সবার জন্য
স্যাটেলাইট
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
প্রদীপ দেব
তাম্রলিপি
সবার জন্য স্যাটেলাইট
প্রদীপ দেব
গ্রন্থস্বত্ব ©২০১৮
ফণীন্দ্রলাল দেব পাঠাগার, নাপোড়া, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম,
বাংলাদেশ
লেখক ও প্রকাশকের লিখিত অনুমতি ছাড়া এই বইয়ের কোন অংশেরই
কোন ফটোকপি, স্ক্যান, রেকর্ড কিংবা অন্য কোন তথ্য সংরক্ষণ পদ্ধতিতে অনুলিপি করা
কিংবা ই-বুক আকারে প্রকাশ করা আইনত নিষিদ্ধ।
__________________________________________
SATELLITE FOR ALL: Science & technology by Dr Pradip
Deb,
Copyright © 2018: Fanindra Lal Deb Library, Napora, Banskhali, Chittagong 4390, Bangladesh.
উৎসর্গ
ইঞ্জিনিয়ার
সানজিদা নাসিম
ইঞ্জিনিয়ার মাজেদুল আহমেদ
আমার আদরের রাকা ও রনি
“Man must rise above Earth, to the top of the
atmosphere and beyond, for only thus will he fully understand the world in
which he lives”
Socrates (circa 399BC).
Can it be possible that all
human sympathies can thrive, and all human powers be exercised, and all human
joys increase, if we live with all our might with the thirty
or forty people next to us, telegraphing kindly to all other people, to be sure? Can it be possible that our passion
for large cities, and large parties, and large theatres, and large churches, develops no faith nor hope nor love which
would not find aliment and exercise in a little "world of our own"?
Edward Everett Hale
in The Brick Moon, 1870
ভূমিকা
বাংলাদেশের
প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ মহাকাশে প্রেরণ করা হয়েছে ১২ মে ২০১৮। বঙ্গবন্ধু-১
স্যাটেলাইটটি এখন পৃথিবী থেকে প্রায় ৩৬,০০০ কিলোমিটার দূরে মহাকাশের geosynchornous
orbit বা ভূ-সমন্বিত কক্ষপথে ঘন্টায় প্রায় ১১,০০০
কিলোমিটার কৌণিক বেগে ঘুরছে। পৃথিবী নিজেও ঘুরছে নিজের অক্ষের উপর। পৃথিবীর গতির
সাথে আমাদের স্যাটেলাইটটির গতি এমনভাবে সমন্বিত যে পৃথিবী ও স্যাটেলাইটটিকে একে
অপরের সাপেক্ষে স্থির বলে মনে হয়। যেমন পাশাপাশি দুটো গাড়ি যদি একই দিকে একই বেগে
চলে তাহলে দুই গাড়ির যাত্রীরা পরস্পর কথা বলতে বলতে যেতে পারবে এবং মনে হবে যেন
কোন গাড়িই চলছে না। বঙ্গবন্ধু-১ ছাড়াও মহাকাশে আরও কয়েক হাজার স্যাটেলাইট আছে,
ভবিষ্যতেও আরো অনেক স্যাটেলাইট যোগ হবে।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ
মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠাচ্ছে গত ষাট বছরেরও বেশি সময় ধরে। বাংলাদেশ মহাকাশের
স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণকারী আন্তর্জাতিক সংগঠন International
Telecommunication Union (ITU)-র সদস্য হয়েছে ১৯৭৩ সালে। মহাকাশের স্যাটেলাইট কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সব
প্রস্তুতি চলছিল পর্যায়ক্রমে। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় বাংলাদেশের প্রথম উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছিলেন। কিন্তু
তার দু'মাস পরেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে মানুষরূপী কিছু জানোয়ার। মহাকাশে পথচলায়
আমরা পিছিয়ে পড়ি চল্লিশ বছর। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা
আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছি। বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ এখন মহাকাশে
পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে।
এই স্যাটেলাইটের সুবাদে এখন আমাদের
দেশের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে স্যাটেলাইট সম্পর্কে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। ক্যাবল-টিভি
দেখতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি অনেক বছর
যাবৎ। কিন্তু আমরা কখনোই তেমনভাবে ভেবেও দেখিনি যে এইসব অনুষ্ঠান স্যাটেলাইটের মাধ্যমে
আমাদের ড্রইং রুমের টেলিভিশনে এসে পৌঁছায়। বিশ বছর আগেও ঘূর্ণিঝড় ও সাইক্লোনে যত
ক্ষয়ক্ষতি হতো - বর্তমানে সেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক কমে গেছে। কারণ আমরা এখন অনেক
আগে থেকেই সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দিতে পারি। এটা সম্ভব হচ্ছে আবহাওয়া
স্যাটেলাইটের কারণে।
এখন আমাদের অনেকের মনেই স্যাটেলাইট
সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন: স্যাটেলাইট কী? স্যাটেলাইট নির্মাণ করে
কারা? কক্ষপথে কয়টি স্যাটেলাইট আছে? স্যাটেলাইটগুলো
কত কাছাকাছি আসে? স্যাটেলাইটগুলোকে
কীভাবে পৃথিবী থেকে মহাকাশে পাঠানো হয়? স্যাটেলাইটগুলোকে মহাকাশে কক্ষপথে কীভাবে
স্থাপন করা হয়? স্যাটেলাইটের খরচ কী রকম? কক্ষপথে
স্যাটেলাইটের গতি ও দিক কীভাবে ঠিক রাখা হয়? স্যাটেলাইটে কী পরিমাণ জ্বালানি লাগে?
স্যাটেলাইটের আয়ুষ্কাল কীভাবে নির্ধারিত হয়? ইত্যাদি। স্যাটেলাইটের বিজ্ঞান ও
প্রযুক্তির ভিত্তিটা বুঝতে পারলে এই সব প্রশ্নের উত্তর দেয়া অনেক সহজ হয়ে যাবে।
স্যাটেলাইট সম্পর্কে ইংরেজি ভাষায় অনেক
বই লেখা হয়েছে, কিন্তু বাংলা ভাষায় এ বিষয়ে কোন পূর্ণাঙ্গ বই চোখে পড়েনি। বাংলা
ভাষায় সবার জন্য স্যাটেলাইটের মূল বিষয়গুলো সহজভাবে ব্যাখ্যা করার উদ্দেশ্যে আমি
এই বই লিখেছি।
পান্ডুলিপি সম্পর্কে মূল্যবান পরামর্শ
দিয়েছেন অধ্যাপক শ্রাবণী পাল। তাঁর কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তাম্রলিপি প্রকাশনীর এ কে এম
তরিকুল ইসলামকে ধন্যবাদ বইটি প্রকাশ করার জন্য।
স্যাটেলাইটের বিজ্ঞান আসলে সত্যিকারের
'রকেট সায়েন্স'। অর্থাৎ এই বিজ্ঞান বুঝার জন্য অনেক ধৈর্যের দরকার। এই ছোট্ট বই
থেকে স্যাটেলাইট সম্পর্কে সবকিছু জেনে ফেলা সম্ভব নয়। তবে পাঠক এই বই থেকে স্যাটেলাইটের
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় ধারণা পাবেন এটুকু আশা করা যায়।
প্রদীপ দেব
মেলবোর্ন,
অস্ট্রেলিয়া pradipdeb2006@gmail.com
আগস্ট
২০১৮ www.praddipdeb.org
সূচি
অডিও, ভিডিও, মাল্টিমিডিয়া ও ডাটা কমিউনিকেশান
দূর অনুধাবন ও আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ
ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশান ইউনিয়ন
স্যাটেলাইটের কক্ষপথে স্থান ও কম্পাঙ্ক বন্টনে আই-টি-ইউ'র ভূমিকা
কক্ষপথে স্যাটেলাইটের স্থান ও বেতার তরঙ্গ বন্টন করা হয় কীভাবে
আই-টি-ইউ সংজ্ঞায়িত বেতার তরঙ্গের ব্যান্ড ও কম্পাঙ্কের বিন্যাস
কক্ষপথে স্যাটেলাইটের স্থানের জন্য রেজিস্ট্রেশন করার পদ্ধতি
গ্রহের গতি সম্পর্কিত কেপলারের সূত্র
কেপলারের প্রথম সূত্র: উপবৃত্তাকার কক্ষপথের সূত্র
কেপলারের দ্বিতীয় সূত্র: সমান ক্ষেত্রফলের সূত্র
কেপলারের তৃতীয় সূত্র: পর্যায়কালের সূত্র
কক্ষপথের উপর মহাজাগতিক বিকিরণের প্রভাব
মাধ্যাকর্ষণ ও স্যাটেলাইটের কক্ষপথ
স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ এর পে-লোড
অবস্থান নিয়ন্ত্রণ ও অভিযোজন ব্যবস্থা
কমিউনিকেশান স্যাটেলাইটের সেবাগুলো
No comments:
Post a Comment