#স্বপ্নলোকের_চাবি_৬৬
ইন্টারভিউর চিঠি পাবার পর স্বপ্নটা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো।
ঘুমের ঘোরে দেখা স্বপ্ন জেগে উঠলেই ভেঙে যায়। কিন্তু জেগে জেগে যে স্বপ্ন দেখছি তা
পিছু ছাড়ছে না। প্রামাণিকস্যার বলেছিলেন ইন্টারভিউর চিঠি নাও পাঠাতে পারে। কিন্তু ইন্টারভিউর
চিঠি তো পেলাম। নভেম্বরের আট তারিখ সকাল দশটায় ভাইস চ্যান্সেলরের অফিসে ইন্টারভিউ।
স্বপ্নের ঠেলায় প্রামাণিকস্যারের উপর রাগ হচ্ছে। মনে হচ্ছে বাস্তববাদীর আড়ালে তিনি
একজন নৈরাশ্যবাদী মানুষ। সোবহানস্যার যখন বলেছেন আমার আর হারুনের সমান যোগ্যতা, তখন
নিশ্চয়ই তিনি আমাদের দু’জনের জন্যই সমানভাবে ভাবছেন। ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যানের কথার
একটা দাম থাকবে না তা কি হয়?
স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি নিজের যোগ্যতাও তো প্রমাণ করতে হবে।
ইন্টারভিউতে নিশ্চয় পদার্থবিজ্ঞানের গভীর জ্ঞান যাচাই করা হবে। আমার থিসিসের বিষয়বস্তু
নিয়ে অনেক খুঁটিনাটি আলোচনা করা হবে। ইতোমধ্যে একটি বেসরকারি কলেজে লেকচারার হবার জন্য
ইন্টারভিউ দিয়েছি। সেখানেও লিখিত, মৌখিক, ডেমনস্ট্রেশন – মোট তিন ধাপের পরীক্ষা দিতে
হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার হবার জন্য যে ইন্টারভিউ সেখানে নিশ্চয় আরো অনেক গভীর
অর্থবহ ধাপ অতিক্রম করতে হবে। পুরো একটা সপ্তাহ ধরে নিজেকে তৈরি করলাম নিজের যোগ্যতা
প্রমাণ করার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে গেলে কী কী যোগ্যতা থাকা চাই – সে ব্যাপারে
নিজস্ব কিছু মতামতও তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদানের স্বরূপ কী হওয়া উচিত
– তা আমাদের শিক্ষকরা হয়তো ভালো জানেন। কিন্তু তাঁদের আচরণে কিংবা পাঠদানে তার প্রতিফলন
পাইনি তেমন একটা। শিক্ষার্থীর চোখ দিয়ে না দেখলে অনেক জিনিস বোঝা যায় না। আমাদের শিক্ষকরা
শিক্ষক হয়েই ভুলে যান যে তাঁরাও একসময় শিক্ষার্থী ছিলেন। এই ভুলটা আমি কখনো করবো না।
শিক্ষকের কাজ যে শুধু শেখানো নয়, আবার নতুন করে শেখাও – সেটা আমি বুঝতে পেরেছি।
জীবনে প্রথমবার ভাইস চ্যান্সেলরের অফিসে ঢুকার সুযোগ হলো।
মূল অফিসে ঢুকার আগে একটা মাঝারি আকারের বসার ঘর। সেখানে চারপাশের দেয়াল ঘেঁষে বেশ
কিছু চেয়ার আর ছোট ছোট সোফা রাখা আছে। ভেবেছিলাম আমিই সবার আগে এসে পড়েছি। কিন্তু না,
অঞ্জন চৌধুরি মানে অঞ্জনদা আরো আগে এসেছেন। আমাকে দেখে হাসতে হাসতে বললেন, “তুমিও এসে
পড়েছো? ইউনিভার্সিটির ইন্টারভিউর হাতেখড়ি হবে আজ তোমার।“
মনে হচ্ছে অঞ্জনদা এর আগেও ইন্টারভিউ দিয়েছেন। জামাল নজরুল
ইসলাম স্যারের তত্ত্বাবধানে এমফিল করেছেন তিনি। পয়েন্টের দিক থেকে তিনি অনেক এগিয়ে।
ইন্টারভিউতে তাঁর সাথেও আমার প্রতিযোগিতা করতে হবে ভেবে একটু অস্বস্তিও লাগছে। একটু
পর আরো অনেকে আসতে শুরু করেছেন। অপরিচিত অনেকজন। পরিচিতদের মধ্যে রফিকভাইকে দেখলাম।
ডিপার্টমেন্টের সিনিয়রভাই হিসেবে আমি তাঁকে চিনি, তিনি আমাকে চেনেন না। হারুন রুমে
ঢুকে আমার সাথে চোখাচোখি হতেই চোখ সরিয়ে বের হয়ে গেল। কিন্তু একটু পরে ফিরে এলো নুরুল
ইসলামস্যার আর সোবহানস্যারের সাথে। সোবহানস্যার আর নুরুল ইসলামস্যার রুমের ভেতর দিয়ে
হেঁটে মূল অফিসের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে গেলেন।
ভিসিস্যারের রুমে ঢোকার আরো অনেক পথ আছে সম্ভবত। কারণ এখানে
আসার পর শুনেছিলাম ভিসিস্যার তখনো আসেননি। একটু আগেই বলতে শুনলাম ভিসিস্যার এসে গেছেন।
কোন্ দিক দিয়ে এলেন দেখতে পাইনি।
ইন্টারভিউ শুরু হলো। শুরুতেই অঞ্জনদার ডাক পড়লো। তিনি ভেতরে
চলে গেলেন।
আমার ধারণা ছিল কমপক্ষে ঘণ্টাখানেক লাগবে একেকজনের ইন্টারভিউ
শেষ হতে। কিন্তু পাঁচ-ছয় মিনিটের মধ্যেই বের হয়ে এলেন অঞ্জনদা। ডাক পড়লো আমার।
ভিসিস্যারের অফিসরুমটা বিশাল। আমি রুমে ঢুকেই হাত তুলে সালাম
দিয়ে মনে হলো স্যাররা এত দূরে বসে আছেন যে সালাম ঠিকমতো পৌঁছায়নি তাঁদের টেবিলে। চার
জনের ইন্টারভিউ বোর্ড। ভিসি রফিকুল ইসলাম চৌধুরিস্যার, আমাদের নুরুল ইসলামস্যার এবং
সোবহানস্যার। আর এক্সটার্নাল হিসেবে এসেছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান
প্রফেসর শামসুল হক। বসার আদেশ পেয়ে বসলাম তাঁদের সামনে চেয়ারে। প্রত্যেকের হাতেই আমার
দরখাস্তের ফাইল। ভিসিস্যার ফাইল দেখতে দেখতে বললেন, “এসএসসি ফার্স্ট ডিভিশন, এইচএসসি
ফার্স্ট ডিভিশন, অনার্সে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট, মাস্টার্সে ফার্স্ট ক্লাস সেকেন্ড
– বাহ্ ভেরি গুড। তোমাকে তো আমার মনে আছে। তোমাদের ফেয়ারওয়েলে তোমার কথাগুলি আমার
খুব ভালো লেগেছিল। তোমার চিন্তাভাবনা খুব পজিটিভ। তোমাকে তো আমাদের দরকার।“
ভিসিস্যারের কথা শুনে আমার মাথার ভেতর স্বপ্নের পায়রাগুলি
ডানা মেলে উড়তে শুরু করলো। মনে হলো স্বপ্নলোকের চাবি আমার হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। কিন্তু
সোবহানস্যারের মুখের দিকে তাকিয়ে দমে গেলাম। সোবহানস্যার গম্ভীরমুখে বললেন, “আমাদের
আরো ক্যান্ডিডেট আছে স্যার।“
সোবহানস্যারের কথা শেষ হবার আগেই প্রফেসর শামসুল হক বললেন,
“আপনার পোস্ট তো আছে মাত্র দুইটা। দরকার বলে তো সবাইকে আপনি রাখতে পারবেন না।“
ভিসিস্যার আর কোন কথা বললেন না। শামসুল হকস্যার বললেন, “দ্যাখো,
এমএসসিটা আসলে তেমন কোন ডিগ্রি নয়। এমফিল করো, পিএইচডি করো – তারপর ট্রাই করো।“
মাথার ভেতর স্বপ্নের পায়রাগুলি ততক্ষণে আর্তনাদ করতে শুরু
করেছে। সোবহানস্যার প্রশ্ন করলেন, “এমএসসিতে তোমার কী কী সাবজেক্ট ছিল?” বুঝতে পারছিলাম
না স্যার আমার সাথে মজা করছেন কি না। কী কী সাবজেক্ট ছিল তা আমার মার্কশিটে লেখা আছে।
স্যার নিজে আমাদের পড়িয়েছেন। কিন্তু যেকোনো প্রশ্নই প্রশ্ন। উত্তর দিলাম। নুরুল ইসলামস্যার
একটা শব্দও উচ্চারণ করলেন না। সোবহানস্যার বললেন, “ঠিক আছে, যাও।“
পাঁচ মিনিটেই শেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার হবার ইন্টারভিউ।
আমি জানতাম চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বিভীষিকার অন্য নাম নিয়োগ পরীক্ষা। সরকারি চাকরির
ক্ষেত্রে কত রকমের পরীক্ষা দেয়ার পর চাকরি জোটে। বিসিএস পরীক্ষার কথাই ধরা যাক – প্রিলিমিনারি,
লিখিত, মনস্তাত্ত্বিক, মৌখিক, স্বাস্থ্য, পুলিশ-চেক ইত্যাদি অনেকগুলি ধাপ পার হতে হতে
অনেক সময় বছর পেরিয়ে যায়। বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রেও কত রকমের ইন্টারভিউ দিতে হয়। শাহীন
কলেজের মতো একটা উচ্চমাধ্যমিক কলেজের লেকচারার হবার জন্যও কত দীর্ঘ ইন্টারভিউ দিতে
হয়েছে। আর এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবার জন্য ইন্টারভিউতে আমাকে একটি মাত্র প্রশ্ন
করা হলো – “এমএসসিতে তোমার কী কী সাবজেক্ট ছিল?” এরকম চরম একটা প্রহসনের ভেতর দিয়ে
নিজে না গেলে বিশ্বাসই করতে পারতাম না যে এরকমই হয়।
স্বাধীন বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে স্বায়ত্ত্বশাসন দেয়া
হয়েছিল নিশ্চয়ই কোন মহৎ উদ্দেশ্যে। জ্ঞানচর্চার পরিবেশ তৈরিতে যেন অহেতুক আমলাতান্ত্রিক
জটিলতার সৃষ্টি না হয় – সেজন্য। কিন্তু তার সুযোগে যে স্বেচ্ছাচারিতা শুরু হয়েছে তার
শেষ কোথায় জানি না। স্বপ্নভঙ্গ হবার পরে মনে হচ্ছে প্রামাণিকস্যার ঠিক কথাই বলেছিলেন।
সময় থেমে থাকে না। নতুন দিন আসে। দু’দিন পর শাহীন কলেজ থেকে
নিয়োগপত্র পেলাম। জীবনের প্রথম যে চাকরির পরীক্ষা দিয়েছি – সেই চাকরির নিয়োগপত্র পেয়েছি।
শাহীন কলেজের নিয়োগকর্তারা আমাকে যোগ্য মনে করেছেন। এবার আমারই দায়িত্ব যোগ্য হয়ে ওঠা।
নভেম্বরের চৌদ্দ তারিখ শাহীন কলেজে যোগ দিলাম। শিক্ষক পদে যোগ দিলেই সত্যিকারের শিক্ষক
হওয়া যায় না। শিক্ষার্থীদের সাথে নতুন করে শিখতে শিখতেই শিক্ষক হয়ে ওঠার সাধনা করতে
হয়। বছর শেষে পরীক্ষায় পাস করলেই শিক্ষার্থীদের কাজ শেষ। একই ক্লাসের পড়া তাদের আর
পড়তে হয় না। কিন্তু শিক্ষকদের সেই সুযোগ নেই। তাঁদের প্রতি বছরই নতুন শিক্ষার্থীদের
সাথে নতুন করে পড়তে হয়। আমি আবার নতুন করে উচ্চমাধ্যমিকের পদার্থবিজ্ঞান পড়তে শুরু
করলাম। তারপর শিক্ষক হয়ে ওঠার চেষ্টা করতে করতে সাড়ে চার বছর কেটে গেছে শাহীন কলেজে।
সেই কাহিনি অন্য কোথাও বলা যাবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কথায় ফিরে আসি। সেবার দুইটি পদে
তিনজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে নাকি নিজেদের লোক থাকলে তাদের জন্য পদ তৈরি
করা যায়। ইচ্ছে করলে একটি পদের বিপরীতে একাধিক লোক নিয়োগ দেয়া যায়। হারুনকে নেয়া হয়েছিল
সেই সময়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান শামসুল হকের নিজের একজন প্রার্থী
ছিলেন। সেই ওবায়েদ সাহেবকেও নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। শুনেছি তিনি যোগ দিয়েই চলে গিয়েছিলেন
জাহাঙ্গীর নগরে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আমার সম্পর্ক কি একটা ইন্টারভিউতেই
শেষ হয়ে যাবে? অরুনস্যার অবশ্য সেরকমই উপদেশ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, “মাথায় ঘিলু থাকলে
আর এইমুখো হবি না। পারলে আমেরিকা চলে যা। ওখানে গিয়ে কুলিগিরি করাও ভালো।“
কিন্তু আমার মাথায় ‘ঘিলু’ খুব একটা নেই। আমি অরুনস্যারের
পরামর্শ না মেনে দু’বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের
লেকচারার হবার জন্য আবার দরখাস্ত করেছিলাম। তখন নুরুল মোস্তফাস্যার ডিপার্টমেন্টের
চেয়ারম্যান। আবারো এক্সটার্নাল হয়ে এসেছিলেন প্রফেসর শামসুল হক। সেবার হারুন আর রফিকভাইয়ের
সাথে আবার দেখা হয়েছিল। তাঁরা দু’জনই গিয়েছিলেন সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য।
আমার ক্ষেত্রে আবারো একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। বিষয়ভিত্তিক কোন প্রশ্ন নেই। শুধুমাত্র
নিয়ম রক্ষার খাতিরে সার্টিফিকেট মার্কশিটে চোখ বুলাতে বুলাতে উপদেশ দেয়া – ‘বিসিএস
দাও, চেষ্টা করতে থাকো।‘
চেষ্টা করতেই থাকলাম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় এবং
শেষবার ইন্টারভিউ দিলাম ১৯৯৬ সালে। তখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসেছে দীর্ঘ একুশ
বছর পর। আশা করেছিলাম পুরনো অনিয়মগুলি দূর হয়ে যাবে। কিন্তু হয়নি। সেবার সিলেকশান কমিটিতে
প্রামাণিকস্যার ছিলেন। আমি সত্যিই আশা করেছিলাম ভালো কিছু হবে। হয়নি। পরে প্রামাণিকস্যার
বলেছিলেন, "সরকার পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু তোমার ধর্ম তো পরিবর্তন হয়নি।“
দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও আমি ইন্টারভিউ দিয়েছি। শাহজালাল
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে ক্লাসমেটদের কয়েকজনের সাথে
দেখা হয়েছিল। আনন্দ আর দীলিপও ইন্টারভিউ দিয়েছিল। কারোরই হয়নি। জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে
ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম। প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে এতদূর থেকে ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছি দেখে
ডিপার্টমেন্টের একজন শিক্ষক হাসতে হাসতে বলেছিলেন, “সহজ ব্যাপারগুলি কেন যে আপনারা
বোঝেন না! একটু ভেতরের খবর নেবেন না? এসব ইন্টারভিউ হচ্ছে চাকরি রেগুলারাইজ করার জন্য।“
ভেতরের খবর কীভাবে পাওয়া যায় আমি জানি না। খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন
দেখে দরখাস্ত করেছিলাম। এটাই তো নিয়ম বলে জানতাম। এর ভেতর যে ভেতরের খবর নিতে হয় সেই
খবর আমার জানা ছিল না।
আরেকজন তরুণ শিক্ষক আরো জোরে হাসতে হাসতে বলেছিলেন, “চিটাগং
থেকে এসেছেন, ডক্টর ইউনুসের সুপারিশ নিয়ে আসেননি তো আবার? তাহলে তো আমাদের কপাল পুড়বে।
হাহাহা।“ তখন সেখানে ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টের চেয়ারপার্সন ছিলেন প্রফেসর আফরোজি ইউনুস।
তিনি যে ডক্টর ইউনুসের স্ত্রী তা আমি জানতাম না। সেই শিক্ষকদের হাসিঠাট্টা আমার কাছে
খুবই অপমানজনক মনে হয়েছিল। এই তরুণ লেকচারাররা কয়েক বছর পরেই প্রফেসর হয়ে যাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের
দন্ডমুন্ডের মালিক হবেন। এখনই তাঁরা যা করছেন, তখন যে কী করবেন ভাবতেই ভয় হচ্ছিল।
দিন যায়, কিন্তু মাথার ভেতর থেকে প্রফেসর শামসুল হকের কথাগুলি
যায় না। কথাগুলি মাথার মধ্যে পেরেকের মতো গেঁথে গেছে – ‘এমএসসিটা আসলে তেমন কোন ডিগ্রি
নয়। এমফিল করো, পিএইচডি করো।‘ কিন্তু কীভাবে? দেশের বাইরে গিয়ে পিএইচডি করতে হলে স্কলারশিপ
পেতে হবে। কীভাবে পাওয়া যায় স্কলারশিপ, কারা দেয় – কোনো ধারণা নেই।
No comments:
Post a Comment