-এফ-ও নিয়ে চর্চা করছে কিছু মানুষ। তাদের বিশ্বাস – ইউ-এফ-ও হলো মহাকাশের অন্য কোন গ্রহ-নক্ষত্র থেকে আগত নভোযান, যেগুলি অতি দ্রুত যেমন আসতে পারে, তেমনি অতি-দ্রুত চলেও যেতে পারে।

ইউ-এফ-ও’র ইতিহাস, গ্রহণযোগ্যতা ইত্যাদির পক্ষে-বিপক্ষে অনেক লেখা প্রকাশিত হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে। ২০২১ সালের জুন মাসে আমেরিকার অফিস অব দ্য ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্স একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করে যেখানে এধরনের অজানা উড়ন্ত বস্তুর ধারণা থেকে উদ্ভুত বিপদের সম্ভাবনা যাচাই ও প্রতিরোধের জন্য ব্যবস্থা চালু রাখার কথা বলা হয়েছে। এটা আমেরিকার নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ। কারণ ইউ-এফ-ও’র ছদ্মবেশে আকাশপথে আক্রমণ যেন না ঘটতে পারে তার জন্য তাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আমেরিকার দেখাদেখি এরকম ব্যবস্থা অন্যান্য দেশও নিতে পারে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে রাষ্ট্রীয়ভাবে ইউ-এফ-ও’র অস্তিত্ব মেনে নেয়া হচ্ছে।

এই প্রবন্ধে আমরা ইউ-এফ-ও’র রাজনীতি বা অন্যান্য দিক নিয়ে আলোচনা করবো না। আমরা শুধু দেখবো – আমাদের গ্রহণযোগ্য প্রতিষ্ঠিত পদার্থবিজ্ঞানের নিয়ম মেনে মহাকাশের অন্য কোন গ্রহ-নক্ষত্র থেকে এসব মহাকাশযানের পৃথিবীতে আসা সম্ভব কি না।

যারা ইউ-এফ-ও’র পক্ষে প্রচারণা চালায় তারা দাবি করে যে মহাকাশের অন্য গ্রহ থেকে আগত এসব নভোযানের ব্যাস ১৫ মিটার থেকে শুরু করে ১০০ মিটার বা তার চেয়েও বেশি। সেখানে অন্য গ্রহের মানুষও থাকে – যারা আমাদের গ্রহের মানুষের চেয়ে উন্নত। এসব ধারণা যদি সত্যি হয়, তাহলে আমাদের ধরে নিতে হবে এসব নভোযান পৃথিবীর পদার্থবিজ্ঞানের নিয়ম মেনেই এখানে আসে।

মহাবিশ্বের সবকিছুই মহাকর্ষ বল দ্বারা পরস্পরের দিকে আকৃষ্ট। গ্রহ-উপগ্রহ-নক্ষত্র-গ্যালাক্সি সবকিছুরই নিজস্ব মাধ্যাকর্ষণ বল আছে, তাকে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। নিউটনের মহাকর্ষ বলের সূত্র সব জায়গাতেই খাটে। পদার্থের ভর, বেগ, ত্বরণ, শক্তি ইত্যাদির যে নিয়ম পদার্থবিজ্ঞানে আছে কোনকিছুরই তার বাইরে যাওয়ার উপায় নেই। ইউ-এফ-ওকেও এসব নিয়ম মানতে হবে।

মহাবিশ্বের গতিপ্রকৃতির সবচেয়ে আধুনিক এবং গ্রহণযোগ্য যে পরীক্ষিত তত্ত্ব পদার্থবিজ্ঞানে আছে তা হলো আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার তত্ত্ব। আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব বা স্পেশাল থিওরি অব রিলেটিভিটি অনুযায়ী মহাবিশ্বের যে কোন কাঠামোতে পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মগুলি সমানভাবে প্রযোজ্য। তাহলে মহাবিশ্বের যে প্রান্ত থেকেই আসুক না কেন, নভোযানগুলিকে পদার্থবিজ্ঞানের নিয়ম মেনে চলতেই হবে।

আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্বের দ্বিতীয় নীতি হলো – শূন্য মাধ্যমে আলোর গতিই হচ্ছে পদার্থের সর্বোচ্চ গতি। অর্থাৎ সেকেন্ডে দুই লক্ষ ছিয়াশি হাজার মাইল বা তিন লক্ষ কিলোমিটারের বেশি গতিতে কোন কিছুই চলতে পারে না।

মানুষ মহাকাশে বিভিন্ন ধরনের স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানো শুরু করেছে বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে। গত ষাট বছরে সৌরজগতের সবগুলি গ্রহ-উপগ্রহের প্রায় সব জায়গা জরিপ করা হয়ে গেছে। আমাদের সৌরজগতের বাইরেও হাজার হাজার গ্রহ আবিষ্কার করে ফেলেছে। মহাকাশের আরো দূরতম স্থানে দূরবীক্ষণ স্থাপন করে মহাবিশ্ব পর্যবেক্ষণ করার জন্য অতিসম্প্রতি মহাকাশে পাঠানো হয়েছে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। মহাবিশ্বে পৃথিবী ছাড়া অন্য গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে কি না তার অনুসন্ধান চলছে গত কয়েক দশক থেকে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখনো কোথাও ভিন-গ্রহের প্রাণির সন্ধান পাননি। তবুও যদি কেউ বলে যে মহাবিশ্বের অজানা কোন গ্রহ থেকে ইউ-এফ-ও’র মাধ্যমে ভিন-গ্রহের প্রাণিরা আমাদের গ্রহে নিয়মিত আসা-যাওয়া করছে, তাহলে আমাদের পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মে আমরা হিসেব করে দেখতে পারি সেটা সম্ভব কি না।

পৃথিবী থেকে মহাশূন্যে মহাকাশযান পাঠাতে হলে পদার্থবিজ্ঞানের যেসব নিয়মকানুন মেনে প্রস্তুতি নিতে হয় এবং মহাকাশযান পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হয় তা আমরা এখন জানি। পৃথিবী থেকে এপর্যন্ত সর্বোচ্চ যে গতিতে মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানো সম্ভব হয়েছে সেটা হলো পার্কার সোলার প্রোব। সূর্যের উদ্দেশ্যে ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে পাঠানো হয়েছে এই স্যাটেলাইট। ঘন্টায় প্রায় সাত লক্ষ কিলোমিটার বেগে ছুটছে এই স্যাটেলাইট। ২০২৪ সালে এটা সূর্যের কাছাকাছি পৌঁছাবে। এটা হলো বাস্তবতা – শুধুমাত্র আমাদের পৃথিবী থেকে সূর্যের কাছাকাছি পৌঁছতেই ছোট্ট একটা স্যাটেলাইটের সময় লাগছে ছয় বছরের বেশি। সেখানে কথিত ইউ-এফ-ও আলোর চেয়েও দ্রুত গতিতে আসছে, আবার চলেও যাচ্ছে – এটা অবিশ্বাস্য।

আমাদের সৌরজগতের সবগুলি গ্রহ-উপগ্রহের পূর্ণাঙ্গ জরিপ আমাদের হাতে আছে। সেখানে কোন প্রাণির সন্ধান পাওয়া যায়নি। আমাদের সৌরজগতের বাইরে সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র আলফা সেনটাউরির দূরত্ব প্রায় ৪.২৫ আলোকবর্ষ। অর্থাৎ সেখান থেকেও কোন কিছু আলোর বেগেও যদি আসে – সময় লাগবে সোয়া চার বছর। কিন্তু আলোর বেগে যদি আসে – সেটা আলোই হবে – পদার্থ নয়।

বৈজ্ঞানিক যুক্তির খাতিরে ধরে নিই, কথিত ইউ-এফ-ও একটি মহাকাশযান যার নাম ‘কল্পনা’ - যা আমাদের কাছের নক্ষত্র-জগতের কোন গ্রহ থেকে পৃথিবীতে আসছে। ধরে নিলাম সেই গ্রহের দূরত্ব পৃথিবী থেকে পাঁচ আলোকবর্ষ। ধরা যাক তিনজন নভোচারীসহ নভোযান ‘কল্পনা’ সেই গ্রহ থেকে পৃথিবীর উদ্দেশ্যে রওনা দিলো। আমরা জানি গ্রহান্তরে রওনা দেওয়া খুব একটা সহজ কাজ নয়। রকেটের সাহায্যে এই নভোযানকে সেই গ্রহের মাধ্যাকর্ষণের বাইরে পাঠিয়ে দিয়ে পাঁচ আলোকবর্ষ দূরত্ব পেরিয়ে সৌরজগত এবং তার অন্যান্য গ্রহ-উপগ্রহগুলির মাধ্যাকর্ষণ অতিক্রম করে পৃথিবীর কক্ষপথে প্রবেশ করে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণে ঢুকতে হবে। ধরে নিলাম এসব হিসেব করেও মহাকাশযান ‘কল্পনা’র সর্বোচ্চ গতি ঠিক করা হলো আলোর বেগের অর্ধেক – অর্থাৎ সেকেন্ডে দেড় লক্ষ কিলোমিটার। সেই গতিতে এলেও পৃথিবীতে আসতে ‘কল্পনা’র সময় লাগবে দশ বছর। চলে যাওয়ার জন্য আরো দশ বছর। তিনজন নভোচারীর বিশ বছরের খাওয়া-দাওয়া এবং অন্যান্য রসদ থাকতে হবে নভোযানে। বিশ বছর ধরে নভোযান চলার যন্ত্রপাতি এবং জ্বালানি লাগবে। সৌরশক্তি ব্যবহার করলেও সেই শক্তি তৈরি করার যন্ত্রপাতি লাগবে।

আমাদের পৃথিবী থেকে যেসব মহাকাশযান পৃথিবীর বাইরে পাঠানো হয়েছে, সেই অভিজ্ঞতার আলোকে ধরে নেয়া যায় – যন্ত্রপাতি, রসদ, জ্বালানিসহ ‘কল্পনা’র মোট ভর ১০ কিলোগ্রাম (দশ হাজার টন)।

এই মহাকাশযান উৎক্ষেপণের পর যদি ৯.৮ মিটার/বর্গ সেকেন্ড হারে ত্বরণ হয়, তাহলে সর্বোচ্চ গতি সেকেন্ডে দেড় লক্ষ কিলোমিটারে পৌঁছাতে সময় লাগবে ১৭৭ দিন। [হিসাব: ত্বরণ = বেগ/সময়, সুতরাং সময় = বেগ/ত্বরণ = (১.৫  x ১০)/(৯.৮) = ১৫৩০৬১২২.৪৫ সেকেন্ড = ১৭৭.১৫ দিন।]

এখানে সেকেন্ডে যে গতি ধরা হয়েছে তা স্যাটেলাইটের পক্ষে অসম্ভব। সর্বোচ্চ গতির পার্কার সোলার প্রোব স্যাটেলাইটের গতি আলোর গতির এক হাজার ভাগের এক ভাগেরও কম। সেখানে আমরা ‘কল্পনা’র গতি ধরে নিচ্ছি আলোর গতির অর্ধেক। তারপরেও দেখা যাক – ‘কল্পনা’র পৃথিবীতে আসার সম্ভাবনা কতটুকু।

দশ হাজার টন ভরের ‘কল্পনা’র গতি লাভ করার জন্য তাকে যে পরিমাণ গতিশক্তি অনবরত সরবরাহ করতে হবে তার পরিমাণ আমরা গতিশক্তির সমীকরণ থেকে হিসেব করতে পারি। সেই গতিশক্তির পরিমাণ হবে  একশ কোটি কোটি কোটি জুলেরও বেশি (১.১২৫ x ১০২৩ জুল)। [হিসাব: E = ½ mv2 = ½ (107 kg) (1.5 x 108 m/s2) (1.5 x 108 m/s2) = 1.125 x 1023 Joules]

এই পরিমাণ শক্তি বিশ বছর ধরে ক্রমাগত সরবরাহ করার জন্য দরকার হবে থার্মোনিউক্লিয়ার ফিউশান পদ্ধতি। এক মেগাটন (এক মিলিয়ন টন) থার্মোনিউক্লিয়ার বোমা থেকে উৎপন্ন শক্তির পরিমাণ ৪.২ x ১০১৫ জুল। তাহলে দেখা যাচ্ছে ‘কল্পনা’র শক্তি যোগানোর জন্য দরকার হবে দুই কোটি ৬৭ লক্ষ ৮৫ হাজার ৭১৪টি মেগাটন থার্মোনিউক্লিয়ার বোমা। এক একটি মেগাটন থার্মোনিউক্লিয়ার বোমার শক্তি হিরোশিমায় যে বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছিল তার একশ গুণ।

১৭৭ দিনের মধ্যে আকাঙ্খিত গতিতে পৌঁছানোর জন্য  ‘কল্পনা’য় শক্তি সরবরাহ করতে হবে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১.৮ মেগাটন। নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টের চেয়েও বেশি জটিল এই শক্তি সরবরাহ-প্রক্রিয়া। শতকরা একশ ভাগ নিশ্চয়তার সাথে এই শক্তি সরবরাহ করতে হবে ‘কল্পনা’য়। বিভিন্ন গ্রহ-উপগ্রহের মাধ্যাকর্ষণ বল এড়াতে এই শক্তির সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে অকল্পনীয় দক্ষতায়। ‘কল্পনা’র গতি নিয়ন্ত্রণে এই শক্তি-নিয়ন্ত্রণ জরুরি। এত বেশি পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত শক্তি সরবরাহ করা অসম্ভব।

এই পরিমাণ শক্তি থেকে যে পরিমাণ তাপ উৎপন্ন হবে তার সবটুকুই বিকির্ণ হয়ে যেতে হবে। এর সামান্য অংশও যদি ‘কল্পনা’য় রয়ে যায় – তাহলে মহাকাশযানের তাপমাত্রা বেড়ে যাবে প্রায় কয়েক হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্টিফেন বোল্টজম্যানের তাপ বিকিরণের সূত্র প্রয়োগ করলে দেখা যায় ‘কল্পনা’র একশ বর্গমিটার ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট উপরিতলের তাপমাত্রা হয় প্রায় ছয় লক্ষ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রার এক শতাংশও যদি মহাকাশযানে শোষিত হয় মহাকাশযানের তাপমাত্রা হবে ছয় হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই তাপে ‘কল্পনা’ বাষ্প হয়ে যাবে।

যদি ‘কল্পনা’র বেগ কমানো হয়, তাহলে শক্তির হার কম লাগবে। ধরা যাক, আলোর বেগের অর্ধেকের পরিবর্তে আলোর বেগের এক শতাংশ বেগে ‘কল্পনা’ পৃথিবীতে আসছে। সে হিসেবে পৃথিবীতে আসতে তার সময় লাগবে ৫০ বছর, যেতে সময় লাগবে আরো ৫০ বছর। তখন একশ বছরের রসদ লাগবে। ‘কল্পনা’ আরো ভারী হয়ে যাবে। কিন্তু একশ বছরের যাত্রাপথ কিছুতেই আলোর-গতিতে আসা-যাওয়া হতে পারে না।

আমরা দেখেছি প্রচন্ড গতিতে কোন কিছু পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের বাইরে থেকে পৃথিবীতে আসার সময় পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের সাথে সংঘর্ষে প্রচন্ড তাপের সৃষ্টি হয়। আলোর গতির কাছাকাছি কোন গতিতে যে তাপ তৈরি হবে সেই তাপে মহাকাশযান অক্ষত থাকার কথা নয়।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে প্রচলিত পদার্থবিজ্ঞানের কোন নিয়মেই ইউ-এফ-ও পৃথিবীর বাইরের কোন অজানা গ্রহ থেকে আসতে পারে না। যদি বলা হয়ে থাকে – ওরা এই মহাবিশ্বের পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মে চলে না, অন্য কোন নিয়মে চলে – তাহলে বলতে হবে ওটা নিছক কল্পনা, বাস্তবের সাথে তার কোন সম্পর্ক প্রমাণিত হয়নি। 

আরো তথ্য: ‘প্রিলিমিনারি অ্যাসেসমেন্ট: আন-আইডেন্টিফায়েড অ্যারিয়েল ফেনোমেনা’, অফিস অব দি ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স, জুন ২০২১। মাইকেল গেইনার, দি ফিজিক্স অব ইউ-এফ-ওজ, স্কেপটিক ২০১২। উইলিয়াম মার্কোইজ, দি ফিজিক্স এন্ড মেটাফিজিক্স অব আন-আইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্টস, সায়েন্স ১৯৬৭।

______________

বিজ্ঞানচিন্তা জানুয়ারি ২০২২ সংখ্যায় প্রকাশিত










No comments:

Post a Comment

Latest Post

The Rituals of Corruption

  "Pradip, can you do something for me?" "Yes, Sir, I can." "How can you say you'll do it without even know...

Popular Posts