মহাবিশ্বে পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ চাঁদ পৃথিবী থেকে গড়ে মাত্র ৩,৮৪,৪০০ কিলোমিটার দূরে থাকে। সৌরজগতের অন্য গ্রহগুলি এবং তাদের উপগ্রহগুলির দূরত্বের সাথে তুলনা করলে চাঁদই পৃথিবীর নিকটতম প্রতিবেশী। এই প্রতিবেশী উপগ্রহই এখনো পর্যন্ত পৃথিবীর বাইরে একমাত্র জায়গা যেখানে পৃথিবীর মানুষ সশরীরে গিয়ে ঘুরে এসেছে ছয় বার। তাও সেই ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সালের মধ্যে। ১৯৫৩ সাল থেকে শুরু করে এই ২০২৩ সালের এপর্যন্ত গত সত্তর বছরে পৃথিবী থেকে মোট ১৪৬টি মিশন পরিচালনা করা হয়েছে চাঁদের উদ্দেশ্যে।
পৃথিবীর এতগুলি দেশের মধ্যে মাত্র বারোটি দেশ চাঁদের মিশনের সাথে যুক্ত হয়েছে। তদানীন্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন ৫৮টি মিশন পরিচালনা করেছিল – যার মধ্যে ১৮টি সফল হয়েছে, বাকি ৪০টি মিশন ব্যর্থ হয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাবার পর রাশিয়া মাত্র একটি চাঁদের মিশন পরিচালনা করেছে সম্প্রতি (লুনা ২৫), কিন্তু তা ব্যর্থ হয়েছে। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (নাসা) এপর্যন্ত ৫৯টি চাঁদের মিশন পরিচালনা করেছে, যার মধ্যে চল্লিশটি সফল হয়েছে। নাসাই এখনো পর্যন্ত একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা চাঁদে মানুষ পাঠিয়েছে। জাপান ছয়টি মিশন পরিচালনা করেছে যার মধ্যে তিনটি সফল হয়েছে। চীন পাঁচটি মিশন চালিয়ে পাঁচটিতেই সফল হয়েছে। ভারত তিনটি মিশন চালিয়ে দুটিতে সফল হয়েছে। ইওরোপিয়ান ইউনিয়ন, লুক্সেমবার্গ, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ইতালি একটি করে মিশন পরিচালনা করেছে সফলভাবে। ইসরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত একটি করে মিশন পরিচালনা করেছে, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। পৃথিবী থেকে চাঁদে নভোযান পাঠিয়ে সফলভাবে চাঁদের পিঠে নামাতে পেরেছে মাত্র চারটি দেশ – সোভিয়েত ইউনিয়ন, আমেরিকা, চীন এবং ভারত। আর চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সর্বপ্রথম চন্দ্রযান অবতরণ করানোর কৃতিত্ব অর্জন করেছে ভারত – অতি সম্প্রতি।
১৯৮০র দশকে চাঁদের মিশনের প্রতি মহাকাশ সংস্থাগুলির আগ্রহ একবারেই কমে গিয়েছিল। তখন মহাকাশে উন্নত টেলিস্কোপ পাঠিয়ে মহাবিশ্বের আরো গভীরে পর্যবেক্ষণ করার দিকে নজর দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ১৯৯০র দশকের পর থেকে চাঁদের প্রতি আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে। একবিংশ শতাব্দীতে মহাকাশ গবেষণায় অনেক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে – যেখানে চাঁদ একটা বিরাট ভূমিকা রাখতে পারবে ভবিষ্যতের মহাকাশ মিশনগুলিতে।
মহাকাশবিজ্ঞানীরা পরিকল্পনা করছেন – চাঁদকে মহাকাশের স্থায়ী স্টেশন হিসেবে ব্যবহার করার জন্য। তা কীভাবে সম্ভব হতে পারে? চাঁদে একসময় পানি ছিল তার প্রমাণ বিজ্ঞানীরা পেয়েছেন চাঁদের বিভিন্ন উপাদান বিশ্লেষণ করে। চাঁদে এখনো কিছু পানি জমাট বরফের আকারে রয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে – এরকমই ভাবছেন বিজ্ঞানীরা। এরকম ভাবার কারণ কী?
চাঁদ নিজের অক্ষের উপর যে বেগে ঘুরছে – তা পৃথিবীর ঘূর্ণন বেগের তুলনায় অনেক কম। পৃথিবী নিজের অক্ষের উপর চব্বিশ ঘন্টায় একবার ঘুরে আসে – যার ফলে চব্বিশ ঘন্টায় পৃথিবীর এক দিন। কিন্তু চাঁদ নিজের অক্ষের উপর একবার ঘুরতে সময় নেয় প্রায় আটাশ দিন। অর্থাৎ চাঁদের একদিন সমান পৃথিবীর ২৮ দিন। সূর্যের সাথে চাঁদের অবস্থানের কারণে চাঁদের এক পিঠে একটানা চৌদ্দ দিন সূর্যালোক পড়ে, অন্যপিঠে তখন থাকে অন্ধকার। একইভাবে অন্যপিঠে আবার চৌদ্দদিন দিনের আলো পড়ে। কিন্তু চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছাকাছি এমন কিছু গর্ত আছে যেখানে কখনোই সূর্যালোক পড়ে না। সেই গর্তগুলির ভেতরের তাপমাত্রা এত কম যে মাইনাস একশ ত্রিশ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হতে পারে। সেই তাপমাত্রায় চাঁদের আদিকালের জমাট বরফ এখনো রয়ে যেতে পারে। এই জমাট বরফ মানেই তো পানি।
এই পানির সন্ধান করাই চাঁদের সাম্প্রতিক মিশনগুলির প্রধান উদ্দেশ্য। চাঁদে পানির সন্ধান পাওয়া গেলে সেই পানি ব্যবহার করা যাবে ভবিষ্যৎ মিশনগুলিতে। পৃথিবী থেকে যদি পানি বয়ে নিয়ে যেতে না হয়, তাহলে নভোচারীদের একটা বিরাট সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, চাঁদে পানি পাওয়া গেলে ভবিষ্যতের মিশনগুলি চাঁদ থেকে পরিচালনা করা যাবে – যেখানে পানির উপাদান হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন থেকে তৈরি করা যাবে নভোযানের জ্বালানি। নভোচারীদের জন্য দরকারি অক্সিজেন চাঁদেই তৈরি করে নেয়া যাবে।
কিন্তু পানি থাকার সবচেয়ে সম্ভাব্য যে জায়গা – সেই দক্ষিণ মেরুতে পৃথিবী থেকে পাঠানো নভোযান অবতরণ করানো খুব সহজ ব্যাপার নয়। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) তাদের চন্দাভিযান চন্দ্রায়ন-৩ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে অবতরণ করাতে পেরেছে, এটা সত্যিই যুগান্তকারী মাইলফলক।
ভারতের চন্দ্রায়ন প্রকল্প শুরু হয়েছে একবিংশ শতাব্দীতে। প্রথম মিশন চন্দ্রায়ন-১ ছিল চাঁদের চারপাশে ঘুরে ঘুরে চাঁদের তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহের মিশন। ২০০৮ সালের ২২ অক্টোবর পৃথিবী থেকে চাঁদের উদ্দেশ্যে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল চন্দ্রায়ন-১ স্যাটেলাইট। নির্দিষ্ট সময়ে চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছে চাঁদের চারপাশে ঘুরে ঘুরে তথ্য পাঠিয়েছে পৃথিবীতে পরবর্তী দশ মাস ধরে। সেই তথ্য থেকে আশা করা যায় যে চাঁদের মেরু অঞ্চলের কিছু গর্তের ভেতর জমাট বরফে পানি থাকতে পারে। ২০০৯ সালের ২৮ আগস্ট এই মিশনের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
এরপর শুরু হয় চন্দ্রায়ন-২ এর প্রস্তুতি। চন্দ্রায়ন-২ এর তিনটি অংশ ছিল – লুনার অরবিটার, লুনার ল্যান্ডার বিক্রম এবং লুনার রোভার প্রজ্ঞান। পরিকল্পনা অনুসারে ২০১৯ সালের ২২ জুলাই উৎক্ষেপণ করা হয় চন্দ্রায়ন-২। প্রায় এক মাস ধরে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার পর ২০ আগস্ট চাঁদের এক শ কিলোমিটার দূরত্বে পৌছে চাঁদের চারপাশে ঘুরতে থাকে। সেখানে অরবিটার থেকে চাঁদে নামার জন্য ল্যান্ডার বিক্রমকে আলাদা করা হয়। হিসেব অনুযায়ী সেপ্টেম্বরের ৬ তারিখ বিক্রমের চাঁদে নামার কথা ছিল। সবকিছু ঠিকঠাক মতোই এগোচ্ছিল। কিন্তু চাঁদের পিঠ থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার উপরে থাকতেই বিক্রমের সাথে সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ধরে নেয়া যায়, বিক্রম চাঁদের পিঠে আছড়ে পড়ে বিকল হয়ে গেছে।
চন্দ্রায়ন-২ ব্যর্থ হবার পরেও একটুও দমে যাননি ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীরা। চার বছরের মধ্যেই তাঁরা চাঁদে পাঠিয়েছেন পরবর্তী মিশন চন্দ্রায়ন-৩। চন্দ্রায়ন-২ এর ব্যর্থ হবার সম্ভাব্য সব কারিগরি ত্রুটি কাটিয়ে উঠে সাফল্য অর্জন করেছেন চন্দ্রায়ন-৩ প্রকল্পে।
ইতিহাস সৃষ্টিকারী চন্দ্রায়ন-৩ প্রকল্পের খুটিনাটি একটু দেখা যাক। এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হলো চাঁদের পিঠে সঠিকভাবে একটি ল্যান্ডার অবতরণ করানো। এরপর ল্যান্ডারের ভেতর থেকে বিশেষভাবে তৈরি স্বয়ংক্রিয় গাড়ি (রোভার) বের করে চাঁদের পিঠে পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষানিরীক্ষা চালানো।
২০২৩ সালের ১৪ জুলাই সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে চাঁদের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয় তিন হাজার নয়শ কেজি ভরের চন্দ্রায়ন-৩। যার তিনটি অংশ। প্রপালশান মডিউল যা ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞানকে পৌঁছে দিয়েছে চাঁদের কক্ষপথের ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে। প্রপালশান মডিউলের ভর ২,১৪৮ কিলোগ্রাম। যার মধ্যে জ্বালানির ভর ১৬৯৬ কিলোগ্রাম। পৃথিবীর চারপাশে পাঁচবার ঘুরে ৫ আগস্ট চাঁদের কক্ষপথে ঢুকে পড়ে চন্দ্রায়ন-৩র প্রপালশান মডিউল। এবার চাঁদের চারপাশে পাঁচবার প্রদক্ষিণ করার পর ১৭ আগস্ট প্রপালশান মডিউল থেকে ল্যান্ডার আলাদা হয়ে যায়। প্রপালশান মডিউল চাঁদের চারপাশে ঘুরতে থাকবে আরো ছয় মাস। এই ছয়মাস ধরে চাঁদ থেকে পৃথিবী পর্যবেক্ষণ করবে এই মডিউল। এরজন্য একটি বিশেষ যন্ত্র Spectropolarimetry of Habitable Planet Earth (SHAPE) লাগানো হয়েছে প্রপালশান মডিউলের গায়ে।
বিক্রম সারাভাই |
মুন ল্যান্ডারের নাম রাখা হয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণার পথিকৃৎ বিক্রম সারাভাইয়ের নামে – বিক্রম। বিক্রমের ভর ১৭২৬ কিলোগ্রাম। আয়তাকার দুই মিটার দৈর্ঘ্য, দুই মিটার প্রস্থ এবং ১.১৭ মিটার উচ্চতার একটি বড় বাক্সের মতো বিক্রম ল্যান্ডারের সাথে চারটি ধাতব পা এবং পায়ে চারটি ইঞ্জিন লাগানো আছে। বিক্রমের গায়ে লাগানো সোলার প্যানেল থেকে ৭৩৮ ওয়াট বিদ্যুৎশক্তি উৎপন্ন করা যায়। চাঁদের পিঠে নিরাপদে অবতরণ করার জন্য বিক্রমের গায়ে লাগানো আছে বেশ কয়েকটি সেন্সর – এক্সিলারোমিটার, অল্টিমিটার, ডপলার ভেলোসিমিটার, স্টার সেন্সর, ইনক্লাইনোমিটার এবং ক্যামেরা। বেতার যোগাযোগের জন্য লাগানো আছে শক্তিশালী অ্যান্টেনা। বিক্রমের ভেতর একটা প্রকোষ্ঠে সযত্নে লাগানো আছে মুন রোভার – স্বয়ংক্রিয় চন্দ্রযান প্রজ্ঞান।
প্রপালশান মডিউল থেকে আলাদা হবার সাথে সাথেই বিক্রমের থ্রাস্টার ইঞ্জিনগুলি চালু হয়ে যায়। নিয়ন্ত্রিত গতিতে সেন্সর এবং অন্যান্য কারিগরি নিয়ন্ত্রক কাজে লাগিয়ে বিক্রম নিরাপদে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে ২০২৩ সালের ২৩ আগস্ট। চাঁদের সেই পিঠে তখন দিন, অর্থাৎ সূর্যালোক আছে, থাকবে চৌদ্দ দিন। এই চৌদ্দ দিন কাজ করার পরিকল্পনা নিয়েই চাঁদে নামানো হয়েছে বিক্রমকে।
বিক্রমের সোলার প্যানেল সৌরবিদ্যুৎ তৈরি করতে শুরু করে দিয়েছে। বিক্রমের ভেতর একটা প্রকোষ্ঠ এমনভাবে তৈরি যেন ওটা খুলে গিয়ে একটা ঢালু ধাতব পথ তৈরি করতে পারে যেখান দিয়ে বের হয়ে এসেছে চাঁদের রোভার প্রজ্ঞান।
প্রজ্ঞান একটি ছোট্ট আয়তাকার ধাতব গাড়ি। এর দৈর্ঘ্য ৯১.৭ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ৭৫ সেন্টিমিটার আর উচ্চতা ৩৯.৭ সেন্টিমিটার। ২৬ কিলোগ্রাম ভরের এই স্বয়ংক্রিয় গাড়িতে ছয়টি চাকা লাগানো আছে। লাগানো আছে সোলার প্যানেল যেখান থেকে ৫০ ওয়াট বিদ্যুৎশক্তি উৎপন্ন হচ্ছে। ২৩ আগস্ট বিক্রম থেকে বের হয়েই কাজ শুরু করে দিয়েছে প্রজ্ঞান। প্রজ্ঞানের গায়ে লাগানো নেভিগেশান ক্যামেরার সাহায্যে এর গতিপথ নির্ধারিত হয়, আর কী দেখছে তার সিগনাল পাঠানো হয় অ্যান্টেনার সাহায্যে ল্যান্ডার বিক্রমে।
বিক্রম যেখানে নেমেছে সেখানে কার্যকর থাকবে মোট চৌদ্দদিন। প্রজ্ঞানও তাই। চৌদ্দ দিন পর চাঁদে রাত নেমে এলে পরবর্তী চৌদ্দদিন অন্ধকারে প্রচন্ড ঠান্ডা এবং সৌরকোষ থেকে কোন শক্তি উৎপন্ন করতে না পেরে বিক্রম এবং প্রজ্ঞানের সংবেদী ইলেকট্রনিক্স আর কার্যকর থাকার সম্ভাবনা খুব কম। এই চৌদ্দ দিনের ভেতরই তারা যা করার করে ফেলছে।
বিক্রমে বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি আছে। চাঁদের ভূমির তাপমাত্রার ধর্মাবলি পরীক্ষার জন্য আছে Chandra’s Surface Thermophysical Experiment (ChaSTE), চাঁদের ভূমির আশেপাশে কম্পন মাপার জন্য আছে ‘Instrument for Lunar Seismic Activity (ILSA)’, চাঁদের অতিসংবেদী আবহাওয়ায় গ্যাস ও প্লাজমা পর্যবেক্ষণের জন্য আছে Radio Anatomy of Moon Bound Hypersensitive ionosphere and Atmosphere (RAMBHA)। এই যন্ত্রপাতিগুলি সব ভারতীয় ল্যাবেই তৈরি করা হয়েছে। আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (নাসা) একটি লেজার রেট্রোরিফ্লেকটর দিয়েছে যা বিক্রমের সাথে চাঁদে গেছে চাঁদের ভূমি পর্যবেক্ষণ করার জন্য।
প্রজ্ঞানে লাগানো আছে দুইটি যন্ত্র – আলফা পার্টিক্যাল এক্সরে স্পেকট্রোমিটার (APXS) এবং Laser Induced Breakdown Spectroscope (LIBS) - যেগুলি দিয়ে চাঁদের মাটির রাসায়নিক উপাদান বিশ্লেষণ করছে। প্রজ্ঞান কাজ শুরু করার এক সপ্তাহের মধ্যেই চাঁদের মাটিতে অ্যালুমিনিয়াম, ক্যালসিয়াম, লোহা, ক্রোমিয়াম, টিন, ম্যাঙ্গানিজ, সিলিকন এবং অক্সিজেন শনাক্ত করে ফেলেছে। এগুলির অস্বিত্ব আগেও পাওয়া গিয়েছিল অন্যান্য মিশনের পরীক্ষা থেকে। কিন্তু এই প্রথম চাঁদের মাটিতে সালফারের অস্তিত্ব ধরা পড়লো সরাসরি পরীক্ষার মাধ্যমে। চাঁদের মাটিতে হাইড্রোজেনের খোঁজ চলছে, এখনো পাওয়া যায়নি।
চন্দ্রায়নের এই সাফল্য চাঁদের অভিযানের গতি এবং সম্ভাবনা আরো অনেকদূর বাড়িয়ে দিয়েছে। নাসার আর্টেমিস মিশনের কাজ চলছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই পৃথিবীর মানুষ আবার চাঁদের বুকে পা রাখবে। কয়েক দশকের মধ্যেই হয়তো চাঁদে তৈরি হয়ে যাবে গ্রহান্তরে যাবার স্টেশন। আর যদি চাঁদে হাইড্রোজেন আর অক্সিজেন দুটোই পাওয়া যায় বিপুল পরিমাণে, অনন্ত সম্ভাবনার দরজা খুলে যাবে।
তথ্যসূত্র:
১। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা www.isro.gov.in
২। প্রদীপ দেব, চাঁদের নাম লুনা, মীরা প্রকাশন, ঢাকা ২০১৭।
No comments:
Post a Comment