স্বপ্নলোকের চাবি

 



চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার ছাত্রজীবন শুরু হয়েছিল ১৯৮৬ সালের জুলাই মাসে, শেষ হয়েছে ১৯৯৩ সালের সেপ্টেম্বরে; আজ থেকে প্রায় সাতাশ বছর আগে। আমরা ছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১তম ব্যাচ। আমাদের অনার্সের শিক্ষাবর্ষ ছিল ১৯৮৫-৮৬। সেশনজট না থাকলে আমাদের অনার্স পাস করার কথা ছিল ১৯৮৮ সালে। কিন্তু শেষ হতে হতে ১৯৯০ শেষ হয়ে গিয়েছিল। তারপর দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে  বিশ্ববিদ্যালয় ছিল প্রতিক্রিয়াশীলদের হাতে অবরুদ্ধ। এক বছরের মাস্টার্স শেষ হতে লাগলো আরো তিন বছর।  সাত বছরের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের অনেক ঘটনাই এখন  কালের নিয়মে স্মৃতি থেকে মুছে গেছে একেবারে। কিছু কিছু অপ্রিয় স্মৃতি জোর করে মুছে ফেলেছি। কিন্তু আরো অনেক ছোট-বড় স্মৃতি ছড়িয়ে আছে মগজের কোষে কোষে, যারা এখনো মাঝে মধ্যেই উঁকি দিয়ে আমাকে স্মৃতিকাতর করে তোলে। যেসব দিনগুলিকে একসময় মনে হতো দুঃস্বপ্নের মতো, আজ কালের পরশে মনে হচ্ছে সেইসব দিনগুলিও কত মধুর ছিল। এখনো কী উজ্জ্বল সেইসব দিনগুলি। মনে হচ্ছে এই তো সেদিনের কথা।

০১


০২

আজ ফিজিক্সের প্রথম ক্লাস হচ্ছে। ফার্স্ট ইয়ারের ক্লাস শুরু হয়েছে দু’দিন আগে। প্রথম দিন অনার্সের ক্লাস ছিল না, সাবসিডিয়ারি ক্লাস হয়েছিল একটা।

দ্বিতীয় দিন ছিল ছাত্র-ধর্মঘট। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন এরশাদপন্থী জাতীয় ছাত্রসমাজের রাজত্ব চলছে। শুনেছি হলগুলি সব তাদের দখলে। ক্যাম্পাসে অন্য কোন দলের টুঁ শব্দ করার উপায় নেই। লীগ, দল, ইউনিয়ন, শিবির সবার দৌড় শহরের রেলস্টেশন পর্যন্ত।


০৩

“হায় চিল, সোনালী ডানার চিল, এই ভিজে মেঘের দুপুরে…”

দল বেঁধে ক্লাসে ঢুকেই কবিতা পেয়ে গেলো ফারুকের। অনেক কবিতা তার মুখস্থ। যখন তখন কবিতা বের হয় তার মুখ দিয়ে।  তার মাথাভর্তি ঝাঁকড়া চুল, বিশাল শরীর, আর উচ্চস্বরের হাসির সাথে পদার্থবিজ্ঞান ঠিক মেলে না। 


০৪

সাহা স্যারের ক্লাস করতে করতে ‘প্রোপার্টিজ অব হিট’  যতটুকু বুঝতে পেরেছি তাতে জানি - তাপ দিলে পদার্থের পরমাণুগুলির কম্পন বেড়ে যায়। তারা তখন স্বাভাবিক তাপমাত্রায় যতটা ছটফট করতো তার চেয়ে বেশি ছটফট করতে থাকে। সেই তত্ত্ব শুধু মানুষের পরমাণু নয় – সম্পূর্ণ মানুষের উপরও যে কাজ করে তা চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছি। 


০৫

“সেক্সপিয়ার বলেছেন – হোয়াট ইজ ইওর নেইম? অর্থাৎ নামে কী আসে যায়?”

এক নম্বর গ্যালারির ঠিক মাঝখানের বেঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে বেশ উচ্চস্বরে বিদ্যা জাহির করছে ছেলেটা। এতক্ষণ একটা কাগজ দেখে দেখে পড়ছিল “তুমি বোললে প্রেম হবে, প্রেমের ভুবন যদি আসে, বুকের কুসুম থেকে দেবে শব্দাবলী, কবিতার বিমূর্ত চন্দন…”


“লেডিস ফাঁস মামা”

নিচু হয়ে মাটিতে রাখা টিনের বাক্সটা রিকশায় তুলতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু রিকশাওয়ালার কথায় থমকে দাঁড়িয়ে তাকালাম তাঁর দিকে। তাঁর এক পা প্যাডেলে, অন্য পা সামনের চাকায় লাগানো। সম্ভবত রিকশার ব্রেক ঠিকমতো কাজ করছে না, তাই দ্রুত থামাতে গিয়ে স্যান্ডেল পরা পা লাগিয়ে দিয়েছেন সামনের চাকায়। 


০৭

“যদিও সন্ধ্যা আসিছে মন্দ মন্থরে, সব সঙ্গীত গেছে ইঙ্গিতে থামিয়া” – রবিঠাকুরের কাব্যিক সন্ধ্যা যেরকম মন্দ মন্থর রাবীন্দ্রিক গতিতে ধীরে ধীরে নামে – এখানে সেরকম কোন আয়োজন ছাড়াই ঝুপ করে সন্ধ্যা নেমে রাত হয়ে গেল। সব সঙ্গীত এখনো থামেনি, অবশ্য পাশের রুমে যা হচ্ছে তাকে যদি আদৌ সঙ্গীত বলা যায়।


০৮

“লুক মাই ফ্রেন্ড, স্মোকিং ইজ ডাইরেক্টলি রিলেটেড টু ফিজিক্স” – কথাগুলি বলার সময় মুখ থেকে অদ্ভুত কায়দায় সিগারেটের ধোঁয়া বের করছে হাফিজ। তার ডান হাতের তর্জনি আর মধ্যমার আগায় আলতো করে লেগে আছে সোনালী ফিল্টার। একটু আগেই সে একটা লম্বা টান দিয়েছে সিগারেটে। এখন কথা বলতে বলতে ধোঁয়া বের করছে।


০৯

তুমি চোখের আড়াল হও, কাছে কিবা দূরে রও

মনে রেখো আমিও ছিলাম।

এই মন তোমাকে দিলাম …

সোহরাওয়ার্দী হলের গেটের কাছে রিকশায় বাঁধা মাইকে অনবরত বাজছেন সাবিনা ইয়াসমিন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ষষ্ঠ বারের মতো শুনছি এই গান। সম্ভবত এই একটা ক্যাসেটই আছে মাইকওয়ালার কাছে। শুধু আজ নয়, গত এক সপ্তাহ ধরে  এই অবস্থা চলছে ক্যাম্পাসজুড়ে। 


১০

তারস্বরে কাক ডাকছে। ক্যাম্পাসে এত কাক আজ কোত্থেকে এলো বুঝতে পারছি না। হয়তো এখানেই ছিল গাছে গাছে, এতদিন নিত্যদিনের কোলাহলে  আলাদা করে কানে যায়নি তাদের ডাক। আজ এই স্তব্ধ সন্ধ্যায় বড় বেশি কর্কশ মনে হচ্ছে তাদের। হলের গেটের সামনে রাস্তার উপর কাৎ হয়ে পড়ে আছে একটা দুমড়ানো-মোচড়ানো রিকশা। মনে হচ্ছে এর উপর দিয়ে ট্রাক চালিয়ে দেয়া হয়েছে।


১১

“এর চেয়ে পাস কোর্সে ডিগ্রি পড়লেও তো এতদিনে সেকেন্ড ইয়ারে উঠে যেতি।“ – খুব নিচুস্বরে অনেকটা স্বগতোক্তির মতো করে বললেও, বাবার কথাগুলি আমার কানের ভেতর দিয়ে মগজে হানা দিলো। এমনিতে শুনলে মনে হবে এটা সাধারণ একটি বাক্য। কিন্তু এর ভেতরে যে ক্ষোভটা আছে তা আমি বুঝতে পেরেছি বলেই না শোনার ভান করে মনযোগ দিয়ে “সংবাদ” এর উপসম্পাদকীয় পড়তে শুরু করলাম। মধ্যবিত্তের সংকট সম্পর্কে অনেক তাত্ত্বিক কথাবার্তা আছে সেখানে– কিন্তু বুঝতে কষ্ট হচ্ছে না। কারণ সেই সংকটের ভেতরেই তো আমাদের বসবাস।


১২

বটতলি স্টেশনে এসে দেখলাম ইউনিভার্সিটির ট্রেন এক নম্বর প্লাটফরমে দাঁড়িয়ে আছে। খুব একটা ভীড় নেই আজ। ট্রেনের গায়ে রাজ্যের ধুলো। জানালাগুলিতে এত ধুলো জমেছে যে বাইরে থেকে ভেতরের কিছু দেখা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে বছরের পর বছর ধরে ধুলোবালি জমেছে এই ট্রেনের ভেতরে-বাহিরে। অথচ মাত্র আড়াই মাস বন্ধ ছিল এই ট্রেনের চলাচল। অবশ্য তখনো যে ট্রেন ধুলিমুক্ত ছিল তা নয়। 


১৩

ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরের একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম হবার পর ক্যাম্পাসের পরিবেশ মেঘাচ্ছন্ন আকাশের মতো থমথম করছে। জাতীয় ছাত্রসমাজের দৌরাত্ম্যের সময়ও ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রদল মিটিং-মিছিল করতো মাঝে মাঝে। কিন্তু ছাত্রশিবির যখন থেকে ক্যাম্পাস আর হলগুলি দখল করেছে, অন্য সব দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম ধরতে গেলে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।


১ জুলাই ১৯৮৭। আজকের তারিখটি আমার মনে রাখা দরকার। আজ থেকে আমার সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র বসবাস শুরু হলো। ক্লাস টেন থেকেই আমার হোস্টেল জীবন শুরু হয়েছে। এতদিন যেসব জায়গায় থেকেছি, সবখানেই রুম শেয়ার করতে হয়েছে। আজ থেকে এই রুমটি আমার একার, আমার নিজের ভাড়া করা রুম। 


১৫

“সাবধান!

সামনে পরীক্ষার্থী!!

নীরবতা বজায় রাখুন!!!

আদেশক্রমে কর্তৃপক্ষ”

দেয়ালে লাগানো সাদা আর্টপেপারে মোটা স্কেচ-পেন দিয়ে বড় বড় কালো অক্ষরে লেখা এই  সতর্কবার্তা দেখে থমকে দাঁড়ালাম। 


১৬

চৌধুরি হাট রেলস্টেশনে যখন পৌঁছলাম তখন দুপুর বারোটা। প্লাটফরমে কাউকে দেখতে পাচ্ছি না। বনানী, রানু, প্রদীপ নাথ – কেউ আসেনি এখনো। রেললাইনের ওপাশে পুকুরে সাঁতার কাটছে কেউ একজন। ছোট্ট স্টেশনের একতলা পাকা অফিস। চারপাশে প্রচুর খালি জায়গা। বাংলাদেশ রেলওয়ের জায়গার অভাব নেই। রেলওয়ের অনেক জায়গা অনেক প্রভাবশালীর দখলে চলে গেছে।


স্বপ্নলোকের চাবি – ১৭

‘ছড়ার কুল’ নামটাতে প্রচ্ছন্ন কাব্যিক একটা ভাব আছে, হয়তো কিছুটা ছড়ার ছন্দও। সৈয়দ মুজতবা আলী ছড়ার কুলে এলে ওমর খৈয়ামের কবিতার অনুবাদ এভাবেও করতে পারতেন – এইখানে এই ছড়ার কুলে, তোমার আমার কৌতূহলে, যে ক’টি দিন কাটিয়ে যাবো প্রিয়ে …।  এই জায়গার নাম ছড়ার কুল কে রেখেছিল তা জানা সম্ভব নয়।


স্বপ্নলোকের চাবি – ১৮

অনেকক্ষণ থেকে দরজার কড়া নাড়ছে কেউ। মাথার উপর থেকে লেপ সরিয়ে চোখ খুলে দেখলাম এখনো অন্ধকার কাটেনি। আমার রুমের উত্তর-পূর্ব কোণের দেয়ালজুড়ে জানালা। কাচের পাল্লায় পাতলা নীল পর্দা লাগিয়েছি কিছুদিন আগে। কিন্তু পর্দা এতটাই পাতলা যে পর্দার ভেতর দিয়ে বাইরের আলো তো আসেই, কুয়াশাও দেখা যায়। 


স্বপ্নলোকের চাবি – ১৯

আজাদীর প্রথম পৃষ্ঠার মাঝখানে দুই কলাম জুড়ে ছাপানো হয়েছে নুর হোসেনের ছবি। উশকোখুসকো ঝাঁকড়া চুল, হাড় বের হওয়া অপ্রশস্ত পিঠ। সেখানে মোটা তুলিতে সাদা হরফে লেখা “গণতন্ত্র মুক্তি পাক”। স্বৈরাচার হটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য রাজপথ কাঁপিয়ে মিছিল করেছেন তিনি গতকাল। সেই মিছিলেই তাকে গুলি করে মেরেছে স্বৈরাচারী এরশাদের দাঙ্গাপুলিশ। তাকে নিশানা করে গুলি চালিয়েছে তারা। 


স্বপ্নলোকের চাবি – ২০

“কী খবর কুদ্দুস মিয়া?”

কুদ্দুসের এক চোখে মোটা ব্যান্ডেজ, অন্য চোখ আমার টেবিলে রাখা টেলিভিশনের দিকে। টেলিভিশন থেকে চোখ না ফিরিয়েই সে উত্তর দিলো, “জি বদ্দা ভালা।“

“ব্যাথা আছে এখনো?”

“আছে বদ্দা।“


স্বপ্নলোকের চাবি – ২১

সেকেন্ড ইয়ারের ক্লাস পুরোদমে শুরু হবার পর ক্লাসের বন্ধুবান্ধবদের সাথে আবার নিয়মিত দেখা হচ্ছে ক্লাসে, ক্যাম্পাসে, ক্যান্টিনে, ট্রেনে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্লাস, তারপর প্র্যাকটিক্যাল – এর মাঝেই আড্ডা জমছে। দীর্ঘ ‘এরশাদ ভ্যাকেশান’-এ সবার ভেতরেই কিছু না কিছু পরিবর্তন হয়েছে।


স্বপ্নলোকের চাবি – ২২

এই সেদিন পর্যন্তও কবিতার সাথে আমার তেমন কোন সম্পর্ক ছিল না। নিতান্ত বাধ্য না হলে আমি তার ধারে কাছে যেতাম না। স্কুল-কলেজের সিলেবাসে যে কয়টা কবিতা ছিল তার বাইরে অন্য কোন কবিতা পড়ার প্রতি কোন উৎসাহ পাইনি তখন। স্কুলের ক্লাসে কবিতা মুখস্থ করতে হতো বলে খুব বিরক্ত লাগতো। 


স্বপ্নলোকের চাবি – ২৩

সকাল ছ’টা বাজার আগেই জৈষ্ঠ্য মাসের সূর্য রেগে যায়। তার তীব্র রোদের আলোর সাথে তাপও ঢুকে পড়ে আমার রুমের পুবদিকের জানালার কাচ, পর্দা, আর মশারি ভেদ করে। তড়িৎচৌম্বক তরঙ্গের এই দৃশ্যমান অংশটা সম্পর্কে আমরা ক্লাসরুমে পড়বো যদি কোনদিন থার্ড ইয়ারে উঠতে পারি। যে গতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম চলছে তাতে মনে হয় এই থার্ড ইয়ার আসতে আসতে আলো আরো কয়েক আলোকবর্ষ পথ পাড়ি দেবে।


স্বপ্নলোকের চাবি – ২৪

অনেকক্ষণ থেকে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছি, কিন্তু ঘুম আসছে না। বিছানা বদল হলে অনেক সময় ঘুম আসতে চায় না। কিন্তু আজ বিছানা বদল হওয়া ছাড়াও আরো অনেক কারণ আছে ঘুম না আসার। পাশের খাট থেকে নজরুলের নাক ডাকার শব্দ কানে আসছে। নিজের রুমে সে আরামে ঘুমাবে এটাই স্বাভাবিক। 


স্বপ্নলোকের চাবি – ২৫

ট্রেন থেকে নেমে ছুটতে ছুটতে ক্যাম্পাসগামী বাসের দিকে যাবার সময় যীশু বললো – “ওডা, বাদলদা ত আইয়ের পা-আল্লা।“ বাসে উঠে বসতে না বসতেই যীশুর কথা সত্য হয়ে গেল। ‘বাদলদা’ অর্থাৎ বৃষ্টি এসে গেল হুড়মুড় করে। গত ক’দিন থেকে সারাদেশে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। 


স্বপ্নলোকের চাবি – ২৬

ক্যাম্পাসের নিয়মিত ঘটনাগুলির একটি হলো পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে মিছিল। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিস থেকে যেকোনো পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করার কয়েকদিনের ভেতর সেই পরীক্ষা পেছানোর জন্য আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের কাছে এটা অনেকটাই নৈমিত্তিক ব্যাপার।


স্বপ্নলোকের চাবি – ২৭

জানুয়ারি মাস এসে গেলো। আরেকটি নতুন বছর শুরু হলো। শীত এখনো খুব একটা বেশি নয়। এ মাসেই সেকেন্ড ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা। পরীক্ষা না পেছানোর জন্য আমরা যে মিছিল করেছিলাম তা কার্যকর হয়েছে। তখন ভেবেছিলাম হাতে যেটুকু সময় আছে তার সবটুকু কাজে লাগাবো, দিনরাত শুধু পড়বো আর পড়বো।


স্বপ্নলোকের চাবি – ২৮

রেড বিল্ডিং-এর সিঁড়ির ধাপগুলিকে আজ আগের চেয়েও বেশি উঁচু মনে হচ্ছে। সিঁড়িতে প্রচুর ময়লা। দোতলা পর্যন্ত কিছুটা সহনীয় মাত্রায় থাকলেও – দোতলা থেকে তিন তলায় উঠার সিঁড়িতে পা দিয়েই মনে হলো এই সিঁড়ি ঝাড়ুর স্পর্শ পায়নি অনেকদিন। ময়লা সহ্য করা সম্ভবত আমাদের সংস্কৃতির অংশ।






ফার্স্ট ইয়ারের সাউন্ড ক্লাসে ডপ্‌লার ইফেক্ট পড়িয়েছিলেন নুরুল মোস্তফা স্যার। তখন সেই থিওরি কতটুকু বুঝেছিলাম জানি না, কিন্তু আজ প্রদীপ নাথের সাইকেলের ক্যারিয়ারে বসে তার প্র্যাকটিক্যাল দিকটা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছি। বাসট্রাক পেছন থেকে যখন হর্ন বাজাতে বাজাতে এগোচ্ছে বুঝতে পারছি শব্দের কম্পাঙ্ক কত দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে।

স্বপ্নলোকের চাবি – ৩১

সারা ওয়ার্ডে গিজগিজ করছে মানুষ। বেশিরভাগ বেডের চারপাশে ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছে কেউ না কেউ। এই ওয়ার্ডের সব রোগীর শরীরের কোথাও না কোথাও ব্যান্ডেজ বাধা। আমার মাথা একবার চক্কর দিয়ে উঠেছে। দেয়ালে হাত দিয়ে কোন রকমে সামলে নিয়েছি। হাসপাতাল আমার প্রিয় জায়গা নয়। 






স্বপ্নলোকের চাবি – ৩৪

ইদানীং ঘনঘন লোডশেডিং হচ্ছে। সন্ধ্যা হবার সাথে সাথেই কারেন্ট চলে গেছে। অন্ধকারে রুমের ভেতর বসেছিলাম কিছুক্ষণ। সেপ্টেম্বর মাস শেষ হতে চললো। বাইরের বাতাস আরামদায়ক। কিন্তু জানালা দিয়ে বাতাসের চেয়েও বেশি ঢুকছে মশা।


স্বপ্নলোকের চাবি – ৩৫

‘এটা কিন্তু ভিসিআর না, ভিসিপি। ভিসিআর আর ভিসিপির পার্থক্য জান তো?” – যন্ত্রপাতি সেট করতে করতে আজমভাই প্রশ্নটা সম্ভবত আমাকেই করেছেন। কিন্তু এই যন্ত্রটা সম্পর্কে আমার তেমন কোন ধারণা নেই। আমি আজমভাইয়ের দিক থেকে চোখ সরিয়ে মুকিতভাইয়ের দিকে উদ্দেশ্যহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম। 


স্বপ্নলোকের চাবি – ৩৬

আরেকটি বিজয় দিবস চলে গেলো। ১৯৭১ থকে ১৯৮৯ – বিজয়ের ১৮ বছর। যুদ্ধজয়ী বাংলাদেশের বয়স ১৮ হলো আজ। সুকান্ত ভট্টাচার্য আঠারো হবার আগেই লিখে গেছেন, 

“আঠারো বছর বয়স কী দুঃসহ

স্পর্ধায় নেয় মাথা তোলবার ঝুঁকি,

আঠারো বছর বয়সেই অহরহ

বিরাট দুঃসাহসেরা দেয় যে উঁকি।“


স্বপ্নলোকের চাবি – ৩৭

“অ্যাই ছেলে, তুমি মেয়েদের মাঝখানে বসে আছো কেন? এদিকে চলে আসো।“ – 

ভুঁইয়াস্যারের ধমকের সাথে সাথেই ক্লাসের পরিবেশ হঠাৎ গম্ভীর হয়ে উঠলো। এতক্ষণ বেশ ভালোই চলছিল। ভুঁইয়াস্যার ক্লাসে এসে অপ্‌টিক্স পড়াতে পড়াতে কীভাবে যেন চলে গিয়েছিলেন বেহেশ্‌ত-দোজখের কথায়।


স্বপ্নলোকের চাবি – ৩৮

ঘুম ভেঙেছে অনেকক্ষণ। চুপচাপ শুয়ে আছি চোখ বন্ধ করে। দিদি অফিসে চলে গেল এইমাত্র। বের হবার আগে আমার মাথার কাছে এসে দাঁড়িয়েছিল। চোখ না খুলেই দেখতে পাচ্ছিলাম তার উদ্বিগ্ন মুখ।


স্বপ্নলোকের চাবি – ৩৯

একটা ভ্যাপসা গন্ধ রুমের ভেতর। অনেকদিন বন্ধ থাকার কারণে রুমে তাজা বাতাস ঢুকতে পারেনি। তার উপর প্রচন্ড গরম পড়ছে। রুমের দেয়াল, মেঝে সবই কেমন যেন স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে আছে। জানালার সবগুলি পাল্লা খুলে দিলাম। বাইরে ঝকঝকে রোদ। 


স্বপ্নলোকের চাবি – ৪০

“অ-দা, গাট্টি-বোঁচ্‌কা বাইন্ধা হইয়ে নে?” – বলতে বলতে লোকটি দোকানে ঢুকে গদীতে বসে গেলেন আমার বাবার মুখোমুখি। আমি লোকটিকে চেনার চেষ্টা করছি। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পরিচিত মুখও অনেকসময় অপরিচিত ঠেকে। এই মুহূর্তে তাকে আমি চিনতে পারছি না। ভাবভঙ্গি দেখে বোঝা যাচ্ছে তিনি বাবার খুবই পরিচিত।


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৪১

বলা হয়ে থাকে ক্ষমতার লোভ মানুষকে পশু বানিয়ে ফেলে। কিন্তু পশুরা কি আসলে ক্ষমতার তোয়াক্কা করে? তারা তো যা কিছু করে সবই করে পেটের তাগিদে আর বংশবৃদ্ধির জৈবিক তাড়নায়। সিংহকে পশুদের রাজা বানিয়েছে মানুষ, পশুরা বানায়নি। কোন্‌ পশু সিংহকে ভয় করলো কি করলো না, সালাম দিল কি দিল না, রাজা মানলো কি মানলো না, তাতে সিংহের কিংবা অন্য পশুর কিচ্ছু যায় আসে না।


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৪২

“পলিটিক্স শব্দের অর্থ কী জানিস?” 

ডাক্তারদাদুর প্রশ্নে আমি একটু অবাক হলেও দ্রুত উত্তর দিলাম - “রাজনীতি।”

“সেটা তো লোকদেখানো। আসল অর্থ তো জানিস না। হাহাহা।“ হাসার সময় চোখদুটো ছোট হয়ে যায় ডাক্তারদাদুর। আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাই তাঁর দিকে। তাঁর জন্য দোকান থেকে একখিলি পান নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি যত্ন করে পান ভাঁজ করে মুখে দিয়ে চিবুচ্ছেন। 


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৪৩

দুপুরের পরেই কারেন্ট চলে গেছে। রুমের ভেতর কেমন যেন গুমোট ভ্যাপসা গরম। দরজা-জানালা খুলে দেবার পরেও একফোঁটা বাতাস ঢুকছে না রুমে। বাইরে গাছপালাগুলি কেমন যেন স্থির হয়ে আছে। বৃষ্টির পানি ঝরে পড়ছে তাদের গা থেকে, পাতাভর্তি মাথা থেকে। কিন্তু কেমন যেন নিষ্প্রাণ।


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৪৪

ট্রেন থেকে নামার পর সবকিছু কেমন যেন অচেনা লাগছে। প্লাটফরমে ঘাস গজিয়ে গেছে। কাদায় থিক থিক করছে পুরো প্লাটফরম। প্লাটফরমের ছাদের বেশিরভাগ টিনই ঘূর্ণিঝড়ে উড়ে গেছে। ট্রেন থামতে না থামতেই এক-ট্রেন চঞ্চল শিক্ষার্থী হুড়মুড় করে নেমে পড়েছে প্লাটফরমের কাদায়।


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৪৫

বেশ জোরেসোরে চলছে আমাদের ক্লাস। থিওরি ক্লাস কোনটাই মিস দিচ্ছি না। থিসিস করবো – তাই প্র্যাকটিক্যাল করছি না। থিওরি ক্লাসে মনযোগ দেয়ার চেষ্টা করছি, বুঝতে চেষ্টা করছি – পদার্থবিজ্ঞানের সূক্ষ্ম ব্যাপারগুলি কীভাবে ঘটে। ব্ল্যাকবোর্ডে যেসব জটিল সমীকরণ স্যাররা লিখছেন তা কোত্থেকে আসছে, কীভাবে ঘটছে।


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৪৬

ফিজিক্স অব লাইট বা আলোক সংক্রান্ত পদার্থবিজ্ঞান ঘাঁটতে গিয়ে  ‘জাস্ট নোটিশেবল ডিফারেন্স’ বা জেএনডি বলে একটা ব্যাপার জেনেছি। ব্যাপারটা হলো আলোর কারণে অনেক কিছুই বদলে যায়, কিন্তু সব পরিবর্তন আমাদের চোখে পড়ে না। পরিবর্তন চোখে পড়ার জন্য কিছু শর্ত মেনে চলে আমাদের চোখ, আমাদের স্নায়ু, আমাদের মস্তিষ্ক। 


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৪৭

অনুসন্ধিৎসার ব্যাপারটা প্রাকৃতিকভাবেই আমাদের সবার ভেতর কম-বেশি আছে। বিষয়ের ভিন্নতা থাকতে পারে, তবে ব্যাপারটা আছে। যেমন ক্যাম্পাস এবং হলের কোন্‌ কোন্‌ কোণে গেলে সিগারেট কেনা যাবে কিংবা খাওয়া যাবে তা প্রদীপ নাথ খুঁজে বের করে ফেলেছে অনেক আগেই। 


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৪৮

আবদুর রহমান বিশ্বাস রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ দায়িত্বমুক্ত হলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি তাঁর অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন এভাবে, “একজন জ্যন্ত মানুষকে কবর দেয়ার পর তাকে কবর থেকে তুললে যে অবস্থা হয়, আমারও সে অবস্থা হয়েছে।“ 








#স্বপ্নলোকের_চাবি_৫২

সত্যজিৎ রায় আর নেই! রাত সাড়ে আটটায় রেডিওতে খবরটি শোনার পর থেকে কেমন যেন শূন্য শূন্য লাগছে সবকিছু। বেশ কিছুদিন থেকে তিনি অসুস্থ তা জানতাম। গতমাসের শেষে তাঁকে অস্কার পুরষ্কার দেয়া হয়েছে। অসুস্থতার কারণে অনুষ্ঠানে তিনি যেতে পারেননি। আশা করেছিলাম তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। 


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৫৩

“এই রেলস্টেশনের স্থপতি কে ছিলেন?” 

কমলাপুর রেলস্টেশনের বিশাল ছাতার আকৃতির ছাদের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো প্রদীপ নাথ। “দেখি তোদের বিসিএস পাস করার সম্ভাবনা কতটুকু আছে।“ মুখ থেকে সিগারেটের ধোঁয়া বের করতে করতে আবার বললো সে। 


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৫৪

“ভারতের দালালেরা – হুসিয়ার সাবধান।“

“খুঁজে খুঁজে দালাল ধর, সকাল বিকাল জবাই কর।“ 

স্লোগানের শব্দে ঘুম ভেঙে গেলো। মনে হচ্ছে আমার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে দু’তিনজন মিলে এসব স্লোগান দিচ্ছে। চোখ খুলে দেখলাম এখনো ঘুটঘুটে অন্ধকার। ভোরের আলো ফুটলেই তার কিছুটা আমার রুমের পুবদিকের জানালায় আছড়ে পড়ে।


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৫৫

“ভ্রমর কইও গিয়া, শ্রীকৃষ্ণ বিচ্ছেদের অনলে আমার অঙ্গ যায় জ্বলিয়া রে…”

বাইরে বৃষ্টির শব্দ আর বারান্দায় অশোকের গান মিলে এক অপূর্ব ঐকতান সৃষ্টি হয়েছে। অশোকের গলায় সুর আছে। ভ্রমর রে … বলে কী অনায়াসে তার গলা উঠে যায় সুরের সিঁড়ির উঁচ্চতম ধাপগুলিতে।


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৫৬

নিউটন, ফ্যারাডে, আইনস্টাইন শ্রোডিঙ্গার ডি-ব্রগলি – এরকম অসংখ্য নাম এবং তাদের সমীকরণ মুখস্থ করতে করতে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠার সময় আমার প্রায়ই মনে হয় এঁরা কেউই আমাদের আপন মানুষ নন। এঁদের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে ভাসাভাসা যতটুকু তথ্য আমরা জেনেছি তাতে এঁদের কাউকেই আমাদের কাছের মানুষ বলে মনে হয় না। 


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৫৭

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠটিকে আজ কেমন যেন অচেনা মনে হচ্ছে। এতদিন এটাকে ডানে রেখে মেডিকেল সেন্টারে যাওয়ার সময়, কিংবা বামে রেখে প্রামাণিকস্যারের বাসার দিকে হাঁটার সময় দিগন্তবিস্তৃত বলে মনে হতো। 


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৫৮

আপেক্ষিক তত্ত্ব বোঝাতে গিয়ে স্বয়ং আইনস্টাইন নাকি বলেছিলেন, সুন্দরী মেয়ের সান্নিধ্যে ঘন্টাকে যে মিনিট বলে মনে হয়, আবার ট্রেনের টিকেট কাটতে গিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে মিনিটকে যে ঘন্টা বলে মনে হয় – সেটাই হলো আপেক্ষিকতার সূত্রের সারমর্ম। 


তিরানব্বই সাল শুরু হতে না হতেই দুঃস্বপ্নের মতো লাগছে সবকিছু। বিরানব্বইয়ের শেষের দিনগুলি দেশজুড়ে কেমন যেন অস্থিরতা। ভারতে বাবরি মসজিদ ভাঙার প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর অত্যাচার চলছে বিভিন্নভাবে। আমার শেষ থিওরি পরীক্ষা ছিল ডিসেম্বরের ১২ তারিখ।


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৬০

“তুই আগে কখনো রাঙ্গামাটি আসিসনি?!!!!”

মানসদার কপালে ভাঁজ, চাউনিতে অবিশ্বাস আর বিরক্তির মিশ্রণ।

“এত ঘরকুনো কেন তুই? সারা বাংলাদেশের মানুষ এসে রাঙ্গামাটি ঘুরে যায়, আর তুই সারাজীবন চট্টগ্রামে থেকেও রাঙ্গামাটি আসিসনি আগে কখনো!”


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৬১

হরতালের খবরটা কাল রাতেই পেয়েছিলাম। মৌখিক পরীক্ষার দিন হরতাল আর ভালো লাগছে না। পরীক্ষা যত তাড়াতাড়ি শেষ করতে চাইছি, ততই যেন পিছিয়ে যাচ্ছে। সকালে যতটুকু সম্ভব তাড়াতাড়ি বের হয়েছি। জামায়াত-শিবিরের হরতাল হলে পরীক্ষা হবে না সে ব্যাপারে শতভাগ গ্যারান্টি দিয়ে বলা যেতো। 


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৬২

“বিল ক্লিনটন আমেরিকার কততম প্রেসিডেন্ট বল্‌।“

মাসখানেক আগে বিল ক্লিনটন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন সেটা জানি, কিন্তু তিনি কততম প্রেসিডেন্ট সেটা তো জানি না। অজ্ঞানতার লজ্জা ঢাকতে তর্কের আশ্রয় নেয়ার প্রচলিত কৌশল অবলম্বন করে যুক্তি দেখালাম, “আমেরিকার প্রেসিডেন্ট সম্পর্কে আমাকে কেন জানতে হবে?”


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৬৩

মহাভারতের ভীষ্ম চরিত্রটিকে আমার বেশ লাগে। প্রচন্ড শক্তিধর এই মানুষটির জীবন ঘটনাচক্রে ট্র্যাজিক। এমন এমন পরিস্থিতির সামনে তাঁকে পড়তে হয় যখন তাঁর শক্তি, বুদ্ধি, বিচক্ষণতা কিছুই তেমন কাজে আসে না। পান্ডবরা তাঁর প্রিয় হলেও কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে কৌরবদের পক্ষ নিয়ে তাঁকে যুদ্ধ করতে হয়েছে পান্ডবদের বিপক্ষে। 


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৬৪

কর্মজীবীদের যেমন শ্রেণিবিভাগ আছে, যারা বেকার তাদেরও নিশ্চয় শ্রেণিবিভাগ আছে। ক্যাডারভিত্তিক কর্মজীবীদের শ্রেণিবিভাগ মোটামুটি সহজ। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মজীবী। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির যাঁরা তাঁরা কর্মকর্তা। কিন্তু তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির যাঁরা তাঁরা কর্মচারী।


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৬৫

রবিঠাকুর কত সহজেই বলে দিয়েছেন - “সহজ হবি, সহজ হবি, ওরে মন, সহজ হবি –“, কিন্তু সহজ হওয়া কি এতই সহজ? গত কয়েকদিন ধরে কী যে যাচ্ছে মনের ওপর- তাতে মনকে যতই বলি “ওরে মন, সহজ হবি” – মন তো সহজে মেনে নিচ্ছে না।


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৬৬

No comments:

Post a Comment

Latest Post

R. K. Narayan's 'The Grandmother's Tale'

There are many Indian authors in English literature. Several of their books sell hundreds of thousands of copies within weeks of publication...

Popular Posts