আজ সকাল আটটায়
ডিপার্টমেন্টে এসে নিজের ডেস্কে বসে পড়াশোনা করার চেষ্টা করছিলাম। এতদিন স্কুল থেকে
ইউনিভার্সিটি পর্যন্ত সবপর্যায়েই সর্বোচ্চ ফাঁকিবাজী করেও কোন রকমে পার পেয়ে গিয়েছি।
সারাবছর পড়াশোনা না করে পরীক্ষার ডেট দিলে পরীক্ষা পেছানোর আন্দোলন করেছি। গৎবাঁধা
কিছু প্রশ্নের উত্তর লাইনের পর লাইন মুখস্থ করে পরীক্ষার খাতায় লিখে দিয়ে পাস করে ফেলেছি।
কিন্তু এখানে তো সে সুযোগ নেই। মুখস্থ করে কি গবেষণা করা যায়? বুঝতে পারছি এখানে ফাঁকিবাজি
চলবে না। তাই একটু সিরিয়াস হয়ে পড়তে বসেছি্লাম।
মাইক্রোস্কোপিক
অপটিক্যাল থিওরি সম্পর্কে কিছুটা পড়েছিলাম মাস্টার্সের নিউক্লিয়ার ফিজিক্সে। পড়া মানে
স্যার যেভাবে ক্লাসে এসে রয় এন্ড নিগমের নিউক্লিয়ার ফিজিক্স বই থেকে লাইনের পর লাইন
বোর্ডে লিখে গেছেন, আমরাও লাইনের পর লাইন মুখস্থ করেছি। কিন্তু শিখিনি কিছুই। এখন মজা
বেরোচ্ছে। এই থিওরির ভিত্তিতে লেখা গবেষণাপত্রগুলোর মাথামুন্ড কিছুই বুঝতে পারছি না।
লাইব্রেরি থেকে রয় এন্ড নিগমের বইটা নিয়ে এলাম। পুরনো বই দেখলে হয়তো মাথার জট কিছুটা
খুলবে। বইয়ের অপটিক্যাল মডেল অধ্যায়ে অনেকবার রেফারেন্স হিসেবে এসেছে কেন্ অ্যামোসের
নাম। তখন তো এসব রেফারেন্সের দিকে চোখও পড়েনি। নিউক্লিয়ার থিওরির এই বিখ্যাত প্রফেসর
কেন্ অ্যামোসের কাছে গবেষণা শুরু করেছি ভাবতেই কেমন একটা ভালোলাগা ঘিরে ধরলো আমাকে।
মনের ভেতর স্বপ্নের পাখিরা ডানা মেলতে শুরু করলো- ‘একদিন আমিও…’ ঠিক তখুনি মাথার ওপর
আলতো ব্যাগের বাড়ি।
“হেই প্রাডিব।
ইউ আর স্লিপিং হিয়ার?”
মাথায় হাত বুলাতে
বুলাতে চোখ তুলে তাকালাম ম্যান্ডির দিকে। ম্যান্ডি ব্যস্ত হাতে জ্যাকেটের চেইন খুলছে
আর খিলখিল করে হাসছে।
“গুড মর্নিং
ম্যান্ডি।”
“মর্নিং। ডিড
ইউ গো হোম লাস্ট নাইট?”
এই মেয়ে কি
বিদ্রুপ করছে আমাকে? জানতে চাচ্ছে আমি রাতে এখানে ঘুমিয়েছি কি না? এ জাতীয় প্রশ্নের
যুৎসই উত্তর দেবার মত ইংরেজি আমার জানা নেই। কোন রকমে বললাম, “আমি ঘুমাচ্ছিলাম না।
পড়ছিলাম।”
“আমি জানি।
মজা করছিলাম তোমার সাথে। আমি কী ঠিক করেছি জানো? এখন থেকে এই রুমেই বসবো। এটাই আমার
ডেস্ক। এতদিন ওদিকে চার নম্বর রুমে বসতাম। ওখানেও আমার একটা ডেস্ক আছে। এখন থেকে এখানে
বসবো কেন জানো? মনে হচ্ছে এখানে সময়টা অনেক মজায় কাটবে। তুমি কি মজা করতে পছন্দ করো?
পিক্ যে চলে যাচ্ছে তুমি জানো? পিকের সাথে পরিচয় হয়েছে না? পিক্ মানে পিটার...”
ম্যান্ডির সাথে
পরিচয় হয়েছে মাত্র গতকাল। অথচ সে এমন ভাবে কথা বলছে যেন শৈশব থেকেই দেখছে আমাকে। অস্ট্রেলিয়ানরা
জাতিগতভাবে বেশ খোলামেলা স্বভাবের। কিন্তু ম্যান্ডি মনে হচ্ছে তার চেয়েও বেশি। এত কথা
যে কীভাবে বলে মেয়েটা!
সকাল ন’টা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত ম্যান্ডির বক-বক শুনতে শুনতে কাবুলিওয়ালার
মিনির কথা মনে পড়লো। রবীন্দ্রনাথের কাবুলিওয়ালা শুরু হয়েছে এভাবে, “আমার পাঁচ বছর বয়সের
ছোটো মেয়ে মিনি এক দন্ড কথা না কহিয়া থাকিতে পারে না। পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করিয়া ভাষা
শিক্ষা করিতে সে কেবল একটি বৎসর কাল ব্যয় করিয়াছিল, তাহার পর হইতে যতক্ষণ সে জাগিয়া
থাকে এক মুহূর্ত মৌনভাবে নষ্ট করে না।” মিনির আদলে ম্যান্ডিকে নিয়েও লেখা যায়-
“আমার পঁচিশ-ছাব্বিশ বছর বয়সের সহপাঠিনী ম্যান্ডি এক দন্ড কথা না কহিয়া থাকিতে পারে
না। আমার সহিত পরিচয় হইবার পর একটা মাত্র দিন অতিবাহিত হইয়াছে। এর পর হইতে যতক্ষণ সে
আমার ডেস্কের পাশে কম্পিউটারের সামনে বসিয়াছে, এক মুহূর্ত মৌনভাবে নষ্ট করে নাই।”
ম্যান্ডি কম্পিউটার
দখল করে বসে আছে দেখে পিটার এসে ‘হাই ম্যান্ডি, হাই প্রাডিব’ বলে একটু এদিক ওদিক তাকিয়ে চলে গেছেন। আমি ভেবেছিলাম পিটারকে
দেখে ম্যান্ডি কম্পিউটার ছেড়ে উঠে যাবে। আমি হলে তাই করতাম। কিন্তু ম্যান্ডি পিটারকে
পাত্তাই দিলো না। কম্পিউটারের পর্দায় চোখ রেখে অনবরত কথা বলেই চলেছে।
কোন কাজ সে
আসলে করছে না। ইন্টারনেটে কিছুক্ষণ সাজ-পোশাক দেখেছে। এখন ওয়ার্ল্ড জিওগ্রাফি সম্পর্কে
জ্ঞান অর্জন করছে।
“হেই প্রাডিব,
ইউ আর ফ্রম ব্যাঙলাড্যাশ- রাইট?”
“ইট্স বাংলাদেশ
ম্যান্ডি। বাং-লা-দে-শ। নট ব্যাঙলাড্যাশ। বাংলা ইজ আওয়ার ল্যাংগুয়েজ এন্ড কালচার, দেশ
মিন্স কান্ট্রি।”
ম্যান্ডিকে
বাংলাদেশ সম্পর্কে জ্ঞান দিতে গিয়ে এই শীতের সকালেও ঘাম বের হয়ে যাবার জোগাড়। আমার
ইংরেজি শব্দের ভান্ডার যে এত ছোট আগে বুঝতে পারিনি।
ম্যান্ডি ইন্টারনেটে
বাংলাদেশ সম্পর্কিত অনেক তথ্য বের করে পড়তে শুরু করেছে আর একটু পর পর আমাকে জিজ্ঞেস
করছে-বাংলাদেশের কোথায় বাড়ি তোমাদের? চিটাগং শব্দের অর্থ কী? এত ছোট একটা দেশে তোমরা
এত বেশি মানুষ কীভাবে থাকো?
তার প্রশ্নের
উত্তরে “যদি হয় সুজন, তেঁতুল পাতায় নয় জন” জাতীয়
কিছু একটা বলতে পারতাম। কিন্তু তেঁতুলের ইংরেজি জানা না থাকায় কিছু না বলে চুপ করে
রইলাম।
“আই নিড এ কাপ
অব কফি। ডু ইউ ওয়ান্ট?”
“থ্যাংক ইউ
ম্যান্ডি।”
“ইয়েস থ্যাংক
ইউ, অর নো থ্যাংক ইউ?”
“নো থ্যাংক
ইউ।”
“ওকেই”
কাঁধ ঝাঁকিয়ে
চলে গেলো ম্যান্ডি। সে কি একটু মনক্ষুন্ন হলো?
সুন্দরী মেয়েরা নাকি কোন প্রস্তাবেই ‘না’ শুনতে
অভ্যস্ত নয়।
পৌনে এগারোটায়
পিটার এসে দাঁড়ালেন রুমের সামনে। কেনের কলোকুইয়াম এগারোটায়। পিটার বললেন, “তুমি কি
জানো যে কলোকুইয়ামের আগে ফ্রি খাবারের ব্যবস্থা আছে?”
“তাই নাকি?
কোথায়?”
“চলো। উপরের
স্টাফ রুমে।”
কেন্ও বেরোলেন
একই সময়ে। সাত তলায় উঠে হেড অব দি স্কুলের অফিসের সামনে স্টাফ রুম। ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টের
ম্যানেজার মিকি দেখিয়েছিলেন সেদিন। এর মধ্যেই ভীড় জমে গেছে সেখানে। টেবিলে রাখা ডোনাটের
উপর প্রায় হামলে পড়ছে সবাই। আমি কেন্ আর পিটারের পাশে দাঁড়িয়ে আছি। বাকি সব মুখ এখনো
অপরিচিত।
“গুডাকেন্,
হোয়াট ইয়া টাকিন টু ডাই?”
প্রশ্নকর্তার
দিকে তাকিয়ে কিছুটা অবাক হলাম। চোখে পুরু চশমা, মাথায় ধবধবে সাদা চুল, বাচ্চাদের মত
মুখ, পরনে হাফ-শার্ট আর হাফ-প্যান্ট। প্যান্ট-টা কাঁধের সাথে বেল্ট দিয়ে আটকানো। কেনের
একেবারে কাছে এসে দাঁড়িয়েছেন তিনি। বুঝতে চেষ্টা করছি তিনি কেন্কে কী জিজ্ঞেস করলেন।
‘টু ডাই’ কথাটা প্রায়ই শোনা যায় এখানে। সবাই শুধু শুধু মৃত্যুর কথা বলবে কেন? নিশ্চয়
শুনতে ভুল করছি আমি। দেখি কেন্ কী উত্তর দেন।
“হাই জেফ্।
হাউ থিংস?”
“থিংস আ ফাইন।
কান্ট কম্প্লাইন। সো হোয়াট ইয়া টাকিন টু ডাই?”
“সাম নিউ স্টাফ,
পিটার এন্ড মি ডুয়িং লেইট্লি”
তারপর আমার
দিকে তাকিয়ে বললেন, “প্রাডিব ইজ স্টার্টিং সুন। প্রাডিব, মিট জেফ। এ ভেরি গুড ফ্রেন্ড
অব মাইন।“
জেফের সাথে
হ্যান্ডশেক করতে করতে হঠাৎ পরিষ্কার হয়ে গেলো ‘টু-ডাই’মানে
কী। হায়রে অস্ট্রেলিয়ান উচ্চারণ - ‘ডে’ যদি ‘ডাই’ হয়ে
যায় কীভাবে বুঝবো! ‘হোয়াট ইয়া টাকিন টু ডাই’ অর্থাৎ
‘হোয়াট ইউ টকিং টুডে?” গতকাল ম্যান্ডি যখন জিজ্ঞেস করেছিল ‘হ্যাভ ইয়া কাম টু-ডাই?’-
ভেবেছিলাম ঠাট্টা করে জানতে চাচ্ছে মরতে এসেছি কি না। অথচ সে জিজ্ঞেস করছিলো “আজকে
এসেছো?”
এগারোটা বাজার
পাঁচ মিনিট আগে হারকাস থিয়েটারে এসে ঢুকলাম সবার সাথে। একটা ব্যাপার খেয়াল করলাম, ডোনাট
খাওয়ার জন্য যারা এসেছিলেন তাদের অনেকেই মাঝপথে হাওয়া হয়ে গেছেন। বিনেপয়সার বৈজ্ঞানিক
বক্তৃতা শোনার আগ্রহের চেয়ে বিনেপয়সার খাবারের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেশি থাকবে এটাই
স্বাভাবিক। তবুও এখানে এটা আশা করিনি।
কেনের বক্তৃতা
শুরু হবার পর বুঝতে পারলাম এরকম খটমটে বৈজ্ঞানিক বক্তৃতা শোনার আগ্রহ সবার হবার কথা
নয়। বিষয়ভিত্তিক কোন পূর্ব-ধারণা ছাড়া এ ধরনের বক্তৃতা বোঝা সম্ভব নয়। নিউক্লিয়ার থিওরি
সম্পর্কে কিছুটা ধারণা থাকা সত্ত্বেও আমি তেমন কিছুই বুঝতে পারলাম না। বক্তৃতা শেষে
প্রশ্নোত্তর পর্বটা মূল বক্তৃতার চেয়েও আকর্ষণীয়। প্রশ্ন করার জন্যও একটা ন্যূনতম জ্ঞান
দরকার হয়। আমি জানি না আমার সে পরিমাণ জ্ঞানার্জন কবে হবে বা আদৌ হবে কি না।
লাঞ্চের সময়
স্টুডেন্ট সাপোর্ট সেন্টারে গিয়ে পার্ট-টাইম জবের বিজ্ঞপ্তিগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়লাম।
বেশ ভীড় এখানে। আমার মত সবারই চাকরি দরকার। বাংলাদেশে ছাত্রাবস্থায় পার্ট-টাইম চাকরি
বলতে টিউশনিই বুঝতাম। এখানে মনে হয় টিউশনি ব্যাপারটাই নেই। স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটিতেই
কি সবকিছু পড়িয়ে দেয়া হয়? গৃহশিক্ষক লাগে না এদেশে?
বেবি সিটারের
চাহিদা মনে হচ্ছে অনেক বেশি। কয়েকজন সম্ভাব্য চাকরিদাতার ঠিকানা ও টেলিফোন নম্বর লিখে
নিয়ে এলাম। রুমে যখন কেউ থাকবে না তখন ফোন করতে হবে। কারো সামনে ফোন করতে গেলে সংকোচে
গলা দিয়ে শব্দ বেরোবে না। ম্যান্ডির সামনে তো নয়ই।
বলা হয়েছে বিকেল
পাঁচটার পর ফোন করতে। পাঁচটা বাজার অনেক আগেই রুম খালি হয়ে গেছে। ম্যান্ডি চলে গেছে
আমি লাইব্রেরি থেকে ফিরে আসার একটু পরে। কেন্ চলে গেছেন পৌনে পাঁচটার দিকে। যাবার
সময় আমার রুমে উঁকি দিয়ে ‘গুড নাইট’ বলে গেছেন। যদিও বাইরে দিনের আলো নিভে গেছে, তবুও
বিকেল পৌনে পাঁচটায় কি শুভরাত্রি বলা চলে? কিন্তু না বলেও তো উপায় নেই। ইংরেজির নিয়মে
বিদায়ের সময় তো আর গুভ ইভনিং বা শুভসন্ধ্যা বলা যায় না।
পাঁচটা বাজার
কিছুক্ষণ পর রুমের দরজা বন্ধ করে টেলিফোন নিয়ে বসলাম। খাতায় যেভাবে লিখে এনেছি সে অর্ডারেই
ফোন করা শুরু করলাম। প্রথমটা ডেফ্নি জোন্স।
“হ্যালো, মে
আই স্পিক টু ডেফ্নি জোন্স প্লিজ”
“স্পিকিং। হু
ইজ ইট?”
বললাম, “ম্যাডাম,
বেবি সিটারের বিজ্ঞপ্তি দেখে ফোন করছি।”
ও প্রান্তে
কিছুক্ষণ কোন সাড়াশব্দ নেই।
“ম্যাডাম, হ্যালো,
হ্যালো, ম্যাডাম।”
“সরি, দি পজিশান
ইজ নো লংগার এভয়েলেভল।”
কী সুন্দর কথা।
চাকরিটি এখন আর খালি নেই। মানে হলো আমাকে পছন্দ হয়নি ম্যাডাম ডেফ্নি জোন্সের। নো
প্রোবলেম। দ্বিতীয় নম্বরে ডায়াল করলাম।
“হ্যালো, আই
এম কলিং এবাউট দি বেবি সিটার পজিশান। মে আই স্পিক টু নিকি ফার্নান্ডেজ প্লিজ।”
“স্পিকিং। হোয়াট্স
ইওর নেম?”
ভদ্রমহিলার
উচ্চারণে ইন্ডিয়ান টান। নিকি ফার্নান্ডেজ কি ভারতীয় নাম? শ্রীলংকানও হতে পারেন। বললাম,
“আমার নাম প্রদীপ দেব”
“মনে হচ্ছে
ঠিক মত শুনতে পাচ্ছি না। আপনিই কি চাকরিপ্রার্থী?”
“হ্যাঁ, আমার
বিশেষ অভিজ্ঞতা আছে শিশু-রক্ষণাবেক্ষণ কাজে।”কথাটা
মিথ্যে নয়। আমার ভাগ্নে-ভাগ্নি-ভাইজি বাবু-রুপু-পূজা তাদের কয়েক ঘন্টা বয়স থেকে শুরু
করে এক মাস আগেও আমার তত্ত্বাবধানে থেকেছে কোন না কোন সময়। ছোটবেলায় তারা অবলীলায় প্রাকৃতিক
কাজ-কর্ম সেরেছে আমার কোলে, গায়ে, মাথায়। এখানে কাজে লাগবে জানলে আসার সময় দিদি আর
বৌদির কাছ থেকে বেবি সিটার হিসেবে অভিজ্ঞতা ও কর্মদক্ষতার সনদপত্র নিয়ে আসতে পারতাম।
“আপনার নাম
প্রদীপ দেব। কিন্তু আপনার গলার স্বর ঠিক মেয়েদের মত লাগছে না। আপনার কি ঠান্ডা লেগেছে?”
“না ম্যাডাম।
আমার ঠান্ডা লাগেনি। আমার গলা মেয়েদের মত লাগছে না কারণ আমি মেয়ে নই। আমি পুরুষ।”
“কিন্তু এ কাজ
তো মেয়েদের।”
“ম্যাডাম, বিজ্ঞপ্তিতে
তো এরকম কিছু লেখা নেই।”
“সরি মিস্টার
দেব। আইনগত কারণে বিজ্ঞপ্তিতে অনেক কিছু লেখা যায় না। বেবি সিটিং আসলে মেয়েদের কাজ।
আমি একটা ছোট্ট বেবি কেয়ার সেন্টার চালাই। সেখানে একদম বাচ্চা বাচ্চা শিশুদের দেখাশোনা
করার কাজ। আমি খুব দুঃখিত মিস্টার দেব।”
লাইন কেটে গেলো।
বাকি নম্বরে ফোন করার কোন মানে হয় না। বেবি সিটিং মিশন সম্পূর্ণ ব্যর্থ। ‘ফেইলিওর ইজ
দি পিলার অব সাকসেস’ বাক্যটি যদি সত্য হয় তাহলে আমার ভবিষ্যৎ
সাফল্যের ভিত্তিতে আরো কয়েকটা পিলার যোগ হলো আজ! যে হারে ব্যর্থ হচ্ছি তাতে তো মনে
হচ্ছে কয়েক দিনের মধ্যেই আমার সাফল্যের ক্ষেত্র পিলারময় হয়ে যাবে। কিন্তু শুধুমাত্র
পিলার দিয়ে কি বিল্ডিং তৈরি করা যায়?
No comments:
Post a Comment