প্রফেসর আবদুস সালাম, ব্রিটিশ পাকিস্তানের একটা
প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম নিয়েও নিজের মেধা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে হয়ে উঠেছিলেন তৃতীয়
বিশ্বের বিজ্ঞান উন্নয়নের কান্ডারি। বিজ্ঞানে পিছিয়ে পড়া দেশের বিজ্ঞানীদের
আন্তর্জাতিক মানের গবেষণার সুযোগ করে দেয়ার জন্য গড়ে তুলেছেন ইন্টারন্যাশনাল
সেন্টার ফর থিওরেটিক্যাল ফিজিক্স (আই-সি-টি-পি), থার্ড-ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমি অব
সায়েন্সেস। পদার্থবিজ্ঞানের মৌলিক ধারণার অনেকখানি বদলে দিয়েছেন আবদুস সালাম চারটি
মৌলিক বলের দুটো বলকে একীভূত করে দিয়ে। ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফোর্স ও উইক নিউক্লিয়ার
ফোর্সকে একত্রিত করে আবিষ্কার করেছেন 'ইলেকট্রো-উইক ফোর্স'। তার স্বীকৃতি হিসেবে
পেয়েছেন বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ সম্মান - নোবেল পুরষ্কার।
বর্তমান বিশ্বে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে
সাফল্যের সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি হলো নোবেল পুরষ্কার। এই পুরষ্কার পাবার পর দ্রুত বিখ্যাত হয়ে যান
মানুষ- বিশেষ করে সেই মানুষ যদি হন পাকিস্তানের মত অনুন্নত দেশ থেকে উঠে আসা কেউ।
প্রফেসর আবদুস সালাম নোবেল পুরষ্কার পাবার অনেক আগেই খ্যাতিমান হয়েছেন নিজের কাজের
মধ্য দিয়ে। কিন্তু এই খ্যাতি লাভের পেছনে যে কী পরিমাণ সংগ্রাম জড়িত তা মানুষটির
ছোটবেলা থেকে বড় হয়ে ওঠা, সুযোগের জন্য সংগ্রাম এবং নিরলস গবেষণা-সাধনার দিকে
দৃষ্টি দিলেই বোঝা যায়।
পৃথিবীর অনুন্নত অংশ যে ভীতিপ্রদ সংকটের সম্মুখীন তা নিয়ে বিভিন্ন দেশে যেসব
অগণিত মানুষ চিন্তাভাবনা করেন তাঁর মধ্যে অল্প কয়েকজন আছেন যাঁরা শুধু কথা বলেন
না, কাজও করেন। প্রফেসর আবদুস সালাম শেষের দলে। কাজ করতে করতে ছুটে গেছেন পৃথিবীর
এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্তে।
বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানী সিরিজের এই বইতে
প্রফেসর আবদুস সালামের জীবন, দর্শন ও বিজ্ঞানের প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে যেন পাঠক ধারণা
করতে পারেন কী কঠোর পরিশ্রম তাঁকে করতে হয়েছে বিজ্ঞানের সাফল্যের চূড়ায় উঠতে।
বাংলাদেশে বিজ্ঞানের বই প্রকাশ ও
প্রচারে মীরা প্রকাশন স্বকীয়তার স্বাক্ষর রাখতে শুরু করেছে। প্রকাশক মো: হারুনর রশীদের আগ্রহ ও কঠোর পরিশ্রমের
কারণেই তা হচ্ছে। তাঁর কাছে আমি কৃতজ্ঞ বইটি প্রকাশ করার জন্য। আর বন্ধু অজিত তো
আছেই। লেখা শেষ করা পর্যন্ত আমার কাজ। তারপর সেটাকে প্রকাশকের দপ্তরে পেশ করা থেকে
শুরু করে বই আকারে বের করে আনা পর্যন্ত সব কাজ অজিতই সামলায়। বইতে ব্যবহৃত ছবিগুলো
নেয়া হয়েছে আবদুস সালাম ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ফিজিক্স সেন্টারের ওয়েবসাইট
থেকে। আই-সি-টি-পি'র প্রতি আমি এই কারণেও কৃতজ্ঞ।
বইটি পড়ে বাংলাভাষী পাঠক বিজ্ঞানের
উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা ভাববেন, বিজ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা অনুভব করবেন এই আশায়
-
প্রদীপ দেব
pradipdeb2006@gmail.com
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
ডিসেম্বর ২০১৪
১
২
৩
৪
৫
৬
৭
৮
৯
১০
No comments:
Post a Comment