__________________________________________
রিফাৎ আরা রচনাসমগ্র
গল্পগ্রন্থ - জীবনের গল্প ।। মীরা প্রকাশন, ঢাকা, ২০১৪
গল্প - ঈশ্বর ও নীরজা
__________________________________________
ঈশ্বর ও নীরজা
হাসপাতালের আউটডোরে
নীরজাকে দেখে বিস্মিত কন্ঠে প্রশ্ন করলেন ডাঃ নিশাত, “কিরে তুই এখানে?”
পরিচিত জন দেখে শোক উথলে
উঠলো নীরজার। আবেগ সামলাতে না পেরে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকল। কাছে এসে কাঁধে হাত
রাখলেন নিশাত- “কী হয়েছে রে?”
কান্নার
টাল সামলাতে না পেরে হেঁচকি উঠতে লাগলো নীরজার। আরো কাছে সরে এসে ওর পিঠে হাত
রাখলেন ডাঃ নিশাত। টের পেলেন স্যাঁতসেতে ভেজা শরীর থেকে ভ্যাপসা ঘামের গন্ধ উঠছে।
ঘামে ভেজা শরীর, ময়লা কাপড়- তবুও সরলেন না নিশাত। অসহায় মেয়েটির প্রতি মানবিক
মমতায় আরো ঘনিষ্ঠ হয়ে আবার প্রশ্ন করলেন- “কী হয়েছে বলবি তো”।
কোন মতে কান্না চেপে হাত
দিয়ে ইশারা করলো নীরজা -“ঐ যে”
“কে?”
নীরজার দৃষ্টি অনুসরণ করে
তাকিয়ে দেখলেন বৃদ্ধ একজন মানুষ হাত পা ছড়িয়ে দেয়ালে ঠেস দিয়ে বসে আছে। মুখটা এক
পাশে হেলে আছে। গালের কষ বেয়ে লালা গড়িয়ে পড়ছে। চোখ দুটো বিস্ফারিত- যেন এক্ষুনি কোটর থেকে বেরিয়ে আসবে।
“কে লোকটা? তোর স্বামী?”
“হুঁ”
মনে মনে অবাক হলেন নিশাত।
নীরজা একজন মুসলমানকে বিয়ে করেছে এটা তিনি জানতেন। নীরজাও তাঁকে বলেছিল অনেক কথা।
কিন্তু সে যে এত বুড়ো - বলতে গেলে ওর বাবার বয়সী
তা আজ না দেখলে তিনি কল্পনাও করতে পারতেন না।
“কী হয়েছে
ওর?”
এতক্ষণে
নিজেকে অনেকটা সামলে নিয়েছে নীরজা। উত্তর দিল- “কাইল দুপুরে ভাত খাইতে বইস্যা গলায় মাছের কাঁটা না কী জানি বিঁধলো। তারপর
থেইকা আর পানিও গিলবার পারছে না। সারাডা রাইত গেল। আইজ সক্কালে পাড়ার সবতে কইল
হাসপাতালে লইয়া আইতে” - বলতে বলতে আবার কেঁদে ফেলল নীরজা। কাঁদতে কাঁদতেই বলল- “কী অইব ডাক্তার আপা? মানুষডা ভালা অইবো ত?”
আশ্চর্য হয়ে গেলেন নিশাত।
এই বুড়ো লোকটার জন্য এত উদ্বেগ! একি ভালবাসা? নাকি অন্যকিছু? মনের ভাব গোপন রেখেই
আশ্বাস দিলেন- “কেন ভাল হবে না? তাহলে আমরা আছি কেন? তুই
নিজেও তো হাসপাতালে চাকরি করিস। দেখিসনি কত মরো-মরো মানুষ ভাল হয়ে হাসতে হাসতে বাড়ি ফিরে যায়। কিন্তু তোর সঙ্গে আর কে এসেছে?”
“আমার ছেলে”
“কোথায় সে?”
এবার নীরজা আউটডোরে লাইনে
দাঁড়িয়ে থাকা লোকটিকে ডেকে আনল। ভাল করে তাকিয়ে দেখলেন- পয়ঁত্রিশ থেকে চল্লিশের
মাঝামাঝি বয়স লোকটার। তার মানে নীরজার ছেলেও তার থেকে কম করে দশ বছরের বড়। এবার
ডাক্তার হিসেবে উদ্যোগী হলেন। ছেলেকে নির্দেশ দিলেন- “তোমার বাবাকে নিয়ে ভিতরে এসো। আমি দেখছি কী করা যায়”।
নীরজা এবং তার ছেলে কোন
রকমে বৃদ্ধকে বয়ে নিয়ে এল ডাঃ নিশাতের কক্ষে। খুব নেতিয়ে পড়েছে লোকটা। না খাওয়াতে
আরো কাহিল হয়ে গেছে।
ভাল করে পরীক্ষা করলেন নিশাত। নীরজাকে বললেন- “এখনই ওকে হাসপাতালে ভর্তি করে দে।”
নিশাতের দিকে তাকিয়ে ভয়
পেয়ে গেল নীরজা। আবারো প্রশ্ন করলো- “কী হবে
ডাক্তার আপা?”
“কিছু হবে না। ভয় পাচ্ছিস কেন? নিয়ে এসেছিস যখন ভাল চিকিৎসা হোক। দু’চারদিন থাক।”
নিজেই যোগাযোগ করে দ্রুত
হাসপাতালে ভর্তি করে দিলেন নিশাত। সব
কিছু ঠিকঠাক মত শেষ হবার পর ডাক্তারের প্রতি কৃতজ্ঞতায় আবারো ঝরঝর করে কেঁদে ফেলল
নীরজা।
নিজের
রুমে এসে বসলেন নিশাত। একদিকে অসহায় এ মেয়েটির জন্য কিছু করতে পারায় ভালো লাগার এক
ধরনের মানসিক প্রশান্তি অনুভব করছেন, আবার অন্যদিকে দুঃশ্চিন্তাও হচ্ছে। নীরজার
স্বামীর প্রবলেমটা ভাল করে বুঝা যায়নি। বিভিন্ন টেস্টের পর ডায়াগনোসিস সম্ভব হবে।
গলায় কোন কাঁটা নেই। এবার নীরজার কথা মনে হল। অসুস্থ লোকটাতো কিছু খায়নি। কিন্তু
যে অবস্থা দেখা গেল তাতে তো মনে হয়না নীরজাও কাল থেকে কিছু খেয়েছে।
আশ্চর্য। তিনকাল গিয়ে এককালে ঠেকেছে - আর এই বুড়ো লোকটার জন্য কেঁদে কেঁদে হাপিস হচ্ছে নীরজার মতো যুবতী মেয়ে।
ঠোঁটের ডগায় বিদ্রুপ খেলে গেল নিশাতের - হায়রে
মানুষ, হায়রে সমাজ। কোথায় আছি আমরা! এই নীরজাই কিনা একটা বেসরকারী ক্লিনিকের আয়া।
অথচ স্বামীর চিকিৎসা সেখানে হয় না। কারণ সেগুলো নীরজাদের জন্য নয়। আবার এই সমাজইই
নীরজার মতো মেয়েদের নিরাপত্তা দিতে পারে না। দলবদ্ধ শকুনের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার
জন্য নীরজাকে আশ্রয় নিতে হয় আরেকটা বুড়ো শকুনের ডানার নিচে। যে এর আগেও দুটো বিয়ে
করেছে, যার অনেকগুলো সন্তান আছে এবং তাদের অনেকেই নীরজার চেয়ে বয়সে বড়।
এবার নিজেকে খোঁচা দিলেন নিশাত - “তোমার এত
দরদ কেন? এরকম হাজার নীরজা এদেশে আছে। কই তাদের জন্য কী করছ? যত্তোসব মধ্যবিত্ত
সেন্টিমেন্ট।”
চেয়ারে নড়েচড়ে বসলেন নিশাত।
আসলেই কি মধ্যবিত্ত সেন্টিমেন্ট? না। নিজেকে মনে মনে বললেন- “আসলে আমিও তো ওদেরই মতো একজন।”
পিতৃ-মাতৃহীন অবস্থায় এ
সংসারে কম চড়াই-উৎরাই পেরোতে হয়নি। আজ হয়তো নিশাতের
পদবী আছে, মর্যাদা আছে, সবাই সম্মান করে। তবুও কোথায় যেন একটা সূক্ষ্ম দুঃখবোধ
আছে। আর তাই দুঃখী মানুষের প্রতি বিশেষত অসহায় মেয়েদের প্রতি এক ধরনের টান অনুভব
করেন। ডাক্তার হয়েও আলাপ করেন নার্সদের সঙ্গে বন্ধুর মত। খোঁজ-খবর নেন
আয়া-ওয়ার্ডবয়দের। ওরাও ভালবাসে। তাই অন্য
ডাক্তারদের মতো ম্যাডাম ডাকে না। বলে -
ডাক্তার আপা। যে ক্লিনিকে পার্ট-টাইম কাজ করেন সেখানেই কাজ করে নীরজা।
একদিন শুনতে পেলেন নীরজা
ধর্মান্তরিত হয়েছে। বিয়ে করেছে একজন মুসলমানকে। একদিন চেম্বারে ডেকে নিয়ে নীরজাকে
জিজ্ঞেস করেছিলেন- “কিরে তুই নাকি বিয়ে করেছিস?”
চুপ করে
ছিল নীরজা। পায়ের নখ দিয়ে মেঝে আঁচড়াচ্ছিল মাথাটা নিচু করে। কিছুটা ঠাট্টার সুরে
বলেছিলেন নিশাত - “কিরে নীরজা, মিষ্টি খাওয়াবার ভয়ে চুপ করে আছিস?”
নীরজা
তার পায়ের কাছে মাটিতে বসে পড়েছিল। আস্তে আস্তে বলেছিল - “না কইরা উপায় আছিল না।”
হেসে উঠেছিলেন নিশাত - “বিয়ে
করতে হলে সবাই ওরকম অজুহাত দেখায়।”
“না
ডাক্তার আপা। সত্য সত্যই উপায় ছিল না।”
পানিতে টলটল করছিল নীরজার
ভাসা ভাসা চোখ দুটো। ভাল করে তাকিয়ে দেখেছিলেন নিশাত। অসংস্কৃত এ মেয়েটির চেহারায়
তেমন একটা শ্রী না থাকলেও সর্বাঙ্গে
স্বাস্থ্যের সজীবতা উপচে পড়ছে।
“কেন? লোকটা তোকে জোর করেছিল বুঝি?”
“না, আমিই জোর করলাম।”
তারপর নীরজা শুনিয়েছিল তার
জীবনকাহিনি।
জেলে পরিবারের মেয়ে নীরজা।
ছোট বেলায় বাবার সাথে ডুলা নিয়ে নদীর পাড়ে যেত। বাবার নৌকা ছিল না। এর ওর নায়ে আর
শুকনো মৌসুমে খালে-বিলে জাল ফেলে যা পেত তাতে সংসারের পাঁচ পাঁচটি প্রাণীর কোনদিন
পেট ভরে খাওয়া হতো না। পরনে একটার বেশি দুটো কাপড় কোনদিনই দেখেনি। ভাই দুটো অনেক
বড় হবার পরও নেংটি পরে ঘুরে বেড়াত।
এরই মধ্যে একদিন গায়ে জ্বর
নিয়ে ঘরে ফিরল বাবা। এসেই শুয়ে পড়ল, আর উঠল না। তিন তিনটি সন্তান নিয়ে মায়ের
দিশাহারা অবস্থা। এরই মধ্যে দিনে দিনে ডাগর হয়ে উঠছে নীরজা। মা মাঝে মাঝে বলে - “নীরজা
তুই আমার গলার কাঁটা।” শুনে নীরজা মায়ের সামনে হাঁটতেও ভয় পায়।
এ অবস্থায় একদিন নীরজার
বিয়ের সম্বন্ধ এলো। স্বামী দোজবরে। প্রথম বউ মারা গেছে, ছেলেপুলে নেই। জেলের ছেলে
জেলে। কিন্তু জেলের ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে দোকান ফেরি করে। একেক সিজনে একেক ব্যবসা।
মা লেগে পড়লেন। দু’হাজার টাকার পণ মেনে নিলেন। কিন্তু শেষ সম্বল ভিটেটুকু
বাঁধা দিয়েও বারোশ’ টাকার বেশি জোগাড় হল না। বাকিটা
বিয়ের পর শোধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়ে বিয়ে দিলেন।
বিয়ের দিন মায়ের গলা ধরে
কেঁদেছিল নীরজা। মা বলেছিল - “তুই দুটো ভাত খাবি, কাপড় পরবি, ইজ্জতে থাকবি এ চিন্তায় আমি
ছেলে দু'ডারে পথে বসালাম। তবু তুই কান্দস
ক্যানরে নীরজা?”
স্বামীর
অনুসরণ করে শ্বশুরবাড়িতে এলো নীরজা। শাশুড়ি বউ-কাঁটকি। প্রথম দিন থেকেই খোঁটা - মা পুরো টাকা দেয়নি। তবু কিশোরী নীরজা মুখ বুঁজে সংসার
করে। স্বামী শাশুড়িকে খুশি করার চেষ্টা করে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না।
মা টাকা দিতে পারে না।
নীরজাকে স্বামীর লাথি ঝাঁটা খেতে হয়। শাশুড়ি ভাতের থালা কেড়ে নেয়। এমনি করে পাঁচ
বছর কাটে। নীরজার শীর্ণ শরীরে যৌবন যেন এসেও ফুটতে চায় না।
স্বামী খোঁটা দেয়- “একটা বাঁজা মেয়ে আমারে দিল।”
শাশুড়ি গালি দেয় - আটকুঁড়ে।
নীরজা মনে মনে ভগবানকে
ডাকে, দেবতাদের বলে - “একটা বাচ্চা দাও আমারে।”
শাশুড়ির
খোঁটায় অতিষ্ঠ হয়ে একদিন মুখ করে - “আমার মার দেওয়া ট্যাকাটাও তো তোমার পোলা নষ্ট কইরা দিল। আরো
টাকা যে দেয় নাই ভালাই অইছে।”
স্বামীর সংসারে আর জায়গা
হলো না নীরজার। একেতো বাঁজা, তায় আবার ঝগড়াটে – এমন বউ তাদের দরকার নেই। আবারও ভয়ে ভয়ে মায়ের কাছে এসে দাঁড়ালো। মা চোখে
অন্ধকার দেখেন। তারপর একদিন অনাত্মীয় প্রতিবেশীর হাত ধরে এই শহরে উঠে এল নীরজা।
অনেক দরজা ঘুরে ক্লিনিকের আয়া।
মনে হয়েছিল এ যাত্রা বেঁচে
গেল। এবার মা-ভাইকে বাঁচাবে। ক্লিনিকের কাজ করে, কিন্তু বস্তির বাসায় রাতে ঘুমাতে
পারে না নীরজা। চাকরির সুখ ওর শরীরের অস্ফুট যৌবনকে দ্বিগুণ ফিরিয়ে দিয়েছে। বস্তির
কতজন যে তার চারপাশে ঘুর ঘুর করে। রাতে ঘরের বেড়া ভাঙতে চায়। নীরজা ভয়ে চেঁচাতে
গিয়েও পারে না।
দু-একজন আলাপ পরিচয় করে।
ঘনিষ্ঠ হয়ে চায়। নীরজা তাদের মনের ভাব বুঝে ইনিয়ে বিনিয়ে বিয়ের কথা বলে।
না, তারা কেউ রাজি হয় না। একে নীরজা স্বামী পরিত্যাক্তা, আবার জেলে-কন্যা।
তাকে বিয়ে করে জাত খোয়াবে কে? নীরজার শরীরের আকর্ষণ তাদের। বিয়ে করতে চাইলে মেয়ের অভাব কী? সেজন্য নীরজা কেন?
তবু শুধু নিরাপত্তার জন্য
নীরজা কতজনকে প্রস্তাব দেয় - “আমারে খাওয়াইতে পরাইতে অইব না। শুধু বিয়া কইরা বউয়ের ইজ্জত
দিলেই আমি খুশি”।
রাতের পর
রাত নিরাপত্তাহীনতায় নীরজা যখন বিভ্রান্ত তখনই কাজেম আলী নীরজাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু শর্ত - মুসলমান হতে হবে।
নীরজা রাজি হয়ে যায়। আল্লাহ আর ভগবানে নীরজা কোন পার্থক্য বুঝে না।
আগে তো জান বাঁচুক। মান থাকুক।
কাজেম আলীর আগের দুই
সংসার। অনেক বাচ্চা-কাচ্চা। তাতে নীরজার কিছু
যায় আসে না। চাকরি করা বউ মাসের শেষে পয়সা দেয় - তাতে কাজেম আলী আর তার বউ বাচ্চারাও খুশি। নীরজা এখন হাসিনা বানু। এভাবে তার
গল্প শেষে নীরজা জিজ্ঞেস করেছিল - “আমি কি খারাপ আছি আপা?”
নিশাত হেসে বলেছিলেন, “ভালোই করেছিস। বুদ্ধির কাজ করেছিস। এদেশেই যখন থাকবি তখন
এভাবে মিশে যাওয়াই ভাল। সংখ্যালঘু হওয়ার চেয়ে সংখ্যাগুরুদের ভীড়ে মিশে যাওয়া তোর
জন্য নিরাপদ। তোর জন্য এখানেও যা সবখানেই তা।”
তার শেষের কথাগুলো বুঝতে
পারেনি নীরজা। কিছুক্ষণ চুপ করে
চেয়ে থেকে উঠে গিয়েছিল। সেই থেকে মেয়েটার প্রতি আরো মায়া পড়ে গেছে।
বছর ঘুরতে না ঘুরতে ওর যখন বাচ্চা হলো তখন নতুন জামা কাপড় দিয়েছেন।
একদিন মেয়েকে এনে তাকে দেখিয়ে বড়াই করে বলেছিল - “আমারে নি বাঁজা বইল্যা তাড়াইছিল। অহন দ্যাখেন
আপা কে বাঁজা। ব্যাডা যে নিজে বাঁজা আছিল এইডা এহন বুঝবার পারছি।”
নিশাতেরও মনে হয়েছিল।
এদেশে কত মেয়েকে যে এমনি মিথ্যা অপবাদের বোঝা মাথায় নিয়ে সংসার ছাড়তে হয়।
“ডাক্তার
আপা”- আর্ত চিৎকার শুনে চমকে উঠেন নিশাত। এতক্ষণ
কী করছিলেন তিনি!
“ডাক্তার আপা, জলদি আসেন। উনি যেন কেমন করতাছেন”- বলেই নীরজা ছুটে বেরিয়ে এল। নিশাতও ছুটলেন ওয়ার্ডের দিকে।
হাত পা ছড়িয়ে দাপাচ্ছে
লোকটা। গলা দিয়ে গোঁ গোঁ শব্দ হচ্ছে। নীরজার বয়সে বড় ছেলে অসহায় ভাবে বাপকে ধরে
রাখবার চেষ্টা করছে।
ডাক্তারের পায়ের উপর আছড়ে পড়ল নীরজা - “আপা, আপনি ওরে বাঁচান।”
তাকে তুলে ধরে সান্ত্বনা
দিলেন নিশাত - “আল্লাকে ডাক, আমরাতো আছি। চেষ্টা করে যাব।”
ডুকরে কেঁদে উঠল নীরজা - “আমি তো আল্লাহ ভগবান বেবাকরে ডাকছি। কত কইছি আমারে একটু
ইজ্জতে রাখ। তবু ক্যান এই দশা?”
No comments:
Post a Comment